হাইতির প্রধানমন্ত্রী গ্যারি কনিলকে দায়িত্বগ্রহণের মাত্র ছয় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।
রবিবার (১০ নভেম্বর) ক্ষমতাসীন ট্রানজিশনাল প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিল (টিপিসি) তাকে অপসারণ করে।
এই কাউন্সিলের ৯ সদস্যের মধ্যে আট সদস্যের একটি নির্বাহী আদেশে কনিলকে অপসারণ করা হয়।
তার জায়গায় ব্যবসায়ী এবং সাবেক হাইতি সিনেট প্রার্থী আলিক্স দিদিয়ের ফিলস এমিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
কনিল এক চিঠিতে জানান, তার অপসারণের সিদ্ধান্তটি কোনো আইনগত ও সাংবিধানিক কাঠামো অনুযায়ী হয়নি। সংসদ ছাড়া কেউই তাকে অপসারণ করতে পারে না।
এটি হাইতির ভবিষ্যতের জন্য ‘গভীর সংকট’ সৃষ্টি করবে।
গ্যারি কনিল তার অপসারণকে অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন।
চলতি বছরের ৩ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন কলিন। তার পূর্বসূরি অ্যারিয়েল হেনরি সশস্ত্র গোষ্ঠীদের একটি নেটওয়ার্কের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত এপ্রিলে টিপিসি গড়ে ওঠে। হাইতির সশস্ত্র গোষ্ঠীর এই নেটওয়ার্ক পোর্ট অব প্রিন্সের বিভিন্ন অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি গায়ানায় একটি সম্মেলনে যোগ দিতে হাইতি ছাড়েন অ্যারিয়েল হেনরি। এরপর হেনরি যেন আর দেশে ফিরতে না পারেন, সে জন্য শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দখল করে নেয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।
এই প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিলের লক্ষ্য ছিল ব্যাপক আকারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া হাইতিতে গণতান্ত্রিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত হাইতির তিন হাজার ৬০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে হাইতির ২০ লাখ মানুষ ব্যাপক খাদ্য সংকটে রয়েছেন এবং দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।
হাইতির অন্যতম শক্তিশালী গ্যাং নেতা জিমি শেরিজিয়র। তিনি ‘বারবিকিউ’ নামে পরিচিত।
জিমি শেরিজিয়র বলেন, যদি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে একটি নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়, তবে তারা সহিংসতা বন্ধ করতে প্রস্তুত।
হাইতির সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আট বছর আগে। সে সময় টেট কাল পার্টির জোভেনেল মুইজ নির্বাচিত হন।
২০২১ সালের জুলাইয়ে তার হত্যার পর থেকে প্রেসিডেন্টের পদটি শূন্য রয়েছে।
হাইতির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই শূন্যতা কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন অংশে তাদের প্রভাব বাড়িয়েছে। এতে অনেক জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাহত হয়েছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত মাসে কেনিয়া থেকে শত শত পুলিশ কর্মকর্তার মোতায়েনের খবর পাওয়া গেছে এবং আরও পুলিশ সদস্যরা নভেম্বর মাসে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। সূত্র: বিবিসি
তাওফিক/পপি/