ঢাকা ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫
English

মায়ানমারে ড্রোন হামলায় ১৫০ রোহিঙ্গা নিহত

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১০ এএম
মায়ানমারে ড্রোন হামলায় ১৫০ রোহিঙ্গা নিহত
ছবি : সংগৃহীত

মায়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্য রাখাইনে ড্রোন হামলায় শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ১৫০-এর বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। তারা দল বেধে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য অপেক্ষারত ছিলেন। বার্তা সংস্থা এপি এই তথ্য জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক ভুক্তভোগীর বরাতে জানিয়েছে নিহতের সংখ্যা ২০০-এর কম হবে না। তারা আরও জানিয়েছে, লাশের স্তূপের আশপাশে স্বজনদের হন্যে হয়ে খুঁজছেন দলের অন্য সঙ্গীরা। গত সোমবার (৫ আগস্ট) ড্রোন হামলার ঘটনাটি ঘটে।

তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী গত শুক্রবার রয়টার্সের কাছে অভিযোগ করেন, এই হামলার জন্য আরাকান আর্মি দায়ী। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। প্রাণঘাতী এই হামলার জন্য আরাকান আর্মি এবং মায়ানমারের সামরিক বাহিনী একে অপরের ওপর পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছেন।

হামলায় ঠিক কতজন মারা গেছেন এবং এর জন্য কারা দায়ী, তা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কাদার ভেতর অসংখ্য লাশ পড়ে রয়েছে। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাদের স্যুটকেস ও ব্যাগগুলো। তিন ভুক্তভোগী দাবি করেছেন, হামলায় অন্তত দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, তিনি অন্তত ৭০টি লাশ দেখেছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া স্থানটি মায়ানমারের উপকূলীয় শহর মংডু থেকে একটু দূরে। তবে ভিডিওটি কবে ধারণ করা হয়েছিল সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ ইলিয়াস (৩৫) রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামলায় তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং দুই বছর বয়সী কন্যা গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ড্রোন যখন ভিড়ে আঘাত করে, তিনি তখন সীমান্তে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সামসুদ্দিন (২৮) জানিয়েছেন, তিনি তার স্ত্রী ও নবজাতক সন্তানকে নিয়ে কোনো মতে বেঁচে গিয়েছেন। তিনি বলেন ‘কিছু মানুষ আঘাতের যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন।’

পাকিস্তানে সন্দেহভাজন বেলুচদের ৯০ দিন আটকের কালো আইন পাশ

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম
পাকিস্তানে সন্দেহভাজন বেলুচদের ৯০ দিন আটকের কালো আইন পাশ
ছবি: সংগৃহীত

এখন থেকে সন্দেহভাজন বেলুচদের ৯০ দিন আটকে রাখতে পারবে পাক সেনা ও আইএসআই। কোনও বেলুচ নাগরিকদের অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি  নির্দোষ নয়, বরং সন্দেহ হলেই দোষী বলে ধরে নেওয়া হবে। 

বুধবার (০৪ জুন) পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে এ-সংক্রান্ত একটি আইন পাস হয়েছে। ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী (বেলুচিস্তান সংশোধনী) আইন-২০২৫’ নামের এই আইনে বলা হয়, বেলুচিস্তানের কোনো নাগরিককে ‘যুক্তিসংগত সন্দেহের’ ভিত্তিতেই আটক করা যাবে এবং তদন্তের স্বার্থে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ছাড়াই আটক রাখা যাবে তিন মাস পর্যন্ত।

শুক্রবার (০৬ জুন) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। একই বার্তা দিয়েছেন দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বরাও।

এই বিতর্কিত আইন কোনো বিরোধিতা ছাড়াই প্রাদেশিক পরিষদে পাস হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রদেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্ব বেলুচিস্তানের দীর্ঘদিনের সহিংস সংকট মোকাবিলায় কার্যকর কোনো সমাধান খুঁজে পাচ্ছে না। তাই এই ধরনের কঠোর আইনকেই হাতিয়ার হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, এই আইনের মাধ্যমে কি আদৌ সমস্যার সমাধান সম্ভব, না কি আগুনে ঘি ঢালা হবে?

এই সংশোধনী আইন কার্যত রাষ্ট্রীয় নির্যাতনকে বৈধতা দেয় বলেই মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। আইনে যেভাবে ‘যুক্তিসংগত সন্দেহের’ ভিত্তিতে কাউকে আটক করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া কিংবা আটক ব্যক্তির অধিকার রক্ষার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

এ ছাড়া, এই আইনে সামরিক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে (সেনা ও আইএসআই) স্থানীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আটকাদেশ জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। 

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এতে আইনের শাসনের মূল ভিত্তি—বিচার বিভাগের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বেসামরিকদের পুলিশি কাজে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। আর বেলুচিস্তানে রাজনৈতিক কারণে মানুষকে আগেও টার্গেট করা হয়েছে। 

এসব কারণে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এই আইনটির অপব্যবহার হবেই। এর ফলে যে রাগ ও অসন্তোষ বাড়বে, তা বেলুচিস্তানের সমস্যাগুলোকে আরও জটিল করে তুলবে।

পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, তিন মাস পর্যন্ত বিনা অভিযোগে আটক রাখার বিধান মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। এটি ব্যক্তির স্বাধীনতা, বিচার প্রক্রিয়ার ন্যায্যতা এবং মর্জিমাফিক গ্রেপ্তার থেকে সুরক্ষার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।

কমিশন আরও জানায়, যৌথ তদন্তের ক্ষেত্রে সেনা কর্মকর্তাদের রাখা এবং সন্দেহভাজনের মতাদর্শ ও মানসিক অবস্থা মূল্যায়নের দায়িত্ব তাদেরই দেওয়া হয়েছে। এটি মারাত্মক উদ্বেগের বিষয়। এতে আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগের পরিবর্তে দমনমূলক আচরণের ঝুঁকি বাড়বে।

দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি রাষ্ট্র এই ধরনের আইন বাস্তবেই প্রয়োগ করতে চায়, তাহলে অন্তত বেলুচ জনগণের দীর্ঘদিনের দাবিগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। যেমন—প্রত্যেক আটকাদেশের লিখিত নথি থাকা জরুরি, বিচারিক ও বেসামরিক তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করা, আটক ব্যক্তির পরিবারকে তার অবস্থান ও আইনি অবস্থা জানানো। এসব পদক্ষেপ অন্তত আইনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতো।

এইচআরসিপি প্রাদেশিক সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, তারা যেন এই আইনটি আবার ভেবে দেখে এবং নিশ্চিত করে, এটি পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির (আইসিসিপিআর) অধীনে পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

সুলতানা দিনা/

ট্রাম্পকে টেক্কা দিতে মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
ট্রাম্পকে টেক্কা দিতে মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’
ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধের মধ্যে টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) নিজের এক্স-একাউন্টে এই মার্কিন ধনকুবের একটি পোল পোস্ট করে তার ২২ কোটি অনুসারীকে জিজ্ঞাসা করেন তারা কি মনে করেন যে, ‘আমেরিকাতে এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করার সময় এসেছে যা আসলে মধ্যবর্তী ৮০%-এর প্রতিনিধিত্ব করে।’

এর একদিন পর শুক্রবার (০৭ জুন), মাস্ক জানান, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ শতাংশ মানুষ এই ধারণাটিকে সমর্থন করেছেন। এরপর তিনি আবার পোস্ট করেন, ‘এটাই ভাগ্য!’ 

এরপর মাস্ক একজন তার এক অনুসারীর পরামর্শে দলের নাম ‘আমেরিকা পার্টি’ রাখার পরামর্শ দেন। নামটি আমেরিকা প্যাকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাস্ক এই রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ২০২৪ সালে ট্রাম্প এবং অন্যান্য রিপাবলিকান প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে ২৩৯ মিলিয়ন ডলার নির্বাচনী তহবিল প্রদান করে।

নতুন রাজনৈতিক দল শুরু করা বলা যতটা সহজ, করা ততটাই সহজ হবে। তবে ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান দল এবং কিছু বৃহৎ তৃতীয় পক্ষের ইতিমধ্যেই প্রায় প্রতিটি রাজ্যে ব্যালট পেপার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।  তাই প্রতিযোগিতার ময়দানে আসতে হলে একটি নতুন দলকে তার প্রার্থীদের ব্যালটে আনার জন্য রাজ্য-ভিত্তিক নিয়মের শর্ত পূরণ করেই আসতে হবে। 

সেক্ষেত্রে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক -আইনত আমেরিকা পিএসিতে সীমাহীন অর্থ ঢালতে পারবেন কারণ এটি একটি স্বাধীন পিএসি হিসাবে সংগঠিত। ফেডারেল নির্বাচন কমিশনের ২০২৫-২০২৬ সালের ফেডারেল নির্বাচনের জন্য অবদানের সীমা অনুসারে, আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক দলগুলোতে অনুদানের পরিমাণ ১ মিলিয়ন ডলারেরও কম। যা ইলন মাস্কের হাতের ময়লা!

এদিকে, নতুন রাজনৈতিক দল শুরু করার বিষয়ে মাস্কের চিন্তাভাবনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, তিনি রাজনীতিতে জড়িত থাকার পরিকল্পনা করছেন এবং ট্রাম্পের প্রভাবকে টেক্কা দিতে চান। 

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মাস্ক নিজের এক্স একাউন্টে এক পোস্টে কংগ্রেসের রিপাবলিকানদের উদ্দেশ্যে রীতিমতো স্পষ্ট প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘যারা এখনও নিশ্চিত নন যে তিনি তার পক্ষে থাকবেন নাকি রাষ্ট্রপতির পক্ষে থাকবেন, তারা সিদ্ধান্ত নিন। ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৩.৫ বছর বাকি আছে, কিন্তু আমি ৪০ বছর ধরে থাকব।’ 

গত বছর ট্রাম্পকে জোরালোভাবে সমর্থন করলেও এবার মাস্ক তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। গত মার্কিন নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পপন্থী একটি রাজনৈতিক গ্রুপ গঠন ও তাতে ২৬০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছিলেন। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প তাকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি’ (ডোজ) এর সহ-প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। বিশেষ এই বিভাগের কাজ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অকার্যকর ব্যয় কমানো এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অবসান ঘটানো।

কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদে জড়িয়ে এই সবকিছু থেকে সরে এসেছেন ইলন মাস্ক। এই পরিস্থিতির মধ্যেই মাস্ক তার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ২২ কোটি অনুসারীর মধ্যে একটি জরিপ চালান। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন—‘আমেরিকায় কি এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করার সময় এসেছে যা আসলে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা ৮০ ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে?’

এই জরিপে ৫৬ লাখের বেশি সাড়া পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই মাস্কের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন।

এদিকে মাস্ক- ট্রাম্পের বিরোধ এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সবচেয়ে বেশি চর্চার বিষয়। মাস্ক সেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জেফরি অ্যাপস্টেইনের কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনেন এবং তার অভিশংসনের দাবিও জানান। 

এই বিরোধ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ বলেন, ‘এই দুটি বিশাল ইগো একসঙ্গে থাকার জন্য জন্মায়নি। এই বিচ্ছেদ বহু আগেই হওয়া উচিত ছিল।’

সুলতানা দিনা/

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও বর্তমান সিনেটর গুলিবিদ্ধ

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও বর্তমান সিনেটর গুলিবিদ্ধ
ছবি:সংগৃহীত

কলম্বিয়ার আগামী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার (৭ জুন) রাজধানী বোগোতায় এক নির্বাচনি প্রচারসভায় তার ওপর এই হামলা হয়। 

রবিবার (০৮ জুন) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই খবর জানায়।

হামলার শিকার সিনেটর উরিবে বিরোধীদল কনজারভেটিভ ডেমোক্র্যাটিক সেন্টার পার্টির সদস্য। তার দল এক বিবৃতিতে জানায়, রাজধানীর ফন্তিবন এলাকায় একটি পার্কে প্রচারণাকালে তাকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। দলটি এটিকে একটি গুরুতর হামলা বলে বর্ণনা করলেও তার শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত জানায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে উরিবেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে এবং লোকজনকে তাকে সাহায্য করতে দেখা যায়।

শনিবার এই হামলার পর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী এবং সরকারি ও দলীয় কর্মকর্তারা।

কলম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় জানায়, ১৫ বছরের কম বয়সী এক কিশোরকে একটি ৯মিমি গ্লক পিস্তলসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলার পেছনে কারা আছে তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

উরিবের স্ত্রী মারিয়া ক্লাউদিয়া তার স্বামীর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে জানান, তিনি জীবনের জন্য লড়াই করছেন।

এই ঘটনার পর রাজধানীর সান্তা ফে ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভিড় করেন সমর্থকরা। কেউ কেউ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনায় অংশ নেন। কেউ কলম্বিয়ার পতাকা হাতে একাত্মতা জানান।

সুলতানা দিনা/

ড. ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করার অনুরোধ টিউলিপ সিদ্দিকের

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম
ড. ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করার অনুরোধ টিউলিপ সিদ্দিকের
সাবেক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগামীকাল (৯ জুন) যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন। এই সফরের সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এই চিঠিতে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সৃষ্ট ‘ভুল বোঝাবুঝি’তে চলমান বিতর্ক নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ চেয়েছেন।

চিঠিতে টিউলিপ লিখেন, তিনি আশা করেন এই বৈঠক দুর্নীতি দমন কমিশনের সৃষ্টি করা ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সাহায্য করবে।

রবিবার (৮ জুন ) বৃটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

পাঠকদের উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি এখানে প্রায় হুবহু তুলে ধরা হলো। এছাড়া এই প্রতিবেদনের নিচে দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনের লিংক সংযুক্ত করে দেওয়া থাকছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি চিঠি লিখেছেন টিউলিপ। আগামী সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি রাজা চার্লস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ড. ইউনূসের এই সফরকালে তার সঙ্গে একটি আলোচনার সুযোগ চেয়েছেন টিউলিপ।’

চিঠিতে টিউলিপ লিখেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; যিনি আমার খালা, তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ও জড়িত থাকার বিষয়ে আমাকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে - দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগ থেকে এই যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে তা এই সাক্ষাৎ দূর করতে পারবে বলে আমি আশা করি।’

তিনি আরও লিখেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক। আমার জন্ম লন্ডনে এবং আমি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে আসছি।’

টিউলিপ সিদ্দিক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমার হৃদয়ের টান রয়েছে ঠিকই কিন্তু সেখানে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। আমি ওই দেশে জন্মাইনি, থাকি না, এমনকি সেখানে আমার পেশাগত জীবনেরও কোনো সম্পর্ক নেই।’

টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘দুদককে আমি আগেও এ বিষয়ে পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার লন্ডনের আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগে আগ্রহ না দেখিয়ে বরং তারা বারবার ঢাকার একটি ঠিকানায় এলোমেলোভাবে চিঠিপত্র পাঠাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কাল্পনিক তদন্তের প্রতিটি ধাপ গণমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথচ আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি লেখা চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক আরও বলেন, ‘আমি জানি, আপনি নিশ্চয়ই বোঝেন; এই প্রতিবেদনগুলোর কারণে আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও আমার দেশের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেটি নিশ্চিত করা কতটা জরুরি।’

টিউলিপের দাবি, তিনি তার খালা শেখ হাসিনাবিরোধীদের পরিচালিত একটি ‘রাজনৈতিক অপপ্রচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণের’ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন।

ইতোমধ্যে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে ব্রিটিশ মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে টিউলিপকে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গার্ডিয়ানের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা সরকারি অবকাঠামো খাত থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন কি না - এ অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। এই অভিযোগের সূত্রপাত করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

দুদক এবং একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক বা তার মা শেখ রেহানা ‘ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে’ ৭ হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের একটি জমি দখল করেছেন।

যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তার আইনজীবীরা এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।

এদিকে গত মাসে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

তবে টিউলিপ জানান, এমন কোনো পরোয়ানা বা আদালতে হাজিরার আদেশ সম্পর্কে তার জানা নেই। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ‘২ বি’ প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতাভুক্ত দেশ হওয়ায়, যুক্তরাজ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে বাংলাদেশ থেকে স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেখাতে হয় - যা মন্ত্রী বা বিচারক পর্যায়ে যাচাই করে অনুমোদন দিতে হয়।

গত বছর যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠার পর টিউলিপ নিজেই ব্রিটিশ মন্ত্রীদের আচরণবিধি তদারক কর্মকর্তা লরি ম্যাগনাসের কাছে রিপোর্ট করেন। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

লরি ম্যাগনাস জানান, তদন্তে তিনি কোনো প্রমাণ পাননি যে টিউলিপের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জিত। তবে তিনি মত দেন, টিউলিপের উচিত ছিল - বাংলাদেশে তার পারিবারিক সম্পৃক্ততা থেকে উদ্ভূত ভাবমূর্তির ঝুঁকির বিষয়ে আগে থেকেই আরও সতর্ক থাকা।

এ ছাড়াও এই তদন্তে ২০১৩ সালে মস্কোতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি পারমাণবিক চুক্তির সময় টিউলিপ সিদ্দিকের উপস্থিতি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। সে সময় টিউলিপের বিরুদ্ধে এই চুক্তিটির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

তবে টিউলিপ জানান, তিনি তখন মস্কোতে পর্যটক হিসেবে অবস্থান করছিলেন। পরে তার এই ব্যাখ্যা যুক্তিযুক্ত মনে করে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তবুও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি ও সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, এসব বিতর্ক কিয়্যার স্টারমারের নতুন সরকারের জন্য ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি করছে।  সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

সুলতানা দিনা/অমিয়/

পাকিস্তানের নূর খান বিমানঘাঁটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে’

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
পাকিস্তানের নূর খান বিমানঘাঁটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে’
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ইমতিয়াজ গুল

পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ইমতিয়াজ গুলের দাবি, রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি ‘আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে’। তার এ মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি ভিডিওতে ইমতিয়াজ গুল অভিযোগ করেন, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানঘাঁটিটি ‘আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে, এমনকি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও এখানে হস্তক্ষেপের অনুমতি নেই’।

ভারতের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হওয়া অপারেশন সিঁদুরের সময় এই ঘাঁটিতে ভারতের নির্ভুল হামলার কয়েকদিন পর এই দাবি করা হলো।

ইমতিয়াজ গুলের মতে, ঘাঁটিতে প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের বিমান দেখা যায় এবং তাদের কার্যক্রম বা কী ধরণের পণ্য আসে সে সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মধ্যে এই ব্যবস্থাটি অপ্রকাশিত চুক্তির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় বলে মনে হচ্ছে। এটি জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং সামরিক স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়।

গুল তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং এর সামরিক অভিযানের স্বচ্ছতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

নূর খান বিমানঘাঁটিতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর। এই ঘাঁটি পাকিস্তানের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডির কাছে অবস্থিত। এই বিমানঘাঁটিটি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা কৌশলগত পরিকল্পনা বিভাগেরও কাছাকাছি অবস্থিত।

এই ঘাঁটিতে পাকিস্তানের প্রধান বিমান পরিবহন স্কোয়াড্রন রয়েছে এবং দেশের বিমান চলাচলের জন্য কমান্ড সেন্টার হিসেবে কাজ করে।

ভারতের অপারেশন সিঁদুর নূর খান বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি ছিল পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের প্রতিশোধমূলক হামলা। এই অভিযানে বিমানঘাঁটির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ দাবির বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নেই এখন পর্যন্ত। ইমতিয়াজ গুলের দাবির বিষয়ে পাকিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ বা অস্বীকারও করা হয়নি। 

তবে, ভিডিওটি পাকিস্তানের সামরিক অবকাঠামোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস

অমিয়/