গাজায় স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে একশরও বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। শনিবার (১০ আগস্ট) গাজার হামাসশাসিত সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের কমান্ড সেন্টার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। হামলা যখন হয় তখন মানুষ ফজরের নামাজ পড়ছিলেন। এ কারণেও হতাহত বেশি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সব লাশ উদ্ধার করতে পারেনি চিকিৎসাকর্মীরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তাৎক্ষণিকভাবে অনেক তথ্য দেয়নি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিবৃতিতে বলছে, তারা যেখানে হামলা চালিয়েছে, সেখানে হামাসের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার ছিল। ওই স্থানটিতে লুকিয়ে থেকে হামাসযোদ্ধারা লড়াই করছিল।
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তারা বেসামরিকদের হতাহত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। এর মধ্যে সুনিপুণ আক্রমণ, বিমান থেকে নজরদারি, গোয়েন্দা পদক্ষেপ সবই ছিল। গাজা থেকে আসা হতাহতের বিষয়ে তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
হামাস জানিয়েছে, হামলাটি মর্মান্তিক ছিল এবং এটি বড়মাপের একটি সীমা লঙ্ঘন। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের যোদ্ধারা বেসামরিক মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্কুল, হাসপাতাল ও মানবিক জোনগুলোতে হামলা চালিয়েছিল। আর এর মধ্য দিয়ে দেখা গেছে, গাজার বেসামরিকদের যুদ্ধ থামানোর কোনো ইচ্ছাই নেই।
মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দফার যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে লেবানন ও ইরানের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বড় ধরনের অস্থিরতা শুরু হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসবের মধ্যেই সামনে এলো এ খবর।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাস ইসরায়েলিদের জন্য হুমকি নয় এমনটা নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ শেষ করবেন না। আর যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য ১৫ আগস্ট প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।
হামাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা আলোচনার নতুন প্রস্তাব খতিয়ে দেখছেন। তবে সেটি নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। ১২০০ ইসরায়েলি প্রাণ হারান ওই ঘটনায়, সঙ্গে করে আড়াইশ জনের বেশি জিম্মিও নিয়ে আসে। পরে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল।
তবে ইসরায়েলি বাহিনী শুরু থেকেই নির্বিচার হামলা শুরু করে। পুরো গাজায় বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনা, স্কুল, হাসপাতালে হামলা চালায়। হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক।
যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৩২৯ জন সেনা নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, গাজায় যত মানুষ নিহত হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশই যোদ্ধা। হামাস নিজেদের কত যোদ্ধা নিহত হয়েছে, সে সম্পর্কিত কোনো সংখ্যা প্রকাশ করেনি। সূত্র: রয়টার্স