
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় হওয়া সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে তিনজন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস এবং এর বিপরীতে ইসরায়েল ১৮৩ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রেড ক্রসের কাছে ওর লেভি, ওহাদ বিন আমি ও ইলি শরাবিকে হস্তান্তর করা হয়।
এ ছাড়া মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি ১৮৩ বন্দিদের বেশিরভাগকে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় অভ্যর্থনা জানানো হয়।
তাদের প্রতিনিধি জানান, তারা সবার চিকিৎসা দরকার।
যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২১ জন বন্দি ও ৫৬৬ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দি ও ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, ওই ৩৩ জনের মধ্যে ৮ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।
শনিবার রেড ক্রসের কাছে শরাবি, বিন আমি ও লেভিকে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহতে হস্তান্তর করার সময় সেখানে সশস্ত্র যোদ্ধাদের পাহারায় অনেক মানুষ জড়ো হয়। এ সময় একটি মঞ্চে এক হামাস কর্মকর্তা ও রেড ক্রস প্রতিনিধি আনুষ্ঠানিক নথিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজগ বলেন, ৪৯১ দিন নরকযন্ত্র ভোগের পর অনাহারে, কষ্টে ও দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় এরা ফিরেছে।
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও তাদের শারীরিক অবস্থার সমালোচনা করেন। তিনি হামাসকে ‘দানব’ আখ্যা দিয়ে বলেন, আমরা আবারও দেখলাম হামাস কীভাবে আচরণ করেছে। হামাস বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, সাংস্কৃতিক উপায়ে বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েল ১৮৩ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়। এদের মধ্যে ৭০ জনের বেশি দীর্ঘমেয়াদি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। আর ১১১ জন গাজায় আটক হয়েছিলেন।
রামাল্লায় পৌঁছানোর পর সাতজন মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফিলিস্তিনি বন্দিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘প্যালেস্টিনিয়ান প্রিজনার্স ক্লাব’ এএফপিকে জানায়, তারা নির্যাতনের কারণে গুরুতর অসুস্থ।
সংগঠনটির কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-জাগারি বলেন, আজ মুক্তি পাওয়া প্রতিটি বন্দিরই চিকিৎসার প্রয়োজন।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে পশ্চিম তীরের আল-বিরেহ গ্রামের সাবেক মেয়র ও হামাসের নেতা জামাল আল-তাওয়িল (৬১) ও ছিলেন। তিনি ১৯ বছর ধরে দফায় দফায় ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ছিলেন। তার মেয়ে বুশরা আল-তাওয়িল গত জানুয়ারিতে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তি পান।
মেহেদী/