-1748508650.jpg)
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার শরীরকে সুস্থ রাখে, কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে অনেক সময় আমরা তাজা খাবারের পরিবর্তে বাসি খাবার খেয়ে থাকি, যা বিভিন্ন কারণে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। নিচে বাসি খাবার খাওয়ার কিছু প্রধান ক্ষতিকর দিক বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
○ ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক সংক্রমণ
বাসি খাবার দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষিত থাকায় তাতে সহজেই ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্ম নিতে পারে। বিশেষ করে যদি খাবারটি সঠিক তাপমাত্রায় বা উপযুক্ত পাত্রে সংরক্ষণ না করা হয়, তাহলে সালমোনেলা, ই. কোলাই, ক্লোস্ট্রিডিয়াম বোটুলিনাম ইত্যাদি ক্ষতিকর জীবাণু জন্ম নিতে পারে। এসব জীবাণু খাবারের গুণগত মান নষ্ট করে এবং খাদ্যবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
○ খাদ্য বিষক্রিয়া
বাসি খাবার খাওয়ার ফলে অনেক সময় খাদ্য বিষক্রিয়ার (Food Poisoning) ঘটনা ঘটে। এর ফলে বমি, পেটব্যথা, পাতলা পায়খানা, জ্বর, দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শিশু, বৃদ্ধ ও রোগপ্রবণ মানুষদের জন্য এটি আরও মারাত্মক হতে পারে এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনও হতে পারে।
.jpg)
○ পুষ্টিগুণের ক্ষতি
খাবার দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের ফলে তার পুষ্টিগুণ অনেকটাই হ্রাস পায়। বিশেষ করে ভিটামিন 'সি', 'বি-কমপ্লেক্স' জাতীয় পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেই খাবার থেকে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না এবং ধীরে ধীরে অপুষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
○ হজমজনিত সমস্যা
বাসি খাবার অনেক সময় কঠিন ও শুকনো হয়ে যায়, যা সহজে হজম হয় না। এর ফলে পেট ফাঁপা, গ্যাস, বুক জ্বালা, অম্বল ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের হজমশক্তি দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়।
○ দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি
নিয়মিত বাসি খাবার খাওয়ার অভ্যাস গ্যাস্ট্রিক আলসার, লিভার সমস্যা, কিডনি ক্ষতি এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। অনেক বাসি খাবারে নাইট্রেট, ফাঙ্গাল টক্সিন (যেমন অ্যাফ্লাটক্সিন) তৈরি হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারজনিত রোগের কারণ হতে পারে।
.jpg)
মনে রাখবেন
বাসি খাবার কখনো কখনো খাওয়া যায়, যদি তা উপযুক্তভাবে সংরক্ষিত হয় এবং গরম করে খাওয়া হয়। তবে অভ্যাসবশত বা অলসতায় বারবার বাসি খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। সুস্থ থাকতে হলে তাজা ও গরম খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং খাবার সংরক্ষণের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। মনে রাখা দরকার, ‘স্বাস্থ্যই সম্পদ’ — আর স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হলে খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা অপরিহার্য।