ভারতে থাকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতে থাকার অনুমতি না পেলে আমি নিশ্চিত মারা যাব’।
ভারতে নির্বাসিত তসলিমার ভিসার মেয়াদ গত জুলাইয়ে শেষ হয়ে যায়। মূলত সে দেশে তার ভিসার মেয়াদ না বাড়ায় তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘আজতক বাংলা’য় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তসলিমা বলেন, ‘আমি ভারতে থাকতে পছন্দ করি। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো কেন্দ্রীয় সরকার আমার ভিসার মেয়াদ বাড়ায়নি। ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি না। আমি জানি না, কার সঙ্গে কথা বলব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন? আমি কারও সঙ্গে কথা বলিনি। আমি কেবল অনলাইনে চেক করি। কিন্তু এখনো কোনো নিশ্চয়তা পাইনি।’
ভিসার মেয়াদ না বাড়ানোর পেছনে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি দায়ী কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এখানে একজন সুইডিশ নাগরিক হিসেবে থাকি। বাংলাদেশে বর্তমান টালমাটাল পরিস্থিতির আগেই আমার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। ২০১৭ সালেও এমন সমস্যা হয়েছিল কিন্তু সেই সময়ে সেটি প্রযুক্তিগত সমস্যাই ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ মনে করে আমার সঙ্গে সরকার ও নেতাদের ঘনিষ্ঠতা আছে, কিন্তু তা নয়। থাকার অনুমতি না পেলে আমি সত্যিই মারা যাব। এখন কোথাও যাওয়ার মতো অবস্থায় আমি নেই।’
তসলিমা নাসরিনের অভিযোগ তাকে দেশ থেকে উৎখাত করার ক্ষেত্রে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুজনেরই হাত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা কেউই আমাকে বাংলাদেশে থাকতে দেননি। দুজনেই মৌলবাদকে মাথাচাড়া দিতে সাহায্য করেছেন।’
তসলিমা নাসরিনের একাধিক লেখা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হলে ১৯৯৪ সালে তিনি দেশ ছাড়েন। বেশ কয়েক বছর ইউরোপে থাকার পর তিনি ভারতে বসবাস শুরু করেন। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কলকাতায় ছিলেন। সেখানে নিষিদ্ধ করা হয় তার ‘দ্বিখণ্ডিত’ উপন্যাসটি। সরকারি চাপে শেষ পর্যন্ত কলকাতা ছাড়তে হয় তাকে। কিছু দিনের জন্য তিনি ভারতের জয়পুরে ছিলেন। তারপর দিল্লিতে বসবাস শুরু করেন। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে