আবু মোহাম্মেদ আল-গোলানি। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের নেপথ্যের নায়ক ও বিদ্রোহীগোষ্ঠীর কমান্ডার আবু মোহাম্মেদ আল-গোলানি অত্যাচারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সিরিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টিভি চ্যানেলে বিবৃতি দিয়ে এই ঘোষণা দেন তিনি।
আসাদ শাসনের অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে জোলানি বলেন, ‘কোনায় লুকিয়ে থাকলেও অপরাধীদের খুঁজে বের করব। যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তাদেরও দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
এদিকে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ পালানোর মাধ্যমে সিরিয়ায় ১৩ বছর চলমান গৃহযুদ্ধ থামলেও বেশকিছু রাজনৈতিক জটিলতার মুখে পড়েছেন বিদ্রোহী নেতারা।
পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে আসাদ পরিবারের শাসনের কারণে দেশে ব্যাপক অনিয়ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ধারণা বিশ্লেষকদের।
এই পরিস্থিতিতে দেশে স্থির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের।
গোলানির সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) আগে আল-কায়দার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তবে বর্তমান সঙ্কট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হলে অতীতের সব ভুলে তাদের অন্তর্ভূক্তিমূলক সরকার গঠনে মনযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ আল-বশির।
ভঙ্গুর আর্থ-সামাজিক পরিবেশ সামলাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বশির বলেন, ‘রাজকোষে অল্প কিছু সিরিয়ান পাউন্ড অবশিষ্ট আছে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই অর্থ প্রায় শূন্যের সমান।’
এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অর্থসহায়তার বিষয়ে আলোচনা চলছে, জানান বশির।
১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ায় কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক মিলিয়ন বাসিন্দা।
এ অবস্থায় সিরিয়ায় স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে প্রায় সবক্ষেত্রেই সংস্কার প্রয়োজন।
তবে এইচটিএস যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশিরভাগ দেশের কাছে ‘জঙ্গী’ সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত বলে দুইপক্ষের মধ্যে কতটুকু যোগসংযোগ ঘটবে এ বিষয়ে আশঙ্কার জায়গা রয়েছে।
সিরিয়া থেকে জঙ্গিবাদ প্রত্যাহার করে নতুন নেতৃত্বের কাছে সংখ্যালঘু অধিকার সংরক্ষণ ও মানবিক সহাবস্থান বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘সিরিয়ায় মসৃণ রাজনৈতিক পট পরিবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।’ সূত্র: দ্য ডন
নাইমুর/অমিয়/