ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে শিশুসহ নিহত ৯, আহত ২৯

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে শিশুসহ নিহত ৯, আহত ২৯
বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলভ্যান। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে পাঁচ শিশুসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৯ জন। পুলিশ কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি গাড়ির কাছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংযুক্ত ওই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে বেলুচিস্তানের মাসতুং জেলায় হামলার ঘটনাটি ঘটে। 

স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফতেহ মোহাম্মদ জানান, বোমা হামলার সময় স্কুলের বাচ্চাদের বহনকারী একটি মোটরচালিত রিকশা কাছাকাছি ছিল। এতে পাঁচ শিশু, একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন পথচারী নিহত হন।

তাৎক্ষণিক কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের ওপর হামলা জোরদার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। তাই তাদেরই এই হামলার জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি উভয়ই বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। 

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীদের দেশ থেকে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

বেলুচিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্রোহ চলছে। বেলুচ লিবারেশন আর্মিসহ গোষ্ঠীগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে স্বাধীনতা দাবি করে। বিএলএ বিদেশিদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছে এমন নজিরও রয়েছে। সূত্র: এপি

সিরিয়ায় বড় সাফল্যের পথে বিদ্রোহীরা, লক্ষ্য দামেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
সিরিয়ায় বড় সাফল্যের পথে বিদ্রোহীরা, লক্ষ্য দামেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হোমস থেকে আসাদ সরকারের বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর আগে শহরটির প্রবেশপথে আসাদ বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী বাহিনী তাহরির আল-শামের তীব্র সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছিল। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি'র

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) অন্য আরেকটি বড় শহর হামা দখলে নিয়েছিল তাহরির আল-শাম। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে বড় সাফল্য পেতে যাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। গত সপ্তাহে আলেপ্পো শহরও দখলে নিয়েছেল বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা বেড়ে এখন ২৮ হাজার ৫২৫ বর্গকিলোমিটার হয়েছে।

যদি বিদ্রোহী বাহিনী হোমস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে তাহলে দামেস্ক এবং উপকূলীয় অঞ্চলের পথ খুলে যাবে। এটি রাশিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি তারতুস ও হেমেইমিমের জন্য বড় হুমকির কারণ হবে। 

বিদ্রোহী বাহিনীর কমান্ডার হাসান আবদুল গানি বলেন, ‘আমাদের সময় বাঁচানোর জন্য আমরা আসাদ বাহিনীকে পরামর্শ দিচ্ছি, চলে যাও হোমস থেকে, দামেস্ক থেকে এবং পুরো সিরিয়া থেকেই।’

সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী নতুন করে ‘সাউদার্ন অপারেশনস রুম’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। তারা ঘোষণা করেছে, ‘আমাদের গন্তব্য দামেস্ক।’

এদিকে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘ইদলিব, হামা এবং হোমস সিরিয়ার বিরোধীদের হাতে। এখন তারা দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা আশা করি, সিরিয়ার এই অভিযান কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই এগিয়ে যাবে।’ তাছাড়া সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে লেবানন ও জর্ডান সিরিয়ার সঙ্গে তাদের সকল সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে।

সিরিয়ার আসাদ সরকারের বড় সহযোগী রাশিয়া তার নাগরিকদের অবিলম্বে সিরিয়া ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল চীনও তার নাগরিকদের সিরিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। 

সিরিয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল কাতারের দোহায় একটি বিশেষ বৈঠকে বসবে তুরস্ক, ইরান এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি।

মাহফুজ/এমএ/

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দিল্লি অভিমুখে কৃষকদের মিছিল

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৩ পিএম
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দিল্লি অভিমুখে কৃষকদের মিছিল
দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন পাঞ্জাবের কৃষকরা। ছবি: সংগৃহীত

পাঞ্জাবের কৃষকরা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিভিন্ন দাবিতে মিছিল নিয়ে দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা (এসকেএম) ও কিষাণ মজদুর মোর্চার ব্যানারে হরিয়ানা প্রদেশের শাম্ভু সীমান্ত থেকে রাজধানীর দিকে যাত্রা শুরু করেন ১০১ জন কৃষক।

মিছিল শুরু করার আগে কৃষকনেতা গুরু তেজ বাহাদুরকে শহিদি সম্মান জানানো হয়।

শস্যের যথাযথ বিক্রয়মূল্য, সল্পসুদে কৃষিঋণ, কৃষক ও কৃষি শ্রমিকের অবসর ভাতা নিশ্চিতের পাশাপাশি ২০২০-২১ কৃষক আন্দোলনে লাখিমপুর খেরি অঞ্চলে সংগঠিত সহিংসতার বিচারের দাবিতে দিল্লিমুখী এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন তারা। 

এদিকে যেকোনো  ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে হরিয়ানা অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

অঞ্চলটিতে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) অধীনে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়। এতে প্রদেশের আম্বালা জেলায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না।  
এ ছাড়া আন্তপ্রাদেশিক সব সীমান্তে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও শাম্ভু সীমান্তে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিঙ্গঘু সীমান্তসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তৎপর রয়েছে পুলিশ। 

এ বিষয়ে দিল্লি পুলিশ জানায়, তারা যেকোনো পরস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

গত ১০ মাসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো দিল্লিতে মিছিল নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। 

এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের আন্দোলন কর্মসূচীতে পুলিশ ও কৃষকদের মধ্যে দাঙ্গার সৃষ্টি হয়।

কিন্তু এবার যথেষ্ট প্রশাসনিক তৎপরতা সত্ত্বেও পিছু হটতে রাজি নন কৃষকরা।

এ বিষয়ে কৃষক নেতা সানোয়ার সিং পান্ধার জানান, সরকার যদি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, ধরে নিতে হবে কৃষকরাই জিতেছেন।

এই ঘটনায় দেশটির পার্লামেন্টের বিরোধী দল কংগ্রেস কৃষকদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। 

ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনকড় তার দেওয়া প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ করায় এ আন্দোলন জোর ফিরে পেয়েছে বলে মত তাদের।

এদিকে ২০২০-২১ সালের কৃষক আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন কৃষকনেতারা। সূত্র: দ্য হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

নাইমুর/পপি/

ফ্রান্সে দ্রুতই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ: মাখোঁ

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৪ পিএম
ফ্রান্সে দ্রুতই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ: মাখোঁ
ইমানুয়েল মাখোঁ

দ্রুতই ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ১০ মিনিটের এক ভাষণে তিনি এ কথা জানান। 

এর আগে ফ্রান্সের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের জেরে প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ের সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। দেশটির ইতিহাসে গত ৬০ বছরে এমন নজির এই প্রথম।

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়ে মাখোঁ জানান, কিছুদিনের মধ্যেই দেশে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে।

এদিকে খোদ প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি উঠলেও ২০২৭ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে ভোট ছাড়াই পার্লামেন্টে বাজেট পাস করানোর ইস্যুতে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার জেরেই দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র তিন মাসের মধ্যে ক্ষমতা ছাড়ে বার্নিয়েরের সরকার।  

পদত্যাগের পর বার্নিয়েরকে তার কঠোর পরিশ্রমের জন্যে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। 

তবে পার্লামেন্টের তীব্র ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) ও বামপন্থি দল নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনপিএফ) সরকারকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এর উত্তরে আরএন নেতা ম্যারিন লে পেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘আপত্তি প্রকাশ করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। রিপাবলিকানবিরোধী উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অনাস্থা প্রকাশ করেছি এমন ধারণা ঠিক না।’

বার্নিয়েরের সরকার পতনের পর দেশের বাজেট প্রত্যাহার হয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের আগ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বার্নিয়ের। 
এদিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কে দায়িত্ব পাবেন- এ বিষয়ে আলোচনা চলছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকর্নু ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেলিউর নাম উল্লেখ করছেন অনেকেই। 

তবে পার্লামেন্টের এক সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে কোনো প্রার্থীই বেশি সমর্থন জোগাড় করতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র: বিবিসি

নাইমুর/পপি/

ভিয়েতনামে হঠাৎ বিস্ফোরণে ১২ সেনা নিহত

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
ভিয়েতনামে হঠাৎ বিস্ফোরণে ১২ সেনা নিহত
ভিয়েতনামের সামরিক শুটিং রেঞ্জে বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

ভিয়েতনামে হঠাৎ বিস্ফোরণে ১২ জন সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে সামরিক প্রশিক্ষণ অনুশীলনের সময় এ ঘটনা ঘটে। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের বরাতে খবরটি সামনে আসে। নিহতদের সবার লাশ পাওয়া যায়নি। তাদের সন্ধানে উদ্ধারকাজ চলছে।

ভিয়েতনামের সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, গত সোমবার রাতে দক্ষিণাঞ্চলের শিল্প কেন্দ্র ডং নাইতে সপ্তম সামরিক অঞ্চলের একটি সামরিক শুটিং রেঞ্জে বিস্ফোরণটি ঘটে।

প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, প্রচণ্ড ঝড়ের সময় সেনারা বিস্ফোরক পদার্থ বহন করছিল। সেখানে বজ্রপাত আঘাত হানে আর তাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। ভিয়েতনামের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘এটি সামরিক ইউনিট, পরিবার, আত্মীয়, কমরেড ও দলের সদস্যদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

এ দুর্ঘটনা ঘটার এক দিন আগেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফান ভ্যান গিয়াঙ সামরিক অনুশীলন শুরু করার ঘোষণা দেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সপ্তম সামরিক সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ এখনো নিহতদের বেশ কয়েকটি লাশের সন্ধান করছে। সূত্র: রয়টার্স, এএফপি

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২১ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ এএম
গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল
ছবি : সংগৃহীত

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘গণহত্যা চালানোর’ অভিযোগ এনেছে। ৩০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ইসরায়েলি সরকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের অমানবিক ও গণহত্যামূলক বিবৃতি, স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে পাওয়া ধ্বংসযজ্ঞ এবং গাজাবাসীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ‘তুমি নিজেকে অবমানিত মনে কর’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

অ্যামনেস্টি প্রধান আনিয়েস কালামার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মাসের পর মাস ইসরায়েল গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে মানবাধিকার ও মর্যাদার অযোগ্য একটি অধম গোষ্ঠী হিসেবে আচরণ করেছে, তাদের শারীরিকভাবে শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছা প্রদর্শন করেছে। আমাদের গবেষণা প্রকাশ করেছে যে, মাসের পর মাস ধরে ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার ফিলিস্তিনিদের অপূরণীয় ক্ষতি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন হওয়ার পরও তারা এমন কাজ করে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদনের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জেগে ওঠা উচিত। এটি গণহত্যা। এটা অবশ্যই এখনই থামাতে হবে’, বলেন অ্যামনেস্টি প্রধান।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েল নিয়মিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। হামাস ফিলিস্তিনিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। কালামার জানান, অ্যামনেস্টির ৩০০ পাতার প্রতিবেদনে সেই ঘটনাগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে ‘হামাসের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ বছরের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় চালানো ১৫টি বিমান হামলার উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি বলেছে, এসব হামলা ‘মিলিটারি উদ্দেশ্য’কে বাস্তবায়ন করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এসব হামলায় ১৪১ শিশুসহ ৩৩৪ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মৃত্যু এবং শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক ট্রমার পাশাপাশি গাজাবাসী ‘অপুষ্টি, ক্ষুধা ও রোগের’ শিকার এবং ‘ধীরে মৃত্যুর’ সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যেসব দেশ ইসরায়েলকে অস্ত্র দিচ্ছে তারা কনভেনশনের আওতায় গণহত্যা প্রতিরোধে তাদের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তার লঙ্ঘন করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন কালামার।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনকে ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ অভিহিত করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পতিত এবং গোঁড়া সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবার একটি বানোয়াট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যেটি মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত।’

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় অন্তত ৪৪ হাজার ৫৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই সাধারণ নাগরিক। জাতিসংঘ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে করে।

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, তারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা নিয়েও প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। ওই হামলায় ১,২০৮ জন নিহত হন, যাদের বেশির ভাগই সাধারণ নাগরিক। হামলার পর ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাস। তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন। কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা