ঢাকা ৯ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

সিরিয়ায় বড় সাফল্যের পথে বিদ্রোহীরা, লক্ষ্য দামেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
সিরিয়ায় বড় সাফল্যের পথে বিদ্রোহীরা, লক্ষ্য দামেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হোমস থেকে আসাদ সরকারের বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর আগে শহরটির প্রবেশপথে আসাদ বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী বাহিনী তাহরির আল-শামের তীব্র সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছিল। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি'র

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) অন্য আরেকটি বড় শহর হামা দখলে নিয়েছিল তাহরির আল-শাম। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে বড় সাফল্য পেতে যাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। গত সপ্তাহে আলেপ্পো শহরও দখলে নিয়েছেল বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা বেড়ে এখন ২৮ হাজার ৫২৫ বর্গকিলোমিটার হয়েছে।

যদি বিদ্রোহী বাহিনী হোমস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে তাহলে দামেস্ক এবং উপকূলীয় অঞ্চলের পথ খুলে যাবে। এটি রাশিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি তারতুস ও হেমেইমিমের জন্য বড় হুমকির কারণ হবে। 

বিদ্রোহী বাহিনীর কমান্ডার হাসান আবদুল গানি বলেন, ‘আমাদের সময় বাঁচানোর জন্য আমরা আসাদ বাহিনীকে পরামর্শ দিচ্ছি, চলে যাও হোমস থেকে, দামেস্ক থেকে এবং পুরো সিরিয়া থেকেই।’

সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী নতুন করে ‘সাউদার্ন অপারেশনস রুম’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। তারা ঘোষণা করেছে, ‘আমাদের গন্তব্য দামেস্ক।’

এদিকে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘ইদলিব, হামা এবং হোমস সিরিয়ার বিরোধীদের হাতে। এখন তারা দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা আশা করি, সিরিয়ার এই অভিযান কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই এগিয়ে যাবে।’ তাছাড়া সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে লেবানন ও জর্ডান সিরিয়ার সঙ্গে তাদের সকল সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে।

সিরিয়ার আসাদ সরকারের বড় সহযোগী রাশিয়া তার নাগরিকদের অবিলম্বে সিরিয়া ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল চীনও তার নাগরিকদের সিরিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। 

সিরিয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল কাতারের দোহায় একটি বিশেষ বৈঠকে বসবে তুরস্ক, ইরান এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি।

মাহফুজ/এমএ/

তুরস্কে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জন আটক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩০ এএম
তুরস্কে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জন আটক
তুরস্কে স্কি রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

তুরস্কে স্কি রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। আটকদের মধ্যে হোটেলের মালিকও রয়েছেন। ওই ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ৭৬ জনের। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রথম ভাগে আটকের তথ্যটি নিশ্চিত করেন। ইয়েরলিকায়া আরও জানান, ৪৫ জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাদবাকি লাশগুলোর পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

পশ্চিম তুরস্কের বলু পর্বতমালার কার্তালকায় স্কি রিসোর্টের গ্র্যান্ড কারতাল হোটেলে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় হোটেলের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।  

১২ তলা ওই হোটেলে ২৩৮ জন নিবন্ধিত অতিথি ছিলেন। রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ হোটেলটিতে অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়। অতিথিরা এ সময় ধোঁয়ায় ঢাকা করিডোর দিয়ে ছুটে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে বিছানার চাদর দিয়ে রশি বানিয়ে জানালা দিয়ে নামার চেষ্টাও করেন।

হোটেলটির নিরাপত্তাব্যবস্থা সমালোচনার মুখে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। আগুনের ঘটনার সময় কোনো সতর্কসংকেত বেজে উঠেনি বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা ভুক্তভোগীরা। ধোঁয়ার কারণে করিডোরও অন্ধকার ছিল। সূত্র: রয়টার্স

কুম্ভমেলায় দুর্ঘটনা এড়াতে এআই ব্যবহার

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৯ এএম
কুম্ভমেলায় দুর্ঘটনা এড়াতে এআই ব্যবহার
দুর্ঘটনা এড়াতে কুম্ভমেলায় এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের অন্যতম বড় জমায়েত ভারতের কুম্ভমেলার আয়োজকরা পুণ্যার্থীদের পদদলিত হওয়া রুখতে মেলাস্থলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে। 

মেলাকেন্দ্রিক টেক অপারেশনের প্রধান সিনিয়র পুলিশ অফিসার অমিত কুমার বলেছেন, ‘আমরা চাই আধ্যাত্মিক ক্রিয়া শেষ করে প্রত্যেকেই হাসিমুখে বাড়ি ফিরে যাক।’

কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্ঘটনা এড়াতে এবার তারা যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন সেগুলো তাদের জমায়েতের সঠিক জনসংখ্যা নিরূপণে সহায়তা করবে। সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অমিত কুমার বলছেন, ‘মেলামুখী রাস্তাতে এবং মেলাস্থলে ৩০০ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের মাথার ওপর ড্রোন উড়ছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ যেখানে পুলিশ অফিসারদের পাশাপাশি টেকনিশিয়ানরা অবস্থান করছেন, সেখান থেকে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ দেখা যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত চিত্রগুলো একটি এআই অ্যালগরিদমে দেওয়া হবে যা কন্ট্রোল রুমের নিয়ন্ত্রকদের সামনে প্রতিটা পথে জমায়েতের একটা সার্বিক চিত্র তুলে ধরবে।’ এই মেলা এক সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছে এবং আগামী ছয় সপ্তাহ ধরে চলবে। সূত্র: এএফপি

১৮ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৯ এএম
১৮ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত
অবৈধ ১৮ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরানোর প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উভয় দেশ মিলে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৮ হাজার ভারতীয় নাগরিককে চিহ্নিত করেছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচার থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণেও তিনি একই কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এর এক দিন পরই ১৮ হাজার ভারতীয়কে দেশে ফেরানোর খবর সামনে আসে।

নয়াদিল্লি এ বিষয়ে ওয়াশিংটনকে সহযোগিতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ সুরক্ষিত রাখতে চায়। বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচি এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার আশা করছে দেশটি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের জন্য শুল্ক ছাড়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

২০২৩ সালে দেওয়া ৩ লাখ ৮৬ হাজার এইচ-১বি ভিসার মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ ছিল। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে শৈথিল্য প্রদর্শন করলে বৈধ অভিবাসন এবং শ্রমিক চুক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, ‘ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসন সহযোগিতার অংশ হিসেবে উভয় দেশ অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কাজ করছে। এটি বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যেই করা হচ্ছে।’

২০২৪-২৫ অর্থবছরে মার্কিন সীমান্তে টহলরত কর্মকর্তাদের দ্বারা আটক ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা সামগ্রিকভাবে ৩ শতাংশ হলেও ইদানীং ভারতীয়দের সংখ্যা বাড়ছে। ভারত কর্মসংস্থানের সংকট মোকাবিলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ান, সৌদি আরব, জাপান ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর সঙ্গে অভিবাসন চুক্তি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রেও তারা এই পরিধি বাড়াতে চায়। 

মেক্সিকো,ভেনেজুয়েলা ও গুয়াতেমালার মতো দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা কম হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সূত্র: ব্লুমবার্গ

যে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৫ এএম
যে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন
ছবি: সংগৃহীত

নিজের প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অদ্ভুত এক কূটনীতি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। প্রকাশ্যেই তিনি উষ্ণ হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার দিকে। অন্যদিকে পৃথকভাবে চাপ তৈরি করেছিলেন ইরান ও চীনের ওপর। 

কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ওই একই কূটনীতি অনুসরণ করা হয়তো সম্ভব হবে না ট্রাম্পের পক্ষে। এবার তার জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রগুলো এখন আরও ঐক্যবদ্ধ। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ তাদেরকে এই পরিস্থিতিতে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। 

ট্রাম্প গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকেই ঘোষণা দিয়ে এসেছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার সময়টিতে চীনকে জবাব দেওয়া হবে।  

কিন্তু গত কয়েক বছরে সম্পর্কের সমীকরণ অনেকটাই বদলে গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গড়ে তুলেছেন ‘সীমাহীন অংশীদারত্ব’। রাশিয়াকে সরাসরি অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করছে চীন, যা দেশটির ইউক্রেন যুদ্ধে টিকে থাকার পেছনে ভূমিকা রাখছে।

ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পর গত মঙ্গলবারও পুতিন ও শি নিজেদের কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও সুদৃঢ় করা নিয়ে দীর্ঘ ফোনালাপ করেছেন। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ২০২৪ সালের জুনে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া। ইরানের সঙ্গেও গত শুক্রবার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণকারী এই চার দেশের এভাবে একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলাকে চীনে নিযুক্ত বাইডেন প্রশাসনের দূত সম্প্রতি ‘অপবিত্র জোট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিশ্লেষণকারীরাও বলছেন, ওই চার দেশের একত্র হওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছু বয়ে আনবে না।  

ওয়াশিংটনভিত্তিক এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ড্যানিয়েল রাসেল বলেন, ‘ট্রাম্পের মূল দ্বিধা হলো রাশিয়ার সঙ্গে তিনি তাল মেলাতে চান, আবার বাণিজ্যেও তিনি চীনকে চাপে ফেলতে চান। যেখানে মস্কো ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক রাশিয়াকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সেভাবে জড়াতে দেবে না। আবার চীনও মার্কিন চাপের মুখে নতি স্বীকার করবে না।’  

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ওপর পশ্চিম যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তা অনেকটাই তারা পাশ কাটাতে পেরেছে চীনের সহায়তায়। চীন রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনেছে। এ ছাড়া মস্কোর প্রতিরক্ষা শক্তিকে বলিষ্ঠ করতে পারে এমন কিছু রসদ বেইজিং সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চীন বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। 

উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে সেনাসদস্য ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। পাশাপাশি দ্রুতগতিতে নিজেদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আঞ্চলিকভাবে ইসরায়েলের হামলায় দুর্বল হয়ে গেলেও ইরান তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা পুনরায় শুরু করতে পারে। 
ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যরাও চ্যালেঞ্জের বিষয়টি জানেন এবং তারা এই বাস্তবতাকে এরই মধ্যে স্বীকারও করে নিয়েছেন। 
শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব নেবেন মাইক ওয়াল্টজ। তিনি নভেম্বরেই ফক্স নিউজকে বলেছেন, চীন ইরানের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে তেল কিনছে। ইরান তা ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠাচ্ছে রাশিয়ায়। সেগুলো পরে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আঘাত হানতে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটাই হলো চীন। এ ছাড়া রুবিও ‘বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতার’ জন্য মস্কো, তেহরান ও পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করেন। 

আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ জ্যাক কুপার ধারণা করছেন, ট্রাম্পের টিম চীনের বলয় থেকে অন্যান্য দেশকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।

কুপার বলেন, ‘তারা হয়তো রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানকে চীনের কাছ থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।’

তিনি আরও বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে একটি এবং মস্কোর সঙ্গে আরেকটি চুক্তির চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মনে করি আমি। 

ওবামা প্রশাসনে বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মাইকেল ফ্রোম্যান মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত হওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ নেই।

তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবেন বলে মনে করলেও উত্তর কোরিয়া এখন তাদের সঙ্গে জড়াবে কি না, তা অস্পষ্ট। কারণ দেশটি এখন রাশিয়া ও চীনের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে।  

রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, দেশগুলোর সম্পর্কে কিছুটা ফাটল দেখা যাচ্ছে। বাইডেন প্রশাসনের আমলে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড প্রশ্ন রেখেছেন, তেহরান মস্কোর ওপর সহায়তার জন্য নির্ভর করতে পারবে কি না? রাশিয়া যে মিত্রদের সেভাবে সহায়তা দিতে পারে না, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এক্ষেত্রে সর্বশেষ উদাহরণ হলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার। রাশিয়া সেভাবে শেষ মুহূর্তে তাকে সমর্থন দিতে পারেনি।

এ প্রসঙ্গে উড বলেন, আমি যদি ইরান হতাম, তা হলে দেখতাম রাশিয়া আসাদকে কীভাবে পরিত্যাগ করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হতাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের ক্ষেত্রে ট্রাম্প আবার আগের মেয়াদের নীতি ফেরত নিয়ে আসতে পারেন। চেষ্টা করতে পারেন তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক কর্মকাণ্ডের লাগাম টানতে।   

উডের মতে, নতুন প্রশাসনের জন্য অনেক কিছুই সহজ হবে, যদি নতুন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগী হয়, যে মার্কিন সম্পদকে প্রথম মেয়াদে সে রকমভাবে মূল্যায়ন করেননি ট্রাম্প।

এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য পুতিন আলোচনায় বসতে রাজি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মোটা দাগে ট্রাম্পের কাছ থেকে যেসব আভাস মিলছে, তাতে তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সব মিটিয়ে ফেলার পক্ষে। সূত্র: রয়টার্স 

 

নিউইয়র্কে চার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৫ এএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান
ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ অভিবাসীদের খোঁজে এখন থেকে গির্জা ও স্কুলে অভিযান চালাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। তাদের সে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতদিন গির্জা, স্কুল ও হাসপাতালের মতো অবকাঠামোতে অভিযান চালাতে পারত না তারা। গত সোমবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অ্যাক্টিং (ভারপ্রাপ্ত) সেক্রেটারি বেঞ্জামিন হাফম্যান দুটি নির্দেশনা দেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএস এক প্রতিবেদনে একথা জানায়। হাফম্যান প্রথম নির্দেশনায় বাইডেন আমলের এক নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। ওই আদেশে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টকে (আইস) স্কুল ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অভিযান চালাতে নিষেধ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় নির্দেশনায় মানবিক প্যারোল কর্মসূচি সীমিত করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনা খতিয়ে দেখে তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সীমান্ত জার হিসেবে খ্যাত টম হম্যান গত মঙ্গলবার উপস্থিত হয়েছিলেন ফক্স নিউজের এক অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি নিশ্চিত করেন, আইস কর্মকর্তারা এরই মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছেন। যেসব শহর নথিপত্রবিহীন মানুষকে আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের প্রতিও সতর্কবার্তা জানান তিনি।

হম্যান বহু আগে থেকেই গণহারে অবৈধ অভিবাসী ফেরত পাঠানোর পক্ষে কথা বলে আসছেন। তিনি মঙ্গলবার জানান, আইসের একাধিক টিম এই লক্ষ্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি বলেন, ‘আইস টিম আজ থেকেই দায়িত্ব পালন করছে। আমরা তাদেরকে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে এমন বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিতে বলেছি। আমরা সেটিই করতে চাচ্ছি।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এক মুখপাত্র জানান, এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) ও আইস এজেন্টদের অভিবাসী আইন প্রয়োগের এবং অবৈধ অভিবাসীদের আটক করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তিনি আরও বলেন, এসব অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে হত্যাকারী এবং ধর্ষকও আছে। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে আর যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল ও গির্জায় লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের সাহসী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাত বেঁধে রাখবে না। বরং তারা বিচার-বিবেচনার সঙ্গে কাজ করবে।

মুখপাত্র বলেন, বাইডেন প্রশাসন মানবিক প্যারোল কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে নির্বিচারে ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দিয়েছে। এগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিনেই বন্ধ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ (নির্দেশনা জারি) মানবিক প্যারোল কর্মসূচিকে মূল অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে- যেখানে প্রতিটি ঘটনা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তারা সাদাপোশাকে ছিলেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এসব ঘটনায় দেশটিতে অবস্থানরত নথিপত্রবিহীন বাংলাদেশিরা আতঙ্কে দিন পার করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, ফুলটন এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। হঠাৎ সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন। এ সময় একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। এ কথা বলায় তাকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ট্রাম্পের নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে ২৪ অঙ্গরাজ্য ও দুই শহরের মামলা

জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগ বাতিলের ব্যাপারে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশ জারি করার এক দিনের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে ২৪টি অঙ্গরাজ্য ও দুটি শহরে মামলা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত এই অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে মার্কিন সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।

ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার দিনই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। 

এই আদেশের বিরুদ্ধে বোস্টনের ফেডারেল আদালতে মামলা করে ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া এবং সান ফ্রান্সিসকো কর্তৃপক্ষ। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এই আদেশ আমেরিকান সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী লঙ্ঘন করেছে। প্রেসিডেন্টের এ ধরনের আদেশ দেওয়ার কোনো আইনগত ক্ষমতা নেই। 

এই মামলায় আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি নাগরিক অধিকার সংগঠন এবং অভিবাসনবিষয়ক প্রতিষ্ঠানও জোটবদ্ধ হয়েছে। এমনকি একটি অন্তঃসত্ত্বা নারীও একই ধরনের মামলা করেছেন। তারা বলেছেন, এটি শুধু আইনি লঙ্ঘন নয়, বরং মানবাধিকারের জন্যও একটি বড় আঘাত।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে এটি তার প্রশাসনের প্রথম বড় ধরনের আইনি চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ  গ্রহণের পরপরই নেওয়া তার সিদ্ধান্তগুলো এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। সূত্র: সিবিএস, দ্য গার্ডিয়ানং