ঢাকা ১০ চৈত্র ১৪৩১, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
English

মহাকাশ থেকে ফিরছেন সুনীতা-উইলমোর

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
মহাকাশ থেকে ফিরছেন সুনীতা-উইলমোর
সুনীতা উইলিয়ামস-বাচ উইলমোর। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ আট মাস ধরে মহাকাশে আটকেপড়া নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার ক্রু সঙ্গী বাচ উইলমোর আগামী মার্চ মাসে পৃথিবীতে ফিরছেন বলে জানা গেছে। যারা দীর্ঘমেয়াদে মহাকাশ মিশনের অংশ হিসেবে মহাকাশে যাত্রা করেছিলেন।  

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার ক্রু সঙ্গী বাচ উইলমোর পৃথিবীতে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী ১২ মার্চ ক্রু-১০ মিশন ড্রাগন স্পেসক্রাফটে পৃথিবী থেকে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে এবং এক সপ্তাহ পর ১৯ মার্চ সেটিতে করে সুনীতা এবং উইলমোর পৃথিবীতে আসবেন। 

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।  

ক্রু-১০ মিশনে নাসার মহাকাশচারী অ্যান ম্যাকক্লেইন ও নিকোল আয়ার্স, জাপানের মহাকাশ সংস্থা জাক্সার মহাকাশচারী তাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ান মহাকাশচারী কিরিল পেস্কভসহ চারজন সদস্য মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাসের জন্য পৌঁছাবেন। 

মিশনটি পৌঁছানোর পর সুনীতা উইলিয়ামস ও বাচ উইলমোর তাদেরকে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। এতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। এ সময় নতুন একজন মহাকাশ স্টেশন কমান্ডার দায়িত্ব নেবেন। বর্তমানে সুনীতা উইলিয়ামস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে উইলিয়ামস ও উইলমোর সেই ড্রাগন স্পেসক্রাফটটিতে উঠবেন, যা ক্রু-১০ মিশনকে নিয়ে মহাকাশে গিয়েছিল এবং তা ১৯ মার্চ পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

গত বছরের ৫ জুন সুনীতা উইলিয়ামস ও বাচ উইলমোর বোয়িং স্টারলাইনারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছান, তবে স্পেসক্রাফটের প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তারা সেখানে আটকা পড়েন।

এ পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ককে মহাকাশে আটকেপড়া দুই মহাকাশচারীকে উদ্ধার করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘আমি এখনই ইলন মাস্ক এবং স্পেসএক্সকে অনুরোধ করেছি মহাকাশে আটকে থাকা দুই সাহসী মহাকাশচারীকে উদ্ধার করো।’ সূত্র: এনডিটিভি 

তাওফিক/ 

রোহিঙ্গাদের জন্য এক বিলিয়ন ডলার সাহায্য চেয়েছে জাতিসংঘ

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম
রোহিঙ্গাদের জন্য এক বিলিয়ন ডলার সাহায্য চেয়েছে জাতিসংঘ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য এ বছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সাহায্য চেয়েছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে থাকা প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দাতাদের জীবন রক্ষায় এ অর্থ দরকার বলে সোমবার (২৪ মার্চ) জাতিসংঘ জানিয়েছে।

জাতিসংঘ জানায়, আর্থিক সম্পদ হ্রাস এবং প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে তারা এবং ১০০ টিরও বেশি অংশীদার রোহিঙ্গা সংকটের জন্য ২০২৫-২৬ সালের যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা চালু করছে। এদিকে এ বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সোমবার সকালে জেআরপি প্রকাশনা ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। 

এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন রোহিঙ্গা সমস্যা এবং অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলির জন্য প্রধান উপদেষ্টার হাইরিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দাতা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা।

২০১৭ সাল থেকে এক বছরমেয়াদি জেআরপি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এবারই প্রথমবারের মতো দুই বছরের মেয়াদের জন্য জেআরপির ঘোষণা দেওয়া হবে। তবে ৯৩৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন (প্রায় ৯৪ কোটি) ডলার সহায়তার প্রস্তাব শুধু ২০২৫ সালের জন্য। 

জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিস থেকে জানানো হয়, ২০২৫-২৬ সালের জেআরপি বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওসহ ১১৩টি সংস্থাকে সমন্বিত করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও জোর করে বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় মায়ানমারে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে কক্সবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও সহায়তা করা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, দুই বছরের জন্য তৈরি করা এই জেআরপি দীর্ঘস্থায়ী এ সংকটের যাত্রা এবং বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে। এটি দাতাদের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার সুযোগ করে দেবে। তবে ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত বাজেট ও জনসংখ্যার লক্ষ্যমাত্রাগুলো নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ২০২৬ সালের পরিকল্পনাগুলো পরিস্থিতির বিবেচনায় পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে।

জেআরপি ২০২৫-২৬-এর উপকারভোগীরা কারা

জেআরপি ২০২৫-২৬-এর আওতায় সরাসরি সুবিধাভোগীদের মধ্যে কক্সবাজার ও ভাসানচরের ক্যাম্পে বসবাসকারী ১০ লাখ ৯০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং কক্সবাজার জেলার প্রায় ৩ লাখ ৯২ হাজার স্থানীয় জনগোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত।

পরোক্ষভাবে, জেআরপি অংশীদাররা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে থাকবে। ক্যাম্প ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সেবা, খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মূলত দেশীয় বাজার থেকেই সংগ্রহ করা হয়, যেখানে সম্ভব হলে কক্সবাজার ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে সরাসরি ক্রয় করা হয়। এ ছাড়া, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো স্থানীয় অংশীদার নির্বাচন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়করণকে গুরুত্ব দিচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও আশপাশের উপজেলাগুলোর উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপীয়রা

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম
ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপীয়রা
ছবি: সংগৃহীত

গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে নাটকীয় রদবদল ঘটেছে। ইউরোপের প্রতি দীর্ঘসময় বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রাখলেও বর্তমান মার্কিন প্রশাসন আগ্রাসনের ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার করছে না। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সংঘটিত বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ট্রাম্প নাস্তানাবুদ করার পর ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব তীব্র মাত্রা ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপের অনেক বাসিন্দা।

এ প্রসঙ্গে ড্যানিশ পর্যটক কেনেট ব্রাস্ক বলেন, ‘জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর আমি প্রতিজ্ঞা করেছি ট্রাম্প যতদিন প্রেসিডেন্ট আছেন আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব না।’ পরিবর্তে শখের মাছ ধরতে মেক্সিকোতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম অফিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে পশ্চিম ইউরোপ থেকে আগত পর্যটকের সংখ্যা ১ শতাংশ কমেছে। স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের বাসিন্দারা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ট্রাম্প গ্রীনল্যান্ড দখল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর ডেনমার্ক ক্ষেপেছে সবচেয়ে বেশি। দেশটির আরেক পর্যটক কিম কুগেল নিজের শরীরের ট্যাটু থেকে তারাগুলো মুছে ফেলেছেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, কেউ যাতে তাকে মার্কিনপন্থি ভাবতে না পারেন তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশের দিকে নজর দিচ্ছে ইউরোপের ভ্রমণ এজেন্সিগুলো। কোপেনহেগেনের অ্যালবাট্রস ট্রাভেল নামে প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের চাহিদা কমে যাওয়ায় পুরো প্যাকেজই বন্ধ করে দিয়েছে।

জার্মানির অধিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে কানাডা ভ্রমণে বেশি আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে আমেরিকা আনলিমিটেডের সিইও টিমো কোলেনবার্গ বলেন, ‘কানাডার পর্যটন খাত হঠাৎই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।’

এদিকে, পর্যটকের ধারায় নিম্নগতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনবিষয়ক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, চলতি বছরেই এই খাত সেরে উঠবে।

অন্যদিকে, কানাডার গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ মৌসুমে আগের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি বুকিং হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স

নাইমুর/

বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষে নাকাল জার্মানি

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম
বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষে নাকাল জার্মানি
জার্মানিতে বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির ন্যাশনাল ডিসক্রিমিনেশন অ্যান্ড রেসিজম মনিটরের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশটির প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ও মুসলিমরা নিয়মিত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই প্রতিবেদনের ফলাফল প্রকাশের পর জার্মান সমাজে প্রচলিত আদিধারার ভ্রান্তি আরও স্পষ্ট হয়।

এ প্রসঙ্গে বার্লিনে কর্মরত স্কুল শিক্ষিকা ফাতমা বলেন, ‘সকাল থেকেই বৈষম্যের শুরু। স্কুলে যাওয়ার সময় বাসচালকরা আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকেন।’ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ হওয়া সত্ত্বেও হিজাবের কারণে চাকরি পেতে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।

আরও গুরুতর অভিযোগ করেন বার্লিনের আরেক বাসিন্দা হানা। তিনি বলেন, ‘বাস-ট্রেনে নিত্যই লোকজন আমাকে হেনস্তা করেন। আমাকে নিজের দেশে ফিরে যেতে বলেন।’

রেসিজম মনিটর তাদের গবেষণায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০ হাজার বাসিন্দার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। সাধারণত অভিবাসী ও মুসলিমরাই এই ধরনের জাতিবাদী আক্রমণের শিকার হন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে রেসিজম মনিটরের কর্মকর্তা চিহান সিনানোগলু বলেন, ‘জার্মানির বর্ণবাদ আগের চেয়েও সূক্ষ্মভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। সমাজের মানুষরা বর্ণবাদকে বিভিন্নরূপে স্থান দিচ্ছেন।’

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি পাঁচজন জার্মানের মধ্যে একজন বর্ণবাদী মনোভাব পোষণ করেন। তাদের মধ্যে অনেকের ধারণা অভিবাসীদের নিজেদের রাজনৈতিক চাওয়া কিছুটা ‘বাড়াবাড়ির’ শামিল।

এর সামাজিক প্রভাবও লক্ষণীয়। বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষের শিকার হয়ে দেশটিতে এনক্সাইটি ও মানসিক অবসাদে আক্রান্তের হার বাড়ছে। ‘সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ভরসা করতে না পারায় মানসিকভাবে আলাদা হয়ে পড়ছেন ভুক্তভোগীরা।’, বলেন চিহান।

বিশ্লেষকদের দাবি, জার্মানির বর্ণবৈষম্যবিরোধী আইনগুলো প্রয়োজনের তুলনায় দুর্বল। এ প্রসঙ্গে জার্মানির বর্ণবৈষম্যবিরোধী কমিশনার ফার্দা আতামান বলেন, ‘গবেষণা থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ভুক্তভোগীদের আরও নিরাপত্তা দেওয়া দরকার।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে

নাইমুর/

নিজের পোষা কুকুরের আক্রমণে প্রাণ হারালেন বৃদ্ধা

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:২২ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
নিজের পোষা কুকুরের আক্রমণে প্রাণ হারালেন বৃদ্ধা
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরে নিজের পোষ্য জার্মান শেফার্ড কুকুরের আক্রমণে মোহিনী ত্রিবেদী (৮০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।

মোহিনী ত্রিবেদী তার নাতি ধীরু প্রশান্ত ত্রিবেদী ও পুত্রবধূ কিরণের সঙ্গে থাকতেন। তার ছেলে সঞ্জীব ত্রিবেদী ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল।

জানা গেছে, পোষ্য জার্মান শেফার্ডটি কয়েকদিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিল। কুকুরকে সামলাতে গিয়ে ধীরু ও কিরণ দুজনেই আগেও একাধিকবার আহত হয়েছিলেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মোহিনী দেবী কুকুরটিকে খাওয়ানোর সময় আচমকা সেটি আক্রমণ করে। প্রচণ্ড হিংস্র হয়ে উঠে বৃদ্ধাকে কামড়ে ছিঁড়ে ফেলে কুকুরটি। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি পৌরসভাকে জানালে রাতেই পৌরসভা কর্মীরা কুকুরটিকে ধরে নিয়ে যায়।

 

পৌরসভার প্রাণী দমন শাখার ইনচার্জ সুশীল সিং বলেন, 'আমরা যখন উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম, কুকুরটি এতটাই হিংস্র ছিল যে বাড়ির ভেতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। বৃদ্ধার দেহ তখনও ঘরের ভেতরেই ছিল। পরে অনেক চেষ্টা করে তার পুত্রবধূ কুকুরটিকে নিয়ন্ত্রণ করলে আমরা মরদেহ উদ্ধার করি। যেহেতু পরিবার থেকে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি, তাই পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বর্তমানে কুকুরটিকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পৌরসভা শীঘ্রই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।'

এদিকে এই ঘটনার পর নিহতের নাতি ধীরু প্রশান্ত ত্রিবেদী কুকুরটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কানপুর পৌরসভার কাছে আবেদন করেছেন । তার ভাষ্যমতে, দয়া করে আমার কুকুর ফিরিয়ে দিন। কুকুর না থাকায় বাড়ির কেউ খেতে পারছে না। ভবিষ্যতে কোনও ঘটনা ঘটলে আমি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেব।'

তবে পৌরসভা পক্ষ থেকে কুকুর ফেরানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পৌরসভার প্রাণী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আর কে নিরঞ্জন জানান, কুকুরটির আক্রমণাত্মক আচরণ নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর সেটিকে আটক করা হয়েছে। ধীরু ত্রিবেদী কুকুর ফেরানোর আবেদন করলেও তা এখনো অনুমোদন করা হয়নি।আমরা এখনও কুকুরটির আচরণ পর্যবেক্ষণ করছি।  

মেহেদী/

ট্রাম্পের ‘নব্য সাম্রাজ্যবাদী’ নীতিতে শঙ্কিত বিশ্ব

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৪ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
ট্রাম্পের ‘নব্য সাম্রাজ্যবাদী’ নীতিতে শঙ্কিত বিশ্ব
ছবি: সংগৃহীত

দুটো ভয়ানক বিশ্বযুদ্ধের পর সারাবিশ্বে ভূমি দখল ও উপনিবেশায়নের বিরুদ্ধে একমত হন মোড়লস্থানীয় দেশগুলোর নেতারা। এরপর থেকে বিদেশের জমি দখল করে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার চর্চা অন্তত সরাসরি বন্ধ হয়েছিল। তবে স্নায়ুযুদ্ধে জয়লাভ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ থেমে থাকেনি। বরং অন্তরীপ ফল্গুর মতো তুলনামূলক ছোট ও কম ক্ষমতাশালী দেশ ও সংস্কৃতিগুলোকে ক্রমশ গিলে নিয়েছে মার্কিন মুল্লুকের ভদ্রবেশী পিরানহারা। তবে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতার সব রাখঢাকের বালাই ছেড়ে খোলাখুলি অন্য ভূখণ্ড আক্রমণের হুমকি দিচ্ছেন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে শুরু করে ডেনমার্কের অধীন দ্বীপ গ্রীনল্যান্ড- সবই দখল করে নিতে চান তিনি। চীনা হস্তক্ষেপের অযুহাত দেখিয়ে পানামা খালের প্রশাসনিক দায়িত্বও হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতিতে শঙ্কিত বিশ্ব।

জাতিসংঘের ১৯৪৫ সালের সনদ মোতাবেক, সংস্থাটির ‘সব সদস্য অন্য দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হুমকি বা ক্ষমতা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য।’ তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যে এই নিয়ম মানার কোনো ইঙ্গিত দেখা যায় না। এখনো পর্যন্ত ট্রাম্প মৌখিক হুমকি দিলেও, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যেকোনো দিন মুখের কথা বাস্তবায়নে তিনি বলপ্রয়োগ করতে পারেন।

ট্রাম্পের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে সারাবিশ্বে। মধ্য আফ্রিকায় ‘গ্রেটার রোয়ান্ডা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কঙ্গোর বিরুদ্ধে অভিযানরত জঙ্গিগোষ্ঠী এম-২৩কে সহায়তা করছে রোয়ান্ডা প্রশাসন। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি গণহত্যা নতুন খবর নয়। তবে ট্রাম্পের সহায়তায় তেল আবিব গাজায় অমানবিক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর বৈধতা পেয়ে ধ্বংসোল্লাসে মেতে উঠেছে। এদিকে, তাইওয়ানকে নাস্তানাবুদ করে দক্ষিণ চীন সাগরে একাধিপত্য কায়েমে উঠে পড়ে লেগেছে চীন। নব্য উপনিবেশায়নের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা ঢুকে পড়েছে ‘সভ্য’ মহাদেশ ইউরোপেও। রাশিয়া তার প্রতিবেশী ইউক্রেনে সহিংসতার কায়েমের মাধ্যমে দেশটির সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে চেষ্টার কমতি রাখছে না।

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমা ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর জোট ন্যাটোর সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত আইভো দালদের বলেন, ‘প্রশাসনে যতক্ষণ ট্রাম্প আছেন, ততক্ষণ নিয়ম-কানুনের আশা না করাই ভালো।’

বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের অর্থনৈতিক প্রত্যাশা ও জমি দখলের আকাঙ্ক্ষাকে ঊনবিংশ শতাব্দীর বর্বর সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে তুলনা করছেন। বিশেষত, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলির সঙ্গে ট্রাম্পের মিল খুঁজে পাচ্ছেন তারা। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই নেতা প্রতিবেশী কিউবা, পুয়ের্তো রিকো, হাওয়াই ও ফিলিপাইনে আগ্রাসন চালিয়েছেন।

চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পকে দায়ী করে কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুল্কারোপের মাধ্যমে কানাডার অর্থনীতিকে ‘পঙ্গু’ করার পাঁয়তারা করছেন।

ট্রাম্প প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক মাইকেল অ্যালবার্টেস বলেন, ‘ট্রাম্প যে ধরনের আগ্রাসী ভূরাজনীতি প্রতিষ্ঠা করছেন, শীঘ্রই বিশ্বমোড়লরা দুর্বল রাষ্ট্রগুলো দখলের প্রতিযোগিতা শুরু করবে।’

একই সুরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ মাইকেল বেকার। তার অভিযোগ, ট্রাম্পের অবস্থানের কারণে রাশিয়া ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলো ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। অন্যদিকে, তুলনামূলক ছোট দেশগুলো আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব নিয়ে সংকটে পড়ছে।

ট্রাম্পের এই কূটনৈতিক আগ্রাসনকে ‘অনানুষ্ঠানিক সাম্রাজ্যবাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্লেষক কেরি গোয়েটলিচ।

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় ভূমি দখলের প্রচেষ্টা করছেন অভিযোগ করে  বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিশ্লেষকরা। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নাইমুর/