ঢাকা ১৭ কার্তিক ১৪৩১, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪

গাজায় ৯০০ কেজি ওজনের বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ এএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ এএম
গাজায় ৯০০ কেজি ওজনের বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল
ব্যবহার করা একটি এমকে-৮৪ বোমা। ছবি: খবরের কাগজ

গাজার দক্ষিণে আল-মাওয়াসি এলাকার ‘নিরাপদ অঞ্চলে’ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি শক্তিশালী এমকে-৮৪ বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। গাজার কর্মকর্তারা বলছেন, দুই হাজার পাউন্ডের এই বোমার আঘাতে নিহতদের অনেকের লাশ গলে গেছে। এমনকি অনেকে পুরো মাটির নিচে চাপা পড়ে গেছে। 

একটি মানবাধিকার সংগঠনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, আল-মাওয়াসির শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি তিনটি ৯০০ কেজি ওজনের এমকে-৮৪ বোমা ফেলে। এই বোমাগুলো গভীর গর্ত তৈরি করেছে। 

গত সোমবার ভোর রাতের এ হামলায় অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এমন সময় এসব বোমা ফেলা হয় যখন সবাই ঘুমাচ্ছিল।

মানবাধিকার সংগঠনটি জানায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিশ্চুপ থাকা ইসরায়েলকে আরও অপরাধ করতে উৎসাহিত করছে। যুদ্ধের ইতিহাসে এমন নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ডের প্রতি অবহেলা লজ্জাজনক এবং এটি ইসরায়েলকে আরও অপরাধ চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিচ্ছে। 

যুক্তরাষ্ট্রও এই অপরাধের অংশীদার, কারণ দেশটি ইসরায়েলি বাহিনীকে এমন অস্ত্র সরবরাহ করছে যা বেসামরিকদের হত্যার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড

বিশ্লেষণ ইসরায়েলের হামলায় ইরানের কতটা ক্ষতি হয়েছে

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৮ এএম
আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ এএম
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের কতটা ক্ষতি হয়েছে
ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের ইসরায়েলকে প্রতিহত করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উল্টো ইরান আরও ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে বলেই রায় দিয়েছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা ইরানের এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সবটুকু ভেঙে দিয়েছে। ইসরায়েলের ওই হামলা ছিল ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের পাল্টা জবাব। ইরান জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি আক্রমণের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির নিকোলাস হেরাস ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, এই বিমান হামলাগুলো এটিই প্রমাণ করে যে ইসরায়েলের ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষেত্রে গুণগত সামরিক সুবিধা রয়েছে; যা ওই রাষ্ট্রটির প্রতিহত করার কৌশলের ওপর প্রভাব ফেলেছে।

হেরাস আরও বলেন, ইসরায়েল উন্নত বিধ্বংসীব্যবস্থা দিয়ে আঘাত হেনেছে, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে যেসব স্থান আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করে এমন সব স্থানে আঘাত করেছে। ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইরানের প্রতিরোধ কৌশলের মূল উপাদান। তারা মূলত ইরানিদের বার্তা দিতে চেয়েছিল যে প্রযুক্তিগত যুদ্ধের বিষয়ে ইসরায়েলিরা অনেক এগিয়ে আছে।

কার্নেগি এন্ডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের ফেলো নিকোল গ্রাজুয়েস্কি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে অনলাইন দিওয়ানে লেখেন, সরাসরি আক্রমণের মাধ্যমে ইসরায়েলকে প্রতিহত করার ইরানের প্রচেষ্টা হিতে বিপরীত হয়েছে। তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় যে ফাঁক রয়েছে, সেদিকে তারা নজর দেয়নি... আর তাই ১ অক্টোবরের তুলনায় ইরান সম্ভবত এখন নিজেকে আরও আশঙ্কাজনক স্থানে নিয়ে গেছে।

দ্য ওয়ার জোন পত্রিকায় টমাস নিউডিক তার লেখায় বলেছেন, ইরানের এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্রকে কর্মক্ষমহীন করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের জন্য অনেক প্রত্যক্ষ আক্রমণ ও পরবর্তী আক্রমণের পথ খুলে গেছে।

নিউডিক বলেন, এটি প্রায় অবশ্যম্ভাবী যে ইরান যদি আবার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে এ ধরনের আক্রমণ চালায়, তাহলে ইসরায়েলের কাছে বহু পাল্টা বিকল্প পরিকল্পনা রয়েছে জবাব দেওয়ার জন্য।

ইরানের হাতে থাকা একটি শক্তি হচ্ছে বিভিন্ন আঞ্চলিত শক্তির সঙ্গে সুসম্পর্ক। বিভিন্ন আঞ্চলিক গোষ্ঠী ইরানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এসব গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে ইরাকের অভ্যন্তরের দল, গাজায় হামাস, ইয়েমেনে হুতি এবং লেবাননে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল বর্তমানে সেখানেও আঘাত হানছে। এটিও এক অর্থে ইরানকেই প্রতিহত করা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ওয়াশিংটন কুইন্সি ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক স্টিভেন সাইমন এক অনলাইন পরিবেশনায় বলেন, ইরানের অনেক অজ্ঞাত প্রতিরোধ শক্তি রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেসব শক্তির কতটুকু অবশিষ্ট আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাইমন।
সাইমন জানান, হামাসকে মূলত একটি সামরিক সংগঠন হিসেবে ধ্বংস করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 

অন্যদিকে হিজবুল্লাহও মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট গুদামে ইসরায়েলের আক্রমণে ক্ষতির সাম্প্রতিক মূল্যায়ন কতটা ঠিক তা জানা না থাকলেও আন্দাজ করা যায়- ওই সব রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৮০ শতাংশ হয় ধ্বংস হয়ে গেছে, নয়তো অকেজো হয়ে গেছে।

সাইমন আরও বলেন, হিজবুল্লাহ ইরান থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়ে নিজেদের স্বল্পতা পুষিয়ে ফেলতেও অসুবিধার সম্মুখীন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ অস্ত্র বিতরণকারী হিসেবে সিরিয়া এটি নিশ্চিত করতে সক্ষম না যে অস্ত্রশস্ত্র তার সীমান্ত দিয়ে লেবাননে প্রবেশ করতে পারবে কি না। ইরানের পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্পগুলো এখন মারাত্মকভাবে কমে এসেছে বলেও মন্তব্য করেছেন কার্নেগির গ্রাজুয়েস্কি। 

তবে ইরান হামলা চালাবে বলে জানিয়ে রেখেছে। যদিও ইসরায়েল ও তার মিত্ররা এ বিষয়ে দেশটিকে মানা করেছে। বর্তমানে লেবাননে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা নিয়ে কাজ চলছে। এটি খুব দ্রুত হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। তবে এ রকম পরিস্থিতিতেও হামলা থামায়নি ইসরায়েল। বৈরুতে বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে তারা। গাজা উপত্যকাকেও রেহাই দিচ্ছে না। সেখানেও চলছে ইসরায়েলি ধ্বংসলীলা।

সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ গুরুতর হয়ে উঠেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় গত এক বছরে লেবাননে ২ হাজার ৮৬৭ জন এবং গাজায় ৪৩ হাজার ২০৪ জন মারা গেছেন। নিহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক বলে জানা গেছে। স্বয়ং জাতিসংঘ ইসরায়েলের এ ধ্বংসলীলা নিয়ে সরব ভূমিকা পালন করছে। ইসরায়েল মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে বলেও একাধিকবার জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা, আল-জাজিরা

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন: অভিবাসনসহ ৭ ইস্যু প্রভাব ফেলবে

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ এএম
অভিবাসনসহ ৭ ইস্যু প্রভাব ফেলবে
ছবি: সংগৃহীত

২৩ বছর বয়সী সাবিহার বাবা প্যালেস্টাইন থেকে এ দেশে এসে থিতু হন। সেই অর্থে সাবিহা দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন কলেজে ‘শিক্ষা’ বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত এই তরুণী তার পড়ার খরচ বহন করতে চাকরিও করেন।

গাজায় গত এক বছরে ৪২ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু নিঃসন্দেহে সাবিহাকে বেদনার্ত করেছে। কিন্তু নারী হিসেবে সাবিহা মেয়েদের গর্ভপাতসহ পুনরুৎপাদনমূলক স্বাস্থ্য অধিকারের প্রশ্নে ডেমোক্র্যাটদেরই সমর্থক। তবে গত চার বছরে মার্কিনিদের অর্থনৈতিক অবস্থা যে বেশ খারাপ হয়েছে, সেটা সাবিহা অস্বীকার করেন না। 

সাবিহার মতোই অসংখ্য মার্কিনি ভোটার এবারের নির্বাচনে যে কয়েকটি প্রধান ইস্যু নিয়ে চিন্তিত বা বিড়ম্বিত, সেগুলো সংক্ষেপে এ রকম-

বৈদেশিক নীতি

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ন্যাটো প্রশ্নে ডেমোক্র্যাটরা যখন রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিনি সাহায্য অব্যাহত রাখার কথা বলছে, ট্রাম্প তখন এই প্রশ্নে ঠাণ্ডা পানি ছুড়ে মারেন। ডেমোক্র্যাটরা যখন রাশিয়া ও চীনের মতো পরাশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময়ের মতোই প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সামরিক জোট ন্যাটোকে সক্রিয় রাখতে চান, ট্রাম্প তখন ন্যাটোর সমালোচনা করে চলেছেন এবং বৈশ্বিক পরিসরে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্যের বদলে ‘নিজের চরকায় তেল’ দেওয়ার নীতি গ্রহণে উন্মুখ। সম্প্রতি তিনি এমনটিও বলেছেন, ‘রাশিয়া যা খুশি তাই করুক।’ 

গত বছরের ৩১ আগস্ট মার্কিন নাগরিক হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিনসহ হামাস কর্তৃক ধৃত ও জিম্মি ছয়জনের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর কমলা হ্যারিস লিখেছিলেন, ‘ইসরায়েলের জনতা এবং ইসরায়েলে বসবাসরত মার্কিনিদের যে আতঙ্কের ভেতর হামাস ফেলে দিয়েছে, তাকে অবশ্যই নির্মূল করতে হবে এবং হামাস গাজাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফিলিস্তিনি জনতাও প্রায় দুই দশক ধরে হামাসের শাসন সহ্য করে আসছে।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার এক্স-হ্যান্ডেলে জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিস উভয়ের হাতেই ‘রক্ত লেগে আছে’ বলে মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। ২০২৪-এর আগস্ট নাগাদ ফিলিস্তিনে ৪০ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের ভেতর আছে ১৬ হাজার শিশু। অন্যদিকে আজ (১ নভেম্বর) ‘দিওয়ালি টুইট’-এ ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশে ‘তারা ইসরায়েল থেকে ইউক্রেন হয়ে আমাদের নিজেদের দক্ষিণ সীমান্তে সর্বত্র সর্বনাশ ডেকে এনেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন। 

গর্ভপাত

২০২০-২৪ নাগাদ ডেমোক্র্যাট সরকার ‘উইমেনস হেলথ প্রটেকশন অ্যাক্ট’ বা যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি প্রদেশে ফেডারেল আইনের আওতায় নারীর গর্ভপাতের অধিকার সুরক্ষা এবং গর্ভপাতের অধিকার পেতে অপ্রয়োজনীয় বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন যেন তাদের হাসপাতাল বা অন্যত্র কোথাও না হতে হয়, সে বিষয়ে একটি বিল আনেন। অন্যদিকে রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান নৈতিকতায় বিশ্বাসী রিপাবলিকানরা নারীর গর্ভপাতের অধিকারকে স্বীকার করতে চান না। 

এ বছর লাতিন বা হিস্পানি পুরুষরা অনেকেই তাদের সমাজের চিরায়ত ‘মাচিসমো’ বা ‘আলফা মেল’ সত্তাকে স্বীকৃতি দিতেই যেন অনেকেই ট্রাম্পের দিকে ‘গর্ভপাত’ প্রশ্নে ঝুঁকছিলেন। তবে দু-তিন দিন আগে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে লাতিনোদের সম্পর্কে ট্রাম্প সমর্থকদের কটু মন্তব্যের কারণে তারা এখন বিরক্ত। 

অভিবাসন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সীমান্ত আইনকে ট্রাম্প বহুবারই দেশের জন্য একটি ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং এমনকি অভিবাসীরা ‘আমাদের দেশের রক্তকে বিষাক্ত করছে’ এবং নতুন ‘ভাষাগুলো’ নিয়ে আসছে বলেও হতাশা ব্যক্ত করেন। ডেমোক্র্যাটরা সীমান্তের প্রশ্নে যে দুর্দশার সৃষ্টি করেছে, তা তিনি দূর করবেন বলেও ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারাভিযানের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।

গত চার বছরে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের সময়কার অভিবাসন-সম্পর্কিত অনেক নীতিই বদলে দেয়। ‘ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করা মানুষেরাও ঠিকমতো কর প্রদান এবং পরিপ্রেক্ষিত যাচাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।

ট্রাম্প যখন দেশে কম অভিবাসীর আগমন চান, কমলা নিজেই তখন অভিবাসী পিতা-মাতার সন্তান এবং ডেমোক্র্যাটরা বিশ্বাস করে যে, অভিবাসীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ভালো দেশ হিসেবে গড়বে। 

স্বাস্থ্য সুরক্ষা

স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রশ্নে সেই ২০১০ সালে বারাক ওবামার সময়েই ডেমোক্র্যাটরা ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন পাস করেন, যা দেশজুড়ে জনপ্রিয়। এই আইনটিকে ‘ওবামা কেয়ার’ও বলা হয়। ভর্তুকির মাধ্যমে এই আইনটি সারা দেশে ৪৫ মিলিয়ন বা ৪ কোটি ৫ লাখ মানুষকে সুরক্ষা দেয়। ক্ষমতায় থাকাকালীন ট্রাম্প এই আইনটি বারবার বাতিল করার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছিলেন।

কর

২০১৭ সালে ট্রাম্পের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর কর্তনের নীতি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সমাপ্ত হবে। কিন্তু গত চার বছরের ডেমোক্র্যাট শাসনের সময় জো বাইডেন ৪ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি আয়সম্পন্ন পরিবারগুলোর ওপর বিভিন্ন ধরনের কর বাড়ানোর আহ্বান জানান। এ বিষয়ে কংগ্রেস ও ২০২৪-এর নির্বাচনে বিজয়ী দলই সিদ্ধান্ত নেবে। সম্প্রতি দিওয়ালি টুইটে ট্রাম্প কর কর্তনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সম্প্রসারিত হতে দেবেন বলেছেন। তবে ডেমোক্র্যাট শিবিরের অভিযোগ, এই কর কর্তনের নীতি ধনীদের আরও ধনী করবে এবং গরিবদের আরও গরিব করবে। 

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক মনোনয়ন

রিপাবলিকানরা এবং বিশেষত ট্রাম্প যখন চাইছেন সুপ্রিম কোর্টে তরুণ, রক্ষণশীল বিচারকদের নিযুক্ত করতে; যারা অল্প বয়সে নিয়োগ পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে কাজ করতে পারবেন, তখন হ্যারিসের নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটরা চাইছেন নানা জাতিসত্তার বিচারকদের নিযুক্ত করতে, যাদের ভেতর থাকবেন নাগরিক অধিকার আইনজীবীরা। 

বাণিজ্য

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকানরা যখন আমদানীকৃত সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করার পক্ষে এবং সম্প্রতি ফক্স নিউজকে তিনি চীন থেকে আমদানীকৃত সব পণ্যের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি শুল্ক ধার্য করার কথা বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা তখন শুল্ক বাড়ানোর পক্ষপাতী নন। যেহেতু এতে করে গড়ে প্রতিটি মার্কিনি পরিবারকে পরিবার পিছু ১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার বেশি খরচ করতে হবে। 
এই ইস্যুগুলোর সমাধান কে করতে পারবেন, তার ওপরই মার্কিন ভোটের গতি-প্রকৃতি নির্ভর করবে।

‘জাতিসংঘের সমঝোতা প্রস্তাব বাস্তবায়নে এগোচ্ছে ইসরায়েল-লেবানন’

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২২ পিএম
আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম
‘জাতিসংঘের সমঝোতা প্রস্তাব বাস্তবায়নে এগোচ্ছে ইসরায়েল-লেবানন’
অ্যান্টনি জন ব্লিঙ্কেন

দীর্ঘসময় ধরে জাতিসংঘের সমঝোতা প্রস্তাব লঙ্ঘনের মাধ্যমে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, তা কিছুটা স্থিতিশীল জায়গায় পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি জন ব্লিঙ্কেন।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল ২০০৬ সালে ‘১৭০১ রেজ্যুলেশন’ গ্রহণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, “‘১৭০১ রেজ্যুলেশন’ বাস্তবায়নে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে ইসরায়েল ও লেবানন দুই পক্ষেরই চাওয়া কি সে সম্পর্কে তাদের স্বচ্ছ অবস্থান থাকা।”

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে বলতে পারি, যে কাজ হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে সমঝোতার ব্যাপারে বেশ কিছুটা আগাতে পেরেছি।’
 
তবে ব্লিঙ্কেনের মতে, কাজ এগোলেও এখনো অনেক কিছু করার বাকি।

লেবাননের সার্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন খুব দ্রুতই দেখার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী জানালেও, তা কবে নাগাদ হতে পারে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। 

তবে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে চাপ বজায় রাখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লেবাননের পরিস্থিতির পরিবর্তনের বেশ ভালো একটা সুযোগ আছে। আমরা আশাবাদী, এই পরিবর্তনের জন্য দূর-ভবিষ্যৎ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।’

সম্মেলনে ব্লিঙ্কেনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিকতারও উপস্থিত ছিলেন। 

লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ গত বছর হামাসের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের ঘাঁটিতে আক্রমণের মধ্য দিয়ে এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণের সূত্রপাত হয়।

এমন পরিস্থিতিতে গত পাঁচ সপ্তাহে লেবাননের দাঙ্গা এক বছরের মধ্যে তীব্রতর আকার ধারণ করেছে। 

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ১২ মাসে প্রায় দুই হাজার ৮০০ জন লেবানন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বুধবার (৩০ অক্টোবর) যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এবং ইসরায়েলের গণযোগাযোগ মাধ্যমে বলা হয়েছে, এটি একটি খসড়া চুক্তি হবে, যেখানে ৬০ দিনের সমঝোতার কথা উল্লেখ থাকবে। সূত্র: রয়টার্স

নাইমুর/পপি/

সহিংসতার আশঙ্কা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
সহিংসতার আশঙ্কা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা
যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনের আগেই ব্যাপক সহিংসতা, ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টা ও রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে দেশটির ভোটাররা আছেন শঙ্কায়। হঠাৎ করেই রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে সাধারণ ভোটাররা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার ও রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ভোটারদের মধ্যে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এএফপির বরাতে এ খবর জানিয়েছে বাসস।

এনওআরসি, সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চ-এর এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ভোটারদের ৪০ ভাগই বলেছেন, তারা নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টায় সহিংসতা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে আসছেন, কেবল নির্বাচনে কারচুপি হলে তিনি পরাজিত হবেন। এসব আগাম অভিযোগ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে।

নিবন্ধিত ভোটারদের ৯০ ভাগই মনে করেন, প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শেষ করে এবং অভিযোগের চ্যালেঞ্জগুলো আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সমাধান করলে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীকে তা অবশ্যই মেনে নেওয়া উচিত।

ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশ মনে করেন, রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে গেলে তিনি পরাজয় মেনে নেবেন। এদিকে ডেমোক্র্যাটদের প্রতি দশজনের মধ্যে একজন ট্রাম্পের পরাজয় মেনে নেওয়ার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন।

ইমরানের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করলে শাটডাউন: পিটিআই

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ এএম
আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ এএম
ইমরানের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করলে শাটডাউন: পিটিআই
ইমরান খান

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে দুর্ব্যবহার চলতে থাকলে দেশজুড়ে শাটডাউন দিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার হুমকি দিয়েছে তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। 

গত বুধবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং পিটিআইয়ের সিনিয়র নেতা আলী আমিন গান্দাপুর ফেডারেল সরকার এবং পাঞ্জাব সরকারের কাছে এই ‘হুঁশিয়ারি’ দেন। পাকিস্তানের ডনসহ আরও একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ খবর জানানো হয়েছে।

গত বছরের আগস্ট থেকে কারাবন্দি অবস্থায় আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সম্প্রতি কারাগারে তার সেলের বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অতি নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে। তাকে স্বজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং হেফাজতে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইমরান খানের বোন আলেমা এবং উজমা খান ।

এদিকে পিটিআই নেতা সাঈদ জুলফি বুখারি জানিয়েছেন, খাইবার পাখতুনখোয়ার রাজধানী পেশোয়ারে একটি বড় বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে তারা দেশব্যাপী শাটডাউন কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করছেন।