ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফিলিস্তিনিদের জন্য আয়ারল্যান্ডের ত্রাণ সহায়তা ঘোষণা

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম
ফিলিস্তিনিদের জন্য আয়ারল্যান্ডের ত্রাণ সহায়তা ঘোষণা
আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনে ত্রাণ সরবরাহে নিয়োজিত জাতিসংঘের শাখা ইউএনআরডব্লিউএ-কে ২০ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে আয়ারল্যান্ড প্রশাসন। গাজা ও পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যোগান নিশ্চিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাবলিন। এর আগে গত সপ্তাহে মার্কিন ত্রাণসংস্থা ইউএসএইড বন্ধের ঘোষণার পর সংকটের মুখে পড়ে গাজায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনিদের জনজীবন।

এ পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধবন্দিদের ঘরে ফেরা নিশ্চিত করা আমাদের সবার মানবিক দায়িত্ব।’

ইউএনআরডব্লিউএ-কে দেওয়া ২০ মিলয়ন পাউন্ড অর্থ সহায়তা ‘ক্রান্তিকালে গাজা অঞ্চলে মানবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে আয়ারল্যান্ডের নৈতিক দায়িত্ব পালনের প্রকাশ’, বিবৃতিতে জানান হ্যারিস। এই অঞ্চলে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রমের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত ৩০ জানুয়ারি ইউএনআরডব্লিউএ-এর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আইনি পদক্ষেপে নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব রাখেন তিনি।

গত অক্টোবরে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইউএনআরডব্লিউএ-এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট। গত সপ্তাহ থেকে এই আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এদিকে আয়ারল্যান্ড গাজাবাসীদের কল্যাণে এ পর্যন্ত ৬৩ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা দিয়েছে। সূত্র: আনাদোলু অ্যাজেন্সি

নাইমুর/

নাইটসব্রিজে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হামিদ কোস্কুন

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০৯ এএম
নাইটসব্রিজে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হামিদ কোস্কুন
ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনের নাইটসব্রিজে তুর্কি কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ধর্মীয়ভাবে উদ্বুদ্ধ জনশৃঙ্খলার মারাত্মক লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

সোমবার (০২ জুন) আদালত রায়ে জানায়, অভিযুক্তের আচরণ আংশিকভাবে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল।

এ বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হামিদ কোস্কুন নামে পরিচিত এক ব্যক্তি কোরআনের একটি অনুলিপি আগুনে পুড়িয়ে তা মাথার ওপর তুলে ধরেন এবং উসকানিমূলক স্লোগান দেন।

তার দাবি, তিনি তু্রস্কের  প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ানের ‘ইসলামপন্থি সরকারের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই কাজ করেছেন। নিজেকে আর্মেনীয়-কুর্দি বংশোদ্ভূত হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি তুরস্ক থেকে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছেন।

তবে আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ফিলিপ ম্যাকগি বলেন, ‘এই মামলাটি কোনও ধর্মের সমালোচনা নিয়ে নয়, বরং জনসমক্ষে একটি বিশৃঙ্খল আচরণ নিয়ে। অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়া হলেও তা কারও ধর্মীয় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে না।’

তবে এই ঘটনার পর ব্রিটিশ রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। শ্যাডো জাস্টিস সেক্রেটারি রবার্ট জেনরিক মন্তব্য করেন, এই রায় যেন সংসদে বাতিল হয়ে যাওয়া ব্লাসফেমি আইনকে নতুনভাবে ফিরিয়ে আনলো।তার মতে, এটি বাকস্বাধীনতা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার ভারসাম্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।

এদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক মাহবুবুল করীম সুয়েদ মন্তব্য করেন, কোরআন পোড়ানোর এ ঘটনার পেছনে অভিযুক্ত ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

তিনি আরও বলেন,  এই ধরনের ঘটনা ব্রিটিশ মুসলিম ও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোর পরিবর্তে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলাই হওয়া উচিত আমাদের লক্ষ্য।

সুলতানা দিনা/ 

সিসিলি দ্বীপে মাউন্ট এটনায় আগ্নেয়গিরির তাণ্ডব, পালাচ্ছেন পর্যটকরা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম
সিসিলি দ্বীপে মাউন্ট এটনায় আগ্নেয়গিরির তাণ্ডব, পালাচ্ছেন পর্যটকরা
ছবি: সংগৃহীত

ইতালির মাউন্ট এটনা আগ্নেয়গিরিতে সোমবার( ০২ জুন) হঠাৎ ভয়াবহ ধস ও অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে। মূলত এই আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্ব অংশ ধসে পড়ে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে এবং এতে গ্যাস, ছাই ও পাথরের গরম ঢল সৃষ্টি হয়। এসময় উচ্চ তাপমাত্রার গ্যাস, ছাই এবং পাথরের একটি গুচ্ছ আকাশে কয়েক কিলোমিটার উঁচুতে উড়ে যায়।

আর এর ফলে মাউন্ট এটনায় অবস্থান নেয়া পর্যটকরা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যায়,বিস্ফোরণের সময় লোকজনের দীর্ঘ লাইন দ্রুত নেমে আসছে।

অন্যদিকে, একটি ট্যুর কোম্পানির মালিক মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএনকে জানান, সিসিলিয়ান আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের সময় সেখানে অন্তত ৪০ জন মানুষ ছিলেন।

গো এটনার একজন গাইড জিউসেপ্পে প্যানফালো, তার ভ্রমণ দলকে দূর থেকে বিশাল ছাইয়ের মেঘের মধ্যে ডুবে যাওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করেন।

সোমবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএন।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইতালির সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি বড় অংশ ধসে পড়েছে, যার ফলে সোমবার সেখানকার আকাশে কয়েক কিলোমিটার উচ্চতায় বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের মেঘ তৈরি হয়।

ইতালির ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরি গবেষণা সংস্থা (আইএনজিভি) জানায়, ধসের কারণে ‘পাইরোক্লাস্টিক ফ্লো’ বা বিপজ্জনক গ্যাস, ছাই ও গরম পাথরের দ্রুতগামী ঢল সৃষ্টি হয়। এই ঢল অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় ছুটে চলে এবং প্রাণঘাতী হতে পারে।

সংস্থাটি আরও জানায়, আগ্নেয়গিরির গর্ত থেকে লাভা ফোয়ারাও ছুটে বের হয়। এছাড়া আগ্নেয় কম্পনের মাত্রা বেশ অনেকটা বেড়ে গেছে, যা বিস্ফোরণ আরও বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।

অবশ্য এই ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কোনও এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি, তবে আশপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার পর পর্যটকরা আতঙ্কে দৌঁড়ে পালাচ্ছেন।

মাউন্ট এটনা ইতালির সিসিলি দ্বীপে অবস্থিত এবং এটি ইউরোপের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হিসেবে পরিচিত। প্রায়শই এখান থেকে নাটকীয় ও দৃশ্যমান অগ্ন্যুৎপাত হয়ে থাকে। গত কয়েক মাস ধরেই এটনার কম্পন ও অগ্ন্যক্রিয়ায় বাড়তি গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল।

মূলত সিসিলি দ্বীপে অবস্থিত মাউন্ট এটনা ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু সক্রিয় আগ্নেয়গিরি— যার উচ্চতা প্রায় ৩৩০০ মিটার। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল ও মে মাসেও এটনায় জোরালো অগ্নুৎপাত লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

ইতালীয় দ্বীপের আগ্নেয়গিরিটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র যেখানে প্রতি বছর ১৫ লক্ষ মানুষ ভ্রমণ করেন, যাদের অনেকেই প্রায় পুরো পথ হেঁটে এর চূড়ায় পৌঁছান।

যদিও মাউন্ট এটনা বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির মধ্যে একটি, তবুও মানমন্দিরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের পর থেকে এই মাত্রার কোনও অগ্ন্যুৎপাত ঘটেনি।

এই অগ্ন্যুৎপাতগুলি প্রায়শই শুরু হওয়ার সাথে সাথেই থেমে যায়, যদিও এবার বিস্ফোরণের তীব্রতা এখনও বাড়ছে এবং পর্বতটি লাভা এবং আগুন নির্গত করছে।

সুলতানা দিনা/

 

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৫১

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৫১
গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিরা। ছবিটি গতকাল সোমবার তোলা। সংগৃহীত

ইসরায়েলি আক্রমণে গাজায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৫০৩ জন। অবরুদ্ধ উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

ইসরায়েলি বাহিনী সহায়তা সংগ্রহে যাওয়া ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করেও গুলি চালাচ্ছে। এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে। জাতিসংঘ ও সহায়তা সংস্থাগুলো এরই মধ্যে ওই ঘটনাগুলোর নিন্দা জানিয়েছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের বিতরণ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকাগুলোয় ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয় গাজার যুদ্ধ। শুরু থেকেই নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এরই মধ্যে ৫৪ হাজার ৪৭০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। 

এদিকে, দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে হামাস। তারা মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বিষয়টি তুলে ধরে। কাসসাম ব্রিগেডের একদল যোদ্ধা ইসরায়েলি সেনাদের একটি দলের ওপর দক্ষিণের শহর কারায় হামলা চালায়। হামলাটি গত শনিবার হয়েছে বলেই জানিয়েছে হামাস।

ইসরায়েলের সমর্থনে হওয়া সমাবেশে হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে ইসরায়েলের সমর্থনে আয়োজিত জনসমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এক ব্যক্তি ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ স্লোগান দিয়ে মলোটভ ককটেল ছুড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুসারে, এ ঘটনায় ৫২ থেকে ৮৮ বছর বয়সী আট ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ঘটনাটি ঘটেছে কলোরাডোর বোল্ডারের পার্ল স্ট্রিট মলের বাইরে। ওই স্থানটি থেকে ডেনভারের দূরত্ব মাত্র ৪৮ কিলোমিটার। এফবিআই বলছে, এটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মলোটোভ ককটেলের পাশাপাশি ওই ব্যক্তি ফ্লেমথ্রোয়ার ব্যবহার করেছিল বলেও জানা যায়। 

এরই মধ্যে আক্রমণের ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়েছে। সে ভিডিওতে দেখা গেছে, শার্টবিহীন অবস্থায় এক ব্যক্তি উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে স্লোগান দিয়ে মলোটোভ ককটেল ছুড়ছে। তাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তার দুই হাতেই মলোটোভ ককটেল ছিল।

পুলিশ কলোরাডোর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৬ মিনিট নাগাদ আক্রমণের খবর পায়। পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে আটক করে এবং আহতদের উদ্ধার করে। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা 

রাশিয়া-ইউক্রেনের আলোচনার মধ্যেই পাল্টাপাল্টি হামলা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:২৩ এএম
রাশিয়া-ইউক্রেনের আলোচনার মধ্যেই পাল্টাপাল্টি হামলা
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার চারটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার ঘটনা নিশ্চিত করেছে মস্কো। দেশটি এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইউক্রেনের হামলায় ৪০টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ইউক্রেনেও ব্যাপক হামলা হয়েছে। গত রবিবার রাতভর দেশটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। 

ইউক্রেন এ হামলার জবাবেও পাল্টা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। 

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ১৬২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই ইউক্রেনের আশপাশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভূপাতিত করা হয়েছে। ৫৭টি ভূপাতিত করা হয়েছে কারস্ক অঞ্চলে। আর ৩১টি ভূপাতিত করা হয়েছে বেলগোরোদে।

অন্যদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়া তাদের লক্ষ্য করে ৮০টি ড্রোন ও চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যা সবমিলিয়ে ১২টি স্থানে আঘাত হেনেছে। 

রাশিয়ার যে চারটি বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেন হামলা চালিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দুটির অবস্থান ইউক্রেন থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে। ইউক্রেনের হামলার কবলে পড়া বিমান ঘাঁটিগুলো হলো- সাইবেরিয়ার ইরকুতস্কের বেলায়া, রাশিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে ওলেনিয়া, মধ্য রিয়াজানের ডিয়াজিলেভো ও মধ্য ইভানভো অঞ্চলের ইভানভো। 

এসবিইউর এক সূত্র জানায়, পরমাণু সক্ষমতার টিইউ-৯৫, টিইউ ২২এম৩ ও এ-৫০ যুদ্ধবিমানেও হামলা হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ‘স্পাইডারস ওয়েব’ নামের ওই অভিযানটি পরিচালনা করেছে এসবিইউ সিকিউরিটি সার্ভিস। হামলার সময় ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

এসবিইউয়ের এক সূত্র বিবিসিকে বলেছেন, এ হামলার প্রস্তুতিতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কাঠের ভ্রাম্যমাণ কেবিনে গোপন ড্রোন রাখা হয়। পরে সেগুলো বিমানঘাঁটির কাছাকাছি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, এমন একটি সময় এসব হামলা হচ্ছে, যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে। দ্বিতীয় দফার বৈঠকে যোগ দিতে দুই পক্ষের আলোচক দলই ইস্তাম্বুলে উপস্থিত হয়েছে। 

আলোচনার আগেই ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলে জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। কিয়েভের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এর পর পর্যায়ক্রমে দেশটির বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নেয় তারা। সবমিলিয়ে এখন রাশিয়ার হাতে ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ রয়েছে। এ অঞ্চলের মধ্যে ২০১৪ সালে রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে। 

শান্তি আলোচনার আগেই রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইউক্রেনের এলাকা ফেরত দেবে না। 

ইউক্রেনের নেতৃস্থানীয়রাও মনে করছেন, বেশ কিছু এলাকা তারা ফিরে পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আভাস দেওয়া হয়েছে। 

প্রথম শান্তি বৈঠকের পর সবকিছু ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে এমন প্রত্যাশা করা হলেও তা হয়নি। ওই বৈঠকের পর থেকেই ইউক্রেনে হামলার মাত্রা বেড়ে যায়। বিষয়টি এমন একটি পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি চুপ থাকতে বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও।

এদিকে, ইউক্রেনও পাল্টা জবাব দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরিচালিত সর্বশেষ অভিযানে সাফল্যের জন্য এসবিইউ প্রধান ভাসিল মালিউককে গত রবিবার অভিনন্দন জানান জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে চমৎকার বিষয় হলো, রাশিয়ার অভ্যন্তরে এ অভিযান পরিচালনার অফিসটি ছিল এফএসবির কাছে।’ প্রসঙ্গত, এফএসবি রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা সংস্থা হিসেবে পরিচিত।

তবে হামলা চালানোর পর কাউকে ধরা পড়তে হয়নি। জেলেনস্কি জানান, অভিযানের সঙ্গে জড়িতরা হামলার আগেই নিরাপদে রাশিয়া ছেড়ে বের হয়ে গেছেন।

এসবিইউয়ের অনুমান, এ হামলায় রাশিয়ার প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই বিস্তারিত জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেছে তারা। তবে আদৌ এত বিপুল অঙ্কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, সে দাবির সত্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি। সূত্র: বিবিসি

পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্রার্থীর জয়

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:১৭ এএম
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্রার্থীর জয়
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী দেশটির বিরোধীদলীয় জাতীয়তাবাদী প্রার্থী কারোল নাওরকি

পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির বিরোধীদলীয় জাতীয়তাবাদী প্রার্থী কারোল নাওরকি বিজয়ী হয়েছেন।

সোমবার (২ মে) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, স্বল্প ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। বিষয়টিকে দেশটির মধ্যপন্থি সরকারের জন্য বড় মাপের ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় থেকে ইউরোপীয় রক্ষণশীলরা অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্যে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাওরকি মোট ভোটের ৫০ দশমিক ৮৯ শতাংশ পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি প্রেসিডেনশিয়াল ভেটো ব্যবহার করে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের উদারনীতি খারিজ করে দেবেন। 

এর আগে জাতীয়তাবাদী সরকারের করে যাওয়া বিচারব্যবস্থার সংস্কার উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করছিল টাস্কের সরকার। তবে পোল্যান্ডের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা তা আটকে দেন। ধারণা করা হচ্ছে, নাওরকিও একই কাজ করবেন। 

নাওরকির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উদারপন্থি রাফাল ট্রজাস্কোয়স্কি। তিনি টাস্কের ক্ষমতাসীন সিভিক কোয়ালিশনের (কেও) পক্ষ থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং ৪৯ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের বরাতে জানা গেছে তথ্যটি।

গত রবিবার ভোটের পর বুথফেরত জরিপ প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই প্রার্থীই নিজেকে বিজয়ী দাবি করে ঘোষণা দেন। বুথফেরত জরিপ থেকেই আভাস মিলেছিল যে, ভোটের ফলাফলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চোখে পড়বে।

ট্রজাস্কোয়স্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে, পোল্যান্ড প্রশ্নে নিজের লক্ষ্যগুলো নাগরিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারিনি। আমি কারোল নাওরকিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য অভিবাদন জানাই।’

এরই মধ্যে ইউরোপের অন্যান্য জাতীয়তাবাদী সরকারের অভিবাদন পাওয়া শুরু করেছেন নাওরকি। রোমানিয়ার নির্বাচনে পরাজিত জর্জ সিমিওন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘পোল্যান্ড জিতেছে।’ 

অন্যদিকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান একে অসাধারণ জয়ের তকমা দিয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স