![আসাদের কুখ্যাত কারাগার ও বাহিনীগুলো ভেঙে দেবেন জোলানি](uploads/2024/12/13/asad-1734061464.jpg)
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা সিরীয় বিদ্রোহীদের প্রধান কমান্ডার আবু মোহাম্মদ আল জোলানি বলেছেন, তিনি ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদ সরকারের গঠিত নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ভেঙে দেবেন, তাদের কুখ্যাত কারাগারগুলো বন্ধ করবেন আর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করবেন।
গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল টেলিগ্রামকে দেওয়া পৃথক এক বিবৃতিতে জোলানি বলেছেন, ‘বন্দিদের নির্যাতন বা হত্যার সঙ্গে যেসব লোকজন জড়িত তাদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হবে, তাদের ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না। আমরা সিরিয়া থেকে তাদের খুঁজে বের করব। যারা বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন সেসব দেশকে আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাব যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।’
সিরিয়ার নতুন শাসকরা সহিংস প্রতিশোধ স্পৃহা ছড়িয়ে পড়া ঠেকিয়ে দেশটিকে স্থিতিশীল করতে পারেন কি না, তার দিকে সতর্কভাবে নজর রাখছে বিশ্ব।
এদিকে আসাদের সামরিক সহযোগীদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বাশির। আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যাদের হাত রক্তে মাখা তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।’ তবে আপাতত তার অগ্রাধিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ যাতে তাদের কাজে ফিরতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা। এ ছাড়া তিনি দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটাবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আজ শুক্রবার জি-৭ এর এক বৈঠকে বিশ্বনেতারা সিরিয়ার এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন ও স্বীকৃতি দেবেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গতকালও সিরিয়ার লাতাকিয়া এবং তার্তুসে বন্দর এবং ক্ষেপণাস্ত্রাগার লক্ষ্য করে হামলা চালায় দেশটি। এ ছাড়া গোলান মালভূমি অঞ্চল দিয়ে স্থলপথে আরও ভেতরে ঢুকে কার্যকরভাবে অধিকৃত অঞ্চল প্রসারিত করছে দেশটি। আসাদের পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত সিরিয়ায় ৫০০-এর বেশি হামলা করেছে দখলদার দেশটি।
হাফিজ আল-আসাদের কবরে অগ্নিসংযোগ
ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদের কবর জ্বালিয়ে দিয়েছেন সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। হাফিজও একজন স্বৈরশাসক ছিলেন। তিনি ২০০০ সালে মারা যাওয়ার পর পুত্র বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় বসেন। বিদ্রোহীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগুন দেওয়ার ঘটনার কয়েকটি ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা যায়, পশ্চিম লাতাকিয়া প্রদেশে হাফিজ আল-আসাদের জ্বলন্ত কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী যোদ্ধা।
সে সময় হাফিজের কবরের একাংশ দাউ দাউ করে জ্বলছিল। এ সময় আগুন দিয়ে একটি কফিনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, কফিনটি ওই কবর থেকে তুলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হাফিজ মারা যাওয়ার পর তাকে পৈতৃক ভিটা কারদাহাতে দাফন করা হয়। তিনি ১৯৭১ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়া শাসন করেন। সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স