ঢাকা ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, রোববার, ০৮ জুন ২০২৫
English

নিউজিল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪, ০৮:৫৬ এএম
নিউজিল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং

চলতি সপ্তাহে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং নিউজিল্যান্ড সফরে যাবেন। নিউজিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ক্রিস লুক্সন গতকাল সোমবার (১০ জুন) এ তথ্য জানান। 

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন বলছে, ২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম নিউজিল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন চীনের কোনো প্রধানমন্ত্রী। লুক্সন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী লিকে নিউজিল্যান্ডে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে উন্মুখ আমি।’

তিনি আরও বলেন, নিউজিল্যান্ড ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র বিনিময়ের একটি মূল্যবান সুযোগ প্রধানমন্ত্রীর এই সফর। 

প্রসঙ্গত, নিউজিল্যান্ডের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। দেশটিতে নিউজিল্যান্ডের মাংস, মদ ও দুধের বিশাল বাজার রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে চীনের কূটনৈতিক ও সামরিক তৎপরতা চেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়েছে। সূত্র: এএফপি

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও বর্তমান সিনেটর গুলিবিদ্ধ

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও বর্তমান সিনেটর গুলিবিদ্ধ
ছবি:সংগৃহীত

কলম্বিয়ার আগামী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার (৭ জুন) রাজধানী বোগোতায় এক নির্বাচনি প্রচারসভায় তার ওপর এই হামলা হয়। 

রবিবার (০৮ জুন) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই খবর জানায়।

হামলার শিকার সিনেটর উরিবে বিরোধীদল কনজারভেটিভ ডেমোক্র্যাটিক সেন্টার পার্টির সদস্য। তার দল এক বিবৃতিতে জানায়, রাজধানীর ফন্তিবন এলাকায় একটি পার্কে প্রচারণাকালে তাকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। দলটি এটিকে একটি গুরুতর হামলা বলে বর্ণনা করলেও তার শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত জানায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে উরিবেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে এবং লোকজনকে তাকে সাহায্য করতে দেখা যায়।

শনিবার এই হামলার পর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী এবং সরকারি ও দলীয় কর্মকর্তারা।

কলম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় জানায়, ১৫ বছরের কম বয়সী এক কিশোরকে একটি ৯মিমি গ্লক পিস্তলসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলার পেছনে কারা আছে তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

উরিবের স্ত্রী মারিয়া ক্লাউদিয়া তার স্বামীর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে জানান, তিনি জীবনের জন্য লড়াই করছেন।

এই ঘটনার পর রাজধানীর সান্তা ফে ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভিড় করেন সমর্থকরা। কেউ কেউ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনায় অংশ নেন। কেউ কলম্বিয়ার পতাকা হাতে একাত্মতা জানান।

সুলতানা দিনা/

ড. ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করার অনুরোধ টিউলিপ সিদ্দিকের

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম
ড. ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করার অনুরোধ টিউলিপ সিদ্দিকের
সাবেক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগামীকাল (৯ জুন) যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন। এই সফরের সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এই চিঠিতে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সৃষ্ট ‘ভুল বোঝাবুঝি’তে চলমান বিতর্ক নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ চেয়েছেন।

চিঠিতে টিউলিপ লিখেন, তিনি আশা করেন এই বৈঠক দুর্নীতি দমন কমিশনের সৃষ্টি করা ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সাহায্য করবে।

রবিবার (৮ জুন ) বৃটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

পাঠকদের উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি এখানে প্রায় হুবহু তুলে ধরা হলো। এছাড়া এই প্রতিবেদনের নিচে দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনের লিংক সংযুক্ত করে দেওয়া থাকছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি চিঠি লিখেছেন টিউলিপ। আগামী সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি রাজা চার্লস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ড. ইউনূসের এই সফরকালে তার সঙ্গে একটি আলোচনার সুযোগ চেয়েছেন টিউলিপ।’

চিঠিতে টিউলিপ লিখেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; যিনি আমার খালা, তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ও জড়িত থাকার বিষয়ে আমাকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে - দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগ থেকে এই যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে তা এই সাক্ষাৎ দূর করতে পারবে বলে আমি আশা করি।’

তিনি আরও লিখেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক। আমার জন্ম লন্ডনে এবং আমি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে আসছি।’

টিউলিপ সিদ্দিক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমার হৃদয়ের টান রয়েছে ঠিকই কিন্তু সেখানে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। আমি ওই দেশে জন্মাইনি, থাকি না, এমনকি সেখানে আমার পেশাগত জীবনেরও কোনো সম্পর্ক নেই।’

টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘দুদককে আমি আগেও এ বিষয়ে পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার লন্ডনের আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগে আগ্রহ না দেখিয়ে বরং তারা বারবার ঢাকার একটি ঠিকানায় এলোমেলোভাবে চিঠিপত্র পাঠাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কাল্পনিক তদন্তের প্রতিটি ধাপ গণমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথচ আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি লেখা চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক আরও বলেন, ‘আমি জানি, আপনি নিশ্চয়ই বোঝেন; এই প্রতিবেদনগুলোর কারণে আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও আমার দেশের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেটি নিশ্চিত করা কতটা জরুরি।’

টিউলিপের দাবি, তিনি তার খালা শেখ হাসিনাবিরোধীদের পরিচালিত একটি ‘রাজনৈতিক অপপ্রচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণের’ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন।

ইতোমধ্যে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে ব্রিটিশ মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে টিউলিপকে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গার্ডিয়ানের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা সরকারি অবকাঠামো খাত থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন কি না - এ অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। এই অভিযোগের সূত্রপাত করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

দুদক এবং একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক বা তার মা শেখ রেহানা ‘ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে’ ৭ হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের একটি জমি দখল করেছেন।

যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তার আইনজীবীরা এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।

এদিকে গত মাসে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

তবে টিউলিপ জানান, এমন কোনো পরোয়ানা বা আদালতে হাজিরার আদেশ সম্পর্কে তার জানা নেই। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ‘২ বি’ প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতাভুক্ত দেশ হওয়ায়, যুক্তরাজ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে বাংলাদেশ থেকে স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেখাতে হয় - যা মন্ত্রী বা বিচারক পর্যায়ে যাচাই করে অনুমোদন দিতে হয়।

গত বছর যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠার পর টিউলিপ নিজেই ব্রিটিশ মন্ত্রীদের আচরণবিধি তদারক কর্মকর্তা লরি ম্যাগনাসের কাছে রিপোর্ট করেন। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

লরি ম্যাগনাস জানান, তদন্তে তিনি কোনো প্রমাণ পাননি যে টিউলিপের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জিত। তবে তিনি মত দেন, টিউলিপের উচিত ছিল - বাংলাদেশে তার পারিবারিক সম্পৃক্ততা থেকে উদ্ভূত ভাবমূর্তির ঝুঁকির বিষয়ে আগে থেকেই আরও সতর্ক থাকা।

এ ছাড়াও এই তদন্তে ২০১৩ সালে মস্কোতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি পারমাণবিক চুক্তির সময় টিউলিপ সিদ্দিকের উপস্থিতি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। সে সময় টিউলিপের বিরুদ্ধে এই চুক্তিটির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

তবে টিউলিপ জানান, তিনি তখন মস্কোতে পর্যটক হিসেবে অবস্থান করছিলেন। পরে তার এই ব্যাখ্যা যুক্তিযুক্ত মনে করে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তবুও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি ও সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, এসব বিতর্ক কিয়্যার স্টারমারের নতুন সরকারের জন্য ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি করছে।  সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

সুলতানা দিনা/অমিয়/

পাকিস্তানের নূর খান বিমানঘাঁটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে’

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
পাকিস্তানের নূর খান বিমানঘাঁটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে’
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ইমতিয়াজ গুল

পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ইমতিয়াজ গুলের দাবি, রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি ‘আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে’। তার এ মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি ভিডিওতে ইমতিয়াজ গুল অভিযোগ করেন, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানঘাঁটিটি ‘আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে, এমনকি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও এখানে হস্তক্ষেপের অনুমতি নেই’।

ভারতের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হওয়া অপারেশন সিঁদুরের সময় এই ঘাঁটিতে ভারতের নির্ভুল হামলার কয়েকদিন পর এই দাবি করা হলো।

ইমতিয়াজ গুলের মতে, ঘাঁটিতে প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের বিমান দেখা যায় এবং তাদের কার্যক্রম বা কী ধরণের পণ্য আসে সে সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মধ্যে এই ব্যবস্থাটি অপ্রকাশিত চুক্তির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় বলে মনে হচ্ছে। এটি জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং সামরিক স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়।

গুল তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং এর সামরিক অভিযানের স্বচ্ছতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

নূর খান বিমানঘাঁটিতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর। এই ঘাঁটি পাকিস্তানের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডির কাছে অবস্থিত। এই বিমানঘাঁটিটি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগেরও কাছাকাছি অবস্থিত।

এই ঘাঁটিতে পাকিস্তানের প্রধান বিমান পরিবহন স্কোয়াড্রন রয়েছে এবং দেশের বিমান চলাচলের জন্য কমান্ড সেন্টার হিসেবে কাজ করে।

ভারতের অপারেশন সিঁদুর নূর খান বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি ছিল পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের প্রতিশোধমূলক হামলা। এই অভিযানে বিমানঘাঁটির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ দাবির বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নেই এখন পর্যন্ত। ইমতিয়াজ গুলের দাবির বিষয়ে পাকিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ বা অস্বীকারও করা হয়নি। 

তবে, ভিডিওটি পাকিস্তানের সামরিক অবকাঠামোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস

অমিয়/

উত্তাল ভারতের মণিপুর, কারফিউ জারি, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০১:৫০ পিএম
উত্তাল ভারতের মণিপুর, কারফিউ জারি, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্য আবারো উত্তাল। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অশান্ত রাজধানী ইম্ফল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বিষ্ণুপুর জেলায় কারফিউ জারি করেছে পুলিশ।

দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শনিবার (৭ জুন) বিকেলের পর থেকেই রাজ্যটির পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে।

হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজ্যের ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল, কাকচিঙের মতো জেলাগুলোতে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মণিপুর পুলিশ পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

মণিপুরের কমিশনার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলাগুলোর বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনগণের আবেগকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হিংসাত্মক বক্তব্য এবং ভিডিও ছড়াতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন বলে মনে হচ্ছে। এতে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এ নিয়ে আগামী পাঁচ দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার বলেছে, নতুন করে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সূত্রপাত ঘটে আরামবাই টেংগোলসহ মেইতেই গোষ্ঠীর পাঁচ জনের গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ্যে আসার পর। অভিযোগ, মেইতেই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন পশ্চিম ইম্ফলের কোয়াকেইথেল পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়। পরে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ্যের আসার পর তাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালায় এবং অনেক রাস্তা বন্ধ করে দেয়। 

তাছাড়া, ইম্ফলের কিছু বাসিন্দা গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুইপক্ষের ধস্তাধস্তিতে দুই সাংবাদিকসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এর পরেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অশান্তির আগুন ছড়াতে শুরু করে।

এনডিটিভি জানায়, আরামবাই টেংগোলের প্রধান নেতা কানন সিংয়ের মুক্তির দাবিতে একদল যুবক নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলেছে। কাননকে মুক্তি না দিলে তারা নিজেকে জ্বালিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মইরাংথেম অমিতের বাড়িতে হামলা এবং পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে অপহরণের ঘটনায় কানন সিং প্রধান সন্দেহভাজন আসামি।

অমিয়/ 

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ১২:১২ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ১২:২৯ পিএম
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি
ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য মানেই যেন যুদ্ধের ঘনঘটা। কয়েক দশক ধরে কয়েকটি দেশের পারস্পরিক অমীমাংসিত দ্বন্দ্ব-সংঘাত যেকোনো দিন যুদ্ধে রূপ নেওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এটি এই অঞ্চলের স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীল এই পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে তুলছে ইসরায়েল ও ইরানের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। একদিকে কূটনৈতিক আলোচনার স্থবিরতা, অন্যদিকে সেনা মহড়া ও প্রক্সি যুদ্ধ - সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।

এর মধ্যেই সম্প্রতি ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘ইরানের গোয়েন্দারা একটি গোপন অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলের বিপুল, গুরুত্বপূর্ণ, স্পর্শকাতর গোপন নথি হাতে পেয়েছে। এসবের মধ্যে কয়েক হাজার নথি ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো সংক্রান্ত। যারমধ্যে অসংখ্য ছবি ও ভিডিও রয়েছে।

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ এবং হিজবুল্লাহ সংশ্লিষ্ট লেবানিজ সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদানে এই খবর বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়। শুধু তাই নয়, শনিবার (৭ জুন) দ্য জেরোসালেম পোস্ট-সহ একাধিক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইরানের এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করে!

এ ছাড়াও, ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণে অনড় অবস্থান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীতল ও ধীরগতির কূটনৈতিক সম্পর্ক, চীনের ওপর অতিমাত্রায় অস্ত্র ও সামরিক ক্ষেত্রে সহায়তা নেওয়ার প্রবণতা - সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন বেশ উত্তপ্ত। 

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ বিশ্ব নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এই সংঘর্ষ বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে ব্যাঘাত, আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর জড়িয়ে পড়া এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা গভীরতর করে তুলতে পারে।

এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজউইক একটি প্রতিবেদনে ইরান-ইসরায়েলের সম্ভাব্য যুদ্ধ নিয়ে ৫টি ইঙ্গিত দিয়েছে। পাঠকের জন্য সেগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো—

ইরানের অস্বাভাবিক মাত্রায় ক্ষেপণাস্ত্র-জ্বালানি সংগ্রহ
ইরান সম্প্রতি চীন থেকে হাজার হাজার টন অ্যামোনিয়াম পারক্লোরেট আমদানি করছে। এগুলো মূলত কঠিন জ্বালানিভিত্তিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির মূল উপাদান। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, এই উপাদান দিয়ে প্রায় ৮০০ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি সম্ভব।

এছাড়া, এর কিছু অংশ হামাস এবং ইয়েমেনের হুতি মিলিশিয়াসহ অন্যান্য মিত্র গোষ্ঠীর কাছেও পাঠানো হতে পারে। এটি ইরানের কৌশলগত প্রস্তুতির একটি অংশ।

প্রস্তুত ইসরায়েল
ইসরায়েল খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছে, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানার জন্য তারা প্রস্তুত। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সম্প্রতি ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে বহু দিবসীয় আক্রমণের মহড়া দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে বিরত রাখা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাইলেও, তারা যুদ্ধের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি।

বাড়ছে এলাকাভিত্তিক প্রক্সি যুদ্ধ
বুধবার (৪ জুন) সিরিয়া ইসরায়েলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে ইসরায়েলও পাল্টা বিমান হামলা চালায়। তারা এর জন্য দায়ী করেছে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে। তবে দামেস্কের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

একইসময়ে ইয়েমেনের হুতিরা তেল-আবিবের জাফায় একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ইরান ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর এই সমন্বিত তৎপরতা যুদ্ধক্ষেত্রকে আরও প্রস্তুত করে তুলছে।

নেতানিয়াহুর ওপর মারাত্মক রাজনৈতিক চাপ
সম্প্রতি দেশে নিজের জোট ও বিরোধীদের চাপে মারাত্মক বেকায়দায় পড়েছেন নেতানিয়াহু। জোট ছাড়ার হুমকি দিয়েছে তার সরকারের শরিক কট্টর রক্ষণশীল দল ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম (ইউটিজে)। এছাড়া তৈরি হয়েছে পার্লামেন্ট ভাঙার আশঙ্কা। এর বাইরে তিনি গাজায় যুদ্ধ পরিচালনা নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরেই যথেষ্ট বেকায়দায় রয়েছেন।

তাই, অভ্যন্তরীণ এই রাজনৈতিক সংকট থেকে দৃষ্টি সরাতে ইরানের হুমকিকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। তার মতে, ইরান এখন দুর্বলতম অবস্থায় রয়েছে এবং এটি হামলার জন্য উপযুক্ত সময়।

কোণঠাসা ইসরায়েল
গাজায় যুদ্ধের কারণে ইসরায়েল এখন আন্তর্জাতিকভাবে বেশ কোণঠাসা। দেশটি থেকে রাষ্ট্রদূত ফিরিয়ে নিয়েছে জর্ডান, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তুরস্ক এবং সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আলোচনা ভেঙে পড়েছে। বিপরীতে ইরান রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে পরিবর্তন এনেছে।

সামনে যা হতে পারে

নানাবিধ কারণে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। ইসরায়েল কারও তোয়াক্কা না করে (এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও) একতরফা ইরানে আক্রমণ করতে পারে। কেননা, তারা মনে করে; ইরান ইতোমধ্যেই ‘লাল দাগ’ অতিক্রম করে ফেলেছে। 

অন্যদিকে, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার জোর দিয়ে আগাম সতর্কবার্তা দিচ্ছে যে, হামলা হলে তারাও পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত। তাই, এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। 

সুলতানা দিনা/অমিয়/