বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ এবং সেই সূত্রে অবৈধ অর্থ পাচারের ঘটনায় মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে ঝাড়খন্ডের একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। সেই সঙ্গে তল্লাশি চলছে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি স্থানেও।
ইডি সূত্র জানিয়েছে, এই দুটি রাজ্যের অন্তত ১৭টি স্থানে চলছে তল্লাশি অভিযান। প্রসঙ্গত, আজ বুধবার বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডে বিধানসভা নির্বাচন।
ইডি জানিয়েছে, অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশি কিছু মহিলাকে ভারতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাদের মাধ্যমেই ভারতে এসেছে প্রচুর অবৈধ অর্থ। এই অভিযোগ আসার পরই প্রিভেনশন অব মানি লন্ডরিং (পিএমএলএ) আইনে তদন্ত শুরু হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এই অর্থ পাচারের অভিযোগ প্রথম পাওয়া যায়। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করে ভোটমুখী ঝাড়খন্ডে এসে অর্থ পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ভারতের খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঁচির বাড়িয়াতু থানায় দায়ের হওয়া মামলার ভিত্তিতে পিএমএলএর একাধিক ধারায় রিপোর্ট তৈরি করেছে ইডি। মামলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় হুন্ডির মাধ্যমে টাকা লেনদেনের অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে হিন্দু পরিচয়ের ভুয়া আধার কার্ড! এভাবেই বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা মেয়েদের পাচার করা হয়েছে ঝাড়খন্ডে। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আধার কার্ডসহ নানা বৈধ পরিচয়পত্র। বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট মোটা টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে বৈধ পরিচয়পত্র তুলে দেওয়ার কাজ করছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই এফআইআরে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ডের বেশ কয়েকটি এলাকায় গতকাল সকাল থেকে চলছে ইডির তল্লাশি।
ঝাড়খন্ড আদালতের তরফ থেকে অবৈধ লেনদেনের তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় ইডির হাতে। ইডি তদন্তে নেমে জানতে পারে, হাওয়ালার মাধ্যমে ভারতীয় মুদ্রাকে বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করে সেই মুদ্রাকে ফের ভারতীয় টাকায় পরিবর্তন করা হতো। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেনের পেছনে কে বা কারা রয়েছে, তারই তদন্ত করছে ইডি। এদিন কলকাতা লাগোয়া মধ্যমগ্রামের তিনটি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। মধ্যমগ্রামের পূর্ব বঙ্কিমপল্লীতে পিঙ্কি বসু নামে এক মহিলার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। আন্তর্জাতিক নারী পাচারের সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকতে পারে এই মহিলার, এমনটাই সন্দেহ করছে ইডি। গত তিন মাসে সাতবার ঠিকানা বদল করেছেন এই মহিলা। কী কারণে বারবার ঠিকানা বদল, জানতে চায় ইডি।