ঢাকা ৬ ফাল্গুন ১৪৩১, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১

যে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৫ এএম
যে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন
ছবি: সংগৃহীত

নিজের প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অদ্ভুত এক কূটনীতি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। প্রকাশ্যেই তিনি উষ্ণ হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার দিকে। অন্যদিকে পৃথকভাবে চাপ তৈরি করেছিলেন ইরান ও চীনের ওপর। 

কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ওই একই কূটনীতি অনুসরণ করা হয়তো সম্ভব হবে না ট্রাম্পের পক্ষে। এবার তার জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রগুলো এখন আরও ঐক্যবদ্ধ। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ তাদেরকে এই পরিস্থিতিতে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। 

ট্রাম্প গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি নির্বাচনি প্রচারের সময় থেকেই ঘোষণা দিয়ে এসেছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার সময়টিতে চীনকে জবাব দেওয়া হবে।  

কিন্তু গত কয়েক বছরে সম্পর্কের সমীকরণ অনেকটাই বদলে গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গড়ে তুলেছেন ‘সীমাহীন অংশীদারত্ব’। রাশিয়াকে সরাসরি অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করছে চীন, যা দেশটির ইউক্রেন যুদ্ধে টিকে থাকার পেছনে ভূমিকা রাখছে।

ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পর গত মঙ্গলবারও পুতিন ও শি নিজেদের কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও সুদৃঢ় করা নিয়ে দীর্ঘ ফোনালাপ করেছেন। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ২০২৪ সালের জুনে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া। ইরানের সঙ্গেও গত শুক্রবার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণকারী এই চার দেশের এভাবে একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলাকে চীনে নিযুক্ত বাইডেন প্রশাসনের দূত সম্প্রতি ‘অপবিত্র জোট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিশ্লেষণকারীরাও বলছেন, ওই চার দেশের একত্র হওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছু বয়ে আনবে না।  

ওয়াশিংটনভিত্তিক এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ড্যানিয়েল রাসেল বলেন, ‘ট্রাম্পের মূল দ্বিধা হলো রাশিয়ার সঙ্গে তিনি তাল মেলাতে চান, আবার বাণিজ্যেও তিনি চীনকে চাপে ফেলতে চান। যেখানে মস্কো ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক রাশিয়াকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সেভাবে জড়াতে দেবে না। আবার চীনও মার্কিন চাপের মুখে নতি স্বীকার করবে না।’  

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ওপর পশ্চিম যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তা অনেকটাই তারা পাশ কাটাতে পেরেছে চীনের সহায়তায়। চীন রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনেছে। এ ছাড়া মস্কোর প্রতিরক্ষা শক্তিকে বলিষ্ঠ করতে পারে এমন কিছু রসদ বেইজিং সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চীন বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। 

উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে সেনাসদস্য ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। পাশাপাশি দ্রুতগতিতে নিজেদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আঞ্চলিকভাবে ইসরায়েলের হামলায় দুর্বল হয়ে গেলেও ইরান তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা পুনরায় শুরু করতে পারে। 
ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যরাও চ্যালেঞ্জের বিষয়টি জানেন এবং তারা এই বাস্তবতাকে এরই মধ্যে স্বীকারও করে নিয়েছেন। 
শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব নেবেন মাইক ওয়াল্টজ। তিনি নভেম্বরেই ফক্স নিউজকে বলেছেন, চীন ইরানের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে তেল কিনছে। ইরান তা ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠাচ্ছে রাশিয়ায়। সেগুলো পরে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আঘাত হানতে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটাই হলো চীন। এ ছাড়া রুবিও ‘বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতার’ জন্য মস্কো, তেহরান ও পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করেন। 

আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ জ্যাক কুপার ধারণা করছেন, ট্রাম্পের টিম চীনের বলয় থেকে অন্যান্য দেশকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।

কুপার বলেন, ‘তারা হয়তো রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানকে চীনের কাছ থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।’

তিনি আরও বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে একটি এবং মস্কোর সঙ্গে আরেকটি চুক্তির চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মনে করি আমি। 

ওবামা প্রশাসনে বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মাইকেল ফ্রোম্যান মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত হওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ নেই।

তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবেন বলে মনে করলেও উত্তর কোরিয়া এখন তাদের সঙ্গে জড়াবে কি না, তা অস্পষ্ট। কারণ দেশটি এখন রাশিয়া ও চীনের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে।  

রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, দেশগুলোর সম্পর্কে কিছুটা ফাটল দেখা যাচ্ছে। বাইডেন প্রশাসনের আমলে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড প্রশ্ন রেখেছেন, তেহরান মস্কোর ওপর সহায়তার জন্য নির্ভর করতে পারবে কি না? রাশিয়া যে মিত্রদের সেভাবে সহায়তা দিতে পারে না, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এক্ষেত্রে সর্বশেষ উদাহরণ হলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার। রাশিয়া সেভাবে শেষ মুহূর্তে তাকে সমর্থন দিতে পারেনি।

এ প্রসঙ্গে উড বলেন, আমি যদি ইরান হতাম, তা হলে দেখতাম রাশিয়া আসাদকে কীভাবে পরিত্যাগ করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হতাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের ক্ষেত্রে ট্রাম্প আবার আগের মেয়াদের নীতি ফেরত নিয়ে আসতে পারেন। চেষ্টা করতে পারেন তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক কর্মকাণ্ডের লাগাম টানতে।   

উডের মতে, নতুন প্রশাসনের জন্য অনেক কিছুই সহজ হবে, যদি নতুন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগী হয়, যে মার্কিন সম্পদকে প্রথম মেয়াদে সে রকমভাবে মূল্যায়ন করেননি ট্রাম্প।

এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য পুতিন আলোচনায় বসতে রাজি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মোটা দাগে ট্রাম্পের কাছ থেকে যেসব আভাস মিলছে, তাতে তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সব মিটিয়ে ফেলার পক্ষে। সূত্র: রয়টার্স 

 

জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থার উত্থানে মাথাব্যাথা পুরো ইউরোপের

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থার উত্থানে মাথাব্যাথা পুরো ইউরোপের
জার্মানিতে উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির উঠতি প্রভাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন দেশটির নাগরিকরা। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির নির্বাচন নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা না গেলেও দেশটিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। আরও নির্দিষ্ট করে বললে- ইউরোপের মাথাব্যাথা সবচেয়ে বেশি।

এ বিষয়ে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান।

জার্মানির আসন্ন নির্বাচনের হাওয়া জাতীয় পরিমণ্ডল ছেড়ে পুরো ইউরোপেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববাণিজ্য ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ভবিষ্যতও জড়িয়ে পড়েছে এই নির্বাচনের সঙ্গে। 

দেশটিতে আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রচলিত থাকায় বেশিরভাগ সময়ই একদলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে না। এতে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দল অন্যান্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করে।সম্প্রতি জার্মানিতে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে দেশটির বিরোধী দলের জোট সিডিইউ’র সমর্থন সবচেয়ে বেশি।

বর্তমান জার্মান চ্যাঞ্চেলর ওলাফ শোলৎজকে সরিয়ে সিডিইউর নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ ক্ষমতায় বসবেন বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

তবে সিডিইউর ক্ষমতাপ্রাপ্তিতে শঙ্কিত ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। জার্মানির উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির সঙ্গে মার্জের সাম্প্রতিক ঘনিষ্টতাই এই দুশ্চিন্তার কারণ।

দেশটির সামনের সারির রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত উগ্রপন্থি দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধে না। তবে এই ঐতিহ্যে ফাঁটল ধরিয়ে সম্প্রতি সিডিইউ আসন্ন নির্বাচনে এএফডির সমর্থন চেয়েছে।

এদিকে নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য আসনে উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডির প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে নির্বাচন পরবর্তী জোট গঠন নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক আশঙ্কা।

একপক্ষের বয়ান, জার্মানিতে আভিজাত্যবাদের কারণে এএফডির মতো দলগুলো ক্ষমতায় আসতে পারে না। নির্বাচনের পরেও জোট গঠন আলোচনায় এএফডিকে অন্তর্ভূক্ত না করলে এ ধরণের মন্তব্যের শিকার হতে পারে দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থা। এই জায়গা থেকে এএফডিকে কেন্দ্রীয় আলোচনার বিকল্প নেই। 

অন্যদিকে এই দল ক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছালে নীতিনির্ধারণে ইউরোপের বিপক্ষে ‘ক্ষতিকর’ অবস্থান নিতে পারে বলে শঙ্কিত মহাদেশের রাঘববোয়ালরা।

আসন্ন নির্বাচনের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সরাসরি নির্ভর করছে। চলমান যুদ্ধ নিরিসনে ইইউ’র অবস্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে জার্মানির বয়ান অত্যন্ত গুরুত্ববহ।

এদিকে এএফডির ইউক্রেনবিরোধী অবস্থান ইইউ’র অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইউক্রেনে জার্মানির দেওয়া সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিপক্ষে এই দল।

এ পরিস্থিতিতে জার্মানির নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে কিয়েভসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের প্রশাসন। 
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি জার্মানিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নাইমুর/

ট্রাম্প গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন: জেলেনস্কি

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৪ পিএম
ট্রাম্প গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ এনেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ‘ট্রাম্প গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন।’

এর আগে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জেলেনস্কিকে দায়ী করে বিবৃতি দেন ট্রাম্প। উত্তরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ আনেন জেলেনস্কি।

রাজধানী কিয়েভে সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্পের আনা অভিযোগ প্রত্যাখান করে তিনি বলেন, ‘একজন নেতা হিসেবে ট্রাম্পের অবস্থান আমার কাছে অবশ্যই সম্মানের। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট গুজবের স্বর্গে বসবাস করেন।’

এর আগে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান যুদ্ধ নিরসনে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন-সালমান।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে চলমান যুদ্ধের কারণ হিসেবে জেলেনস্কিকে দায়ি করে ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কি এই যুদ্ধ তিন বছর আগেই শেষ করতে পারতেন। আদতে, যুদ্ধটা তার শুরু করাই উচিত হয়নি।’ 

অথচ ক্রিমিয়া অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের প্রতি সহিংস আচরণের সূত্রপাত ঘটায় মস্কো। ২০২২ সালে দেশটিতে সামরিক অনুপ্রবেশের মাধ্যমে পুরোদমে যুদ্ধ ঘোষণা করে ক্রেমলিন।

ট্রাম্পের মন্তব্যের পেছনে রুশ বয়ানের স্পষ্ট ছাপ লক্ষ্য করেছেন বিশ্লেষকরা। 

জেলেনস্কির রাষ্ট্রপতিত্ব নিয়েও ভুল তথ্য দিয়েছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির গ্রহণযোগ্যতা ৪ শতাংশের বেশি ছিল না।

জবাবে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সোশোলজির এক প্রতিবেদন তুলে ধরেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এই জরিপে দেখা যায়, দেশের ৫৭ শতাংশ নাগরিক তার প্রতি সন্তুষ্ট।

এ সময় রুশ বয়ানে প্রভাবিত হয়ে বিশ্বের সামনে ইউক্রেনের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

এদিকে ইউক্রেন-যুদ্ধে খোদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাম্প এসবে পাত্তা না দিলেও আলোচনায় ইউক্রেনের উপস্থিতি ব্যতিরেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলেনস্কি। সূত্র: সিএনএন

নাইমুর/

কঙ্গোতে জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় উগান্ডার সেনা সহায়তা

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
কঙ্গোতে জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় উগান্ডার সেনা সহায়তা
কঙ্গো সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে উগান্ডার সেনাবাহিনী, ছবি: সংগৃহীত

কঙ্গোতে চলমান জঙ্গি-অভ্যুত্থান মোকাবিলায় সেনা সহায়তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী দেশ উগান্ডা। সহিংসতায় বিপর্যস্ত কঙ্গোতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই সাহায্যের হাত বাড়ানো হয়েছে বলে জানায় উগান্ডা প্রশাসন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উগান্ডার সামরিক বাহিনী।

অ্যালাইড ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের (এডিএফ) সশস্ত্র তৎপরতা মোকাবিলায় ২০২১ সালে উগান্ডা ও কঙ্গোর যৌথপদক্ষেপ ‘অপারেশন শুজা’র অংশ হিসেবে এই অতিরিক্ত সামরিক সহায়তার অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে উগান্ডা সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ফেলিক্স কুলাইগিয়ে বলেন, ‘কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা ঠেকাতে আমরা সবসময় স্থানীয় সেনাবাহিনীর সহায়তা করব।’

সম্প্রতি কঙ্গোর উত্তর কিভু ও ইতুরি প্রদেশে এডিএফের আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। গত কয়েক বছরে এই সশস্ত্র সংগঠনের আক্রমণে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগ্রিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে। উগান্ডায়ও কয়েকদফা বোমা হামলা করেছে এডিএফ।

‘শান্তি উগান্ডা ও কঙ্গোর নাগরিকদের অধিকার। আমরা জঙ্গি নিশ্চিহ্ন করেই ছাড়ব।’ 

এদিকে সামরিক অভিযান সত্ত্বেও কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি সংকটাপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। খনিজ সম্পদে পুষ্ট এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশে এম-২৩, এডিএফসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন হামলা পরিচালনা করছে।

যৌথবাহিনীর দাবি, অভিযানের কারণে এই অঞ্চলে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে, স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগ কমেনি।

এই এলাকায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনায় দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

আঞ্চলিক ভূরাজনীতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও।

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু সামরিক অভিযান চালালেই এই সমস্যা মিটবে না। আমাদের আরও কার্যকর কোনো সমাধানে পৌঁছাতে হবে।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে

নাইমুর/

পাকিস্তানে বাস থামিয়ে সাত পাঞ্জাবীকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
পাকিস্তানে বাস থামিয়ে সাত পাঞ্জাবীকে গুলি করে হত্যা
বেলুচিস্তানে গুলিবর্ষণের পর অভিযান পরিচালনা করছেন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে একটি যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তের গুলিবর্ষণে সাতজন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পাঞ্জাব প্রদেশের সীমান্তবর্তী বারখান জেলায় অতর্কিত হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শাহাদাত হুসাইনের ভাষ্যমতে, লাহোর থেকে আগত বাসটির টায়ারে গুলি করে থামিয়ে দেয় দুর্বৃত্ত।

‘প্রত্যেক বাসযাত্রীর পরিচিতিপত্র দেখার পর উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে পাঞ্জাবিদের গুলি করে এই জঙ্গি।’, বলেন তিনি।

ঘটনাস্থলেই সাতজন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

কোনো সশস্ত্রগোষ্ঠী এপর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি।

বেলুচিস্তানে এ ধরণের ঘটনা নতুন কিছু নয়। অঞ্চলটিতে স্বাধীনতাকামী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা বেশ পুরনো সমস্যা। 

বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই অঞ্চলের সবচেয়ে তৎপর সশস্ত্রগোষ্ঠী। প্রায়ই পাকিস্তানি নিরাপত্তাবাহিনী ও অন্য প্রদেশের শ্রমিকদের উদ্দেশ করে আক্রমণ পরিচালনা করে এই সংগঠন।

সম্প্রতি দেশটিতে বেলুচিস্তানে পাঞ্জাবি শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতায় ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গেল বছর জঙ্গি হামলার শিকার হয়ে অন্তত ৩৯জন পাঞ্জাবি প্রাণ হারিয়েছেন।

এদিকে আক্রমণের আত্মপক্ষ সমর্থনে বিএলএ’র ভাষ্য, পাকিস্তান সরকার ও অন্য প্রদেশের শ্রমিকরা বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ ‘ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে-যেখানে অঞ্চলের স্থানীয়রাই সুবিধাবঞ্চিত।’

মঙ্গলবারের হামলার পর স্থানীয় নিরাপত্তাবাহিনী পুরো অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনার পেছনে দায়ী সবাইকে ন্যায়ের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

তবে বাড়তে থাকা সহিংসতায় জ্যামিতিক হারে বাড়ছে বেলুচিস্তানের জনসাধারণের নিরাপত্তাশঙ্কা। সূত্র: ডয়েচে ভেলে

নাইমুর/

ইউক্রেন-গাজায় সহিংসতা নিরসনে সৌদি যুবরাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
ইউক্রেন-গাজায় সহিংসতা নিরসনে সৌদি যুবরাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য থেকে পূর্ব-ইউরোপ; গাজা থেকে কিয়েভ- শান্তিকামী জনসাধারণের আশা একটাই-একদিন বন্ধ হবে মানবজীবনের চরম অপচয়; থামবে গ্রেনেড-ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের হুঙ্কার। তবে বিশ্বনেতাদের নাস্তার টেবিলের আলোচনায় মানবিকতার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় অস্ত্রবাণিজ্য। লাভ-লোকসানের হিসেব-খাতায় ফিলিস্তিনের খান ইউনিসের নিষ্পাপ শিশুর রক্তের ফোঁটা ছিটকে পড়লে কিংবা কেউ রক্তপিপাসা সরিয়ে ইউক্রেনীয় শিশুদের অন্তত একটি রাত আতঙ্কহীন ঘুমের প্রস্তাব রাখলে হয়তো তাচ্ছিল্যেই উড়িয়ে দেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু-পুতিনরা।

এই আলোচনা-বৈঠকের মধ্যে ঘটে যাচ্ছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, অত্যাচার, জোরপূর্বক নিজভূখন্ড থেকে উৎখাত। তবে সাধারণ মানুষ এসবের পরেও সপ্ন দেখে শান্তির। এ অবস্থায় গাজা ও ইউক্রেনকে বৃহত্তর শক্তির আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে নতুন দূত হয়ে এসেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক করেছেন দেশটির যুবরাজ। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহে একটি সম্মেলনে জর্ডান, মিশর, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিদলগুলোর সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে। গাজাবাসীদের উৎখাত করতে ট্রাম্পের প্রস্তাব হবে এই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।

এদিকে ইউক্রেনের নীতিনির্ধারণে খোদ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের অংশগ্রহণ না থাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘তিন বছর ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। জেলেনস্কির উপস্থিতি আদৌ কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখলে যুদ্ধ এতিদূর গড়াতোই না।’

এদিকে রাশিয়ার প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। যুদ্ধ শেষে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে মস্কোকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এদিকে গাজাবাসীদের জোরপূর্বক অন্যত্র পাঠিয়ে অঞ্চলটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের মরুদ্যান’ বানাতে চান বলে মন্তব্য করার পর ক্ষেপেছে আরব বিশ্ব।

এই সংকট মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে সৌদি প্রশাসন। ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিপরীতে আরেকটি চুক্তি দাঁড় করানো হবে বলে জানা গেছে। যুবরাজ সালমানের প্রস্তাবে গাজা অঞ্চলকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দু ঘোষণা করে অঞ্চলটি পুনর্নির্মানে ২০ বিলিয়ন ডলার আনুদান সংগ্রহ করার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্টতার কারণে যুবরাজের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্ববহ। মার্কিন উন্নয়নে মরুভূমির এই দেশ আগেও বেশ কয়েকবার অর্থ সহায়তা করছে।

এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও সহাবস্থান ধরে রেখেছেন সালমান।

এ অবস্থায় পরাশক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্টতা কাজে লাগিয়ে নিপীড়িতদের নীরব আর্তনাদের অন্তত কিছুটা এই আলোচনার টেবিলে যুবরাজ সালমান উত্থাপন করবেন বলেই আশা করছে শান্তিকামী বিশ্বনাগরিকরা। সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

নাইমুর/