ক্ষমতা গ্রহণের পরদিনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখা হয়েছে। উপসাগেরর ছবি, ম্যাপ ও ডাটাবেজও প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এই পরিবর্তনের ঘোষণা দেন মার্কিন কোস্টগার্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট অ্যাডমিরাল কেভিন লান্ডে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, নতুন নামের সঙ্গে উপসাগরীয় সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন, মাদক পাচার ও শত্রুতাপূর্ণ কার্যক্রম রোধে নতুন নিরাপত্তা অপারেশন চালু হবে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অভিষেকের আগেই এই পরিবর্তনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) ট্রাম্প তার অভিষেক ভাষণেও মেক্সিকো উপসাগরের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমেরিকা উপসাগর নামটি জাতীয় গৌরবের প্রতীক এবং এ নামটি আরও আকর্ষণীয় শোনায়।’
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সকল ফেডারেল সংস্থাকেও এখন থেকে ‘গালফ অব আমেরিকা’ বা আমেরিকান উপসাগর নামটি ব্যবহার করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক অবরি জিয়েট বলেন, এটা খুবই নজিরবিহীন বিষয় যে একজন প্রেসিডেন্ট তার ইচ্ছেমতো সকল ফেডারেল এজেন্সির জন্য কোনো কিছুর নাম পরিবর্তন করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, এধরনের নাম পরিবর্তনের ক্ষমতা নেই তার (প্রেসিডেন্টের), সেটা মেক্সিকো কিংবা বিশ্বের যে প্রান্তেই হোক।
গালফ অব মেক্সিকো। ছবি: সংগৃহীত
এদিকে এ উপসাগেরর নাম পরিবর্তন করায় ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছে মেক্সিকো। মেক্সিকোর প্রধানমন্ত্রী ক্লাউজিয়া শিনবাম মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে বলেন, আমরা একে মেক্সিকো উপসাগরই বলব। সারা বিশ্বের মানুষও একে মেক্সিকো উপসাগর বলবে।
কেন নাম পরিবর্তন
ট্রাম্প বলেন, নাম পরিবর্তনের পেছনে উপসাগরটির কৌশলগত গুরুত্ব অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার উপকূলবর্তী সাগরে মৎস্য সম্পদ আহরণ, বিলিয়ন ডলারের ট্যুরিজম, জ্বালানি তেল উৎপাদনসহ যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক অর্থনীতি ও দেশের গৌরব জড়িত এ উপসাগরের সঙ্গে।
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ফ্লোরিডার গ্লোবাল স্টাডিজের অধ্যাপক রব মেলেন জানান, এ উপসাগরে গুরুত্বপূর্ণ তেল ও গ্যাসের মজুত রয়েছে যা দেশের শিল্প কারখানার জন্য বড় যোগান হবে। তিনি আরও জানান, এখানে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ জীবাশ্ম জ্বালানির ১৫ শতাংশ মজুত রয়েছে।
ক্ষমতাগ্রহণের আগে ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ডেনমার্ক থেকে গ্রীনল্যান্ড দখল করার হুমকি দিয়েছেন। পানামার কাছ থেকে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা তিনি বার বার বলছেন। তার ফেরিফাইড এক্স অ্যাকাউন্টে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মানচিত্রের ছবি একত্রে করে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা জুড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্র হিসেবে প্রকাশ করেছেন। তিনি তার নির্বাচনি প্রচারে বার বার ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ স্লোগান দিয়েছেন। তাহলে গ্রীনল্যান্ড, কানাডা, মেক্সিকো, পানামা খাল দখল করেই কি তিনি বৃহত্তর গ্রেট আমেরিকার স্বপ্ন দেখেন? সূত্র: ফক্স১৩, পিপল ডট কম
মাহফুজ/এমএ/