ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত শতাধিক

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৫১ এএম
স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত শতাধিক
ছবি: সংগৃহীত

গাজায় স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে একশরও বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। শনিবার (১০ আগস্ট) গাজার হামাসশাসিত সরকার এ তথ্য জানিয়েছে। 

এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের কমান্ড সেন্টার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। হামলা যখন হয় তখন মানুষ ফজরের নামাজ পড়ছিলেন। এ কারণেও হতাহত বেশি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

সব লাশ উদ্ধার করতে পারেনি চিকিৎসাকর্মীরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তাৎক্ষণিকভাবে অনেক তথ্য দেয়নি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিবৃতিতে বলছে, তারা যেখানে হামলা চালিয়েছে, সেখানে হামাসের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার ছিল। ওই স্থানটিতে লুকিয়ে থেকে হামাসযোদ্ধারা লড়াই করছিল। 

সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তারা বেসামরিকদের হতাহত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। এর মধ্যে সুনিপুণ আক্রমণ, বিমান থেকে নজরদারি, গোয়েন্দা পদক্ষেপ সবই ছিল। গাজা থেকে আসা হতাহতের বিষয়ে তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। 

হামাস জানিয়েছে, হামলাটি মর্মান্তিক ছিল এবং এটি বড়মাপের একটি সীমা লঙ্ঘন। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের যোদ্ধারা বেসামরিক মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্কুল, হাসপাতাল ও মানবিক জোনগুলোতে হামলা চালিয়েছিল। আর এর মধ্য দিয়ে দেখা গেছে, গাজার বেসামরিকদের যুদ্ধ থামানোর কোনো ইচ্ছাই নেই। 

মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দফার যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে লেবানন ও ইরানের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বড় ধরনের অস্থিরতা শুরু হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসবের মধ্যেই সামনে এলো এ খবর।   

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাস ইসরায়েলিদের জন্য হুমকি নয় এমনটা নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ শেষ করবেন না। আর যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য ১৫ আগস্ট প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।

হামাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা আলোচনার নতুন প্রস্তাব খতিয়ে দেখছেন। তবে সেটি নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। ১২০০ ইসরায়েলি প্রাণ হারান ওই ঘটনায়, সঙ্গে করে আড়াইশ জনের বেশি জিম্মিও নিয়ে আসে। পরে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। 

তবে ইসরায়েলি বাহিনী শুরু থেকেই নির্বিচার হামলা শুরু করে। পুরো গাজায় বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনা, স্কুল, হাসপাতালে হামলা চালায়। হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক।

যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৩২৯ জন সেনা নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, গাজায় যত মানুষ নিহত হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশই যোদ্ধা। হামাস নিজেদের কত যোদ্ধা নিহত হয়েছে, সে সম্পর্কিত কোনো সংখ্যা প্রকাশ করেনি। সূত্র: রয়টার্স 

ভারতে থাকার অনুমতি না পেলে মারা যাব: তসলিমা নাসরিন

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ পিএম
ভারতে থাকার অনুমতি না পেলে মারা যাব: তসলিমা নাসরিন
তসলিমা নাসরিন

ভারতে থাকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতে থাকার অনুমতি না পেলে আমি নিশ্চিত মারা যাব’। 

ভারতে নির্বাসিত তসলিমার ভিসার মেয়াদ গত জুলাইয়ে শেষ হয়ে যায়। মূলত সে দেশে তার ভিসার মেয়াদ না বাড়ায় তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘আজতক বাংলা’য় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তসলিমা বলেন, ‘আমি ভারতে থাকতে পছন্দ করি। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো কেন্দ্রীয় সরকার আমার ভিসার মেয়াদ বাড়ায়নি। ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি না। আমি জানি না, কার সঙ্গে কথা বলব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন? আমি কারও সঙ্গে কথা বলিনি। আমি কেবল অনলাইনে চেক করি। কিন্তু এখনো কোনো নিশ্চয়তা পাইনি।’

ভিসার মেয়াদ না বাড়ানোর পেছনে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি দায়ী কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এখানে একজন সুইডিশ নাগরিক হিসেবে থাকি। বাংলাদেশে বর্তমান টালমাটাল পরিস্থিতির আগেই আমার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। ২০১৭ সালেও এমন সমস্যা হয়েছিল কিন্তু সেই সময়ে সেটি প্রযুক্তিগত সমস্যাই ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ মনে করে আমার সঙ্গে সরকার ও নেতাদের ঘনিষ্ঠতা আছে, কিন্তু তা নয়। থাকার অনুমতি না পেলে আমি সত্যিই মারা যাব। এখন কোথাও যাওয়ার মতো অবস্থায় আমি নেই।’

তসলিমা নাসরিনের অভিযোগ তাকে দেশ থেকে উৎখাত করার ক্ষেত্রে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুজনেরই হাত রয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘তারা কেউই আমাকে বাংলাদেশে থাকতে দেননি। দুজনেই মৌলবাদকে মাথাচাড়া দিতে সাহায্য করেছেন।’

তসলিমা নাসরিনের একাধিক লেখা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হলে ১৯৯৪ সালে তিনি দেশ ছাড়েন। বেশ কয়েক বছর ইউরোপে থাকার পর তিনি ভারতে বসবাস শুরু করেন। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কলকাতায় ছিলেন। সেখানে নিষিদ্ধ করা হয় তার ‘দ্বিখণ্ডিত’ উপন্যাসটি। সরকারি চাপে শেষ পর্যন্ত কলকাতা ছাড়তে হয় তাকে। কিছু দিনের জন্য তিনি ভারতের জয়পুরে ছিলেন। তারপর দিল্লিতে বসবাস শুরু করেন। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

ইউক্রেনে রাশিয়ার রাতভর ড্রোন হামলা

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ এএম
ইউক্রেনে রাশিয়ার রাতভর ড্রোন হামলা
দূরপাল্লার শাহেদ ড্রোন

ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬৭টি দূরপাল্লার শাহেদ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, এর মধ্যে ৫৮টিকেই ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে তারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিমানবাহিনী বলেছে, রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপ এবং সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকা থেকে ড্রোনগুলো নিক্ষেপ করা হয়। এর ফলে ইউক্রেনের ১১টি ইউনিটেই বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলোকে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়।

অফিশিয়াল টেলিগ্রামে বেশ কয়েকটি ছবিসহ পোস্ট করে পার্লামেন্টের এক আইনপ্রণেতা আলাদা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এমনকি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পার্লামেন্ট ভবনের পাশে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। ছবিতে পার্লামেন্ট ভবনের কাছে মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অন্তত চারটি ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। একটি টুকরো বিল্ডিংয়ের প্রধান প্রবেশদ্বারের কাছে পড়েছিল।

২০২২ সাল থেকেই রাশিয়া ইরান নির্মিত শাহেদ ড্রোনগুলো ব্যাপক আকারে ইউক্রেনে হামলায় ব্যবহার করছে। সস্তা এবং কার্যকরী হওয়ায় এই ড্রোনগুলো ক্ষেপণাস্ত্রের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং ব্যয়বহুল। এ ছাড়া অনেক নিচ দিয়ে চলে এবং কম তাপ নির্গত করে বিধায় শাহেদ ড্রোন সহজে রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে।

কমলাকে ভোট দেবেন সাবেক রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ এএম
কমলাকে ভোট দেবেন সাবেক রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি

বর্ষীয়ান রিপাবলকান ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি বলেছেন, তিনি আগামী ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন। 

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নয়। জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন ডিক চেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে চেনি  এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের দেশের ২৪৮ বছরের ইতিহাসে এমন কোনো ব্যক্তিই নেই যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে প্রজাতন্ত্রের জন্য বেশি হুমকিস্বরূপ।’ 

চেনি আরও বলেন, ভোটাররা ট্রাম্পকে প্রত্যাখ্যান করার পর নিজেকে ক্ষমতায় রাখার জন্য মিথ্যা ও সহিংসতার মাধ্যমে গত নির্বাচন চুরি করার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। তাকে আর কখনো বিশ্বাস করে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা যাবে না।’ 

চেনি আরও বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য সংবিধান রক্ষার জন্য দেশকে পক্ষপাতের ঊর্ধ্বে রাখা। তাই আমি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে আমার ভোট দেব।’

এদিকে চেনির এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে হ্যারিস শিবির। কমলার প্রচারাভিযান ম্যানেজার জেন ও’ম্যালি ডিলন বলেন, ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট (সাবেক) চেনির সমর্থন পেয়ে আমরা গর্বিত। এ ছাড়া দেশকে দলের ওপরে রাখার জন্য তার সাহসের প্রশংসা করেছেন তিনি।

এর আগে টেক্সাসে এক অনুষ্ঠানে তার মেয়ে সাবেক রিপাবলিকান আইন প্রণেতা লিজ চেনি বলেছিলেন, আসছে নির্বাচনে তার বাবা ডেমোক্র্যাট মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন। লিজ চেনি নিজেও গত বুধবার কমলাকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পের সমর্থকরা নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পর থেকে তার বড় সমালোচক হয়ে ওঠেন লিজ। 

ডিক চেনির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে লিখেন, চেনির বক্তব্য ‘অপ্রাসঙ্গিক’। এ ছাড়া ট্রাম্প চেনিকে ‘নামমাত্র রিপাবলিকান’ বলে তিরস্কার করেন। সূত্র: আল-জাজিরা

পশ্চিম তীরে মার্কিনির মৃত্যু, উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ এএম
পশ্চিম তীরে মার্কিনির মৃত্যু, উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র
আয়েসেনুর এজগি এইগি

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে প্রতিবাদ করার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক মার্কিন নারী। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই নারী পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের রাফিদিয়া হাসপাতালের পরিচালক ফুয়াদ নাফা বলেন, মাথায় আঘাত পাওয়া অবস্থায় ওই নারীকে সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তিনি গুরুতর আঘাত পাওয়ায় আমরা তার হৃৎপিণ্ডকে সক্রিয় করতে পারি নাই এবং তারপর আমরা তার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করি।’

গুলিতে মৃত্যু হওয়া নারীর নাম আয়েসেনুর এজগি এইগি, তার বয়স ২৬ বছর। ফায়েজ আব্দেল জাবার নামের একজন প্যারামেডিক রয়টার্সের কাছে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই আমরা জাবাল সুবায়হ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করি, তখন বিদেশি অধিকারকর্মীরাও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন। তার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী চলে আসে এবং দুটি গুলি চালায়। একটি গুলি একজন তরুণকে লক্ষ্য করে চালানো হয়; দ্বিতীয় গুলিটা একজন বিদেশি অধিকারকর্মীর মাথা লক্ষ্য করে চালানো হয়।’

ডমিনিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট লুই আবিনাডেরের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে এইগির পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। ব্লিঙ্কেন বলেন, এই বিয়োগান্তক ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং গুলি চালানোর ঘটনার তথ্য সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ করেন, ‘প্রথম কাজটা প্রথমেই করতে হবে, আমাদের জানতে হবে ঠিক কি হয়েছিল আর সেটা জানার পর আমরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও উপসংহারে পৌঁছাব। যেমনটি আমাকে আগেও বহুবার বলতে শুনেছেন যে আমেরিকান নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার চেয়ে আমার কাছে আর কোনো অগ্রাধিকারের বিষয় নেই, তা তারা বিশ্বের যেখানেই থাকুন না কেন। আমরা যখন আরও তথ্য পাব, আমরা সেটা আপনাদের জানাব এবং প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন স্যাভেটও একটি বিবৃতি দেন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আজ পশ্চিম তীরে আয়সেনুর এজগি এইগির নামের এক মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুতে গভীরভাবে বিচলিত বোধ করছি। আমরা তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের কাছে আমাদের সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। আমরা আরও তথ্য লাভের জন্য ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং এ ঘটনার তদন্তের অনুরোধ করেছি।’

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এ ঘটনা সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ও টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘বেইতা এলাকার পাশে আজ ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কর্মতৎপরতা চালানোর সময় সহিংস ঘটনার প্রধান উসকানিদাতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ওই ব্যক্তি সৈন্যদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করছিল এবং তাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ওই অঞ্চলে গুলি করায় একজন বিদেশি নাগরিক মারা গেছেন- আইডিএফ এমন খবর যাচাই করে দেখছে। ঘটনাটির বিস্তারিত ও যে পরিস্থিতিতে তার ওপর আঘাত লাগে, তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।’

এদিকে, জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল রাব নিশ্চিত করেছেন যে ইসরায়েলি বাহিনী সেখান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, এটি ছিল আইডিএফের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অভিযান। ভিডিওতে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও আবর্জনাভর্তি রাস্তাও দেখা গেছে।

এদিকে, গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। নতুন করে উত্তর গাজায় হালিমাহ আল-সাদিয়াহ স্কুলে আক্রমণ করেছে দেশটি। এতে আট ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। তারা সেখানে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ ছাড়া মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে পাঁচ ব্যক্তি মারা গেছেন। আল-জাজিরার খবর বলছে, গত শুক্রবার গোটা গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৩ জন। গত বছরের ৭ আগস্ট থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪০ হাজার ৮৭৮ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৪৫৪ জন। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

যৌন হয়রানির দায়ে ব্রাজিলের মানবাধিকার মন্ত্রী বরখাস্ত

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ এএম
যৌন হয়রানির দায়ে ব্রাজিলের মানবাধিকার মন্ত্রী বরখাস্ত
ব্রাজিলের মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী সিলভিও আলমেইদা

মন্ত্রিসভার এক সহকর্মীসহ একাধিক নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ব্রাজিলের মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী সিলভিও আলমেইদাকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা আলমেইদাকে বরখাস্তের আদেশ জারি করেন।

এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানায়, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগের ধরন বিবেচনায় প্রেসিডেন্ট (লুলা) অভিযুক্ত মন্ত্রীকে স্বপদে বহাল রাখাটা নিরাপদ মনে করেন না।’ পুলিশ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।

অভিযুক্ত সিলভিও আলমেইদা, যিনি একজন সংখ্যালঘু অধিকারকর্মী হিসেবেও পরিচিত, বরখাস্তের পর এক বিবৃতিতে তিনি নিজেকে নিরপরাধ বলে দাবি করেছেন। তদন্তের ‘নিরপেক্ষতার স্বার্থে’ তাকে বরখাস্তের জন্য প্রেসিডেন্ট লুলাকে তিনি নিজেই আহ্বান করেন বলেও দাবি করেছেন আলমেইদা। বিবৃতিতে আলমেইদা আরও বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করা এবং নিজেকে পুনর্গঠিত করার একটি সুযোগ... বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসতে দিন, আমি যাতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা করতে পারি।’

বরখাস্ত হওয়ার আগে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন আলমেইদা। ওই ভিডিওতে তিনি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আলমেইদার বিরুদ্ধে যেসব নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন, তাদের একজন জাতিগত সমতাবিষয়ক মন্ত্রী অ্যানিয়েলে ফ্রাঙ্কো। ফ্রাঙ্কো নিজেও একজন মানবাধিকারকর্মী। তিনি গত শুক্রবার আলমেইদাকে বরখাস্তের খবরের পর এক বিবৃতিতে যারা তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ফ্রাঙ্কো লেখেন, ‘আমাকে নিজের মতো থাকা এবং আমার গোপনীয়তার অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাই।’ ফ্রাঙ্কো আরও বলেন, ‘যখনই আমাকে ডাকা হবে, আমি তদন্তে সহযোগিতা করব।’

এর আগে স্থানীয় এক রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত এমন কেউ সরকারে থাকতে পারবে না।’  সূত্র: রয়টার্স