ঢাকা ৯ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে ৮৪ জন।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। 

ফিলিস্তিন এনজিও নেটওয়ার্কের পরিচালক আমজাদ শাওয়া বলেছেন, শীতকাল ঘনিয়ে আসায় গাজায় মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র ও একটি বাড়িতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় চার শিশুসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় সাত অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে কমপক্ষে ৪৪ হাজার ৫৩২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৩৮ জন আহত হয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা

মেহেদী/এমএ/

বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন জয়শঙ্কর

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৪ এএম
বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পরেই প্রথমবারের মতো ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে তারা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানায় দ্য হিন্দুস্থান টাইমস। 

সংবাদ সম্মেলনে জয়শঙ্কর জানান, বাংলাদেশের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। তবে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

এ ছাড়া, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর সঙ্গে বৈঠকের পরে জয়শঙ্কর ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানেও অংশ নেন এবং কোয়াড (অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান, এবং যুক্তরাষ্ট্র) বৈঠকে যোগ দেন।

কোয়াড গোষ্ঠীটির মূল লক্ষ্য চীনের প্রভাব মোকাবেলা করা। ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং বাইডেন প্রশাসন এটি আরও উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে।

বৈঠকে উভয় পক্ষ তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ইস্যুতে আলোচনা করে। তারা নিরাপত্তা, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, এবং মুক্ত ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হন।

এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় অভিবাসন সংক্রান্ত উদ্বেগও মোকাবেলা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এই বৈঠকের মাধ্যমে, মার্কিন-ভারত সম্পর্কের আরও দৃঢ় ভিত্তি গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সূত্র: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস।

তাওফিক/ 

তুরস্কে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জন আটক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩০ এএম
তুরস্কে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জন আটক
তুরস্কে স্কি রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

তুরস্কে স্কি রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। আটকদের মধ্যে হোটেলের মালিকও রয়েছেন। ওই ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ৭৬ জনের। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রথম ভাগে আটকের তথ্যটি নিশ্চিত করেন। ইয়েরলিকায়া আরও জানান, ৪৫ জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাদবাকি লাশগুলোর পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

পশ্চিম তুরস্কের বলু পর্বতমালার কার্তালকায় স্কি রিসোর্টের গ্র্যান্ড কারতাল হোটেলে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় হোটেলের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।  

১২ তলা ওই হোটেলে ২৩৮ জন নিবন্ধিত অতিথি ছিলেন। রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ হোটেলটিতে অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়। অতিথিরা এ সময় ধোঁয়ায় ঢাকা করিডোর দিয়ে ছুটে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে বিছানার চাদর দিয়ে রশি বানিয়ে জানালা দিয়ে নামার চেষ্টাও করেন।

হোটেলটির নিরাপত্তাব্যবস্থা সমালোচনার মুখে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। আগুনের ঘটনার সময় কোনো সতর্কসংকেত বেজে উঠেনি বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা ভুক্তভোগীরা। ধোঁয়ার কারণে করিডোরও অন্ধকার ছিল। সূত্র: রয়টার্স

কুম্ভমেলায় দুর্ঘটনা এড়াতে এআই ব্যবহার

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৯ এএম
কুম্ভমেলায় দুর্ঘটনা এড়াতে এআই ব্যবহার
দুর্ঘটনা এড়াতে কুম্ভমেলায় এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের অন্যতম বড় জমায়েত ভারতের কুম্ভমেলার আয়োজকরা পুণ্যার্থীদের পদদলিত হওয়া রুখতে মেলাস্থলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে। 

মেলাকেন্দ্রিক টেক অপারেশনের প্রধান সিনিয়র পুলিশ অফিসার অমিত কুমার বলেছেন, ‘আমরা চাই আধ্যাত্মিক ক্রিয়া শেষ করে প্রত্যেকেই হাসিমুখে বাড়ি ফিরে যাক।’

কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্ঘটনা এড়াতে এবার তারা যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন সেগুলো তাদের জমায়েতের সঠিক জনসংখ্যা নিরূপণে সহায়তা করবে। সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অমিত কুমার বলছেন, ‘মেলামুখী রাস্তাতে এবং মেলাস্থলে ৩০০ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের মাথার ওপর ড্রোন উড়ছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ যেখানে পুলিশ অফিসারদের পাশাপাশি টেকনিশিয়ানরা অবস্থান করছেন, সেখান থেকে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ দেখা যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত চিত্রগুলো একটি এআই অ্যালগরিদমে দেওয়া হবে যা কন্ট্রোল রুমের নিয়ন্ত্রকদের সামনে প্রতিটা পথে জমায়েতের একটা সার্বিক চিত্র তুলে ধরবে।’ এই মেলা এক সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছে এবং আগামী ছয় সপ্তাহ ধরে চলবে। সূত্র: এএফপি

১৮ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৯ এএম
১৮ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত
অবৈধ ১৮ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরানোর প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উভয় দেশ মিলে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৮ হাজার ভারতীয় নাগরিককে চিহ্নিত করেছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচার থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণেও তিনি একই কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এর এক দিন পরই ১৮ হাজার ভারতীয়কে দেশে ফেরানোর খবর সামনে আসে।

নয়াদিল্লি এ বিষয়ে ওয়াশিংটনকে সহযোগিতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ সুরক্ষিত রাখতে চায়। বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচি এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার আশা করছে দেশটি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের জন্য শুল্ক ছাড়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

২০২৩ সালে দেওয়া ৩ লাখ ৮৬ হাজার এইচ-১বি ভিসার মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ ছিল। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে শৈথিল্য প্রদর্শন করলে বৈধ অভিবাসন এবং শ্রমিক চুক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, ‘ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসন সহযোগিতার অংশ হিসেবে উভয় দেশ অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কাজ করছে। এটি বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যেই করা হচ্ছে।’

২০২৪-২৫ অর্থবছরে মার্কিন সীমান্তে টহলরত কর্মকর্তাদের দ্বারা আটক ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা সামগ্রিকভাবে ৩ শতাংশ হলেও ইদানীং ভারতীয়দের সংখ্যা বাড়ছে। ভারত কর্মসংস্থানের সংকট মোকাবিলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ান, সৌদি আরব, জাপান ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর সঙ্গে অভিবাসন চুক্তি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রেও তারা এই পরিধি বাড়াতে চায়। 

মেক্সিকো,ভেনেজুয়েলা ও গুয়াতেমালার মতো দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা কম হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সূত্র: ব্লুমবার্গ

যে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৫ এএম
যে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন
ছবি: সংগৃহীত

নিজের প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অদ্ভুত এক কূটনীতি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। প্রকাশ্যেই তিনি উষ্ণ হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার দিকে। অন্যদিকে পৃথকভাবে চাপ তৈরি করেছিলেন ইরান ও চীনের ওপর। 

কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ওই একই কূটনীতি অনুসরণ করা হয়তো সম্ভব হবে না ট্রাম্পের পক্ষে। এবার তার জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রগুলো এখন আরও ঐক্যবদ্ধ। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ তাদেরকে এই পরিস্থিতিতে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। 

ট্রাম্প গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকেই ঘোষণা দিয়ে এসেছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার সময়টিতে চীনকে জবাব দেওয়া হবে।  

কিন্তু গত কয়েক বছরে সম্পর্কের সমীকরণ অনেকটাই বদলে গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গড়ে তুলেছেন ‘সীমাহীন অংশীদারত্ব’। রাশিয়াকে সরাসরি অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করছে চীন, যা দেশটির ইউক্রেন যুদ্ধে টিকে থাকার পেছনে ভূমিকা রাখছে।

ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পর গত মঙ্গলবারও পুতিন ও শি নিজেদের কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও সুদৃঢ় করা নিয়ে দীর্ঘ ফোনালাপ করেছেন। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ২০২৪ সালের জুনে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া। ইরানের সঙ্গেও গত শুক্রবার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণকারী এই চার দেশের এভাবে একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলাকে চীনে নিযুক্ত বাইডেন প্রশাসনের দূত সম্প্রতি ‘অপবিত্র জোট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিশ্লেষণকারীরাও বলছেন, ওই চার দেশের একত্র হওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছু বয়ে আনবে না।  

ওয়াশিংটনভিত্তিক এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ড্যানিয়েল রাসেল বলেন, ‘ট্রাম্পের মূল দ্বিধা হলো রাশিয়ার সঙ্গে তিনি তাল মেলাতে চান, আবার বাণিজ্যেও তিনি চীনকে চাপে ফেলতে চান। যেখানে মস্কো ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক রাশিয়াকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সেভাবে জড়াতে দেবে না। আবার চীনও মার্কিন চাপের মুখে নতি স্বীকার করবে না।’  

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ওপর পশ্চিম যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তা অনেকটাই তারা পাশ কাটাতে পেরেছে চীনের সহায়তায়। চীন রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনেছে। এ ছাড়া মস্কোর প্রতিরক্ষা শক্তিকে বলিষ্ঠ করতে পারে এমন কিছু রসদ বেইজিং সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চীন বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। 

উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে সেনাসদস্য ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। পাশাপাশি দ্রুতগতিতে নিজেদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আঞ্চলিকভাবে ইসরায়েলের হামলায় দুর্বল হয়ে গেলেও ইরান তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা পুনরায় শুরু করতে পারে। 
ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যরাও চ্যালেঞ্জের বিষয়টি জানেন এবং তারা এই বাস্তবতাকে এরই মধ্যে স্বীকারও করে নিয়েছেন। 
শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব নেবেন মাইক ওয়াল্টজ। তিনি নভেম্বরেই ফক্স নিউজকে বলেছেন, চীন ইরানের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে তেল কিনছে। ইরান তা ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠাচ্ছে রাশিয়ায়। সেগুলো পরে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আঘাত হানতে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটাই হলো চীন। এ ছাড়া রুবিও ‘বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতার’ জন্য মস্কো, তেহরান ও পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করেন। 

আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ জ্যাক কুপার ধারণা করছেন, ট্রাম্পের টিম চীনের বলয় থেকে অন্যান্য দেশকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।

কুপার বলেন, ‘তারা হয়তো রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানকে চীনের কাছ থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।’

তিনি আরও বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে একটি এবং মস্কোর সঙ্গে আরেকটি চুক্তির চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মনে করি আমি। 

ওবামা প্রশাসনে বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মাইকেল ফ্রোম্যান মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত হওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ নেই।

তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবেন বলে মনে করলেও উত্তর কোরিয়া এখন তাদের সঙ্গে জড়াবে কি না, তা অস্পষ্ট। কারণ দেশটি এখন রাশিয়া ও চীনের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে।  

রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, দেশগুলোর সম্পর্কে কিছুটা ফাটল দেখা যাচ্ছে। বাইডেন প্রশাসনের আমলে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড প্রশ্ন রেখেছেন, তেহরান মস্কোর ওপর সহায়তার জন্য নির্ভর করতে পারবে কি না? রাশিয়া যে মিত্রদের সেভাবে সহায়তা দিতে পারে না, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এক্ষেত্রে সর্বশেষ উদাহরণ হলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার। রাশিয়া সেভাবে শেষ মুহূর্তে তাকে সমর্থন দিতে পারেনি।

এ প্রসঙ্গে উড বলেন, আমি যদি ইরান হতাম, তা হলে দেখতাম রাশিয়া আসাদকে কীভাবে পরিত্যাগ করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হতাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের ক্ষেত্রে ট্রাম্প আবার আগের মেয়াদের নীতি ফেরত নিয়ে আসতে পারেন। চেষ্টা করতে পারেন তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক কর্মকাণ্ডের লাগাম টানতে।   

উডের মতে, নতুন প্রশাসনের জন্য অনেক কিছুই সহজ হবে, যদি নতুন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগী হয়, যে মার্কিন সম্পদকে প্রথম মেয়াদে সে রকমভাবে মূল্যায়ন করেননি ট্রাম্প।

এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য পুতিন আলোচনায় বসতে রাজি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মোটা দাগে ট্রাম্পের কাছ থেকে যেসব আভাস মিলছে, তাতে তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সব মিটিয়ে ফেলার পক্ষে। সূত্র: রয়টার্স