
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসৌদ পেজেশকিয়ান ২০ বছরের ‘কম্প্রেহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
এই চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় দুই দেশ তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।
এই চুক্তির অধীনে ব্যবসা, সামরিক খাত, শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে মস্কো-তেহরান সহাবস্থান নিশ্চিত করা হবে।
এই চুক্তিকে ‘অবিস্মরণীয় ঘটনা’ আখ্যায়িত করে ভবিষ্যতে দুই দেশের স্থির বিকাশের পথ খুলেছে বলে জানান পুতিন।
পুতিনের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন পেজেশকিয়ানও। চুক্তিকে ‘দুই দেশের কৌশলগত সহাবস্থানের নতুন অধ্যায়’ আখ্যা দিয়ে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা খাতে গুরুত্বারোপ করেছেন।
এ ছাড়া আঞ্চলিক দ্বন্দ্বগুলো নিজেরাই সমাধান করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমারা দুনিয়ার অন্য প্রান্ত থেকে এসে আমাদের মধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। এই চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের কবর রচিত হলো।’
এই চুক্তির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি পেল মস্কো ও তেহরান।
নিজস্ব রাজনীতিক দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রের সরাসরি সহায়তার বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও বন্ধুরাষ্ট্রের প্রতি আগ্রাসী কোনো দেশকে সহায়তা না করার বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দুই দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের মাত্র তিন দিন আগে এই চুক্তি অনুষ্ঠান পশ্চিমে দুশ্চিন্তার উদ্রেগ ঘটিয়েছে। তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, এই চুক্তির বিষয়টি পূর্ব নির্ধারিত ছিল।
আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে সংকটাপন্ন অবস্থার শিকার তেহরান মস্কোর সহায়তা চাচ্ছিল দীর্ঘদিন। সম্প্রতি সিরিয়ার ইরানপন্থি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর আরও বিপাকে পড়েছে দেশটি।
এ পরিস্থিতিতে দেশের অবকাঠামো ও সামরিক খাতের উন্নতির ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে দুই দেশের সামরিক সহাবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ উঠলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে দুই দেশই। সূত্র: এপি নিউজ
নাইমুর/