ঢাকা ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, রোববার, ০৮ জুন ২০২৫
English

সর্বোচ্চ কক্ষপথে পৌঁছে স্পেসএক্স মহাকাশযানের রেকর্ড!

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ এএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৪ এএম
সর্বোচ্চ কক্ষপথে পৌঁছে স্পেসএক্স মহাকাশযানের রেকর্ড!
স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে সওয়ার ক্রু

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেল স্পেসএক্সের বাণিজ্যিক মহাকাশযান। পৃথিবীর চারপাশে সর্বোচ্চ কক্ষপথে আরোহণের রেকর্ড গড়ল তারা। 

গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে চড়ে মহাশূন্যের উদ্দেশে রওনা হন চার বেসামরিক মহাকাশচারী। মহাশূন্যে পৌঁছে তারা স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলে সওয়ার হন। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই রেকর্ডবুকে নাম লেখাল যানটি। 

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৯ মিনিটে ১ হাজার ৪০০ দশমিক ৭ কিলোমিটার (৮৭০ মাইল)  উচ্চতায় পৌঁছায় যানটি। এর আগের রেকর্ড ছিল ১৯৬৬ সালে নাসার গেমিনি-১১ মিশনে ব্যবহৃত মহাকাশযানের। যেটি ১ হাজার ৩৭৩ কিলোমিটার (৮৫৩ মাইল) উচ্চতায় পৌঁছেছিল। স্পেসএক্স ইতিহাসের প্রথম এই বাণিজ্যিক মিশনের নাম দিয়েছে পোলারিস ডন।

এই মিশনটি আরেকটি কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। এই মিশনে রওনা হওয়া সব নভোচারীই বেসামরিক ক্রু। প্রথমবারের মতো কোনো বেসামরিক ক্রু এই মিশনের মধ্য দিয়ে মহাশূন্যে হাঁটবেন (স্পেসওয়াক)। স্পেসএক্স এবং পোলারিস ডন মিশনের ক্রুরা এই মাইলস্টোন উদযাপন করলেও পাঁচ দিনব্যাপী এই মিশনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ধাপটি বাকি আছে এখনো। 

সাধারণত মহাশূন্যগামী মিশনগুলোতে অবতরণের ধাপটিকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। সূত্র: সিএনএন

ইসরায়েলের কয়েক হাজার গোপন নথি যেভাবে ইরানের হাতে আসলো

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ১১:৪৬ পিএম
ইসরায়েলের কয়েক হাজার গোপন নথি যেভাবে ইরানের হাতে আসলো
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো ও প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা সংবলিত কয়েক হাজার গোপন নথি এখন ইরানের হাতে।

শনিবার (৭ জুন) বার্তাসংস্থা এএফপি ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য জেরুসালেম পোস্ট পৃথক দুই প্রতিবেদনে এই খবর জানায়।

ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘ইরানের গোয়েন্দারা ইহুদিবাদীদের বিপুল, গুরুত্বপূর্ণ, স্পর্শকাতর গোপন নথি হাতে পেয়েছে।’

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ এবং হিজবুল্লাহ সংশ্লিষ্ট লেবানিজ সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদানে এ খবর বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়। তবে ইসরায়েলের কোন কোন গোপন নথি ইরানি গোয়েন্দারা পেয়েছেন তার বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

তবে এসবের মধ্যে কয়েক হাজার নথি রয়েছে যেগুলো ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো সংক্রান্ত।— এমনটা বলা হয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে।

তাসনিম নিউজ জানায়, একটি গোপন অভিযান চালিয়ে এসব নথি সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছেন ইরানি গোয়েন্দারা। যারমধ্যে অসংখ্য ছবি ও ভিডিও-ও আছে।

এসব নথি-ছবি-ভিডিও হাতে পাওয়ার পর ইরানি গোয়েন্দারা সেগুলো নিরাপত্তার সাথে ইরানে পাঠান। এরপর এগুলো চুলচেড়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এদিকে শনিবার (৭ জুন) ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম দ্য জেরুসালেম পোস্ট জানায়, গত মে মাসে দুই ইসরায়েলি নাগরিকের বিরুদ্ধে একজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার অভিযোগ ওঠে। ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাদেরকে গুপ্তচর ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। 

শুক্রবার (০৬ জুন)ইসরায়েলের অ্যাটর্নি-জেনারেলের অফিস ঘোষণা করে যে, ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের পক্ষে একাধিক গোয়েন্দা অভিযান পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউশন রোই মিজরাহি এবং আলমোগ আতিয়াসের বিরুদ্ধে বিয়ারশেবা জেলা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে।

মে মাসে দায়ের করা এক ইসরায়েলি অভিযোগ অনুসারে, ২৫ বছর বয়সী রোই মিজরাহি এবং আলমোগ আত্তিয়াস নামের দুই ইসরায়েলি একজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যিনি তাদেরকে গুপ্তচর ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

যদিও সাম্প্রতিক ইসরায়েলি গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের সাথে কোনও নিশ্চিত যোগসূত্র নেই, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সূত্রের ধারণা, এই সন্দেহভাজনরা কথিত গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের সাথে যুক্ত থাকতে পারেন।

সুলতানা দিনা/

মরক্কোতে যে কারণে এবার পশু কোরবানি দেওয়া নিষেধ

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ০৯:০০ পিএম
আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম
মরক্কোতে যে কারণে এবার পশু কোরবানি দেওয়া নিষেধ
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের জন্য ঈদুল আজহা অন্যতম পবিত্র দিন। উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এই বছর, দেশটিতে ৭ জুন ঈদুল আজহা বেশ ভিন্নভাবে উদযাপিত হচ্ছে।

আফ্রিকান মুসলিম প্রধান দেশটির রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ এবারের ঈদে পশু কোরবানি না করতে রাজকীয় ডিক্রি বা সরকারি নির্দেশনা জারি করেছেন।

মরক্কোতে গত কয়েক বছর ধরে চলছে তীব্র খরা। সঙ্গে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত দেশটি। এতে করে সেখানে গৃহপালিত পশুর সংকট তৈরি হয়েছে। এখনো কৃষকদের কাছে যেসব পশু আছে সেগুলো রক্ষায় কোরবানি নিষিদ্ধ করে গত বুধবার দেশটিতে রাজকীয় ডিক্রি জারি করা হয়।

মরক্কোতে এর আগে আরও তিনবার এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এই নির্দেশনা দিয়েছিলেন বর্তমান রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদের পিতা ও সাবেক রাজা দ্বিতীয় হাসান। তিনি যুদ্ধ, খরা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কঠোর শর্তের কারণে এমন নির্দেশনা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

আইএমএফ মরক্কোর সরকারকে শর্ত দিয়েছিল সরকার কোনো খাদ্য পণ্যে ভর্তুকি দিতে পারবে না। এরপরই কোরবানি না দিতে সাধারণ মানুষের প্রতি ডিক্রি জারি করেন তিনি।

এদিকে বর্তমান রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ জানান, তিনি সব মরক্কোবাসীর পক্ষ থেকে কোরবানি দেবেন।

রাজকীয় ডিক্রি জারি করলেও সাধারণ মানুষ এটি কতটা মানবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। এখন পর্যন্ত দেশটিতে পশু কোরবানি আটকাতে বেশ কঠোরতা অবলম্বন করা হয়। যেখানে পশু বিক্রি হয় সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী রেইড দেয়। 

এমনকি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা দিয়ে কোরবানির জন্য কেনা ভেড়া নিয়ে যায়।

সুলতানা দিনা/

মাস্ক-ট্রাম্প বিবাদে ‘অ্যাপস্টেইন ফাইলস’ যেভাবে আলোচনায়

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫, ০৯:১২ পিএম
মাস্ক-ট্রাম্প বিবাদে ‘অ্যাপস্টেইন ফাইলস’ যেভাবে আলোচনায়
জেফরি অ্যাপস্টেইনের (ডান দিক থেকে  দ্বিতীয়) সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক এখন ব্যক্তিগত লড়াইয়ের দিকে মোড় নিয়েছে। মাস্ক অভিযোগ করেছে, প্রয়াত যৌন অপরাধী এবং পাচারকারী জেফ্রি অ্যাপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত ফাইলগুলোতে ট্রাম্পের নাম আছে। যদিও এ সম্পর্কে কোন প্রমাণ তিনি প্রকাশ করেননি। 

মাস্কের এই অভিযোগের পরপরই ট্রাম্প কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি মাস্কের বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘উন্মাদনার বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে আখ্যা দেন। ট্রাম্প বলেন, ‘মাস্ক নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। এ ধরনের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

মাস্কের এই অভিযোগ আসার পর ডেমোক্র্যাটরা আবার নড়েচড়ে বসেছে। ফলে অ্যাপস্টেইনের ফাইলগুলো আবার আলোচনায় এসেছে এবং ইতোমধ্যেই সেগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রকাশের দাবি উঠেছে। ডেমোক্র্যাটরাও সবগুলো নথি প্রকাশের জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে।

এরপরই ৫ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি রবার্ট গার্সিয়া এবং ম্যাসাচুসেটস প্রতিনিধি স্টিফেন এফ. লিঞ্চ , তদারকি ও সরকার সংস্কার সংক্রান্ত হাউস কমিটির ডেমোক্র্যাটিক সদস্য মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর পরিচালক ক্যাশ প্যাটেলকে একটি চিঠি পাঠান।

এই চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লিখছি যে, অভিযোগ উঠেছে যে দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী জেফ্রি অ্যাপস্টেইন সম্পর্কিত ফাইলগুলি প্রকাশ করা হয়নি এবং আমেরিকান জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হয়নি কারণ সেগুলি ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সাথে জড়িত । তাহলে কি ট্রাম্প কি অ্যাপস্টেইনের ফাইলগুলি আটকে রাখছেন?

চিঠিটি পড়ে হোয়াইট হাউস প্রতিক্রিয়া হিসেবে জানায়, এই পদক্ষেপ আরেকটি স্টান্ট যা ভিত্তিহীন এবং বাস্তবতার সাথে কোনও মিল নেই।
 
অ্যাপস্টেইনের ফাইল সম্পর্কে যা জানা যায়

গত বছরের ২৭শে ফেব্রুয়ারি - ট্রাম্প প্রশাসনের হাই-প্রোফাইল মামলার বিষয়ে আরও স্বচ্ছ হওয়ার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে, বন্ডি অ্যাপস্টেইন সম্পর্কিত ১০০ পৃষ্ঠারও বেশি গোপন নথি প্রকাশ করা হয় । 

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রাম্প, ২০১৯ সালে অ্যাপস্টেইনের গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীতে আত্মহত্যার পর থেকে তার ক্লায়েন্ট তালিকা নিয়ে যে দাবি উঠে তা স্পষ্ট করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ।

যদিও তখন বলা হয়, এটি গোপন নথি প্রকাশের ‘প্রথম পর্যায়’। কিন্তু প্রকাশিত পৃষ্ঠাগুলো দেখে মানুষ হতাশ হন কারণ বেশিরভাগ লেখাই সম্পাদনা করা ছিল।

এছাড়া এসময় নিউ ইয়র্ক টাইমস এক রিপোর্টে জানায়, বন্ডির প্রকাশনায় অ্যাপস্টেইনের ‘কালো বই’ নামে যে বই প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে ট্রাম্প এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মতো ব্যক্তির নাম ছিল। তাছাড়া বইটিতে এমন কিছু ব্যক্তির নাম উল্লেখ ছিল যাদের সাথে অ্যাপস্টেন কখনও দেখাও করেননি, এবং তালিকাভুক্ত নামগুলো অ্যাপস্টেইনের কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত নয়।

ট্রাম্প ও অ্যাপস্টেইনের কয়েক দশকের সম্পর্ক 

ট্রাম্প ও অ্যাপস্টেইনের বন্ধুত্ব শুরু হয় ১৯৮০-এর দশকে। তারা নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন অভিজাত অনুষ্ঠানে একসঙ্গে যেতেন। তবে ২০০৪ সালের পর একটি রিয়েল এস্টেট চুক্তিতে মতবিরোধের কারণে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

২০০২ সালে নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান , এপস্টাইনের সাথে তার খুব মজার সম্পর্ক ছিল। এমনকি তিনি আরও জানান,  তিনি আমার মতোই সুন্দরী মহিলাদের পছন্দ করেন, এবং তাদের অপেক্ষাকৃত তরুণদের দিকে তার আগ্রহ একটু বেশি।

২০১৯ সালের জুলাই মাসে, এনবিসি নিউজ টুডে ১৯৯২ সালের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে, যেখানে ট্রাম্পকে তার মার-এ-লাগো এস্টেটে এপস্টাইনকে অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যায়। এ সময় দুজনকে কথা বলতে বলতে হাসতে দেখা যায়।

তবে ২০১৯ সালে ফেডারেল যৌন পাচারের অভিযোগে এপস্টাইন গ্রেপ্তার হওয়ার পর, ট্রাম্প নিজেকে তার থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। 

২০১৯ সালে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প জানান, তার (এপস্টাইনের) সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়েছিল। আমি ১৫ বছর ধরে তার সাথে কথা বলিনি। তাছড়া আমি তার ভক্ত ছিলাম না, এটা আমি আপনাদের বলতে পারি।

এদিকে ২০১৪ সালে ইলন মাস্ককেও অ্যাপস্টেইনের সহযোগী ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে একটি পার্টিতে দেখা গিয়েছিল। ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল ২০২২ সালে যৌন পাচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড পান। তার আপিল ২০২৪ সালে খারিজ হয়।

কে এই জেফরি অ্যাপস্টেইন ?

জেফরি অ্যাপস্টেইন ছিলেন একজন প্রভাবশালী মার্কিন ফাইন্যান্সিয়াল উদ্যোক্তা। ২০০০-এর দশকে তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তবে প্রথম দফায় মাত্র ১৩ মাস জেল খেটে মুক্তি পান।

এরপর ২০১৯ সালে নতুন করে যৌন পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং নিউইয়র্কের একটি কারাগারে আত্মহত্যা করেন। মার্কিন বিচার বিভাগ পরে জানায়, তার মৃত্যু ছিল নজরদারির ঘাটতি, অবহেলা এবং জেল কর্মীদের ব্যর্থতার ফল।

অ্যাপস্টেইনের মৃত্যুর পর একাধিক মামলার সূত্রে এবং তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে হাজার হাজার পৃষ্ঠা নথি জনসমক্ষে আসে। এসব নথিতে মার্কিন ও বিদেশি রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের নাম উঠে আসে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ সংক্রান্ত সর্বশেষ নথিপত্র প্রকাশিত হয়।

ফাইলগুলোতে ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রু, ম্যাজিশিয়ান ডেভিড কপারফিল্ড এবং এক ভুক্তভোগীর বয়ানে মাইকেল জ্যাকসনের নামও আসে। তবে কারও বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। 

এই মুহূর্তে মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্কে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। মাস্কের এই অভিযোগ ট্রাম্পের জনসমর্থনের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সুলতানা দিনা/

গাজায় ঈদের দ্বিতীয় দিন ৩৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
গাজায় ঈদের দ্বিতীয় দিন ৩৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের কাছে আল-আখাওয়াতে একটি সাহায্যকেন্দ্রের কাছে অপেক্ষারত কমপক্ষে আট ফিলিস্তিনিকে শনিবার (৭ জুন) সকালে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। পুরো গাজা উপত্যকায় একদিনে হামলায় কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলেছে, শনিবার ভোর থেকে চালানো এই হামলায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনি সূত্রের ভিত্তিতে করা এএফপি’র এক পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৭ মে থেকে মানবিক সাহায্য নিতে গিয়ে ইসরাইলি হামলায় ১১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫৮০ জনেরও বেশি। এছাড়া ৯ জন এখনো নিখোঁজ।

এর আগে স্থানীয় হাসপাতালগুলোর সূত্রের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, ঈদের দিন গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদের সকাল যেখানে হওয়ার কথা ছিল উৎসবের, সেখানে গাজায় বয়ে গেছে রক্তের ধারা। স্থানীয় সময় শুক্রবার খান ইউনিসসহ গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া, ঈদের দিনেও উপত্যকাটিতে বন্ধ ছিল ত্রাণ সহায়তা।

এএফপি জানায়, ইসরায়েলের ‘গণহত্যা অভিযান’ শুরু হওয়ার পর থেকে এটি গাজাবাসীর জন্য চতুর্থ ঈদ। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজায় ‘দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি’ সৃষ্টি হয়েছে এবং উপত্যকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।

ট্রাম্প-মাস্ক জুটির ভাঙন: দ্বন্দ্বের শেষ কোথায়?

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
ট্রাম্প-মাস্ক জুটির ভাঙন: দ্বন্দ্বের শেষ কোথায়?
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের অস্বাভাবিক রাজনৈতিক জুটি ভেঙে পড়েছে। তাদের সম্পর্কের নাটকীয় অবসানে এখন ঘোলাটে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নিয়ে মাস্কের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং সতর্ক করে দেন যে মাস্কের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থাকা সরকারি চুক্তিগুলো বাতিল করা হতে পারে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, তিনি মাস্কের ওপর ‘খুবই হতাশ’।

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে তীব্র কটাক্ষ ছুড়তে থাকেন। 

মাস্ক দাবি করেন, কুখ্যাত অর্থলোলুপ ও যৌন অপরাধী জেফরি অ্যাপস্টেইনের গোপন নথিতে ট্রাম্পের নাম রয়েছে - যদিও তিনি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

বাকযুদ্ধের এই বিস্তার ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। মাস্কের মালিকানাধীন টেসলার শেয়ারের দর এক দিনে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি কমে গেছে। মাস্ক ঘোষণা করেছেন, তার প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাকাশযান কর্মসূচি থেকে সরে আসবে।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনেতার এই সম্পর্ক যে দীর্ঘস্থায়ী হবে না, এমন জল্পনা বহুদিন ধরেই চলছিল। তবে মাত্র চার মাসেই সম্পর্কের এই আকস্মিক ও বিস্ফোরক ভাঙন ওয়াশিংটনের রাজনীতিকদের অনেককেই বিস্মিত করেছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইলনের ওপর খুব হতাশ। আমি তাকে অনেক সহায়তা করেছি। আমাদের সম্পর্ক দারুণ ছিল। জানি না, এখন সেটা থাকবে কি না।’

তিনি আরও জানান, মাত্র এক সপ্তাহ আগেই হোয়াইট হাউসে ‘সরকারি ব্যয় দক্ষতা দপ্তর’ (ডগে) থেকে বিদায় জানাতে মাস্কের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

পরে ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) পাগল হয়ে গেছেন।’

ট্রাম্পের ভাষ্য, মাস্ককে তিনিই সরে যেতে বলেছিলেন, কারণ ‘তার উপস্থিতি বিরক্তিকর হয়ে উঠছিল।’

মাস্কের পাল্টা কটাক্ষ: ট্রাম্প ‘অকৃতজ্ঞ’

মাস্ক তৎক্ষণাৎ তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ লেখেন, ট্রাম্প তার সহায়তা ছাড়া ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিততে পারতেন না এবং ট্রাম্প ‘অকৃতজ্ঞ’।

মাস্ক আরও লেখেন, ‘ট্রাম্পের নাম অ্যাপস্টেইনের নথিতে রয়েছে।’ ২০১৯ সালে জেলে আত্মহত্যা করেন অ্যাপস্টেইন, যাকে ঘিরে বহু ষড়যন্ত্রতত্ত্ব প্রচলিত।

মাস্কের পোস্টে শেষ মন্তব্য ছিল: ‘সুন্দর একটা দিন কাটুক, ডোনাল্ড!’

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, মাস্কের টুইট হতাশাজনক। ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ মাস্কের পছন্দের নীতিগুলো বাদ পড়েছে বলেই তিনি ক্ষুব্ধ।

ট্রাম্পের কর ও ব্যয় পরিকল্পনা সম্পর্কে আগে সতর্ক মন্তব্য করলেও সম্প্রতি সেটিকে ‘একটি বিভীষিকা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন মাস্ক। তার ভাষায়, এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আরও বাড়িয়ে দেবে এবং বিশ্ববাণিজ্য শুল্কের কারণে দেশটিতে মন্দা দেখা দিতে পারে।

ট্রাম্পের হুমকি: চুক্তি বাতিল
ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আমাদের বাজেট বাঁচানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো- ইলনের প্রাপ্ত সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তিগুলো বাতিল করে দেওয়া।’

জবাবে মাস্ক জানান, স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযান ধ্বংস করে দেওয়া শুরু করবেন তিনি। উল্লেখ্য, নাসার মহাকাশচারীরা এই যান ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাতায়াত করেন।

এই ঘোষণার পরপরই টেসলা কোম্পানির বাজারমূল্য থেকে বিশাল অঙ্কের ক্ষতি হয়।

চার মাসে উষ্ণতা থেকে শীতলতা
ট্রাম্পের প্রশাসনে মাস্ক ছিলেন ‘সরকারি ব্যয় দক্ষতা দপ্তর’-এর (ডগে) প্রধান। প্রথমদিকে তাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল।মাস্ক হোয়াইট হাউসে রাত কাটাতেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ ভ্রমণ করতেন। তবে মাত্র চার মাসেই ৫৩ বছর বয়সী মাস্ক পদত্যাগ করেন। প্রশাসনের ধীরগতি ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন।

মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল?
এই টানাপোড়েনের মধ্যে মাস্ক ‘এক্স’-এ একটি জরিপ চালিয়েছেন, যার শিরোনাম ছিল: ‘আমি কি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব?’ এটি এক ধরনের রাজনৈতিক হুমকি হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

কারণ মাস্ক ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, যেসব রিপাবলিকান তার সঙ্গে একমত নন, তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে তিনি তার বিপুল অর্থব্যয় করতে প্রস্তুত।

এদিকে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ স্টিভ ব্যানন নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, ‘মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা উচিত।’

এখন ওয়াশিংটনের রাজনীতিকরা উৎকণ্ঠার সঙ্গে তাকিয়ে আছেন - এই দ্বন্দ্ব আরও কত দূর গড়াবে তা দেখতে।