
তিন দিন পরই ক্ষমতা ছাড়ছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চার বছরের মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে বাইডেন জাতি ও বিশ্বের উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণ রেখেছেন।
বুধবারের (১৫ জানুয়ারি) এই ভাষণে তার প্রশাসনিক দায়িত্বের একটি সারমর্ম তুলে ধরেন তিনি। ১৯ মিনিটের বক্তব্যে আসন্ন চ্যালেঞ্জের কথা মনে করিয়ে দিতেও ভোলেননি বাইডেন। এ ছাড়া বিশ্বের কাছে ঐক্য, সহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক মানসিকতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাড়তে থাকা কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মুখে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমরা কোন অবস্থানে আছি এটা নিয়ে ভাবা যতটা জরুরি। তার চেয়েও বেশি প্রয়োজন আমাদের মানবিক সম্ভাবনাগুলোকে প্রস্ফুটনের যথাযথ পরিবেশ দেওয়া।’
এ সময় স্ট্যাচু অব লিবার্টির প্রতীকী সহিষ্ণুতার বিষয়টির সঙ্গে নিজের তুলনা করেন তিনি।
ভাষণে বিশ্বে চলমান সংকট আলোচনা করতে গিয়ে ধনীশ্রেণির বাড়তে থাকা প্রভাবের বিষয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন বাইডেন।
‘যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি ধনীদের আধিপত্য দেখা যাচ্ছে। দেশের নীতিমালা প্রণয়ন থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত তাদের হস্তক্ষেপ দেখা যাচ্ছে।’ নাম উল্লেখ না করলেও বাইডেনের খোঁচা যে আসন্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার বিশ্বস্ত ইলন মাস্ককে উদ্দেশ্য করে দেওয়া তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভুল তথ্যপ্রবাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকায় শঙ্কিত বাইডেন। ‘গুজবের তুষারধসে’ বিশ্ব সয়লাব হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করে এ সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান চেয়েছেন তিনি।
এদিকে নিজের শাসনামলে প্রণীত বিতর্কিত নীতিমালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বীজ বপন করার পরপরই ফল খাওয়া যায় না। আমাদের নেওয়া পদক্ষেপের সুফল পেতে একটু অপেক্ষা করতে হবে।’
এ সময় ওষুধের মূল্য হ্রাস, অস্ত্রমালিকানা আইনের বাস্তবায়ন ও ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের বিষয়গুলো উল্লেখ করেন তিনি।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) দ্বিমুখী প্রভাবের বিষয়েও শঙ্কিত তিনি। এআই-কে বর্তমান সময়ের ‘সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি’ আখ্যা দিয়ে সুষ্ঠু পরিচালনা ও ইতিবাচক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন।
তবে বক্তব্য আশাব্যঞ্জক সুরে শেষ করেছেন এই বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের আদর্শের ভিত শক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আমি আশাবাদী। আমার সময় ফুরিয়ে এসেছে। এবার আপনাদের পালা। দেশের বুকে জ্বলতে থাকা এই অগ্নিস্পৃহা জিইয়ে রাখুন।’ সূত্র: সিএনএন
নাইমুর/