
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন পরিকল্পনাকে ঘিরে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন সিনেটররা।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় এ বিষয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
অভিবাসন নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য, ট্রাম্পের পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
তবে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি বলছে, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে চাচ্ছেন তিনি।
আলোচনায় প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহাম বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীরা দেশে ফিরে যেতে প্রস্তুত থাকুন। আর যারা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের কোনো নিস্তার নেই।’
এ ছাড়া সীমান্ত সুরক্ষা নীতির অধীনে অপরাধ পুনর্বাসন কেন্দ্র বাড়ানোর পাশাপাশি ইমিগ্রেশন অফিসার বাড়িয়ে সীমান্তের পূর্ণ নিরাপত্তা বাস্তবায়নে ট্রাম্প বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন এই সিনেটর।
জাতীয় সংকট ঘোষণা করে সামরিক বাহিনীর সহায়তায় অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে ফেরত পাঠানোর কথা চিন্তা করছেন ট্রাম্প। নিজ দেশের সহিংসতা থেকে পালিয়ে যারা যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয়ে আছেন, তাদেরও ফেরত পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।
এ বিষয়ে আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের কর্মকর্তা অ্যারন মেলনিক বলেন, ‘ট্রাম্পের অভিবাসন পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতিকে বিরাট হুমকির মুখে দাঁড় করাবে। অনেক পরিবার ভেঙ্গে যাবে। এমনকি মার্কিন সমাজের মূল ভিত্তি নড়ে যেতে পারে।’
মেলনিকের মতে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হবে। এই ব্যয় দেশের বার্ষিক জিডিপির ৬ দশমিক ৮ শতাংশের সমান। এভাবে দেশে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া অতীতে সংঘটিত অভিবাসন বিরোধী অভিযানের বিরূপ প্রভাব তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে টেনেসির মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলোতে এ ধরণের অভিযানের কারণে মাংসের দাম বেড়ে গিয়েছিল।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল দেশের সামরিক বাহিনীকে অভিবাসন বিরোধী অভিযানে কাজ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী এ ধরনের কাজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। এ অভিযানে অংশ নিলে তারা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাবেন।’
এ বিষয়ে অভিবাসী ফুডে তুরেই বলেন, ‘আমার বৈধ কাগজপত্র নেই। এখন আমাকে দেশে পাঠিয়ে দিলে স্ত্রী-সন্তান না খেয়ে মরবে।এ ধরণের আগ্রাসী নীতি অনেক পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
২০২৩ সালের আগস্টে হাইকিং ট্রিপের সময় র্যাচেল মরিনকে মারধর, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে অবৈধ অভিবাসী জড়িত থাকার উদাহরণ টেনে রিপাবলিকানরা জানান, নিয়ম মেনে চলতেই হবে। আপোষ করলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নাইমুর/পপি/