ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

হোয়াটসঅ্যাপে আপত্তিকর বার্তার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী বরখাস্ত

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৯ পিএম
হোয়াটসঅ্যাপে আপত্তিকর বার্তার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী বরখাস্ত
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জুনিয়র মন্ত্রী অ্যান্ড্রু গুয়েন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জুনিয়র মন্ত্রী অ্যান্ড্রু গুয়েন হোয়াটসঅ্যাপে আপত্তিকর বার্তা দেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছেন।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তাকে পদ থেকে অপসারণের ঘোষণা দেন। সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়। 

অ্যান্ড্রু গুয়েনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বর্ণবাদী, যৌন উত্তেজক এবং অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে এক ভোটার সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য এবং ইহুদিবিদ্বেষী কথাবার্তা বলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

গত রবিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য মেইল এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে তার বিতর্কিত বার্তাগুলোর উল্লেখ ছিল। এর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার দ্রুত ব্যবস্থা নেন এবং শনিবার তার বরখাস্তের ঘোষণা দেন।

অ্যান্ড্রু গুয়েন এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমি আমার মন্তব্যের জন্য গভীরভাবে অনুতপ্ত। যদি এতে কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি তার জন্য দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।’

রয়টার্স জানিয়েছে, গুয়েন তার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এক প্রবীণ নারী ভোটার সম্পর্কে কটূক্তি করেন। যেখানে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওই নারী আগামী নির্বাচনের আগেই মারা যাবেন। এ ছাড়া, তিনি উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলিনা রায়নারকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ রাজনীতিতে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অভ্যন্তরে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিরোধীরা একে দলটির শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার সংকট হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

এ ধরনের বিতর্কিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নীতিমালা আরও কঠোর করার আহ্বান উঠছে। সূত্র: রয়টার্স

তাওফিক/ 

স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র বানিয়ে গ্রেপ্তার সেই চিকিৎসকই বেছে নিলেন স্বেচ্ছামৃত্যু

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র বানিয়ে গ্রেপ্তার সেই চিকিৎসকই বেছে নিলেন স্বেচ্ছামৃত্যু
চিকিৎসক ফ্লোরিয়ান উইলেট। ছবি: সংগৃহীত

স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র সারকো পডের (বেদনাহীন মৃত্যু ঘটানোর যন্ত্র) মাধ্যমে সংঘটিত বিশ্বের প্রথম স্বেচ্ছামৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক ফ্লোরিয়ান উইলেটও স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করে নিলেন। 

৫ মে জার্মানিতে তিনি বিশেষ এই পদ্ধতিতে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সুইজারল্যান্ডের এক জঙ্গলে সারকো পডের মাধ্যমে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেন ৬৪ বছর বয়সী এক নারী। সে সময় ঘটনাস্থলে ওই নারী ছাড়া উপস্থিত থাকা একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন ফ্লোরিয়ান উইলেট। 

এ ঘটনায় সেসময় বেশ তোলপাড় তৈরি হয়। ঘটনার পরপরই উইলেটকে আটক করে সুইস পুলিশ। যদিও শেষ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আনেনি আদালত। তবে, তদন্তের জন্য তাকে ৭০ দিনের বিচারপূর্ব আটক রাখা হয়।

সারকো পড বা সুইসাইড পড হলো বিশেষভাবে নকশা করা ক্যাপসুল আকৃতির একটি যন্ত্র, যা ব্যবহার করে দ্রুত ও ‘বেদনাহীন’ মৃত্যু নিশ্চিত করা যায়। 

এটি দেখতে একটি ছোট, ক্যাপসুলের মতো, যেখানে একজন ব্যক্তি শুয়ে থাকার মতো জায়গা রয়েছে। এটির মধ্যে নিয়ন্ত্রিত অক্সিজেনের পরিবেশ তৈরি করা হয়। ক্যাপসুলে ঢোকার পর ব্যবহারকারী একটি বোতাম চাপলেই ভেতরের অক্সিজেন দ্রুত কমিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে পূর্ণ হয়ে যায়। এতে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তবে যেহেতু নাইট্রোজেন স্বাদ ও গন্ধহীন গ্যাস, তাই এতে ঘুমিয়ে পড়ার মতো মৃত্যু হয়—ব্যথাহীন, নিঃশব্দ ও দ্রুত—এমনটাই দাবি উদ্ভাবকের।

ডা. উইলেটের আত্মহত্যা-অধিকার সংগঠন দ্য রিসোর্ট এক বিবৃতিতে জানায়, আটক থাকার সময়ের মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন তিনি। জীবনের শেষ সময়টুকু তীব্র মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে কেটেছে। মৃত্যুর আগে একবার একটি ভবনের তৃতীয় তলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। 

পরে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ হন। এ ঘটনার পর থেকেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল তাকে।

পরবর্তীতে, ৫ মে জার্মানিতে সহায়ক মৃত্যুর মাধ্যমে তার জীবনাবসান ঘটে। সুইসাইড পডের উদ্ভাবক এবং বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছামৃত্যুর প্রবক্তা ফিলিপ নিটশকে বিবিসিকে বলেন, ‘জীবনের শেষ কয়েক মাসে ফ্লোরিয়ান উইলেট এমন সব মানসিক ভার বহন করেন, যা একজন মানুষের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও অসহনীয়।’

সুইস প্রসিকিউটর অফিস এখনো এই মৃত্যুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

‘সার্কো পড’ নামে পরিচিত ওই যন্ত্রটি ড্রাগ কিংবা চিকিৎসকের সহায়তা ছাড়াই স্বেচ্ছামৃত্যু সম্ভব করে তোলে—এমনটাই দাবি নির্মাতাদের। তবে সমালোচকেরা আশঙ্কা করেন, প্রযুক্তিনির্ভর এই যন্ত্র আত্মহত্যাকে ‘আকর্ষণীয়’ করে তুলতে পারে এবং এতে চিকিৎসকদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হয়, যা বিপজ্জনক।

সুইজারল্যান্ডে নির্দিষ্ট কিছু শর্তে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি থাকলেও তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এবং যুক্তরাজ্যে এখনো এই পদ্ধতি অবৈধ। তবু প্রতি বছর বহু মানুষ সুইজারল্যান্ডে গিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছেন।

সুলতানা দিনা/

ছেলের বিলাসী জীবনযাত্রার খবরে বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:১৬ পিএম
ছেলের বিলাসী জীবনযাত্রার খবরে বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গোলিয়ার ক্ষমতাচ্যু প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামসরাইন ওইয়ুন-এর্ডেন।ছবি:সংগৃহীত

ছেলের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার জেরে ব্যাপক গণবিক্ষোভ ও দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামসরাইন ওইয়ুন-এর্ডেনকে। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) মঙ্গোলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়,পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে পর্যাপ্ত সমর্থন না পাওয়ার পর মঙ্গলবার ( ৩ জুন)ভোরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। এছাড়া ওয়াশিংটনে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস এটি নিশ্চিত করেছে ।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলের অযৌক্তিক ব্যয়ের খবর ভাইরাল হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের পর এই ভোটটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান।

মঙ্গলবার (৩ জুন) পার্লামেন্টে আস্থাভোটে হেরে যাওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন। ভোটে অংশ নেওয়া ৮৮ জন এমপির মধ্যে ৪৪ জন তার পক্ষে ভোট দিলেও ৩৮ জন ছিলেন তার বিপক্ষে। ১২৬ আসনের পার্লামেন্টে ক্ষমতায় থাকতে হলে তার অন্তত ৬৪ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। 

আস্থাভোটে হেরে যাওয়ার পর এক বিবৃতিতে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি, যুদ্ধ ও শুল্কের মতো কঠিন সময়ে জাতির সেবা করতে পেরে গর্বিত।’

সম্প্রতি ওইয়ুন-এর্ডেনের ছেলের এবং তার বান্ধবীর বিলাসী জীবনযাত্রা র ছবি ভাইরাল হলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা।

আলোচিত সেই ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়, ওইয়ুন-এর্ডেনের ছেলের বান্ধবী একটি কালো ডিওর ব্যাগ ও একাধিক ব্যয়বহুল কেনাকাটার ব্যাগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, সঙ্গে ক্যাপশন: ‘হ্যাপি বার্থডে টু মি’।            

এই ছবিগুলো প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।

এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে শত শত তরুণ বিক্ষোভে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাও। যদিও ওইয়ুন-এর্ডেন দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ আনেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ওইয়ুন-এর্ডেনের শাসনামলে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতির চিত্র আরও খারাপ হয়েছে। গত বছর ১৮০টি দেশের মধ্যে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান ছিল ১১৪তম।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯০-এর দশকে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে রাশিয়া ও চীনের মাঝে অবস্থিত দেশটি। কিন্তু দুর্নীতি দেশটির এখনও অন্যতম প্রধান সমস্যা।

মঙ্গোলিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ নিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের ‘তৃতীয় প্রতিবেশী’ হিসেবে বিবেচনা করে।

সুলতানা দিনা/

যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক ছত্রাক’ পাচারের অভিযোগে চীনা যুগল গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিপজ্জনক ছত্রাক’ পাচারের অভিযোগে চীনা যুগল গ্রেপ্তার
ছবি:সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বিপজ্জনক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে ইউনকিং জিয়ান ও জুনিয়ং লিউ নামে দুই চীনা নাগরিক গ্রেপ্তার করেছে । এছাড়া ভিসা জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে এই দুই  চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) মিশিগানের বিচার বিভাগ দুই চীনা গবেষকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিপজ্জনক ছত্রাক পাচার চেষ্টার অভিযোগ ঘোষণা করে। 
মঙ্গলবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। 

যদিও চীন বলছে,যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আরও বেশি সংখ্যক চীনা শিক্ষার্থীকে দেশ থেকে দূরে রাখার  কৌশল হিসেবে এই মামলাটি সাজিয়েছে।

গত জুলাই মাসে, ৩৩ বছর বয়সী ইউনকিং জিয়ান এবং ৩৪ বছর বয়সী জুনিয়ং লিউ নামের  এই দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়, মি. লিউ ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম ছত্রাকের ছোট ব্যাগ বহন করে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এই ছত্রাক গম, বার্লি, ভুট্টা এবং চাল জাতীয় ফসলের গাছেকে পঙ্গু করে দিতে পারে।

গত বছর ৩২টি রাজ্যে কৃষি বিভাগের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ফসলের মাথার ক্ষয় রোগটি আমেরিকান কৃষকদের কাছে একটি পরিচিত সমস্যা। এই ছত্রাক শীতকালীন গম ফসলের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর হতে পারে।

মিস জিয়ানকে গ্রেপ্তার করে ডেট্রয়েটের ফেডারেল আদালতে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে মিঃ লিউ চীনে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

চীনা নাগরিকদের জন্য শিক্ষার্থী ভিসা ‘আক্রমণাত্মকভাবে’ বাতিল করার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন প্রশাসন বলছে, এই ধরনের ছাত্ররা তাদের দেশের স্বার্থে আমেরিকান ল্যাব থেকে সংবেদনশীল প্রযুক্তি বা বাণিজ্য গোপনীয়তা চুরি করার মতো কাজ করার ঝুঁকিতে থাকে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়ান মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতেন। আর তার প্রেমিক লিউ কাজ করতেন একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের বিরুদ্ধে যৌথ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে এফবিআই, মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ফেডারেল তদন্তে অভিযোগ আনা হলো। গত সপ্তাহে, অ্যান আর্বার-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজন চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে অবৈধভাবে ভোট দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম এফ. গর্গন জুনিয়র এক বিবৃতিতে বলেন, এই চীনা নাগরিকদের মধ্যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন অনুগত সদস্যও রয়েছে। তাদের কার্যকলাপ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।

মূলত, জিয়ান ও লিউকে ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম নামক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে এফবিআই, যা বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে সম্ভাব্য কৃষি সন্ত্রাসবাদের অস্ত্র হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ। এ চীনা যুগল তাদের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষাগার ব্যবহার করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন বলেও জানান মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম এফ. গর্গন জুনিয়র।

কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিকারক এই ছত্রাক মাথার ক্ষয় সৃষ্টি করে, যা গম, বার্লি, ভুট্টা ও ধানের একটি রোগ এবং প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির জন্য দায়ী এটি। ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারামের বিষাক্ত পদার্থ মানুষ ও গবাদি পশুর বমি, লিভারের ক্ষতি এবং প্রজনন ত্রুটি সৃষ্টি করে।

অভিযোগে বলা হয়, চীনে এই রোগজীবাণু নিয়ে কাজের জন্য জিয়ানকে তহবিল প্রদান করেছিল চীনা সরকার। তার প্রেমিক লিউ একটি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত যেখানে সে একই জীবাণু নিয়ে গবেষণা করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সুলতানা দিনা/

সিরিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারে ইসরায়েলের বড়সড় বিমান হামলা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১১:০৮ এএম
সিরিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারে ইসরায়েলের বড়সড় বিমান হামলা
ছবিতে গত ১৮ মার্চ সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দারায় ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্টি ধ্বংসযজ্ঞ দেখা যাচ্ছে। ছবি:সংগৃহীত

সিরিয়ার পশ্চিম প্রদেশে একটি অস্ত্রভাণ্ডারে মঙ্গলবার(৩ জুন) ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মূলত সিরিয়া থেকে ইসরায়েলের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে অস্ত্রভাণ্ডারে এই হামলা চালায় দেশটি।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সিরিয়ার ইসরায়েলি গোলন্দাজ বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে বলে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা  এবং একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানায়। 

এদিকে ইসরায়েল বলেছে, সিরিয়া থেকে ইসরায়েলি-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে রকেট হামলার জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা সানা  জানায়,ইসরায়েলি গোলাগুলো জর্ডান সীমান্তের কাছে অবস্থিত ইয়ারমুক অববাহিকা এবং ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়। যদিও এই হামলায় হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও বিবরণ দেওয়া হয়নি।

ব্রিটেন-ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) জানায়, পশ্চিম দারায় কৃষিক্ষেত্রে কমপক্ষে তিনটি ইসরায়েলি গোলা আঘাত হেনেছে। এছাড়া হামলার পরপরই ওই এলাকার উপর ইসরায়েলি ড্রোনও দেখা গেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে বুধবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েল এই হামলার মাধ্যমে এই অঞ্চলকে অস্থির করার চেষ্টা করছে।‘ 

অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ দাবি করেন, ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর জন্য সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে দায়ী করা হবে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহী বাহিনী নিয়ে চালানো এক অভিযানে বাশার আল-আসাদের সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেন আহমেদ আল-শারা। এরপর থেকেই ইসরায়েল সিরিয়ার ভেতরে লক্ষ্যবস্তুতে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে।

এই এলাকাগুলো ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির সন্নিকটে অবস্থিত। ইসরায়েল ১৯৭৬ সালে সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান দখল করে নেয় এবং সেখানে বসতি সম্প্রসারণ চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশ্য গত মাসেও দামেস্কে সিরিয়ার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে বোমা হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘এই হামলার মাধ্যমে আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি, দামেস্কের দক্ষিণে কোনও বাহিনী মোতায়েন হতে দেওয়া হবে না।’

এদিকে এই বক্তব্যের পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ওই হামলাকে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন।

সুলতানা দিনা/

কেমন হবে দ. কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং-এর রাষ্ট্রনীতি?

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:৩০ এএম
কেমন হবে দ. কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং-এর রাষ্ট্রনীতি?
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন দেশটির বিরোধী দলের নেতা  । 

শৈশবে দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় এই উদার রাজনীতিবিদ বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মেয়াদ শুরু করেন ।

পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তা সামাল দেওয়াই এখন লি জে-মিয়ংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।যদিও লির জয় দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে তাৎক্ষণিকভাবে কোন বড় পরিবর্তন আনবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সমালোচকরা বলছে, চীন ও উত্তর কোরিয়ার দিকে ঝুঁকে থাকা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান থেকে দূরে থাকা লি হয়ত দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিত্রতার উপর জোর দেবেন।

বুধবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক সংকট ও বিশৃঙ্খলার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন বিরোধী নেতা লি জে-মিয়ং। গত বছরের শেষের দিকে হঠাৎ করে সামরিক আইন জারির  সিদ্ধান্তের কারণে এপ্রিলে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইউন সুক ইওলকে অপসারণের মাধ্যমে আকস্মিক নির্বাচনে জয়লাভের একদিন পর তিনি এই মেয়াদ শুরু করেন।

জাতীয় পরিষদে তার উদ্বোধনী ভাষণে লি বলেন, ‘ আমার সরকার দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন সামরিক জোটের উপর ভিত্তি করে ‘শক্তিশালী প্রতিরোধ’ দিয়ে সম্ভাব্য উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসন মোকাবেলা করবে।’

তবে তিনি উত্তর কোরিয়ার সাথে একটি যোগাযোগের চ্যানেল খুলবেন এবং আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন বলে জানান।

মূলত এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সামরিক শাসন জারির চেষ্টায়। তার এই স্বল্পস্থায়ী ও চরম বিতর্কিত সেই পদক্ষেপ দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্ট তাকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।

মূলত এই ঘটনাগুলোর পর দেশজুড়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়, তা সামাল দেওয়াই এখন লি জে-মিয়ংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

তিনি এমন একটি সময় দায়িত্ব নিচ্ছেন, যখন দেশ অভ্যন্তরীণভাবে তীব্রভাবে বিভক্ত এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাকে কঠিন কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতে হবে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি পুনরায় আলোচনা করে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর শুল্কের চাপ কমাতে হবে।

এদিকে নির্বাচনে মিয়ংয়ের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী কিম মুন-সু। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জরিপে পিছিয়ে থাকা কিম নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল দেখে বুধবার( ০৪ জুন) ভোরে পরাজয় স্বীকার করেন এবং লিকে বিজয়ী হিসেবে অভিনন্দন জানান।

এদিকে, লি নিজের বক্তব্যে সরাসরি জয় ঘোষণা না করলেও ইঙ্গিত দেন, তিনি জিতেছেন। তিনি বলেন, 'তার প্রথম কাজ হবে দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।'

৬১ বছর বয়সী এই রাজনীতিক মাত্র তিন বছর আগে খুব অল্প ভোটে ইউনের কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। ফলে এটি তার জন্য এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন।

তবে লি নিজেও একাধিক রাজনৈতিক বিতর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কেলেঙ্কারিও তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনে অনেক ভোটার লি জে-মিয়ংয়ের প্রতি বিশেষ সমর্থন দেখাতে নয়, বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতেই বিকল্প হিসেবে তাকে ভোট দিয়েছেন।

সুলতানা দিনা/