ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুহার এত দ্রুত বেড়ে চলেছে যে, মহামারির আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত বছর এ রোগে প্রায় ৫ লাখ ৯৭ হাজার মানুষ মারা গেছেন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ডব্লিউএইচও এ তথ্য দিয়ে রোগটি প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ম্যলেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছর এক কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুর প্রকোপ বাড়ছে।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ম্যালেরিয়া প্রোগ্রামের আর্নড লে মেনাচ সাংবাদিকদের বলেন, মৃত্যুহারের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, আমরা প্রাক-মহামারি অবস্থায় আছি।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ব্যাহত হয়। ফলে ম্যালেরিয়াজনিত মৃত্যু বেড়ে যায়। সেই বছর ম্যালেরিয়ায় অতিরিক্ত ৫৫ হাজার মারা গিয়েছিল।
তারপর থেকে মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ধীরে ধীরে কমেছে। পাশাপাশি মৃত্যুর হারও কমেছে।
কিন্তু ২০২৩ সালে ম্যালেরিয়ায় আফ্রিকায় আনুমানিক মৃত্যুর হার ছিল প্রতি ১ লাখে ৫২ দশমিক ৪। যা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।
ডব্লিউএইচও জোর দিয়ে জানিয়েছে, ‘ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে দ্রুতই পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করতে হবে।’
ডব্লিউএইচও ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে রোলআউটকে একটি প্রতিশ্রুতিশীল অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত করেছে, যা প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম প্রথম ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মালাউইতে শুরু করা হয়। এরপর কেনিয়া এবং ঘানাতে এ টিকা কার্যক্রম চালানো হয়। ২০২৩ সালের শেষদিকে এই তিনটি দেশে প্রায় ২০ লাখ শিশু আরটিএস,এস ভ্যাকসিনের টিকা পেয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
ডব্লিউএইচওর ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন দলের প্রধান মেরি হ্যামেল বলেন, ‘ওই তিনটি দেশে আমাদের পাইলট টিকা কর্মসূচির মাধ্যমে চার বছরে মৃত্যুহার ১৩ শতাংশ কমে গেছে।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ডব্লিউএইচও এখন অন্যান্য দেশে ভ্যাকসিন কর্মসূচির অনুরূপ ফল দেখার জন্য উন্মুখ। এই দেশগুলোও চলতি বছরের শুরুতে ‘একই পথ অনুসরণ করে’ টিকা দিতে শুরু করেছে।
এখন পর্যন্ত সাব-সাহারান আফ্রিকাজুড়ে ১৭টি দেশ ডব্লিউএইচও নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। আরও আটটি দেশ ভ্যাকসিন জোট জিএবিআইয়ের মাধ্যমে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য তহবিলের অনুমোদন পেয়েছে।
বাসস/তাওফিক/অমিয়/