ঢাকা ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতীয় আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে পরিবর্তনের হাওয়া!

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পিএম
ভারতীয় আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে পরিবর্তনের হাওয়া!
ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা। ছবি: সংগৃহীত

কলোরাডো রাজ্যের ডেনভারে দিওয়ালি উপলক্ষে এক আয়োজনে সফটওয়্যার নির্মাতা সলিল গাওনকার তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান বন্ধুদের জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমরা এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প না হ্যারিসকে ভোট দেবে?’

সেখানে সমবেত প্রায় ৪৫ জন ব্যবসায়ী এবং প্রযুক্তি খাতে কাজ করছেন এমন পেশাজীবীদের জবাব তাকে হতবাক করে দেয়। তারা ২০২০ সালে জো বাইডেনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে রায় আসে। ‘আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম’- বলছেন গাওনকার, যিনি একজন ডেমোক্র্যাট এবং হ্যারিসকে সমর্থন করছেন। ‘এদের বেশির ভাগ আগে বাইডেনকে ভোট দিয়েছেন, কিন্তু একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, যা আমাকে আসলেই অবাক করেছে।’

এক নৈশভোজ দিয়ে নির্বাচনের ‘ট্রেন্ড’ বোঝা যায় না, কিন্তু গাওনকারের অভিজ্ঞতায় জাতীয় পর্যায়ের একটি প্যাটার্নের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় আমেরিকানরা দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়ে আসছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততায় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেজি এন্ডাওমেন্টের এক জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচয় দেওয়া ভারতীয় আমেরিকানদের ৪৭ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলে পরিচয় দেয়, যা ২০২০ সালে ৫৬ শতাংশ ছিল।

হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়া সত্ত্বেও তিনি মাত্র ৬০ শতাংশ ভারতীয় আমেরিকানের সমর্থন পাচ্ছেন, যে সম্প্রদায় চার বছর আগে বাইডেনকে ৭০ শতাংশ সমর্থন দিয়েছিল। অন্যদিকে ট্রাম্প তার অবস্থান ২২ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশে উন্নীত করেছেন।

কার্নেজি এন্ডাওমেন্টের দক্ষিণ এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক এবং এই গবেষণার যৌথ লেখক মিলান ভাইশনভ বলছেন, যদিও অন্যান্য জরিপে হ্যারিসের প্রতি দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের আরও বেশি সমর্থন দেখা যাচ্ছে, আনুগত্যের পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য।

‘আমরা অনেক বেশি পরিবর্তন বা অন্তত ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন এই রিপাবলিকান দলকে গ্রহণ করার ইঙ্গিত দেখছি, যেটা আমাদের কাছে অবাক করার মতো বিষয় ছিল’, ভাইশনভ এক সাক্ষাৎকারে ভয়েস অব আমেরিকাকে (ভিওএ) বলেন।

শুধু ভারতীয় আমেরিকানরাই ডানপন্থি রাজনীতির দিকে ঝুঁকছেন না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিপাবলিকানরা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা হিস্পানিক জনগোষ্ঠী, কৃষ্ণাঙ্গ, আরব এবং মুসলিম ভোটারদের মাঝে সমর্থন বৃদ্ধি করেছে, যাদের সবাইকে একসময়ে ডেমোক্র্যাটদের জন্য নির্ভরযোগ্য ‘ভোট ব্লক’ গণ্য করা হতো।

এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবার হোয়াইট হাউসে ফিরে আসবেন কি না, তা অনিশ্চিত। জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, হ্যারিস আর ট্রাম্পের মধ্যে ব্যবধান খুবই সামান্য। তবে এই জরিপের ফলাফল আমেরিকান রাজনীতির একটি মূল ধারণা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে, আর তা হলো, সংখ্যালঘু এবং অভিবাসী সম্প্রদায়গুলো ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে থাকে, বলছেন ভাইশনভ।

তিনি বলেন, ‘একটা ধারণা প্রচলিত আছে যে জনতত্ত্ব হচ্ছে নিয়তি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি যেহেতু জাতিগত সংখ্যালঘু এবং অনেক অভিবাসী সম্প্রদায়ের আশ্রয়স্থল, তাই এই সম্প্রদায়গুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি স্থায়ীভাবে নির্বাচনি সুবিধা পাবে।’ ‘এখন পরিষ্কারভাবে অনেক ইঙ্গিত আসছে যে ব্যাপারটা সে রকম না। আমাদের জরিপ সেগুলোর একটি।’

‘আমেরিকান ভারতীয়রা আমেরিকান’

৫০ লাখেরও বেশি ভারতীয় আমেরিকানদের খুব সহজে কোনো ছকে ফেলা যায় না। তাদের বেশির ভাগ হিন্দু। তাদের মাঝে অল্পসংখ্যক মুসলিম, শিখ, ক্রিশ্চিয়ান এবং অন্যান্য ধর্মের লোক আছেন। ভারতীয় অভিবাসীদের প্রথম প্রজন্মের অনেকেই রক্ষণশীল দিকে ঝোঁকেন, কিন্তু অনেকেই তা করেন না। আজকের নির্বাচন ঘিরে তাদের চিন্তাভাবনা অন্য আমেরিকানদের উদ্বেগই প্রতিফলন করে: মূল্যস্ফীতি, গর্ভপাত, কর্মসংস্থান এবং আভিবাসন। ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আলোচনায় আসে না বললেই চলে।

‘তারা আমেরিকানদের মতোই ভোট দেন, কারণ তারা আমেরিকান’, বলছেন আমেরিকান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সুমিত্র বাদ্রিনাথান, যিনি এই গবেষণা রিপোর্টের তিন লেখকের একজন।

এই সম্প্রদায় সম্পর্কে পুরোনো ধারণা ধ্বংস করে দিয়ে কার্নেজির জরিপ দেখাচ্ছে যে, ২০২০ সালে বাইডেন যে ভোট পেয়েছিলেন, হ্যারিসের ভারতীয় পরিচয় তাকে তার বেশি পেতে সাহায্য করছে না।

আরও আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, ৪০-অনূর্ধ্ব ভারতীয় আমেরিকান পুরুষরা ডানপন্থি চিন্তাভাবনার দিকে ঝুঁকছেন, তাদের প্রথম প্রজন্মের অভিবাসী না, যাদের ‘সেকেলে’ ভাবা হয়।

ভাইশনভ বলেন, ‘চাচাদের নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের কোনো সমস্যা নেই, তাদের সমস্যা হচ্ছে ৪০-এর কম বয়সী পুরুষদের নিয়ে।’

অভিবাসন নিয়ে অপছন্দ

গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় আমেরিকানদের দুই-তৃতীয়াংশ অভিবাসী। অনেকেই সময়ের ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন রাজনৈতিক ধারার অনুসারী।

অঙ্গনা শাহ, যিনি একজন মিশিগানভিত্তিক আইনজীবী এবং কাজ করেন সামাজিক ন্যায়বিচার নিয়ে। তিনি বলেন, ‘যারা ১৯৯০ সাল বা আরও পরে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, তারা ট্রাম্পের পক্ষে আছেন। কিন্তু আমার বাবার প্রজন্ম পুরোপুরি ডেমোক্র্যাটিক।’ 

প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের ভারতীয়দের মধ্যে পার্থক্য অন্যভাবেও প্রকাশ পায়। যারা সম্প্রতি এসেছেন, তাদের অনেকের জন্য অবৈধ অভিবাসন

শীর্ষক একটি উদ্বেগ হিসেবে উঠে এসেছে।

গাওনকার বলছেন, তার যেসব বন্ধু আগে বাইডেনকে সমর্থন করতেন, তারা ট্রাম্পের পক্ষে চলে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে অবৈধ অভিবাসন উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘বাইডেনের অধীনে যে অবৈধ অভিবাসন ভীষণভাবে বেড়ে গেছে, সেটা ভারতীয়রা তীব্রভাবে অপছন্দ করেন। আমরা জানি, আইনসম্মতভাবে এ দেশে আসতে এবং এখানে থাকতে কত চড়াই-উতরাই পার হতে হয়, আর অন্যদের এভাবে ঢুকে পড়তে দেখা ঠিক মনে হয় না।’

এই মনোভাব প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীদের মনে গভীর দাগ কাটে। মেরিল্যান্ডের ধরমেন্দ্র জেইসওয়ালের কথাই ধরুন, যিনি প্রযুক্তি খাতে একজন পেশাজীবী। তার নাগরিক হওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় ২০ বছর ধরে চলেছে। তিনি ২০২০ সালে তার প্রথম নির্বাচনে বাইডেনকে ভোট দেন, কিন্তু এখন ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন। তিনি বলেন, ‘লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে অবৈধ অভিবাসীরা আমাদের আয়করের টাকায় শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন।’

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ভারতীয়রা তৃতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী। কিন্তু জেইসওয়াল বলছেন, ‘অবৈধ অভিবাসী হচ্ছে অবৈধ অভিবাসী।’

নাগরিকত্বের জন্য অপেক্ষা

হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের যৌথ প্রতিষ্ঠাতা সুহাগ শুক্লা বলেন, অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া যুক্তিসংগত মনে হয়। অভিবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে অনেক ভারতীয় অভিবাসীকে তাদের গ্রিন কার্ড বা নাগরিকত্বের জন্য ১০ থেকে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

তিনি এক সাক্ষাৎকারে ভিওএকে বলেন, ‘লোকজনকে ২০ বছর পড়ে থাকা উচিত না, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটাই হলো আজকের অভিবাসী কার্যক্রমের অবস্থা। অন্যান্য আমেরিকানের মতো তারাও সীমান্তব্যবস্থা জোরদার করার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে।’ 

অবৈধ অভিবাসন নিয়ে কঠোর না হওয়ার জন্য হ্যারিস সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তবে তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বাইডেন প্রশাসনের নীতি পরিবর্তনের ফলে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার কার্যক্রম সমর্থন করেছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প ‘আমেরিকান ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিতাড়ন অভিযান’ চালানোর অঙ্গীকার করেছেন।

জুলাই মাসে শুরু হওয়া হ্যারিস প্রচারণা প্রগতিশীল ভারতীয় আমেরিকানদের মাঝে প্রাণ সঞ্চার করে, যার ফলে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক এগিয়ে আসেন।

কিন্তু এই উৎসাহ অন্য একটি বাস্তবতা আড়াল করে রাখে- অনেক ভোটারের জন্য তার ভারতীয় পরিচয় আকর্ষণ হিসেবে কাজ করছে না। কার্নেজি জরিপে দেখা গেছে, ভারতীয় আমেরিকানদের ১০ জনের মধ্যে একজনেরও কম হ্যারিসের দক্ষিণ এশীয় পরিচয়ে অনুপ্রাণিত।

টওসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় আমেরিকান অধ্যাপক পল্লবী গুহ বলছেন, তার সম্প্রদায়ের অনেকে ‘পরিচয় রাজনীতির’ বাইরে তাকাচ্ছে। তিনি ভিওএকে বলেন, ‘যারা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন, তারা ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিসকে তার নীতিমালার জন্য সমর্থন করছেন।’ 

দক্ষিণ এশীয় ভোটারদের মাঝে রাজনৈতিক সংস্থা ইন্ডিয়ান আমেরিকান ইমপ্যাক্ট ফান্ডের এক জরিপে দেখা গেছে, হ্যারিস ৬৮ শতাংশ পেয়ে এগিয়ে আছেন, আর ট্রাম্প পাচ্ছেন ২০ শতাংশ। জরিপ নেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট’ অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নর্থ কারোলাইনা এবং পেনসিলভানিয়া।

এসব রাজ্যে চার লাখ দক্ষিণ এশীয় আছেন, যারা ভোট দিতে পারবেন। এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের নির্বাচনে, যেখানে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান খুবই ক্ষীণ, সেখানে এই সম্প্রদায় ফলাফল নির্ধারণ করতে পারে, জরিপ সংস্থা এক বিবৃতিতে বলে। ভিওএ ট্রাম্প এবং হ্যারিস প্রচার দলের কাছে মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করে, কিন্তু কারও পক্ষ থেকে উত্তর পায়নি।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ছবি: সংগৃহীত।

অভিশংসিত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। 

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দেশটির আইনপ্রণেতারা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যর্থ সামরিক আইন প্রয়োগ চেষ্টার অভিযোগে অভিশংসনের পক্ষে রায় দেন।

দেশটির গণমাধ্যমের সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

খবরে বলা হয়, দেশটির পার্লামেন্টের ৩০০ আইনপ্রণেতার মধ্যে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন ২০৪জন। বিপক্ষে ভোট পড়ে ৮৫টি।

এ ছাড়া ভোটদান থেকে বিরত থাকেন তিনজন এবং আটটি ভোট বাতিল হয়।

তবে এখনই অপসারিত হচ্ছেন না দেশটির প্রেসিডেন্ট। তিনি সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অপসারিত হলেও তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। এজন্য তাদের ১৮০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হান ডাক সুকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নির্বাচিত করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক ইওল। কিন্তু দেশটির আইনপ্রণেতা ও জনগণের তোপের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হন।

এখন সাংবিধানিক আদালত যদি তাকে অপসারণের পক্ষে রায় দেন তবে তিনি হবেন দ্বিতীয় অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট।

এর আগে ২০১৫ সালে সাংবিধানিক আদালতের রায়ে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই। সূত্র: রয়টার্স।

নাবিল/সাদিয়া/

ইতালির নাগরিকত্ব নিলেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পিএম
ইতালির নাগরিকত্ব নিলেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের হেরার্দো মিলেই ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি। ছবি: সংগৃহীত

ইতালির নাগরিকত্ব নিয়েছেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের হেরার্দো মিলেই। পূর্বপুরুষ ইতালির নাগরিক হওয়ায় তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দেশজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

বিরোধী দলীয় নেতাদের দাবি, এই সিদ্ধান্তে ইতালির প্রেসিডেন্ট দ্বিমুখী নীতি বাস্তবায়ন করছেন।

পূর্বপুরুষ ইতালির নাগরিক হলে সহজেই দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। তবে ইতালিতে জন্ম নেওয়া অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তানদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া বেশ জটিল।

ইতালির অভিবাসন সমর্থনকারী সংস্থাগুলো নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া কিছুটা শিথিল করতে স্মারকলিপি জমা দিলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

মিলেই ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বর্তমানে দেশটিতে অবস্থান করছেন।

ঘটনা প্রসঙ্গে এক সূত্র জানায়, ইতালির সরকার আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টকে নাগরিকত্ব দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সরকার।

এই খবর পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন অনেকেই।

এ প্রসঙ্গে দেশটির বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতা রিকার্ডো ম্যাগি বলেন, ‘মিলেইকে নাগরিকত্ব দিয়ে হাজার হাজার ইতালির বাসিন্দার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।’

এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালি সফরে এসে এক সাক্ষাৎকারে মিলেই জানিয়েছিলেন, তিনি জিনগতভাবে ‘৭৫ শতাংশ’ ইতালির নাগরিক। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নাইমুর/অমিয়/

কুয়েতের অভিবাসন ব্যবস্থায় সংস্কার, নতুন আইন প্রবর্তন

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ পিএম
কুয়েতের অভিবাসন ব্যবস্থায় সংস্কার, নতুন আইন প্রবর্তন
ছবি: সংগৃহীত

কুয়েতে ৬০ বছরের পুরনো অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কার করে নতুন আইন প্রবর্তন করা হয়েছে। দেশটির অভিবাসন নীতিকে আধুনিকীকরণ এবং দীর্ঘকালীন সমস্যা যেমন- ভিসা ব্যবসা এবং অভিবাসী কর্মীদের প্রতি অবিচার মোকাবিলা করতে এই সংস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কতৃপক্ষ। 

গত ২৮ নভেম্বর নতুন এই আইনটি আমিরি ডিক্রির মাধ্যমে জারি করা হয়। 

এই আইনটিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- কুয়েতি নাগরিকত্ব অর্জন না করা পর্যন্ত দেশটির নারীদের সন্তানরা ১০ বছরের জন্য আবাসন ব্যবস্থার সুযোগ পাবে, যা ফি ছাড়াই নবায়নযোগ্য। এই সন্তানরা দেশ থেকে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা বা শিক্ষার উদ্দেশ্যে বাইরে থাকলেও তাদের আবাসন হারাবে না।  

আইনটি ভিসা ব্যবসা ও শোষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া যারা অর্থের বিনিময়ে দেশটিতে প্রবেশ করবে, বাসস্থান বা ভিসা নবায়ন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি আরোপ করা হবে।

নতুন আইনে নিয়োগকর্তাদের জন্যও শর্ত রয়েছে। অভিবাসীদের মূল নিয়োগের বাইরে অন্য কোনো কাজে নিয়োগ দিতে পারবে না এবং কর্মীরা যদি অন্যের জন্য কাজ করেন তবে তার জন্য সঠিক অনুমতি লাগবে।  

আরেকটি বড় পরিবর্তন হলো পরিবারভিত্তিক ভ্রমণ ভিসার মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে ভিসার ফি নির্ধারণ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া বিদেশি গৃহকর্মী আনার জন্য সময় ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে আইনটি মানবপাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে।

আইন ভঙ্গকারীদের জন্য জরিমানা এবং কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিশেষত যারা সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে অবৈধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবেন তাদের জন্য শাস্তি আরও কঠোর হবে।

এই নতুন আইনটি আগামী ছয় মাসের মধ্যে কার্যকর হবে। কুয়েতকে আরও আধুনিকীকরণ করতে এই আইনটি সংস্কার করা হয়েছে।

কুয়েত সরকারের অভিবাসন ও নাগরিকত্ব বিষয়ক সহকারী উপ-মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আলি আল আদওয়ানি সরকারের স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতার প্রতি প্রতিশ্রুতি জোরালো করেছেন। পাশাপাশি সব বাসিন্দার প্রতি সুষম আচরণ নিশ্চিত করার কথা বলেছেন।

আইনটি ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ হিসেবে কুয়েত ভিসা ওয়েবসাইটে আপডেট আনার পরিকল্পনাও করেছে, যা আবাসন আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং কার্যকর করবে। সূত্র: গালফ নিউজ

তাওফিক/পপি/ 

ভারতের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিল করল সুইজারল্যান্ড

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পিএম
ভারতের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিল করল সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ডের অর্থমন্ত্রণালয়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড ন্যাশন’ (এমএফএন) সুবিধা বাতিল করেছে সুইজারল্যান্ড। 

গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এই ঘোষণা দেয় সুইজারল্যান্ডের অর্থ মন্ত্রণালয়।

দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে এমএফএন চুক্তি বৈধতা হারিয়েছে বলে জানায় তারা।

এই ঘোষণার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক আয়কর চুক্তিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সুইজারল্যান্ডের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালে ভারতের আদালতে এমএফএন চুক্তির বিরুদ্ধে দেওয়া রায়ের কারণেই ভারতের বিশেষ সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।

চুক্তি মোতাবেক সুইজারল্যান্ডে ভারতীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫ শতাংশ আয়কর দিতে হতো। কিন্তু ২০২৩ সালের রায়ে ভারতীয় আদালত সুইস প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ শতাংশ কর দাবি করে।

এরই প্রেক্ষিতে বুধবারের রায়ে ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা বাতিল করেছে সুইজারল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্ট।

এ বিষয়ে দেশটির অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, রায়টি ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হলে সুইজারল্যান্ডে বিনিয়োগরত ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে  ১০ শতাংশ কর দিতে হবে।

এর আগে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার মাধ্যমে এমএফএন চুক্তি স্বাক্ষর করে দুই দেশ। 

সুইজারল্যান্ডের এই ঘোষণায় বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। 

নাংগিয়া অ্যান্ডারসন প্রতিষ্ঠানের সন্দিপ ঝুনঝুনওয়ালা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়তি কর সামলানোর বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে একেএম গ্লোবালের অমিত মহেশ্বরী বলেন, ‘এই চুক্তি দ্বিপাক্ষিক। চুক্তি প্রত্যাহারও সমঝোতার মাধ্যমেই হয়েছে। এভাবে দুদেশই তাদের প্রাপ্য কর সংগ্রহ করতে পারবে।’ সূত্র: এনডিটিভি

নাইমুর/অমিয়/

বিল গেটস দেউলিয়া হয়ে যাবেন: মাস্ক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ এএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
বিল গেটস দেউলিয়া হয়ে যাবেন: মাস্ক
টেসলার সিইও ইলন মাস্ক ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস দেউলিয়া হয়ে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বের সেরা ধনী ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এক্সে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন মাস্ক।

সম্প্রতি গেটসের প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের বাজারদরে নাটকীয় পতনের পর ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়ে। 

এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামী প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠার পথেই আছে টেসলা। এই ঊর্ধ্বগতি ধরে রাখতে পারলে গেটস আরও বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে মন্তব্য করেছেন মাস্ক।

তিনি বলেন, ‘গেটস শেয়ার বাজারে যে জালিয়াতি করছে, এটা তাকে বেশি দূর নিতে পারবে না। ইতোমধ্যেই বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে তার। এভাবে গেটস দেউলিয়া হয়ে যেতে পারেন।’

সম্প্রতি বিল গেটস শেয়ার বাজারে ‘শর্ট পজিশন’ পদ্ধতি অবলম্বন করে মাইক্রোসফটের মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
 
শর্ট পজিশন পদ্ধতিতে সাধারণত একজন বিনিয়োগকারী কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধার নিয়ে সেগুলো বিক্রি করেন। এরপর ওই শেয়ারই নিজে কম দামে কিনে মোটা অঙ্কের লাভ করেন।

কয়েক বছর আগে টেসলার আর্থিক টানাপোড়েনের সময় গেটস এই কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন মাস্ক।

তবে ২০২৩ সালে ওয়াল্টার আইজ্যাকসনের লেখা মাস্কের জীবনী থেকে জানা যায়, এই পদ্ধতিতে গেটস উল্টো ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

গেটসকে ‘ভন্ড’ আখ্যায়িত করে মাস্ক বলেন, ‘টেসলার সবচেয়ে দুর্বল সময়ে গেটস ক্ষতি করতে চেয়েছেন। আমার জানামতে তিনি এখনো আমাদের ক্ষতি করতে মুখিয়ে আছেন।’

একদিকে প্রকৃতি সংরক্ষণে অর্থ সহায়তা দিয়ে, অন্যদিকে টেসলার মতো জলবায়ু-সহায়ক প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় গেটসের সমালোচনা করেন মাস্ক।

‘গেটস নিজের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় বলেই টেসলার সঙ্গে টক্কর নিতে চায়।’

২০২৪ সালে টেসলার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জেতার পর থেকে টেসলার শেয়ারে প্রায় ৫৬ দশমিক ৯১ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। সম্প্রতি মাস্ক প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ সম্পদের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ধনীর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেফ বেজোসের সঙ্গে তার ব্যবধান প্রায় ১৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মূলত ব্যবসায়িক দর্শনের ভিন্নতার কারণেই মাস্ক ও গেটসের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। এ বিষয়ে মাস্ক খোলামেলা কথা বললেও গেটস কোনো মন্তব্য করেননি। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

নাইমুর/অমিয়/

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });