ঢাকা ৬ ফাল্গুন ১৪৩১, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১

নিউইয়র্কে চার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৫ এএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান
ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ অভিবাসীদের খোঁজে এখন থেকে গির্জা ও স্কুলে অভিযান চালাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। তাদের সে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতদিন গির্জা, স্কুল ও হাসপাতালের মতো অবকাঠামোতে অভিযান চালাতে পারত না তারা। গত সোমবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অ্যাক্টিং (ভারপ্রাপ্ত) সেক্রেটারি বেঞ্জামিন হাফম্যান দুটি নির্দেশনা দেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএস এক প্রতিবেদনে একথা জানায়। হাফম্যান প্রথম নির্দেশনায় বাইডেন আমলের এক নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। ওই আদেশে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টকে (আইস) স্কুল ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অভিযান চালাতে নিষেধ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় নির্দেশনায় মানবিক প্যারোল কর্মসূচি সীমিত করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনা খতিয়ে দেখে তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সীমান্ত জার হিসেবে খ্যাত টম হম্যান গত মঙ্গলবার উপস্থিত হয়েছিলেন ফক্স নিউজের এক অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি নিশ্চিত করেন, আইস কর্মকর্তারা এরই মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছেন। যেসব শহর নথিপত্রবিহীন মানুষকে আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের প্রতিও সতর্কবার্তা জানান তিনি।

হম্যান বহু আগে থেকেই গণহারে অবৈধ অভিবাসী ফেরত পাঠানোর পক্ষে কথা বলে আসছেন। তিনি মঙ্গলবার জানান, আইসের একাধিক টিম এই লক্ষ্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি বলেন, ‘আইস টিম আজ থেকেই দায়িত্ব পালন করছে। আমরা তাদেরকে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে এমন বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিতে বলেছি। আমরা সেটিই করতে চাচ্ছি।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এক মুখপাত্র জানান, এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) ও আইস এজেন্টদের অভিবাসী আইন প্রয়োগের এবং অবৈধ অভিবাসীদের আটক করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তিনি আরও বলেন, এসব অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে হত্যাকারী এবং ধর্ষকও আছে। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে আর যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল ও গির্জায় লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের সাহসী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাত বেঁধে রাখবে না। বরং তারা বিচার-বিবেচনার সঙ্গে কাজ করবে।

মুখপাত্র বলেন, বাইডেন প্রশাসন মানবিক প্যারোল কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে নির্বিচারে ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দিয়েছে। এগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিনেই বন্ধ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ (নির্দেশনা জারি) মানবিক প্যারোল কর্মসূচিকে মূল অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে- যেখানে প্রতিটি ঘটনা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তারা সাদাপোশাকে ছিলেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এসব ঘটনায় দেশটিতে অবস্থানরত নথিপত্রবিহীন বাংলাদেশিরা আতঙ্কে দিন পার করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, ফুলটন এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। হঠাৎ সাদাপোশাকে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন। এ সময় একজন প্রতিবাদী হয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সংশোধনী অনুযায়ী তিনি পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য নন। এ কথা বলায় তাকে গ্রেপ্তার করে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুটা দূরে একই এলাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ট্রাম্পের নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে ২৪ অঙ্গরাজ্য ও দুই শহরের মামলা

জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগ বাতিলের ব্যাপারে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশ জারি করার এক দিনের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে ২৪টি অঙ্গরাজ্য ও দুটি শহরে মামলা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত এই অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে মার্কিন সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।

ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার দিনই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। 

এই আদেশের বিরুদ্ধে বোস্টনের ফেডারেল আদালতে মামলা করে ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া এবং সান ফ্রান্সিসকো কর্তৃপক্ষ। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এই আদেশ আমেরিকান সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী লঙ্ঘন করেছে। প্রেসিডেন্টের এ ধরনের আদেশ দেওয়ার কোনো আইনগত ক্ষমতা নেই। 

এই মামলায় আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি নাগরিক অধিকার সংগঠন এবং অভিবাসনবিষয়ক প্রতিষ্ঠানও জোটবদ্ধ হয়েছে। এমনকি একটি অন্তঃসত্ত্বা নারীও একই ধরনের মামলা করেছেন। তারা বলেছেন, এটি শুধু আইনি লঙ্ঘন নয়, বরং মানবাধিকারের জন্যও একটি বড় আঘাত।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে এটি তার প্রশাসনের প্রথম বড় ধরনের আইনি চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ  গ্রহণের পরপরই নেওয়া তার সিদ্ধান্তগুলো এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। সূত্র: সিবিএস, দ্য গার্ডিয়ানং

জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থার উত্থানে মাথাব্যাথা পুরো ইউরোপের

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থার উত্থানে মাথাব্যাথা পুরো ইউরোপের
জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির উঠতি প্রভাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন দেশটির নাগরিকরা। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির নির্বাচন নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা না গেলেও দেশটিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। আরও নির্দিষ্ট করে বললে- ইউরোপের মাথাব্যাথা সবচেয়ে বেশি।

এ বিষয়ে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান।

জার্মানির আসন্ন নির্বাচনের হাওয়া জাতীয় পরিমণ্ডল ছেড়ে পুরো ইউরোপেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববাণিজ্য ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ভবিষ্যতও জড়িয়ে পড়েছে এই নির্বাচনের সঙ্গে। 

দেশটিতে আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রচলিত থাকায় বেশিরভাগ সময়ই একদলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে না। এতে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দল অন্যান্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করে।সম্প্রতি জার্মানিতে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে দেশটির বিরোধী দলের জোট সিডিইউ’র সমর্থন সবচেয়ে বেশি।

বর্তমান জার্মান চ্যাঞ্চেলর ওলাফ শোলৎজকে সরিয়ে সিডিইউর নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ ক্ষমতায় বসবেন বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

তবে সিডিইউর ক্ষমতাপ্রাপ্তিতে শঙ্কিত ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। জার্মানির উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির সঙ্গে মার্জের সাম্প্রতিক ঘনিষ্টতাই এই দুশ্চিন্তার কারণ।

দেশটির সামনের সারির রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত উগ্রপন্থি দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধে না। তবে এই ঐতিহ্যে ফাঁটল ধরিয়ে সম্প্রতি সিডিইউ আসন্ন নির্বাচনে এএফডির সমর্থন চেয়েছে।

এদিকে নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য আসনে উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে নির্বাচন পরবর্তী জোট গঠন নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক আশঙ্কা।

একপক্ষের বয়ান, জার্মানিতে আভিজাত্যবাদের কারণে এএফডির মতো দলগুলো ক্ষমতায় আসতে পারে না। নির্বাচনের পরেও জোট গঠন আলোচনায় এএফডিকে অন্তর্ভূক্ত না করলে এ ধরণের মন্তব্যের শিকার হতে পারে দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থা। এই জায়গা থেকে এএফডিকে কেন্দ্রীয় আলোচনার বিকল্প নেই। 

অন্যদিকে এই দল ক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছালে নীতিনির্ধারণে ইউরোপের বিপক্ষে ‘ক্ষতিকর’ অবস্থান নিতে পারে বলে শঙ্কিত মহাদেশের রাঘববোয়ালরা।

আসন্ন নির্বাচনের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সরাসরি নির্ভর করছে। চলমান যুদ্ধ নিরিসনে ইইউ’র অবস্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে জার্মানির বয়ান অত্যন্ত গুরুত্ববহ।

এদিকে এএফডির ইউক্রেনবিরোধী অবস্থান ইইউ’র অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইউক্রেনে জার্মানির দেওয়া সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিপক্ষে এই দল।

এ পরিস্থিতিতে জার্মানির নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে কিয়েভসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের প্রশাসন। 
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি জার্মানিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নাইমুর/

ট্রাম্প গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন: জেলেনস্কি

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৪ পিএম
ট্রাম্প গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ এনেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ‘ট্রাম্প গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন।’

এর আগে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জেলেনস্কিকে দায়ী করে বিবৃতি দেন ট্রাম্প। উত্তরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ আনেন জেলেনস্কি।

রাজধানী কিয়েভে সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্পের আনা অভিযোগ প্রত্যাখান করে তিনি বলেন, ‘একজন নেতা হিসেবে ট্রাম্পের অবস্থান আমার কাছে অবশ্যই সম্মানের। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন।’

এর আগে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান যুদ্ধ নিরসনে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন-সালমান।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে চলমান যুদ্ধের কারণ হিসেবে জেলেনস্কিকে দায়ি করে ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কি এই যুদ্ধ তিন বছর আগেই শেষ করতে পারতেন। আদতে, যুদ্ধটা তার শুরু করাই উচিত হয়নি।’ 

অথচ ক্রিমিয়া অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের প্রতি সহিংস আচরণের সূত্রপাত ঘটায় মস্কো। ২০২২ সালে দেশটিতে সামরিক অনুপ্রবেশের মাধ্যমে পুরোদমে যুদ্ধ ঘোষণা করে ক্রেমলিন।

ট্রাম্পের মন্তব্যের পেছনে রুশ বয়ানের স্পষ্ট ছাপ লক্ষ্য করেছেন বিশ্লেষকরা। 

জেলেনস্কির রাষ্ট্রপতিত্ব নিয়েও ভুল তথ্য দিয়েছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির গ্রহণযোগ্যতা ৪ শতাংশের বেশি ছিল না।

জবাবে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সোশোলজির এক প্রতিবেদন তুলে ধরেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এই জরিপে দেখা যায়, দেশের ৫৭ শতাংশ নাগরিক তার প্রতি সন্তুষ্ট।

এ সময় রুশ বয়ানে প্রভাবিত হয়ে বিশ্বের সামনে ইউক্রেনের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

এদিকে ইউক্রেন-যুদ্ধে খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাম্প এসবে পাত্তা না দিলেও আলোচনায় ইউক্রেনের উপস্থিতি ব্যতিরেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলেনস্কি। সূত্র: সিএনএন

নাইমুর/

কঙ্গোতে জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় উগান্ডার সেনা সহায়তা

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
কঙ্গোতে জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় উগান্ডার সেনা সহায়তা
কঙ্গো সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে উগান্ডার সেনাবাহিনী, ছবি: সংগৃহীত

কঙ্গোতে চলমান জঙ্গি-অভ্যুত্থান মোকাবিলায় সেনা সহায়তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী দেশ উগান্ডা। সহিংসতায় বিপর্যস্ত কঙ্গোতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই সাহায্যের হাত বাড়ানো হয়েছে বলে জানায় উগান্ডা প্রশাসন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উগান্ডার সামরিক বাহিনী।

অ্যালাইড ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের (এডিএফ) সশস্ত্র তৎপরতা মোকাবিলায় ২০২১ সালে উগান্ডা ও কঙ্গোর যৌথপদক্ষেপ ‘অপারেশন শুজা’র অংশ হিসেবে এই অতিরিক্ত সামরিক সহায়তার অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে উগান্ডা সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ফেলিক্স কুলাইগিয়ে বলেন, ‘কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা ঠেকাতে আমরা সবসময় স্থানীয় সেনাবাহিনীর সহায়তা করব।’

সম্প্রতি কঙ্গোর উত্তর কিভু ও ইতুরি প্রদেশে এডিএফের আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। গত কয়েক বছরে এই সশস্ত্র সংগঠনের আক্রমণে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগ্রিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। উগান্ডায়ও কয়েকদফা বোমা হামলা করেছে এডিএফ।

‘শান্তি উগান্ডা ও কঙ্গোর নাগরিকদের অধিকার। আমরা জঙ্গি নিশ্চিহ্ন করেই ছাড়ব।’ 

এদিকে সামরিক অভিযান সত্ত্বেও কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি সংকটাপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। খনিজ সম্পদে পুষ্ট এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশে এম-২৩, এডিএফসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন হামলা পরিচালনা করছে।

যৌথবাহিনীর দাবি, অভিযানের কারণে এই অঞ্চলে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে, স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগ কমেনি।

এই এলাকায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনায় দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

আঞ্চলিক ভূরাজনীতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও।

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু সামরিক অভিযান চালালেই এই সমস্যা মিটবে না। আমাদের আরও কার্যকর কোনো সমাধানে পৌঁছাতে হবে।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে

নাইমুর/

পাকিস্তানে বাস থামিয়ে সাত পাঞ্জাবীকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
পাকিস্তানে বাস থামিয়ে সাত পাঞ্জাবীকে গুলি করে হত্যা
বেলুচিস্তানে গুলিবর্ষণের পর অভিযান পরিচালনা করছেন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে একটি যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তের গুলিবর্ষণে সাতজন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পাঞ্জাব প্রদেশের সীমান্তবর্তী বারখান জেলায় অতর্কিত হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শাহাদাত হুসাইনের ভাষ্যমতে, লাহোর থেকে আগত বাসটির টায়ারে গুলি করে থামিয়ে দেয় দুর্বৃত্ত।

‘প্রত্যেক বাসযাত্রীর পরিচিতিপত্র দেখার পর উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে পাঞ্জাবিদের গুলি করে এই জঙ্গি।’, বলেন তিনি।

ঘটনাস্থলেই সাতজন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

কোনো সশস্ত্রগোষ্ঠী এপর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি।

বেলুচিস্তানে এ ধরণের ঘটনা নতুন কিছু নয়। অঞ্চলটিতে স্বাধীনতাকামী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা বেশ পুরনো সমস্যা। 

বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই অঞ্চলের সবচেয়ে তৎপর সশস্ত্রগোষ্ঠী। প্রায়ই পাকিস্তানি নিরাপত্তাবাহিনী ও অন্য প্রদেশের শ্রমিকদের উদ্দেশ করে আক্রমণ পরিচালনা করে এই সংগঠন।

সম্প্রতি দেশটিতে বেলুচিস্তানে পাঞ্জাবি শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতায় ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গেল বছর জঙ্গি হামলার শিকার হয়ে অন্তত ৩৯জন পাঞ্জাবি প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে আক্রমণের আত্মপক্ষ সমর্থনে বিএলএ’র ভাষ্য, পাকিস্তান সরকার ও অন্য প্রদেশের শ্রমিকরা বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ ‘ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে-যেখানে অঞ্চলের স্থানীয়রাই সুবিধাবঞ্চিত।’

মঙ্গলবারের হামলার পর স্থানীয় নিরাপত্তাবাহিনী পুরো অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনার পেছনে দায়ী সবাইকে ন্যায়ের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

তবে বাড়তে থাকা সহিংসতায় জ্যামিতিক হারে বাড়ছে বেলুচিস্তানের জনসাধারণের নিরাপত্তাশঙ্কা। সূত্র: ডয়েচে ভেলে

নাইমুর/

ইউক্রেন-গাজায় সহিংসতা নিরসনে সৌদি যুবরাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
ইউক্রেন-গাজায় সহিংসতা নিরসনে সৌদি যুবরাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য থেকে পূর্ব-ইউরোপ; গাজা থেকে কিয়েভ- শান্তিকামী জনসাধারণের আশা একটাই-একদিন বন্ধ হবে মানবজীবনের চরম অপচয়; থামবে গ্রেনেড-ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের হুঙ্কার। তবে বিশ্বনেতাদের নাস্তার টেবিলের আলোচনায় মানবিকতার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় অস্ত্রবাণিজ্য। লাভ-লোকসানের হিসেব-খাতায় ফিলিস্তিনের খান ইউনিসের নিষ্পাপ শিশুর রক্তের ফোঁটা ছিটকে পড়লে কিংবা কেউ রক্তপিপাসা সরিয়ে ইউক্রেনীয় শিশুদের অন্তত একটি রাত আতঙ্কহীন ঘুমের প্রস্তাব রাখলে হয়তো তাচ্ছিল্যেই উড়িয়ে দেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু-পুতিনরা।

এই আলোচনা-বৈঠকের মধ্যে ঘটে যাচ্ছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, অত্যাচার, জোরপূর্বক নিজভূখন্ড থেকে উৎখাত। তবে সাধারণ মানুষ এসবের পরেও সপ্ন দেখে শান্তির। এ অবস্থায় গাজা ও ইউক্রেনকে বৃহত্তর শক্তির আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে নতুন দূত হয়ে এসেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক করেছেন দেশটির যুবরাজ। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহে একটি সম্মেলনে জর্ডান, মিশর, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিদলগুলোর সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে। গাজাবাসীদের উৎখাত করতে ট্রাম্পের প্রস্তাব হবে এই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।

এদিকে ইউক্রেনের নীতিনির্ধারণে খোদ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের অংশগ্রহণ না থাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘তিন বছর ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। জেলেনস্কির উপস্থিতি আদৌ কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখলে যুদ্ধ এতিদূর গড়াতোই না।’

এদিকে রাশিয়ার প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। যুদ্ধ শেষে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে মস্কোকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এদিকে গাজাবাসীদের জোরপূর্বক অন্যত্র পাঠিয়ে অঞ্চলটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের মরুদ্যান’ বানাতে চান বলে মন্তব্য করার পর ক্ষেপেছে আরব বিশ্ব।

এই সংকট মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে সৌদি প্রশাসন। ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিপরীতে আরেকটি চুক্তি দাঁড় করানো হবে বলে জানা গেছে। যুবরাজ সালমানের প্রস্তাবে গাজা অঞ্চলকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দু ঘোষণা করে অঞ্চলটি পুনর্নির্মানে ২০ বিলিয়ন ডলার আনুদান সংগ্রহ করার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্টতার কারণে যুবরাজের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্ববহ। মার্কিন উন্নয়নে মরুভূমির এই দেশ আগেও বেশ কয়েকবার অর্থ সহায়তা করছে।

এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও সহাবস্থান ধরে রেখেছেন সালমান।

এ অবস্থায় পরাশক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্টতা কাজে লাগিয়ে নিপীড়িতদের নীরব আর্তনাদের অন্তত কিছুটা এই আলোচনার টেবিলে যুবরাজ সালমান উত্থাপন করবেন বলেই আশা করছে শান্তিকামী বিশ্বনাগরিকরা। সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

নাইমুর/