ঢাকা ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অ্যারিজোনায় নির্বাচনি প্রচারে তোপের মুখে কমলা

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৪৭ এএম
অ্যারিজোনায় নির্বাচনি প্রচারে তোপের মুখে কমলা
ডেমোক্রেটিক পার্টি মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে নিজ দলের অবস্থান শক্ত করতে নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডেমোক্রেটিক পার্টি মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টি মনোনীত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

শুক্রবার (৯ আগস্ট) পশ্চিমের রাজ্য অ্যারিজোনায় রানিংমেট টিম ওয়ালজকে নিয়ে লোকারণ্য ভেন্যুতে নির্বাচনি সমাবেশ করেন কমলা। সেখানে ফিলিস্তিনপন্থি ও উদারপন্থি ভোটারদের তোপের মুখেও পড়তে হয় তাকে। 

অ্যারিজোনা এমনিতে ডেমোক্রেটিক পার্টি অধ্যুষিত রাজ্য হিসেবে পরিচিত। গত নির্বাচনে রিপাবলিকানদের সঙ্গে এই অঙ্গরাজ্যে পপুলার ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও ১১টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সবকটিই পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পও দলের নির্বাচনি র‌্যালিতে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চলীয় আরেক রাজ্য মন্টানায়। 
সম্প্রতি নিজের রানিং মেট হিসেবে মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজের নাম ঘোষণা করেন কমলা। এর পরই এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী নির্বাচনি প্রচার চালাতে তাকে সঙ্গে নিয়ে এক সপ্তাহের সফর শুরু করেছেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি পশ্চিমের সাত অঙ্গরাজ্যে প্রচার চালাতে চান। 

গতকাল কমলা অ্যারিজোনায় প্রচার চালানোর সময় লাতিন নাগরিক অধিকার সংস্থা লুলাক আদেলান্তের রাজনৈতিক কার্যনির্বাহী কমিটির সমর্থন পেয়েছেন। সংস্থাটির পক্ষ থেকে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম। লুলাক আদেলান্তে দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন লাতিন নাগরিক অধিকার সংস্থা।

সমাবেশের জন্য নির্ধারিত ভেন্যুতে ১৫ হাজারের বেশি সমর্থক কমলাকে স্বাগত জানান। সেখানে তিনি কিছু ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীর তোপের মুখে পড়েন যারা কমলার ভাষণে বাধা দেন। কমলা উদারপন্থি ভোটারদেরও ক্ষোভের মুখে পড়েন, তারা গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনকে সমর্থনের জন্য কমলার নিন্দা করেন।

গাজা যুদ্ধে কমলার ভূমিকায় অসন্তুষ্ট ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (বাইডেন) এবং আমি প্রতিদিন পুরো সময়জুড়ে একটি ফলপ্রসূ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও বন্দিদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছি। যাই হোক, আমি আপনাদের আবেদনকে সম্মান করি, কিন্তু আমরা আজ এখানে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে এসেছি।’ সূত্র: রয়টার্স

গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১০০, আহত ৪৪০

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০১:০৫ এএম
গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১০০, আহত ৪৪০
ইসরায়েলি হামলায় নিহত স্বজনদের মৃতদেহ নিয়ে গাজার আস শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্না করছেন মৃতদের স্বজনরা। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর আল জাজিরার।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আগের ইসরায়েলি হামলায় আরও দুইজনের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

চলতি বছরের ১৮ মার্চে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েল ৪ হাজার ৩৩৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং আহত করেছে ১৩ হাজার ৩০০ জনকে।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের সতর্ক করে দিয়েছে, যেন তারা যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত মানবিক সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোর আশেপাশের সড়কের কাছে না যায়। এসব ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র একদিনের জন্য বন্ধ থাকবে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বানে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোট দিতে যাচ্ছে। তবে এই প্রস্তাবটিতে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের চালানো হামলায় গাজায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৬০৭ জনে। আহত হয়েছেন এক লাখ ২৫ হাজার ৩৪১ জন। সূত্র: আল জাজিরা

 

বেঙ্গালুরুতে আইপিএল উদযাপনে পদদলিত হয়ে নিহত ১১

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
বেঙ্গালুরুতে আইপিএল উদযাপনে পদদলিত হয়ে নিহত ১১
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে আইপিএলের জয় উদযাপন করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৭ জন।

বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় শহরের এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ভক্তদের ব্যাপক ভিড়ের ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, আইপিএলে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের পর র‍য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) দলের খেলোয়াড়দের এক নজর দেখতে হাজার হাজার সমর্থক স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমান। জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল রূপ ধারণ করে। একাধিক প্রবেশপথে জনতা ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে। এ সময় হুড়োহুড়ির মধ্যে পদদলনের ঘটনা ঘটে।’

কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার বলেন, ‘আরসিবির আইপিএল জয়ের আনন্দ এক মুহূর্তেই শোকাবহ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। দলের প্রতি ভালোবাসা থাকুক, কিন্তু জীবনের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই হতে পারে না। আমি সবাইকে নিরাপদে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবেশের জন্য টিকিট ছাড়াই বহু মানুষ স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ দেয়াল ও বেড়া বেয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পুলিশ বারবার অনুরোধ করলেও ভক্তরা তা না শুনে আরও অস্থির হয়ে ওঠেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, মেট্রো স্টেশন ও রাস্তার ভিড় রাজনৈতিক সমাবেশ বা উৎসবের মিছিলে রূপ নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জনসমাগমের পূর্বপ্রস্তুতির অভাব ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকাই এ ধরনের দুর্ঘটনার মূল কারণ। সূত্র: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে

সুমন/

স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র বানিয়ে গ্রেপ্তার সেই চিকিৎসকই বেছে নিলেন স্বেচ্ছামৃত্যু

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র বানিয়ে গ্রেপ্তার সেই চিকিৎসকই বেছে নিলেন স্বেচ্ছামৃত্যু
চিকিৎসক ফ্লোরিয়ান উইলেট। ছবি: সংগৃহীত

স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র সারকো পডের (বেদনাহীন মৃত্যু ঘটানোর যন্ত্র) মাধ্যমে সংঘটিত বিশ্বের প্রথম স্বেচ্ছামৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক ফ্লোরিয়ান উইলেটও স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করে নিলেন। 

৫ মে জার্মানিতে তিনি বিশেষ এই পদ্ধতিতে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সুইজারল্যান্ডের এক জঙ্গলে সারকো পডের মাধ্যমে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেন ৬৪ বছর বয়সী এক নারী। সে সময় ঘটনাস্থলে ওই নারী ছাড়া উপস্থিত থাকা একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন ফ্লোরিয়ান উইলেট। 

এ ঘটনায় সেসময় বেশ তোলপাড় তৈরি হয়। ঘটনার পরপরই উইলেটকে আটক করে সুইস পুলিশ। যদিও শেষ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আনেনি আদালত। তবে, তদন্তের জন্য তাকে ৭০ দিনের বিচারপূর্ব আটক রাখা হয়।

সারকো পড বা সুইসাইড পড হলো বিশেষভাবে নকশা করা ক্যাপসুল আকৃতির একটি যন্ত্র, যা ব্যবহার করে দ্রুত ও ‘বেদনাহীন’ মৃত্যু নিশ্চিত করা যায়। 

এটি দেখতে একটি ছোট, ক্যাপসুলের মতো, যেখানে একজন ব্যক্তি শুয়ে থাকার মতো জায়গা রয়েছে। এটির মধ্যে নিয়ন্ত্রিত অক্সিজেনের পরিবেশ তৈরি করা হয়। ক্যাপসুলে ঢোকার পর ব্যবহারকারী একটি বোতাম চাপলেই ভেতরের অক্সিজেন দ্রুত কমিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে পূর্ণ হয়ে যায়। এতে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তবে যেহেতু নাইট্রোজেন স্বাদ ও গন্ধহীন গ্যাস, তাই এতে ঘুমিয়ে পড়ার মতো মৃত্যু হয়—ব্যথাহীন, নিঃশব্দ ও দ্রুত—এমনটাই দাবি উদ্ভাবকের।

ডা. উইলেটের আত্মহত্যা-অধিকার সংগঠন দ্য রিসোর্ট এক বিবৃতিতে জানায়, আটক থাকার সময়ের মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন তিনি। জীবনের শেষ সময়টুকু তীব্র মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে কেটেছে। মৃত্যুর আগে একবার একটি ভবনের তৃতীয় তলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। 

পরে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ হন। এ ঘটনার পর থেকেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল তাকে।

পরবর্তীতে, ৫ মে জার্মানিতে সহায়ক মৃত্যুর মাধ্যমে তার জীবনাবসান ঘটে। সুইসাইড পডের উদ্ভাবক এবং বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছামৃত্যুর প্রবক্তা ফিলিপ নিটশকে বিবিসিকে বলেন, ‘জীবনের শেষ কয়েক মাসে ফ্লোরিয়ান উইলেট এমন সব মানসিক ভার বহন করেন, যা একজন মানুষের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও অসহনীয়।’

সুইস প্রসিকিউটর অফিস এখনো এই মৃত্যুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

‘সার্কো পড’ নামে পরিচিত ওই যন্ত্রটি ড্রাগ কিংবা চিকিৎসকের সহায়তা ছাড়াই স্বেচ্ছামৃত্যু সম্ভব করে তোলে—এমনটাই দাবি নির্মাতাদের। তবে সমালোচকেরা আশঙ্কা করেন, প্রযুক্তিনির্ভর এই যন্ত্র আত্মহত্যাকে ‘আকর্ষণীয়’ করে তুলতে পারে এবং এতে চিকিৎসকদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হয়, যা বিপজ্জনক।

সুইজারল্যান্ডে নির্দিষ্ট কিছু শর্তে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি থাকলেও তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এবং যুক্তরাজ্যে এখনো এই পদ্ধতি অবৈধ। তবু প্রতি বছর বহু মানুষ সুইজারল্যান্ডে গিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছেন।

সুলতানা দিনা/

ছেলের বিলাসী জীবনযাত্রার খবরে বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:১৬ পিএম
ছেলের বিলাসী জীবনযাত্রার খবরে বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গোলিয়ার ক্ষমতাচ্যু প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামসরাইন ওইয়ুন-এর্ডেন।ছবি:সংগৃহীত

ছেলের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার জেরে ব্যাপক গণবিক্ষোভ ও দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামসরাইন ওইয়ুন-এর্ডেনকে। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) মঙ্গোলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়,পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে পর্যাপ্ত সমর্থন না পাওয়ার পর মঙ্গলবার ( ৩ জুন)ভোরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। এছাড়া ওয়াশিংটনে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস এটি নিশ্চিত করেছে ।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলের অযৌক্তিক ব্যয়ের খবর ভাইরাল হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের পর এই ভোটটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান।

মঙ্গলবার (৩ জুন) পার্লামেন্টে আস্থাভোটে হেরে যাওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন। ভোটে অংশ নেওয়া ৮৮ জন এমপির মধ্যে ৪৪ জন তার পক্ষে ভোট দিলেও ৩৮ জন ছিলেন তার বিপক্ষে। ১২৬ আসনের পার্লামেন্টে ক্ষমতায় থাকতে হলে তার অন্তত ৬৪ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। 

আস্থাভোটে হেরে যাওয়ার পর এক বিবৃতিতে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি, যুদ্ধ ও শুল্কের মতো কঠিন সময়ে জাতির সেবা করতে পেরে গর্বিত।’

সম্প্রতি ওইয়ুন-এর্ডেনের ছেলের এবং তার বান্ধবীর বিলাসী জীবনযাত্রা র ছবি ভাইরাল হলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা।

আলোচিত সেই ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়, ওইয়ুন-এর্ডেনের ছেলের বান্ধবী একটি কালো ডিওর ব্যাগ ও একাধিক ব্যয়বহুল কেনাকাটার ব্যাগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, সঙ্গে ক্যাপশন: ‘হ্যাপি বার্থডে টু মি’।            

এই ছবিগুলো প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।

এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে শত শত তরুণ বিক্ষোভে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাও। যদিও ওইয়ুন-এর্ডেন দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ আনেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ওইয়ুন-এর্ডেনের শাসনামলে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতির চিত্র আরও খারাপ হয়েছে। গত বছর ১৮০টি দেশের মধ্যে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান ছিল ১১৪তম।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯০-এর দশকে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে রাশিয়া ও চীনের মাঝে অবস্থিত দেশটি। কিন্তু দুর্নীতি দেশটির এখনও অন্যতম প্রধান সমস্যা।

মঙ্গোলিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ নিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের ‘তৃতীয় প্রতিবেশী’ হিসেবে বিবেচনা করে।

সুলতানা দিনা/

যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক ছত্রাক’ পাচারের অভিযোগে চীনা যুগল গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক ছত্রাক’ পাচারের অভিযোগে চীনা যুগল গ্রেপ্তার
ছবি:সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বিপজ্জনক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে ইউনকিং জিয়ান ও জুনিয়ং লিউ নামে দুই চীনা নাগরিক গ্রেপ্তার করেছে । এছাড়া ভিসা জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে এই দুই  চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) মিশিগানের বিচার বিভাগ দুই চীনা গবেষকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিপজ্জনক ছত্রাক পাচার চেষ্টার অভিযোগ ঘোষণা করে। 
মঙ্গলবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। 

যদিও চীন বলছে,যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আরও বেশি সংখ্যক চীনা শিক্ষার্থীকে দেশ থেকে দূরে রাখার  কৌশল হিসেবে এই মামলাটি সাজিয়েছে।

গত জুলাই মাসে, ৩৩ বছর বয়সী ইউনকিং জিয়ান এবং ৩৪ বছর বয়সী জুনিয়ং লিউ নামের  এই দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়, মি. লিউ ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম ছত্রাকের ছোট ব্যাগ বহন করে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এই ছত্রাক গম, বার্লি, ভুট্টা এবং চাল জাতীয় ফসলের গাছেকে পঙ্গু করে দিতে পারে।

গত বছর ৩২টি রাজ্যে কৃষি বিভাগের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ফসলের মাথার ক্ষয় রোগটি আমেরিকান কৃষকদের কাছে একটি পরিচিত সমস্যা। এই ছত্রাক শীতকালীন গম ফসলের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর হতে পারে।

মিস জিয়ানকে গ্রেপ্তার করে ডেট্রয়েটের ফেডারেল আদালতে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে মিঃ লিউ চীনে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

চীনা নাগরিকদের জন্য শিক্ষার্থী ভিসা ‘আক্রমণাত্মকভাবে’ বাতিল করার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন প্রশাসন বলছে, এই ধরনের ছাত্ররা তাদের দেশের স্বার্থে আমেরিকান ল্যাব থেকে সংবেদনশীল প্রযুক্তি বা বাণিজ্য গোপনীয়তা চুরি করার মতো কাজ করার ঝুঁকিতে থাকে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়ান মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতেন। আর তার প্রেমিক লিউ কাজ করতেন একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের বিরুদ্ধে যৌথ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে এফবিআই, মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ফেডারেল তদন্তে অভিযোগ আনা হলো। গত সপ্তাহে, অ্যান আর্বার-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজন চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে অবৈধভাবে ভোট দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম এফ. গর্গন জুনিয়র এক বিবৃতিতে বলেন, এই চীনা নাগরিকদের মধ্যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন অনুগত সদস্যও রয়েছে। তাদের কার্যকলাপ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।

মূলত, জিয়ান ও লিউকে ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম নামক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে এফবিআই, যা বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে সম্ভাব্য কৃষি সন্ত্রাসবাদের অস্ত্র হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ। এ চীনা যুগল তাদের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষাগার ব্যবহার করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন বলেও জানান মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম এফ. গর্গন জুনিয়র।

কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিকারক এই ছত্রাক মাথার ক্ষয় সৃষ্টি করে, যা গম, বার্লি, ভুট্টা ও ধানের একটি রোগ এবং প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির জন্য দায়ী এটি। ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারামের বিষাক্ত পদার্থ মানুষ ও গবাদি পশুর বমি, লিভারের ক্ষতি এবং প্রজনন ত্রুটি সৃষ্টি করে।

অভিযোগে বলা হয়, চীনে এই রোগজীবাণু নিয়ে কাজের জন্য জিয়ানকে তহবিল প্রদান করেছিল চীনা সরকার। তার প্রেমিক লিউ একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত যেখানে সে একই জীবাণু নিয়ে গবেষণা করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সুলতানা দিনা/