গণবিক্ষোভের মুখে সামরিক শাসন প্রত্যাহার করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সামরিক শাসন জারি করার মাত্র ছয় ঘণ্টা পর বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর চারটার দিকে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি।
বিরোধী দলের ‘দেশদ্রোহী’ কর্মকাণ্ড এবং উত্তর কোরীয় আগ্রাসন মোকাবিলা করতে সামরিক শাসন জারি করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি তার।
এই সিদ্ধান্তের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। সামরিক শাসনের মাধ্যমে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি, র্যালি, আন্দোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বিক্ষোভের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে দেশটির জনগণ।
মঙ্গলবার ইওলের সিদ্ধান্তের পর বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা তৎক্ষণাৎ আপত্তি জানান।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দেশটির সংসদে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ভোট হয়। ৩০০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পর আগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন ইওল। নিজ দলের বেশ কিছু সংসদ সদস্যও তার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে বিরোধী দলের আধিক্য থাকায় বেশ কিছুদিন যাবৎ বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন তিনি। তারা জাতীয় কার্যক্রম ব্যাহত করছে বলে দাবি ইওলের।
এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতারা দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
সামরিক শাসন জারি করার পর দেশটির সংসদ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে জনতা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করলে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার ভোরে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আগ পর্যন্ত বিক্ষোভ চালায় তারা।
বিক্ষোভকারী কিম সং ওন বলেন, ‘সামরিক শাসন জারি করা চরম অন্যায় হয়েছে। তাই আমি রাস্তায় নেমে এসেছি।’
দেশটির বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা পার্ক চ্যান ডি প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত স্বৈরশাসনের পথ সৃষ্টি করতে পারে।’
সামরিক শাসন জারি করার পর দেশটিতে আশির দশকের স্বৈরশাসনের কথা মনে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অনেকেই।
সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আগে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানায়।
ইওলের পদক্ষেপ তার রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই ঘটনায় দেশটির শেয়ারবাজারে উল্লেখযোগ্য দরপতন ঘটে। সূত্র: রয়টার্স, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট
নাইমুর/অমিয়/