
কানে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতেই গত সোমবার (১৫ জুলাই) উইসকনসনের মিলওয়াকিতে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে উপস্থিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় উপস্থিত জনতাকে বলতে শোনা যায় ‘ফাইট’, ‘ফাইট’, ‘ফাইট’।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনের প্রথম রাতে মনোযোগ নিজের দিকে টেনে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও ঘটেছে, তার মধ্যে একটি হলো- ট্রাম্পের রানিং মেট বেছে নেওয়ার বিষয়টি।
ওই আয়োজনে উপস্থিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প রানিং মেট হিসেবে বেছে নেন ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যের সিনেটর জেডি ভ্যান্সকে। আগামীতে ট্রাম্প বিজয়ী হলে তিনিই হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সে সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর সমালোচকদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন জেডি ভ্যান্স। ওই বছর এক সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স বলেছিলেন, আমি কখনই ট্রাম্পের লোক নই। আমি তাকে কখনই পছন্দ করিনি।’ ওই একই বছর ট্রাম্পকে হিটলারের সঙ্গেও তুলনা করেছিলেন ভ্যান্স। পরবর্তীতে তিনি হয়ে উঠেন ট্রাম্প ঘনিষ্ঠদের একজন।
রানিং মেট বেছে নেওয়ার বিষয়টি বেশ গোপন রেখেছিলেন ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে ভাইস প্রেসিডেন্টের ঘোষণা দেওয়ার মাত্র ২০ মিনিট আগে তিনি ভ্যান্সকে ফোনে নিজ সিদ্ধান্ত জানান। সিএনএন বলছে, ভ্যান্সের যোগাযোগ দক্ষতা রয়েছে। তিনি ট্রাম্পের জনতুষ্টিবাদী বিষয়গুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গত শনিবার হামলার শিকার হন ট্রাম্প। সে সময় তিনি এক সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন। গুলি ট্রাম্পের কান স্পর্শ করে বের হয়ে যায়। গোটা বিষয়টির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিভক্তির চিত্রটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে ওই ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ট্রাম্প দুই নেতাই মার্কিনিদের এক হওয়ার আহ্বান জানান।
এর আগে বাইডেন ট্রাম্পকে মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। গত সোমবার এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ট্রাম্পকে নিশানা বানানো উচিত গত সপ্তাহে এমন মন্তব্য করে তিনি ভুল করেছেন। সিক্রেট সার্ভিসের উপস্থিতি সত্ত্বেও ট্রাম্পকে হত্যার জন্য এত কাছে কীভাবে বন্দুকধারী আসতে পেরেছিলেন, তা খতিয়ে দেখতে স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
এদিকে, রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশন চলবে চার দিন। আগামী বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বক্তব্য রাখবেন। সে অনুষ্ঠানেই তার আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়ন গ্রহণ করার কথা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পাকাপাকিভাবে বাইডেনের রাজনৈতিক ও নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নামবেন তিনি।
হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অনেকটা নীরবই হয়ে গেছে বাইডেন বিতর্ক। ওই ঘটনার আগে বেশ সরবভাবেই অনেকে প্রশ্ন তুলছিলেন¬- বাইডেন আদৌ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় আছেন কি না? ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বাজে পারফরম্যান্সের পর অনেকেই তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
ট্রাম্পের রানিং মেট ভ্যান্সকে তার ‘ক্লোন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বাইডেন। গত সোমবার ওই মন্তব্য করেন তিনি। মতামত জরিপে এখনো কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। তবে নভেম্বরের নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসবেন, তা এখনই বলা মুশকিল। সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন।