ঢাকা ১৮ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪

লেবাননে স্থল অভিযানের পরিসর বাড়াল ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
লেবাননে স্থল অভিযানের পরিসর বাড়াল ইসরায়েল
দক্ষিণ বন্দর শহর সিডনের উপকণ্ঠে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ক্যাম্পে রাতারাতি ইসরায়েলি হামলার পর উদ্ধারকারী দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণপশ্চিম লেবাননের স্থলভাগে অভিযান শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে নিজেদের স্থল অভিযানের মাত্রা বাড়াল দেশটি। হিজবুল্লাহর সঙ্গে এক বছর ধরেই হামলা ও পাল্টা হামলা চলছে ইসরায়েলের। সাম্প্রতিক সময়ে তা ইসরায়েলি আগ্রাসী আক্রমণের কারণে বড় রূপ ধারণ করেছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বহু দেশ এ সমস্যার কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানালেও তা আমলে নিচ্ছে না দেশটি।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কা দেখা দেয়। ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী ও লেবাননের ইরাস সমর্থিত হিজবুল্লাহ হামাসের সমর্থনে বিভিন্ন সময়ে হামলা চালায়। ইরানের সঙ্গেও বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকবার ইসরায়েলের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। 

তবে এখন গোটা পরিস্থিতি এমন একটি পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, ইরান ও ইসরায়েলও বড় ধরনের সংঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে। 

ইরান কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলি বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড ও হামলার জবাব দিয়েছে ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে। ইসরায়েলও পাল্টা জবাব দেবে বলে জানিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ইরানি অবকাঠামোতে যেকোনো হামলার পাল্টা মাশুল গুনতে হবে। 

ইরান আঞ্চলিক ইস্যুগুলো নিয়ে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। গাজায় ও লেবাননে ইসরায়েলি ‘অপরাধ’ প্রতিহতের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে তারা। ইরানের আইএসএনএ সংবাদ সংস্থার খবর বলছে এ কথা। 

রয়টার্সকে গত সপ্তাহে এক সূত্র জানায়, গালফ রাষ্ট্রগুলো ইরান-ইসরায়েল সংঘাত প্রশ্নে নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে বলে তেহরানকে জানিয়েছে। লেবাননে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হিজবুল্লাহর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। এর আগে দক্ষিণপূর্বে তারা স্থল অভিযান চালাচ্ছিল। এবার তার পরিসর বেড়ে দক্ষিণপশ্চিমে এল। 

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতেও আবার হামলা চালিয়েছে। সেখানে হিজবুল্লাহর বাজেট ও লজিস্টিকস দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সুহাইল হুসেইন হুসেইনিকে হত্যা করেছে তারা। তবে এর সত্যতা সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলার মুখে পড়েছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল গত মাসের শেষে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে বিমান হামলায় তাদের নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে। 

ইসরায়েল কারও কোনো আবেদনই শুনছে না বলেও খবর এসেছে। জাতিসংঘের লেবাননে নিযুক্ত বিশেষ সমন্বয়ক ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের প্রধান গত মঙ্গলবার জানিয়েছেন যে তাদের আক্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান আমলেই নিচ্ছে না ইসরায়েল। একাধিকবার ওই আহ্বান জানানো হয়েছিল। 

ইসরায়েলের এসব আক্রমণে শঙ্কা দেখা দিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলি মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত শুরু হয়ে যেতে পারে। যদিও দুই পক্ষ প্রত্যক্ষভাবে এতে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এখনো। আগামীতে ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় তা নির্ভর করছে ইসরায়েল ইরানে কী ধরনের হামলা চালাবে, সেটির ওপর। সূত্র: রয়টার্স

রাশিয়ার শক্তিশালী আক্রমণ ঠেকানোর দাবি ইউক্রেনের

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম
রাশিয়ার শক্তিশালী আক্রমণ ঠেকানোর দাবি ইউক্রেনের
ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার শক্তিশালী আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রভাবশালী কমান্ডার ওলেক্সান্ডার স্ট্যানিস্লাভোভিচ সিরস্কি। 

শনিবার (২ নভেম্বর) টেলিগ্রাম মেসেঞ্জার গ্রুপে তিনি এ কথা জানান।

এদিকে প্রতিবেশি দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর থেকে এবারের অভিযানেই সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে মস্কো।
 
তবে ওলেক্সান্ডার বলেন, ‘ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী বেশ তৎপর রয়েছে। আমরা রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে পারছি।’  

২০২২ সালে রাজধানী কিয়েভ দখল করতে ব্যর্থ হবার পর থেকেই পুতিনের আদেশে রাশিয়ার সেনাবাহিনী পূর্ব-ইউক্রেনের ডোনবাস শিল্প অঞ্চলে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তখন থেকেই অঞ্চলটি যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

শনিবার (২ নভেম্বর) মস্কো দাবি করেছে, ডোনবাসের সম্মুখভাগের আরও দুইটি স্থাপনা দখলে নিয়েছে তারা।

এ ছাড়া রাশিয়ার অন্যতম সংবাদ সংস্থা এজেন্টসভো ইউক্রেনের ভূ-স্থানিক মানচিত্র বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, অক্টোবরের ২০ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যেই রাশিয়া প্রায় ২০০ বর্গ কিলোমিটার (৮০ বর্গমাইল) ইউক্রেন-অধ্যুষিত এলাকা দখল করেছে।

তবে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে সহায়তা করতে সৈন্য পাঠানোয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও ভয়াবহ পর্যায়ে মোড় নিচ্ছে বলে আশংকা করছেন রাশিয়ার বিশ্লেষকরা। 

এ দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ন্যাটোর দেওয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে নিক্ষেপের অনুমতি চেয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের শরনাপন্ন হচ্ছেন। সূত্র: রয়টার্স

নাইমুর/পপি/

ট্রাম্পের রাজনৈতিক পুনরুত্থান

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
ট্রাম্পের রাজনৈতিক পুনরুত্থান
ডোনাল্ড ট্রাম্প

দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর অনেক বিশ্লেষকই ট্রাম্পের রাজনীতিবিদ পরিচয়ের ওপর দাঁড়ি টেনে দিলেও ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মজবুত অবস্থানই প্রমাণ করে তার রাজনীতির অধ্যায়ের কিছু পৃষ্ঠা এখনও বাকি আছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প অভিনব এক রাজনৈতিক পুনরুত্থানের আভাস দিচ্ছেন।

ট্রাম্পের সফলভাবে ফিরে আসার পেছনে তার প্রচারণা পদ্ধতির ব্যাপক রদবদল ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তার দল রিপাবলকান পার্টির বেহাল দশা হয়েছিল। ট্রাম্প-প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি সাবেক এ প্রেসিডেন্টের করুণ পরিস্থিতিকে ত্বরান্বিত করেছিল। 

এ ছাড়া ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্প সমর্থকদের একটি মব ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল হিলে হামলা করলে ট্রাম্পের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় সমালোচকদের পাশাপাশি নিজের দলের কিছু প্রভাবশালী নেতাও তার বিরুদ্ধে কথা বলেন।

তবে এমন করুণ পরিস্থিতিতেও ট্রাম্প আবার ফিরে আসার আভাস দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব।’

নিজের বক্তব্যের বাস্তবায়ন করেই যেন ২০২২ সালের মিডটার্ম ইলেকশনে তার সমর্থকদের মধ্যে শক্ত অবস্থান গড়তে সমর্থ হন। রিপাবলিকান পার্টিতে তার প্রতি ভরসা এরপর থেকে বাড়তেই থাকে। ঘটনাক্রমে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং নির্বাচনের একেবারে দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তিনি বিজয়ের সুবাস পাচ্ছেন বললেও ভুল হবে না। 

এবার তিনি অভিজ্ঞ রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি ফ্লোরিডায় গভর্নর রন ডিস্যান্টিসের মতো প্রায় সব অঙ্গারাজ্যেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলা করতে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছেন।  

ট্রাম্পের প্রচরণায় তার একনিষ্ঠ সমর্থকদের পাশাপাশি অনেকেই মুগ্ধ। অনেককেই নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করে ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছে।

মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা, উইসকনসিনের মতো প্রতিযোগিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে তার পুনরুত্থাপিত গ্রহণযোগ্যতা গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এর আগে ২০২৪-এর নির্বাচনি বিতর্কে প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের সামনে তার যুক্তিতর্কের দুর্বলতার ব্যাপারে সমালোচিত হলেও প্রাথমিক জরিপগুলোতে তিনি বেশ শক্ত অবস্থান বজায় রেখেছেন। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প শুধু ক্ষমতায় যেতে চান এমন না। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপরিচালনা কাঠামো নতুন আদলে গড়তে চান। 

উত্তেজনাপূর্ণ এ নির্বাচনে ট্রাম্প জয়লাভ করুক আর নাই করুক, তার রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাকে প্রায় কবর থেকে তুলে এনে যে বর্তমানের শক্ত জায়গায় দাঁড় করিয়েছেন এ কথা অস্বীকার করার অবকাশ নেই। সূত্র: বিবিসি

নাইমুর/পপি/অমিয়/

স্যাটারডে নাইট লাইভে যা বললেন হ্যারিস

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ পিএম
স্যাটারডে নাইট লাইভে যা বললেন হ্যারিস
মায়া রুডলফ ও কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’ (এসএনএল) শোতে অংশগ্রহণ করেছেন। 

শনিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

এ অনুষ্ঠানে হ্যারিস নিজেই তার চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তার প্রতিপক্ষ অভিনেত্রী মায়া রুডলফও হ্যারিসের ভূমিকায় অভিনয় করেন। 

এ সময় তাদের দুজনকেই কালো স্যুট এবং মুক্তার মালা পরে মুখোমুখি অবস্থানে দেখা যায়।

দুজনে মিলে হ্যারিসের নামে বিভিন্ন মজাদার কৌতুক করেন। 

তারা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা রাজনীতির ড্রামা শেষ করতে চায়। তারা একটি নতুন রাষ্ট্র চায়। নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রকে শান্ত রাখুন। এগিয়ে নিয়ে যান।’ 

হ্যারিস মজার ছলে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমি কি সত্যি এমন করে হাসি?’ 

রুডলফ উত্তরে বলেন, ‘একটু তো বটেই।’

অনুষ্ঠান শেষে হ্যারিস সাংবাদিকদের বলেন, অনুষ্ঠানটি মজার ছিল।

পরে তিনি মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

এই প্রথমবার হ্যারিস এসএনএলে উপস্থিত হন। এর আগে বিভিন্ন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এই শোতে উপস্থিত হয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স 

তাওফিক/পপি/

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন: কখন জানা যাবে চূড়ান্ত ফল?

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ এএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন: কখন জানা যাবে চূড়ান্ত ফল?
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ঘনিয়ে এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। 

আগামী মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে ভোটকেন্দ্রগুলো স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে খোলা থাকবে। 

তবে অঙ্গরাজ্যভেদে ভোটকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার সময় পরিবর্তন হতে পারে। বেশিরভাগ কেন্দ্র সন্ধ্যা ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকবে।

ভোট গণনা কখন শুরু হবে এবং ফলাফল কখন জানা যাবে?

ভোটকেন্দ্র সন্ধ্যা ৬টায় বন্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল আসা শুরু করবে। তবে কিছু রাজ্যে দ্রুত গণনা সম্পন্ন হবে। 

অন্যদিকে পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে ভোটগ্রহণ শেষ হতে দেরি হওয়ার কারণে ফলাফল কিছুটা দেরিতে আসতে পারে।

এ বছর নির্বাচন খুব বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলে ভোট গণনা অনেক রাত পর্যন্ত চলতে পারে এবং কয়েক দিন পর্যন্ত চূড়ান্ত ফলাফল জানা নাও যেতে পারে।

ম্যাসাচুসেটস অ্যামহার্স্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী রেমন্ড জে লা রাজার মতে, ‘প্রথম কয়েক দিনে হয়তো চূড়ান্ত ফলাফল জানা যাবে না।’

ফাইভথার্টিএইটের জাতীয় নির্বাচন জরিপ অনুসারে, কমলা হ্যারিস শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ২ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।

যদি ফলাফলে টাই হয়, তাহলে কী হবে?

নির্বাচনে জিততে একজন প্রার্থীর ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০ ভোট প্রয়োজন। ফলাফল ২৬৯-২৬৯ বা কোনো তৃতীয়পক্ষ ইলেক্টোরাল ভোট পেলে এবং কোনো প্রার্থী ২৭০ ভোটে না পৌঁছালে, ‘কনটিনজেন্ট নির্বাচন’ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়। যেখানে প্রতিটি রাজ্য এক ভোট দেয় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেলে প্রার্থী বিজয়ী হন।

গত বছরের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

২০২০ সালের নির্বাচনে পেনসিলভেনিয়ার ফলাফল নিশ্চিত হওয়ার চার দিন পর নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। ২০১৬ সালে নির্বাচনের পরের দিনই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হিলারি ক্লিনটনের পরাজয়ের সংবাদ প্রকাশিত হয়। সূত্র: আল-জাজিরা

তাওফিক/পপি/অমিয়/

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ইতিবাচক পরিবর্তন চান ভোটাররা

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ এএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ এএম
ইতিবাচক পরিবর্তন চান ভোটাররা
খবরের কাগজ ডেস্ক

দেখতে দেখতে এসে গেল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দুই দিন পরই মার্কিনিরা ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করবেন। কমলা হ্যারিস অথবা ডোনাল্ড ট্রাম্প হতে চলেছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সর্বশেষ দেশব্যাপী জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের তুলনায় কমলা হ্যারিস সামান্য এগিয়ে আছেন। দুজনেই শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয় করার জন্য দোদুল্যমান রাজ্যগুলো চষে বেড়াচ্ছেন।

নির্বাচনি পরিবেশ দেখতে আজ (গত শুক্রবার) বাইরে বেরিয়েছি। আমাদের দেশে তো এ রকম সময়ে, নির্বাচনের দুই-তিন দিন আগে, প্রচারের ধূম পড়ে যায়। কিন্তু এই দেশে সবকিছুই অনেক আলাদা। দেশজুড়ে নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতার হাওয়া বইছে ঠিকই, তবে জনপদগুলোতে সেটা খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না। মার্কিনিরা হয়তো এ রকম নিস্পৃহ, ভোট হচ্ছে হোক। ভোট দিতে গেলেই হলো। অন্য যা কিছু, অর্থাৎ জীবনযাপনে বড় রকমের হেরফের নেই। এটা আরও স্পষ্ট হলো আজকের হ্যালোইন উৎসবকে কেন্দ্র করে।

আজ, হ্যাঁ, হ্যালোইনের বিকেল। আমি ব্রুকলিনের যে অ্যাপার্টমেন্টে আছি, সেই ভবনের সামনের চত্বরে দেখছি লাতিনো দুই তরুণী ধূমপান করছেন। তাদের হাতে ট্যাটু আঁকা। সঙ্গে এক লাতিনো কিশোরী। হ্যালোইন উপলক্ষে তারা যে সাজপোশাক পরেছেন, তা আমাদের চোখে খানিকটা দৃষ্টিকটু মনে হতে পারে। পরিচিত হতে আমি নিজেই ওদের দিকে এগিয়ে গেলাম। জানা গেল, ওই দুই তরুণীর একজনের নাম মেরি, অন্যজন জেমি। জিজ্ঞেস করতেই জানালেন তারা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন। লাতিনো হলেও তারা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন শুনে অবাকই হলাম। ১৬ বছরের কিশোরীটি অবশ্য এখনো ভোটাধিকার পায়নি।

এ রকমই আরেক লাতিনো তরুণ মেক্সিকোর হোসে। আজ সন্ধ্যায় অ্যাপার্টমেন্টের সামনে দিয়ে চিঠিপত্র ডেলিভারি করে চলে যাচ্ছিলেন। অল্প কিছুদিন হয় সে এ দেশে এসেছে। এখনো নাগরিকত্ব পাননি। আশপাশ দিয়ে মূলধারার মার্কিনিদের দেখে তিনি খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন আর আমার কথায় বারবার বলছিলেন, ‘দ্যাখো, আমি ভালো ইংরেজি জানি না। এখানে নির্বাচন কেমন হচ্ছে, বুঝিয়ে বলতে পারব না।’ হোসেকে অনায়াসে গড়পরতা বাঙালি তরুণ বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। ওর কথা শুনে আমি একটু থমকে গেলাম। এ রকমই তো হওয়ার কথা। সদ্য আমিরকায় আসা একজন লাতিনোর ভোটাভুটি নিয়ে আগ্রহ থাকার কথা নয়। 

পথে এবার বেশ স্বাস্থ্যবান এক শ্বেতাঙ্গ পুরুষকে দেখতে পেলাম। আমি যেদিক দিয়ে হাঁটছি, সেদিক লক্ষ করেই এগিয়ে আসছেন। সন্ধ্যার অন্ধকারে, কিছুটা সংকোচে আমি তার সামনে এগিয়ে গিয়ে নিজেকে বাংলাদেশ থেকে আসা একটি পত্রিকার প্রতিবেদক হিসেবে পরিচয় দিলাম। নির্বাচন নিয়ে কিছু কথা বলতে পারি কি না জিজ্ঞেস করলাম। ভদ্রলোক সন্দেহবাতিক মুক্ত মানুষ। প্রেস কার্ড দেখতে চাইলেন না। জানা গেল তার নাম ‘রবার্ট’ এবং তিনি শিক্ষকতা করেন। ভোট দিয়েছেন কি না জিজ্ঞাসা করায় মাথা নেড়ে বললেন যে দিয়েছেন। আমতা আমতা করে পছন্দের দল বা প্রার্থী কে জিজ্ঞেস করায় মুচকি হেসে বললেন, সে কথা তো বলা যাবে না। ঠিক, আমাদের দেশের একজন ভোটারের মতোই কথা। কাকে ভোট দিয়েছেন অপরিচিত একজনকে বলতে চাইলেন না। এবার আমি কৌশল প্রয়োগ করলাম। জানতে চাইলাম, তিনি কি এবারের নির্বাচনে কোনো ‘ইতিবাচক পরিবর্তন’ আশা করছেন। না কি ‘স্ট্যাটাস কো’-ই থাকবে, অর্থাৎ পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে। এবার তার ঝটপট উত্তর, ‘ইতিবাচক পরিবর্তন’ আশা করছেন। আমার মনে হলো, আমি বোধহয় উত্তর পেয়ে গেছি। একগাল হেসে বললাম, এবার দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের অনেকেই বিশ্বে যে দুটি যুদ্ধ চলছে সেটা চাচ্ছেন না। বললাম, গাজা আর ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত। ভদ্রলোক প্রচণ্ড খুশি হয়ে বললেন, ‘গ্রেট। ইওর অবজারভেশন ইজ সো পারফেক্ট।’ আমি মনে মনে খুশি হয়ে ভাবলাম, এই শিক্ষক নিশ্চয়ই রিপাবলিকানদের ভোট দিয়েছেন! ভদ্রলোক ধন্যবাদ জানিয়ে হাত নেড়ে বিদায় নিলেন। সম্ভবত আমার মতো একজন ‘বাদামি’ নারীর মুখে এমন কথা শুনবেন, ভাবতে পারেননি। 

আমার কথা বলার সাফল্যে এবার আমি এক শ্বেতাঙ্গ নারীর দিকে এগিয়ে গেলাম। আসলে আমি চাইছি, সাধারণ মার্কিনিদের ভোট নিয়ে ভাবনাটা বুঝতে। কিন্তু এই নারী আমার প্রশ্নে মুচকি হেসে রাজনীতি বা নির্বাচন নিয়ে কিছু না বলে চলে গেলেন। ভোট নিয়ে তার আগ্রহ আছে বলে মনে হলো না। 

এবার এক কালো পুরুষ, তবে মেয়েদের মতো চুল বাঁধা, পোশাক পরা। দু-তিনটি শিশুকে নিয়ে ‘মায়ের ভঙ্গি’তে হেঁটে যাচ্ছেন। এ দেশে সত্যিই লৈঙ্গিক পরিচয়, পোশাক-আশাক… সব ব্যাপারেই মানুষের ভাবনাটা খুব মুক্ত! কিন্তু আমি তো এসেছি পিছিয়ে থাকা এক জনপদ থেকে। কাজেই নারীর পোশাক পরা পুরুষদেহী এই পুরুষটির পিছু নিয়ে কাকে ভোট দেবেন জিজ্ঞাসা করব কি না বুঝতে না পেরে দাঁড়িয়ে থাকলাম। 

আমি হাঁটছি। এক কালো তরুণ এবং এক সাদা তরুণী বা প্রেমিক দম্পতি প্রেমে মশগুল হয়ে আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন। এ রকম সময়ে নির্বাচন নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করাটা বেরসিকের মতো হয়ে যায়। মনে হলো, নির্বাচন তো দূরের কথা, চারপাশের কোনো কিছু সম্পর্কেই তাদের আগ্রহ নেই। 

ধবধবে সাদা দুই প্রৌঢ়া আরব নারীকে আসতে দেখলাম এবার। দুজনেরই বয়স ষাটের কাছাকাছি। ঢিলেঢালা পশ্চিমা পোশাক ও কেডসের সঙ্গে মাথায় রুমাল বাঁধা। আমি তাদের সামনে গিয়ে জোরেশোরে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বললে তারা থামলেন। এদের একজনের নাম ‘ফরিদা’, অন্যজন ‘মালিকা’। দুজনেই আলজেরীয় বংশোদ্ভূত। এবার কাকে ভোট দেবেন জিজ্ঞাসা করায় বললেন, ভোট দিতেই যাবেন না, ‘ইউ নো হোয়াট দে ডিড ইন প্যালেস্টাইন’ বলে দুজনেই হাত দিয়ে জবাই করার ভঙ্গি করলেন। আমার মন খারাপ হয়ে গেল। সংক্ষেপে তারা যা বললেন তাতে বোঝা গেল, প্রতিবার ডেমোক্র্যাটদেরই ভোট দিতেন। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা এবার ফিলিস্তিনে এত মানুষ হত্যায় সহায়তা করেছে যে কাউকেই ভোট দেবেন না। দুজনেই গৃহবধূ। ইংরেজিতে খুব দক্ষ না হলেও দুজনেই কাজ চালানোর মতো ইংরেজি বলতে পারেন। এই দুই আরব নারী চলে যেতেই দেখা গেল চশমা চোখের এক কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে একাই রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। তাকে ধরতেই জানালেন, নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন না।

রাত হতে চলেছে। ঘরে ফিরছি। অ্যাপার্টমেন্টের চত্বরে ঢুকেই দেখি দোতলার সাদা প্রৌঢ় মার্ক তার কুকুর নিয়ে নিচে নামছেন। পেশায় মার্ক একজন ফিটনেস ট্রেনার। স্ত্রী গৃহবধূ। তাদের সাতটি সন্তান। ইতস্তত করে নির্বাচনের প্রসঙ্গ তোলায় যথারীতি তার উত্তর, ‘কাকে ভোট দেব সেটা বলা যাবে না হে।’ এবার আমার কৌশল প্রয়োগের দ্বিতীয় চেষ্টা। জিজ্ঞেস করলাম তিনি ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছেন, না কি সবকিছু আগের মতোই থাকবে বলে মনে করেন। মার্কও উত্তরে বললেন, ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছেন। আমিও মনে মনে কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারলাম। সংখ্যাগরিষ্ঠ হোয়াইটদের বড় একটা অংশ শ্বেতাঙ্গ ট্রাম্পকেই ভোট দেবেন। তবে এদের পেটের কথা বের করতে হলে প্রশ্ন করতে হয় উল্টো দিক থেকে। মনে মনে ভাবলাম, ‘ইউরেকা’! আরও তো দুই দিন আছে, নির্বাচনি হাওয়ার অনেকটাই এ দুই দিনে হয়তো স্পষ্ট হবে। তবে এ তো বাংলাদেশ নয় যে টাকা-পয়সা খরচ করে সাধারণ ভোটারদের ভোট কেনা যাবে। ভোটারদের মন জয় করতে হলে রাষ্ট্র কীভাবে চালাবেন, একজন প্রার্থীকে সেসব কথা পরিষ্কারভাবে ভোটাদের জানাতে হয়। তাদের মন জয় করা গেলেই জয়ী হওয়া যায় ভোটে। তবে পূর্বাভাস এমনই যে তিল পরিমাণ ব্যবধানের দুই প্রান্তে অবস্থান করছেন দুই প্রার্থী। হ্যারিস সামান্য এগিয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোই হয়ে উঠবে জয়-পরাজয়ের কারণ।