
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যকার দ্বিবার্ষিক সীমান্ত আলোচনা আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। বাহিনী দুটির মহাপরিচালক পর্যায়ের এই বৈঠক চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ৫৫তম এই আন্তসীমান্ত বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি হবে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ এবং বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানো।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এই খবর জানিয়েছে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এটিই হতে যাচ্ছে দুই দেশের মধ্যকার প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। উভয় পক্ষ এই বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করছে। গত বছর এই বৈঠকের সময় দুবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি। এবারের আলোচনায় বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলকে আতিথেয়তা দেবে দিল্লি। আগেরবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই বৈঠক। ১৯৭৫ সাল থেকে এই আন্তসীমান্ত বৈঠক হয়ে আসছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ নিয়ে তোলা অভিযোগগুলো গুরুত্বসহকারে আলোচনা হবে। এই বেড়া ৯২টি স্থানে নির্মাণ হওয়ার কথা, যার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার। এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমান্তের অংশ।
এই আলোচনা শেষে যেসব বিষয়ে উভয় পক্ষ সম্মত হবে, সেগুলোর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ আলোচনা প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করবেন উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানরা।
গত সপ্তাহে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই একে অপরের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে সীমান্তে বেড়া নির্মাণকাজের সীমাবদ্ধতাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছে।
বাংলাদেশ গত সপ্তাহে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে বিএসএফের কর্মকাণ্ড, সীমান্তে বেড়া নির্মাণ ও সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল।
এর পরদিন ভারত দিল্লিতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে ডেকে জানায়, সব নিয়মনীতি মেনেই সীমান্তে বেড়া নির্মাণ করছে ভারত। দেশটি আশা করে, বাংলাদেশ আগের সব সমঝোতা বাস্তবায়ন করবে এবং সীমান্তে অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করবে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিএসএফ ১ হাজার ৯৫৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। এই পাঁচ মাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের আটকের হার ছিল ৫০ শতাংশেরও বেশি। কারণ পুরো বছরেই আটকের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৪৭৪টি। এর আগে ২০২৩ সালে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক আটকের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৩৪২টি। সূত্র: দ্য হিন্দু