ঢাকা ৪ মাঘ ১৪৩১, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

আসাদের কুখ্যাত কারাগার ও বাহিনীগুলো ভেঙে দেবেন জোলানি

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
আসাদের কুখ্যাত কারাগার ও বাহিনীগুলো ভেঙে দেবেন জোলানি
সেদনায়া কারাগারে হায়াত আল তুর্কি নামে এক সিরীয় নারী তার ভাইকে খুঁজছেন। ছবি: রয়টার্স

প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা সিরীয় বিদ্রোহীদের প্রধান কমান্ডার আবু মোহাম্মদ আল জোলানি বলেছেন, তিনি ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদ সরকারের গঠিত নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ভেঙে দেবেন, তাদের কুখ্যাত কারাগারগুলো বন্ধ করবেন আর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করবেন।

গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।

সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল টেলিগ্রামকে দেওয়া পৃথক এক বিবৃতিতে জোলানি বলেছেন, ‘বন্দিদের নির্যাতন বা হত্যার সঙ্গে যেসব লোকজন জড়িত তাদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হবে, তাদের ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না। আমরা সিরিয়া থেকে তাদের খুঁজে বের করব। যারা বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন সেসব দেশকে আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাব যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।’

সিরিয়ার নতুন শাসকরা সহিংস প্রতিশোধ স্পৃহা ছড়িয়ে পড়া ঠেকিয়ে দেশটিকে স্থিতিশীল করতে পারেন কি না, তার দিকে সতর্কভাবে নজর রাখছে বিশ্ব।

এদিকে আসাদের সামরিক সহযোগীদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বাশির। আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যাদের হাত রক্তে মাখা তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।’ তবে আপাতত তার অগ্রাধিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ যাতে তাদের কাজে ফিরতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা। এ ছাড়া তিনি দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটাবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আজ শুক্রবার জি-৭ এর এক বৈঠকে বিশ্বনেতারা সিরিয়ার এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন ও স্বীকৃতি দেবেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। 

এদিকে সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গতকালও সিরিয়ার লাতাকিয়া এবং তার্তুসে বন্দর এবং ক্ষেপণাস্ত্রাগার লক্ষ্য করে হামলা চালায় দেশটি। এ ছাড়া গোলান মালভূমি অঞ্চল দিয়ে স্থলপথে আরও ভেতরে ঢুকে কার্যকরভাবে অধিকৃত অঞ্চল প্রসারিত করছে দেশটি। আসাদের পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত সিরিয়ায় ৫০০-এর বেশি হামলা করেছে দখলদার দেশটি।

হাফিজ আল-আসাদের কবরে অগ্নিসংযোগ

ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদের কবর জ্বালিয়ে দিয়েছেন সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। হাফিজও একজন স্বৈরশাসক ছিলেন। তিনি ২০০০ সালে মারা যাওয়ার পর পুত্র বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় বসেন। বিদ্রোহীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগুন দেওয়ার ঘটনার কয়েকটি ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা যায়, পশ্চিম লাতাকিয়া প্রদেশে হাফিজ আল-আসাদের জ্বলন্ত কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী যোদ্ধা।

সে সময় হাফিজের কবরের একাংশ দাউ দাউ করে জ্বলছিল। এ সময় আগুন দিয়ে একটি কফিনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, কফিনটি ওই কবর থেকে তুলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হাফিজ মারা যাওয়ার পর তাকে পৈতৃক ভিটা কারদাহাতে দাফন করা হয়। তিনি ১৯৭১ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়া শাসন করেন। সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স

প্রথম ধাপে ৭৩৭ বন্দি হস্তান্তর করবে ইসরায়েল

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
প্রথম ধাপে ৭৩৭ বন্দি হস্তান্তর করবে ইসরায়েল
মুক্তির বাতাস বইছে গাজায়। ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির পর প্রথম ধাপে ৭৩৭ জন বন্দি ফিলিস্তিনের কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। একই দিনে ৩৩ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেবে ফিলিস্তিনভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হামাস।

আগামী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) এই চুক্তি বাস্তবায়িত হবে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান।

যুদ্ধবিরতির অধীনে উত্তর গাজাবাসীরা ঘরে ফেরার অনুমতি পাচ্ছেন। তবে ইসরায়েলের মুহুর্মুহু আক্রমণের কারণে অঞ্চলটির বেশিরভাগ স্থাপনাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অনুদান দিয়ে কিছু অস্থায়ী বসতি তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।

যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের পর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের আবাসন নিশ্চিত করা হবে।

গাজায় ত্রান সংস্থাগুলোর উপস্থিতিতে বাধা না দেওয়ার বিষয়েও সম্মত হয়েছে তেল আবিব। প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক খাদ্য সহায়তার অনুমতি দিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

এ ছাড়া রাস্তাঘাট, স্কুল ও হাসপাতালের সংস্কার কাজও রবিবার থেকেই শুরু হবে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলের ভূমিকায় মিশ্রিত অভিব্যক্ত লক্ষ্য করা যায়। গাজার বাসিন্দারা যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় উল্লাস করলেও ইসরায়েলের ভিন্নমতাদর্শীদের মিছিল দেখা গেছে দেশটির রাজপথে। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় উগ্র ডানপন্থিরা নেতানিয়াহুর সমালোচনা করছেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) প্রায় দেড় হাজার মানুষের একটি মিছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। নেতানিয়াহু হামাসের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করেছে বলে অভিযোগ তাদের।

অন্যদিকে হামাসের কাছে ইসরায়েলিদের স্বজনরা এই খবরে স্বস্তি অনুভব করছেন।

এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কিত বিশ্লেষকরা। অভ্যন্তরীণ চাপে নেতানিয়াহু এই চুক্তি লঙ্ঘন করেন কি না তা সময়ই বলে দেবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নাইমুর/

টানা তৃতীয় বছরের মতো কমল চীনের জনসংখ্যা

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২৯ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৬ পিএম
টানা তৃতীয় বছরের মতো কমল চীনের জনসংখ্যা
কমছে চীনের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বেইজিং প্রশাসনের বরাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এর আগে ছয় দশকেরও বেশি সময় নিয়মিত বেড়েছে দেশটির জনসংখ্যা।

তবে ইদানীং জনসংখ্যায় নিম্নগতির কারণে দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে বয়স্কের সংখ্যা বাড়ছে , জানায় প্রশাসন। 

এ পরিস্থিতিতে জন্মহার বাড়াতে বেইজিং ভর্তুকি এবং প্রজনন সহায়ক প্রচারণা চালাচ্ছে।

এএফপি জানায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তালিকায় দীর্ঘদিন শীর্ষ স্থান দখলে রাখলেও ২০২৩ সালে ভারতের পেছনে পড়ে চীন।

২০২৪ সালের শেষে চীনের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১.৪০৮ বিলিয়নে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ০.০০২ বিলিয়ন কম।

এবার জনসংখ্যা হ্রাসের গতি গেল বছরের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। তবে ২০২৩ সালে জনসংখ্যা হ্রাসের হার ২০২২ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি ছিল।

এর আগে ১৯৮০ সালে দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে ‘এক সন্তান নীতির’ ব্যাপক প্রচারণা চালায়। ২০১৬ সালে এসে এই নীতি প্রত্যাহার করে দেশটির প্রশাসন। তবে চার যুগের সাংস্কৃতিক অভ্যাসের কারণে জনসংখ্যার নিম্নগতি ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

জীবনযাত্রার ব্যয়, নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে বাধা এবং উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহের কারণের দেশের জন্মহার কমছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ ছাড়া অর্থনৈতিক মন্দা এবং নারীদের শ্রমবাজারে লিঙ্গবৈষম্যের কারণে জনসংখ্যা হ্রাসের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলেও ধারণা তাদের। 

দেশের এই সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে কয়েকধাপে কর্মজীবনের সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং সরকার।

আগে দেশটিতে ৬০ বছর হলেই অবসর গ্রহণ করতে হতো কর্মীদের। সূত্র: এএফপি, বাসস। 

নাইমুর/

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গড়ে প্রতিদিন ৩৫ শিশু নিহত!

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গড়ে প্রতিদিন ৩৫ শিশু নিহত!
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত ১৪ মাসে গড়ে প্রতিদিন ৩৫ শিশু নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ‘অতীব জরুরি এবং অনেক দিন ধরে প্রত্যাশিত’, কারণ গত ১৪ মাসে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার। 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ইউনিসেফের মুখপাত্র জেনেভায় এক জাতিসংঘ ব্রিফিংয়ে দ্য ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সমীক্ষা রিপোর্টের বরাত দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি জানান, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্টের তুলনায় মৃতের সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছে দ্য ল্যানসেট সমীক্ষা রিপোর্ট। 

ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছেন।

এল্ডার বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৩৫ শিশু মারা যাচ্ছেন গত ১৪ মাসে।’ 

তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালে গাজায় গড়ে ১০ শিশু প্রতিদিন মারা যাচ্ছে।

‘এই মুহুর্তে (যুদ্ধবিরতি চুক্তি) অতীব জরুরি এবং অনেকদিন ধরে প্রত্যাশিত ছিল এবং এটি অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল’, তিনি বলেন। 

এল্ডার বলেন, এখন যা প্রয়োজন তা হল যুদ্ধবিরতির তিনটি পর্যায় একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি গত বুধবার জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীরা গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সফল হয়েছে এবং এটি রবিবার থেকে কার্যকর হবে।

এদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ২৫০ জনকে অপহৃত করেছিল। এরপরেই ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে।

প্রথম পর্যায়ে, ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার জনবহুল এলাকাগুলি থেকে পিছু হটবে এবং হামাসের কাছ থেকে প্রায় ৯৮ জন অবশিষ্ট বন্দির মধ্যে ৩৩ জন মুক্তি পাবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে, বাকি বন্দিরাও মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে পুরোপুরি পিছু হটবে।

শেষ পর্যায়ে, মৃত বন্দিদের দেহ তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হবে এবং গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি বৃহৎ পরিকল্পনা শুরু হবে। সূত্র: আনাদুলু নিউজ অ্যাজেন্সি

তাওফিক/

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে নেতানিয়াহুর কি খুব ক্ষতি হলো?

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৩ এএম
গাজায় যুদ্ধবিরতিতে নেতানিয়াহুর কি খুব ক্ষতি হলো?
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

হামাসের সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রায় ১৫ মাস পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। মাঝের এই ১৫ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। ঘরছাড়া হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। গাজার দিকে তাকালে বোঝার উপায় নেই এই অঞ্চলে এক সময় সভ্য মানুষের বসতি ছিল। 

মুহুর্মুহু আক্রমণ, বিমান হামলা, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থামাতে অবশেষে সম্মত হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই ঘটনাকে নেতানিয়াহুর পরাজয় হিসেবেই প্রচার করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে আদৌ কী তার খুব ক্ষতি হলো অস্ত্র সরিয়ে রাখায়? এ নিয়েই আলাপ চলছে বিশ্লেষকমহলে।

হামাস ও আন্তর্জাতিক আহ্বানে সাড়া না দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন নেতানিয়াহু। তবে ১৫ মাস পর অবশেষে আগামী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) যুদ্ধবিরতি কায়েম করতে রাজি হয়ছেন ইসরায়েলের ক্যাবিনেট সদস্যরা।

এই চুক্তির অধীনে দুই পক্ষ বন্দিবিনিময় করবে। গাজা অঞ্চল থেকে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করে নেবে কয়েক ধাপে।

তবে এই সিদ্ধান্তের কারণে নেতানিয়াহুর ওপর নারাজ তেল আবিব প্রশাসন। দেশটির উগ্র ডানপন্থি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির সরাসরি এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছেন।

এর আগেও কয়েকবার ইসরায়েলের সংসদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠেছিল। তবে কঠোরভাবে তা দমন করেছেন গাভির। শেষমেষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হওয়ায় পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন তিনি।

নেতানিয়াহুর বিপাক শুধু এটুকু নয়। দেশটির অর্থমন্ত্রী বিজালেল স্মট্রিচ ও তার জায়োনবাদী ধর্মীয় দলের সমর্থকদের দাবি, প্রথম ধাপে বন্দিবিনিময় করার পরই আবার যুদ্ধ শুরু করতে হবে। অন্যথায় বিজালেলও পদত্যাগ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তবে বিপত্তিসত্ত্বেও নেতানিয়াহুর ট্রাম্প কার্ড-যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন। এমনিতে ট্রাম্পও ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি মনোভাবকে কিছুটা সমর্থন করেন। তবে আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট পদে অভিষেকের আগেই ইসরায়েল-হামাস দ্বন্দ্বের অবসান চেয়েছিলেন তিনি।

ঠিক এখানেই নেতানিয়াহুর মোক্ষম চাল আছে বলে মত ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তা মাইরেভ জন্সজেইনের। এখন জরুরীভিত্তিতে ট্রাম্পের আবদার মেনে ভবিষ্যতে গাজার ওয়েস্ট ব্যাংকে আরও নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার আশা করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু বেন গাভির ও স্মট্রিচের মতো উগ্র ডানপন্থি নেতার সমর্থনে নিজের অবস্থান টিকিয়ে রেখেছেন। এ পরিস্থিতিতে জোটের সমর্থন হারালে নেতানিয়াহু বিপাকে পড়তেন- যদি যুদ্ধবিরতির পক্ষে থাকা বিরোধী দলের নেতারা তার পাশে না দাঁড়াতেন।

জনআকাঙ্ক্ষাও নেতানিয়াহুর পক্ষেই। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওরি গোল্ডবার্গ বলেন, ‘১৫ মাস আমাদের বলা হয়েছে জয় নিকটে। কিন্তু জয়ের পরিবর্তে আমরা শুধু রক্তপাতই দেখেছি। আমরা ক্লান্ত। আর যুদ্ধ চাই না।’

এদিকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশের অভ্যন্তরে নেতানিয়াহু রাজনৈতিক সমর্থন ঠিকই পেয়েছেন, কিন্ত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছেন।

যুদ্ধ এভাবে চলতে থাকলে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বেও আঘাত আসতে পারে বলে ধারণা করছেন দেশের বেশ কয়েকজন গবেষক।
ড. গাই শালেভ এ বিষয়ে বলেন, ‘যেভাবে ফিলিস্তিনি প্রাণকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে , তা খুবই দুঃখজনক।’

এ পর্যায়ে নেতানিয়াহুর খুব একটা ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। প্রশাসনের রোষানলে দগ্ধ হলেও তা নিতান্তই সাময়িক। ভবিষ্যতে নিজের আধিপত্য কায়েমের পথ তিনি ঠিকই তৈরি করে রেখেছেন। সূত্র: আল-জাজিরা

নাইমুর/

শীতের কাঁপুনি এড়াতে ট্রাম্পের অভিষেক ইনডোরে

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
শীতের কাঁপুনি এড়াতে ট্রাম্পের অভিষেক ইনডোরে
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃতি নারাজ হলে বান্দার অনেক কিছুই সয়ে নিতে হয়। তবে শীতের প্রকোপে প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটবে এমনটা বোধ হয় কেউ আশা করেননি মার্কিনিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন ওয়াশিংটন ক্যাপিটল ভবনের প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে হওয়ার কথা ছিল। তবে তীব্র শীতের কারণে এই অনুষ্ঠান ভবনের অভ্যন্তরে আয়োজন করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) ভবনের ভেতরে ট্রাম্প শপথ নেবেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত ৪০ বছরের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রে এমন ঘটনার নজির নেই।

পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের আর্কটিক অঞ্চল থেকে ধেয়ে আসা শৈতপ্রবাহের কারণে সোমবার ওয়াশিংটনের তাপমাত্রা ১৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও ( মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নিচে নামতে পারে বলে ধারণা করছে দেশটির আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ।

এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেই অনুষ্ঠান ভেতরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছে।

এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘দেশের ওপর দিয়ে আর্কটিক বায়ু বইবে সোমবার। আমি চাই না অভিষেক অনুষ্ঠানে এসে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ুক। এ জন্যই প্রার্থনাসহ সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা ইউএস ক্যাপিটল রোটুন্ডা ভবনের অভ্যন্তরে আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছি।’

এর আগে শেষবার যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান ভবনের ভেতরে হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের অভিষেকের দিন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে পৌঁছানোয় আয়োজন খোলা প্রাঙ্গণে করা সম্ভব হয়নি।

তবে দর্শকদের জন্য ২০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ক্যাপিটাল ওয়ান অ্যারিনা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে নেতার বহুল প্রতীক্ষিত প্রত্যাবর্তন সরাসরি দেখার সুযোগ না পাওয়ায় হতাশ রিপাবলিকান সমর্থকরা।

এই অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টিকিট নির্ধারণ করা হয়েছিল। টিকিট ছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল আড়াই লাখ মানুষের।

পরিকল্পনা পরিবর্তিত হওয়ায় নিরাপত্তাব্যবস্থাও নতুন করে সাজানো হচ্ছে বলে জানান অভিষেক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা বাহিনীর মুখপাত্র অ্যালেক্সি ওর্লি। সূত্র: রয়টার্স

নাইমুর/