ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

হাইপারহাইড্রোসিস: অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০২:১৬ পিএম
হাইপারহাইড্রোসিস: অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা
অতিরিক্ত ঘামকে অবহেলা না করে প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ছবি এআই

হাইপারহাইড্রোসিস (Hyperhidrosis) হলো অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সমস্যা, যা সবসময় তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা শরীরচর্চার সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে না। এতে এত বেশি ঘাম হতে পারে যে কাপড় ভিজে যায় বা হাত থেকে ঘাম ঝরতে থাকে। অতিরিক্ত ঘাম দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং মানসিক অস্বস্তি ও সামাজিকভাবে বিব্রত করতে পারে।
এ রোগের কার্যকর চিকিৎসা আছে। সাধারণত অ্যান্টিপার্সপিরেন্ট (ঘাম প্রতিরোধকারী স্প্রে বা লোশন) ব্যবহার দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। তাতে উপকার না হলে অন্যান্য ওষুধ ও থেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। মারাত্মক ক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে ঘামগ্রন্থি অপসারণ বা অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্নায়ুগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চিকিৎসা দেয়া হয়।
কখনো কখনো হাইপারহাইড্রোসিসের পেছনে কোনো অন্তর্নিহিত শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে, যেটির চিকিৎসা করলে ঘাম কমে যেতে পারে।

উপসর্গ
হাইপারহাইড্রোসিসের প্রধান উপসর্গ হলো অতিরিক্ত ঘাম। ঘামের পরিমান গরম আবহাওয়া, ব্যায়াম বা দুশ্চিন্তার কারণে হওয়া ঘামের চেয়ে অনেক বেশি। সাধারণত এ ধরনের ঘাম হাত, পা, বগল বা মুখে হয়ে থাকে।

কারণ
ঘাম শরীরের স্বাভাবিক শীতলীকরণ পদ্ধতি। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে স্নায়ুতন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘামগ্রন্থিকে উদ্দীপ্ত করে।
প্রাইমারি হাইপারহাইড্রোসিস হয়ে থাকে যখন স্নায়ু সংকেতের ত্রুটির কারণে ইক্রাইন (Eccrine) ঘামগ্রন্থিগুলো অতিসক্রিয় হয়ে পড়ে। এটি মূলত হাত, পা, বগল ও মাঝে মাঝে মুখে হয়ে থাকে। এই ধরনের ঘামের কোনো নির্দিষ্ট শারীরিক কারণ পাওয়া যায় না। এটি বংশগতও হতে পারে।
সেকেন্ডারি হাইপারহাইড্রোসিস ঘটে তখন, যখন কোনো শারীরিক রোগ বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় অতিরিক্ত ঘাম হয়। এই ক্ষেত্রে পুরো শরীরেই ঘাম হতে পারে। যেসব কারণে সেকেন্ডারি হাইপারহাইড্রোসিস হতে পারে তার মধ্যে আছে ডায়াবেটিস, মেনোপজ বা ঋতুবন্ধের সময় গরম ফ্ল্যাশ, থাইরয়েড সমস্যা, কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, সংক্রমণ ইত্যাদি।

জটিলতা
হাইপারহাইড্রোসিস থেকে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে আছে —
• সংক্রমণ: অতিরিক্ত ঘাম ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
• সামাজিক ও মানসিক প্রভাব: হাত ঘামা বা জামাকাপড় ভিজে যাওয়া বিব্রতকর হতে পারে। এটি শিক্ষাজীবন ও পেশাগত অগ্রগতিতেও বাধা হতে পারে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন
কখনো কখনো অতিরিক্ত ঘাম গুরুতর শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। যদি অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে মাথা ঘোরা, বুক বা গলা বা চোয়াল বা বাহুতে ব্যথা, ঠান্ডা ত্বক এবং দ্রুত হৃদস্পন্দন দেখা দেয়—তাহলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।
নিচের যেকোনো একটি অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত—
• অতিরিক্ত ঘাম দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত করছে।
• ঘাম মানসিক চাপ বা সামাজিক দূরত্ব তৈরি করছে।
• হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে ঘাম বেড়ে গেছে।
• কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই রাতে ঘাম হচ্ছে।

উপসংহার
অতিরিক্ত ঘামকে অবহেলা না করে প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলে হাইপারহাইড্রোসিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।


সূত্র: মায়ো ক্লিনিক

হাঁটার আগে-পরে যে নিয়ম মেনে চলবেন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
হাঁটার আগে-পরে যে নিয়ম মেনে চলবেন
জগিং শরীর সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য একটি দারুণ কার্যকর ব্যায়াম। ছবি এআই

জগিং শরীর সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য একটি দারুণ কার্যকর ব্যায়াম। তবে ভালো ফল পেতে ও ইনজুরি এড়াতে জগিংয়ের আগে ও পরে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

 

জগিং করার আগের নিয়মগুলো

◉ ওয়ার্ম-আপ (Warm-up): ৫–১০ মিনিট হালকা হাঁটা, জাম্পিং জ্যাক, বা শরীর ঝাঁকানো টাইপের ব্যায়াম করুন। এতে পেশি উষ্ণ হয়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ইনজুরির ঝুঁকি কমে।

◉ স্ট্রেচিং (Dynamic Stretching): হ্যামস্ট্রিং, কাফ মাসল, হিপ ফ্লেক্সর ইত্যাদি পেশিতে ডাইনামিক স্ট্রেচ করুন। উদাহরণ: লেগ সুইং, হাঁটু উঁচু করে হাঁটা, আর্ম সার্কেল ইত্যাদি।

◉ পানি পান করুন: শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য জগিংয়ের ১৫–৩০ মিনিট আগে পানি পান করুন।

◉ সঠিক পোশাক ও জুতা পরুন: আরামদায়ক, শ্বাস নিতে পারে এমন পোশাক এবং পায়ের জন্য সঠিক গ্রিপ ও কুশনযুক্ত জুতা ব্যবহার করুন।

◉ হালকা খাওয়া: খালি পেটে জগিং না করে হালকা কিছু (যেমন কলা, টোস্ট বা ওটস) খাওয়া যেতে পারে।

 

খালি পেটে জগিং না করে হালকা কিছু খাওয়া যেতে পারে। ছবি এআই

 

জগিং করার পরের নিয়মগুলো

◉ কুল-ডাউন (Cool-down): হঠাৎ থেমে না গিয়ে ৫–১০ মিনিট ধীরে হাঁটুন যাতে হার্টবিট ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।

◉ স্ট্যাটিক স্ট্রেচিং (Static Stretching): জগিংয়ের পরে পেশি রিল্যাক্স করার জন্য স্ট্যাটিক স্ট্রেচ করুন। উদাহরণ: পায়ের পেশি টেনে ধরা, পিঠ বাঁকানো, হাত ও ঘাড় টেনে ধরা ইত্যাদি।

◉ পানি ও ইলেকট্রোলাইট গ্রহণ করুন: ঘাম ঝরার ফলে শরীর থেকে তরল বেরিয়ে যায়, তাই পানি বা ইলেকট্রোলাইট ড্রিঙ্ক খাওয়া উচিত।

দীর্ঘ সময় ধরে জগিং করার পর বিশ্রাম নিন। ছবি এআই

 

◉ প্রোটিন যুক্ত খাবার খান: মাংসপেশির পুনর্গঠনের জন্য জগিংয়ের পর প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খান। যেমন—ডিম, দই, স্যান্ডউইচ, ফল।

◉ বিশ্রাম নিন: শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, বিশেষ করে যদি দীর্ঘ সময় ধরে জগিং করা হয়।

গরমে যদি ডায়রিয়া হয়

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৩ পিএম
গরমে যদি ডায়রিয়া হয়
ছবি এআই

এই গরমে ডায়রিয়া হলে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া খুব জরুরি। কারণ ডায়রিয়া হলে শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি (ডিহাইড্রেশন) হয়ে যেতে পারে, যা শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বিপজ্জনক। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেওয়া হলো—

• স্যালাইন (ORS) খাওয়ান
ডায়রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখে খাওয়ার স্যালাইন (ওরস) খাওয়ানো শুরু করুন। প্রতিবার পায়খানার পর অন্তত এক গ্লাস ওরস খাওয়ানো উচিত। শিশুকে বুকের দুধ দেওয়া হলে তা চালিয়ে যেতে হবে।

• পানি ও তরল খাবার বেশি খাওয়ান
পরিমাণ মতো ফুটানো পানি, ডাবের পানি, স্যুপ, চালের মাড় ইত্যাদি দিন। পানিশূন্যতা ঠেকাতে দিনে অনেকবার অল্প অল্প করে তরল খেতে দিন।

• পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
খাবার খাওয়ার আগে-পরে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। নিরাপদ পানি ও রান্না করা খাবার খেতে হবে। টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

• পাশাপাশি...
খাবার বন্ধ না করে হালকা খাবার চালিয়ে যান। ডায়রিয়া হলে খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। নরম ভাত, খিচুড়ি, সেদ্ধ আলু, কলা ইত্যাদি খেতে দিন।

• প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি ডায়রিয়া ২ দিনেও না কমে, পায়খানার সঙ্গে রক্ত বা অতিরিক্ত পানি আসে, জ্বর, বমি, খিঁচুনি বা অজ্ঞান হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

• বিশেষ সতর্কতা
শিশুরা ও বৃদ্ধরা দ্রুত পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে, তাই তাদের প্রতি বেশি নজর দিন। অ্যান্টিবায়োটিক ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক নয়।

যে কারণে কাঁচা খাবার খাওয়া যাবে না

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১০:০০ এএম
যে কারণে কাঁচা খাবার খাওয়া যাবে না
সব ধরনের কাঁচা খাবারই স্বাস্থ্যকর নয়। ছবি এআই

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠনের ক্ষেত্রে অনেকেই কাঁচা খাবার খাওয়াকে উপকারী মনে করেন। কারণ, কাঁচা ফল, শাকসবজি ও অন্যান্য খাবারে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান স্বাভাবিকভাবে সংরক্ষিত থাকে। তবে সব ধরনের কাঁচা খাবারই স্বাস্থ্যকর নয়। আসুন দেখে নেই, কেন কাঁচা খাবার খাওয়া নিরাপদ নয়।

❏ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণ
কাঁচা মাংস, মাছ, ডিম ও দুধে সালমোনেলা, ই-কোলাই, লিস্টেরিয়া, ও ক্যাম্পিলোব্যাক্টারের মতো ক্ষতিকর জীবাণু থাকতে পারে। এগুলো খাদ্যে বিষক্রিয়া, জ্বর, ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও বমি সৃষ্টি করতে পারে।

❏ পরজীবী আক্রমণ
কাঁচা বা আধসেদ্ধ মাছ ও মাংসে পরজীবী যেমন টেপওয়ার্ম, রাউন্ডওয়ার্ম বা ফ্লুক থাকতে পারে। এসব পরজীবী শরীরে প্রবেশ করে হজমপ্রক্রিয়া নষ্ট করে, পুষ্টিহীনতা ও বিভিন্ন রোগ তৈরি করতে পারে।

❏ হজমের সমস্যা
কিছু কাঁচা সবজিতে প্রাকৃতিক এনজাইম ইনহিবিটর বা অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা হজম ব্যাহত করে। যেমন, কাঁচা ব্রকোলি বা বাঁধাকপিতে গ্যাস ও অস্বস্তি হতে পারে।

❏ অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্টসের উপস্থিতি
কিছু কাঁচা খাবারে ফাইটিক অ্যাসিড, অক্সালেট বা লেকটিন নামক অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা ক্যালসিয়াম, আয়রন ও জিঙ্কের মতো খনিজ উপাদানের শোষণ বাধাগ্রস্ত করে।

❏ ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকি
অনিয়মিতভাবে সংরক্ষিত বা ধোয়া ছাড়া খাওয়া কাঁচা খাবার ফুড পয়জনিংয়ের অন্যতম কারণ। বিশেষ করে রাস্তার খাবারে বা রেস্তোরাঁয় কাঁচা খাবার ঠিকভাবে ধোয়া না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

❏ শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য বিপজ্জনক
শিশু, গর্ভবতী নারী ও রোগপ্রবণ ব্যক্তিদের জন্য কাঁচা খাবার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে লিস্টেরিয়া সংক্রমণ গর্ভপাত বা শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।

❏ বিষাক্ত পদার্থ গ্রহণের আশঙ্কা
কিছু কাঁচা খাবারে প্রাকৃতিকভাবে বিষাক্ত উপাদান থাকে। যেমন, কাঁচা মুসুর ডালে লেকটিন নামক উপাদান থাকে, যা হজমে সমস্যা তৈরি করে। আবার কাঁচা আলুতে সোলানিন নামক বিষাক্ত রাসায়নিক থাকতে পারে।

❏ ভিটামিন ও মিনারেল অপচয় নয়, তবে ভারসাম্য জরুরি
কাঁচা খাবারে কিছু ভিটামিন যেমন ভিটামিন C বা B কমপ্লেক্স অক্ষত থাকে, কিন্তু অতিরিক্ত কাঁচা খাবার খেলে বিপাকের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাই পরিমিত ও সঠিকভাবে প্রস্তুত কাঁচা খাবার খাওয়াই ভালো।

❏ অ্যালার্জির ঝুঁকি
কিছু মানুষ কাঁচা বাদাম, ফল বা শাকসবজির প্রতি সংবেদনশীল হয়। এসব খাবার কাঁচা অবস্থায় খেলে অ্যালার্জি, ত্বকে চুলকানি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

❏ জটিল রোগের ঝুঁকি
দীর্ঘমেয়াদে অপরিষ্কার বা অস্বাস্থ্যকরভাবে খাওয়া কাঁচা খাবার লিভার বা কিডনি সমস্যা, পেটের আলসার বা দীর্ঘমেয়াদি পরজীবী সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

হার্ট ভালো রাখার টিপস

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫, ০২:০৪ পিএম
হার্ট ভালো রাখার টিপস
হৃদরোগ একটি নীরব ঘাতক। ছবি এআই

হৃদরোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। তাই ত্রিশোর্ধ্ব প্রত্যেকের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। অনেক সময় উত্তরাধিকারসূত্রেও কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। হৃদরোগ থেকে প্রতিকারের জন্য মানসিক চাপ কমাতে হবে এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে।

অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়। এতে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, ফলে হজমে ব্যাঘাত ঘটে। যাদের হৃদরোগ রয়েছে, তারা জগিং করলে দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং জয়েন্টে ব্যথা অনুভব করেন। এজন্য জগিংয়ের চেয়ে হাঁটা বেশি উপকারী।

হার্ট ভালো রাখতে যা করণীয়:
১. খাবার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে, আমিষের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
২. সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন আধা ঘণ্টা করে হাঁটতে হবে। লিফটে ওঠা এড়িয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘক্ষণ একটানা বসে থাকা যাবে না।
৩. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। ওজন, রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার (সুগার) মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৪. সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

হৃদরোগ প্রতিরোধে ফল ও সবজি অত্যন্ত উপকারী। অন্যদিকে, তৈলাক্ত খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। রক্তচাপ পরিমাপ করাও জরুরি।

হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়:
রোগীকে প্রথমে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর জিহ্বার নিচে একটি অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট রাখতে হবে। সম্ভব হলে একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেটও দিতে হবে। এরপর দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, কারণ প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই হার্টের মাংসপেশির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।

লেখক: অ্যালোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০।

মৌমাছি কামড়ালে যা করবেন

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম
মৌমাছি কামড়ালে যা করবেন
মৌমাছির কামড় সবসময় ভয় পাওয়ার বিষয় নয়। ছবি এআই

গ্রীষ্ম কিংবা শরৎকালে গ্রামীণ বা পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে গেলে অনেক সময়ই মৌমাছির কামড়ের শিকার হতে হয়। সাধারণত এটি প্রাণঘাতী নয়, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তীব্র অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টসহ গুরুতর প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে। তাই মৌমাছি কামড়ালে দ্রুত ও সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। আসুন দেখে নেই মৌমাছির কামড়ে কী করতে হবে—

শান্ত থাকুন

প্রথমত, আতঙ্কিত না হয়ে নিজেকে শান্ত রাখুন। ভয় পেলে বা বেশি নড়াচড়া করলে মৌমাছির বিষ দ্রুত শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

হুল থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন

মৌমাছি কামড়ালে তাদের হুল চামড়ায় রয়ে যায়। হুল যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে ফেলতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন—নখ বা চিমটি দিয়ে হুল টানবেন না। এতে বিষ আরও গভীরে চলে যেতে পারে। বরং একটি প্লাস্টিক কার্ড বা পাতলা কিছু দিয়ে হুলটিকে চামড়ার উপর দিয়ে কেটে তুলে দিন।

 

বেশি নড়াচড়া করলে মৌমাছির বিষ শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ছবি এআই

 

ত্বক পরিষ্কার করুন

হুল সরানোর পর আক্রান্ত জায়গাটি পরিষ্কার পানি ও হালকা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যাবে।

 

ঠান্ডা সেঁক দিন

ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে আক্রান্ত স্থানে বরফ জড়ানো কাপড় বা ঠান্ডা পানিতে ভেজানো তোয়ালে ১০–১৫ মিনিট চেপে ধরুন। প্রয়োজনে দিনে কয়েকবার এটি করা যেতে পারে।

 

ব্যথা ও চুলকানি কমাতে ওষুধ ব্যবহার করুন

প্রয়োজনে ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন খাওয়া যেতে পারে (চিকিৎসকের পরামর্শে)। চুলকানি বা লালভাব কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ বা অ্যালার্জি প্রতিরোধক মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

কামড়ের জায়গা খোঁচাবেন না

চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার কারণে অনেকেই কামড়ের জায়গা খুঁটতে থাকেন, যা একেবারেই অনুচিত। এতে সংক্রমণ হতে পারে এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

 

মৌমাছি কামড়ালে দ্রুত ও সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। ছবি এআই

 

অ্যালার্জির লক্ষণ খেয়াল রাখুন

মৌমাছির বিষে অ্যালার্জি থাকলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, চোখ, মুখ বা গলার ফোলা, হাইপার একটিভ হার্টবিট, বমি বা মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান বা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

পূর্ব-অ্যালার্জি থাকলে সতর্ক থাকুন

আপনার আগে মৌমাছির কামড়ে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে সবসময় সঙ্গে ‘ইপিপেন’ (Epinephrine ইনজেকশন) রাখুন, বিশেষ করে পাহাড়ি বা ঝোপঝাড় এলাকায় গেলে।

 

প্রাকৃতিক প্রতিকার প্রয়োগ করতে পারেন

বাসায় প্রাথমিক প্রতিকার হিসেবে বেকিং সোডা ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে কামড়ের জায়গায় লাগানো যেতে পারে। অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে জ্বালাভাব কমে। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।

 

কামড়ের পর অনেকক্ষণ ধরে ফোলাভাব না কমলে ডাক্তার দেখান। ছবি এআই

 

বাচ্চাদের বিশেষভাবে নজর দিন

শিশুরা নিজেদের অস্বস্তি প্রকাশে পারদর্শী নাও হতে পারে। তাই যদি বাচ্চা কোনো অজানা কারণে কান্নাকাটি বা অস্বস্তি করে, তাহলে কামড় খেয়েছে কি না লক্ষ্য করুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন।

 

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

○ শ্বাসকষ্ট বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে।
○ হুল ঢোকার জায়গা লাল হয়ে পুঁজ বের হলে।
○ অনেকক্ষণ ধরে ফোলাভাব না কমলে।
○ শরীরে ছড়িয়ে পড়া চুলকানি বা র‌্যাশ দেখা দিলে।

 

মৌমাছির কামড় সবসময় ভয় পাওয়ার বিষয় নয়, তবে সচেতন না হলে ছোট একটি কামড়ও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই এ বিষয়ে সাবধানতা ও সঠিক প্রাথমিক চিকিৎসা জানা থাকা একান্ত প্রয়োজন।