পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের কোয়েটা শহরের একটি রেলস্টেশনে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৬ জন নিহত ও ৬২ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৪ জনই সেনাসদস্য বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
শনিবার (৯ নভেম্বর) এই বোমা হামলার পর বেলুচিস্তান পুলিশের মহাপরিদর্শক মৌজ্জাম জাহ আনসারি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, রেলস্টেশনে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের লক্ষ্যবস্তু ছিল পদাতিক স্কুলের সেনাসদস্যরা। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) রয়টার্সকে এক ই-মেইল বার্তায় এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বেলুচিস্তানে সম্প্রতি বিচ্ছিন্নতাবাদী জাতিগত দাঙ্গা এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের হামলা বেড়েছে। দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহ প্রদেশটিতে ব্যাপক নিরাপত্তাসংকট তৈরি করেছে। বিএলএ দীর্ঘদিন ধরে বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ করে আসছে। দেড় কোটি জনসংখ্যার এই প্রদেশটিতে যে কয়টি সশস্ত্র গোষ্ঠী সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে তাদের মধ্যে বিএলএ সবচেয়ে বড়।
তাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রদেশের সমৃদ্ধ গ্যাস ও খনিজসম্পদের অবৈধভাবে যথেচ্ছ ব্যবহার করে আসছে গোষ্ঠীটি।
রেলওয়ে কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৯টায় জাফর এক্সপ্রেস নামক ট্রেনটি পেশোয়ারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তবে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে আসার আগেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
কোয়েটার জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ বালোচ বলেছেন, ‘এটি একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা বলে মনে হচ্ছে। হামলার নির্দিষ্ট কারণ জানার জন্য তদন্ত চলছে।’
এর আগে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার দেখা ফুটেজ অনুযায়ী ঘটনাস্থলে প্রায় ১০০ জন উপস্থিত ছিলেন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের টার্গেট এখন নিরীহ মানুষ, শ্রমিক, শিশু ও নারী। যারা নিরীহ মানুষকে টার্গেট করছে তারা করুণার যোগ্য নয়।’
সূত্র: রয়টার্স ও বিবিসি