
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের একমাস এখনো হয়নি। এর মধ্যেই নির্বাচনি প্রচারণায় দেশ থেকে অভিবাসী বিতাড়নের বিষয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি। নিরাপত্তাবাহিনী টহল দিচ্ছে অনুন্নত এলাকাগুলোতে। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীরা।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে দেশটিতে অভিবাসীবিরোধী অভিযানের ভয়াল চিত্র।
সম্প্রতি দেশটিতে বসবাসরত অভিবাসীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু বিধিনিষেধ।
কলোরাডো অঙ্গারাজ্যের অওরোরা শহরের অভিবাসী ইয়েসিনিয়া ও তার স্বামী প্রতিটি দিনই ভয়ে কাটাচ্ছেন। ভেনিজুয়েলার অধিবাসী এই নারী রয়টার্সকে জানান, প্রায়ই পুলিশ সদস্যরা তাদের দরজায় কড়া নেড়ে যান। রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশী এই দম্পত্তির আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র এখনো হাতে না আসায় তারা গৃহবন্দি। ভাগ্যক্রমে নিরাপত্তাবাহিনী এখনো জোরপূর্বক তাদের ঘরে ঢুকে পড়েনি। তবে যেকোনো দিন ঘরে ঢুকে তাদের প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে পারে- এই ভয়ে ঘুমাতে পারছেন না তারা।
একই চিত্র দক্ষিণাঞ্চলের আটলান্টায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়প্রত্যাশী ভেনিজুয়েলার এক যুবককে আটক করে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর অভিবাসন বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তার স্ত্রী ও পাঁচ মাসের সন্তান।
অভিবাসীদের আটকের পর হেফাজতে রাখতে বিশাল আটককেন্দ্র তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
জানা গেছে, কুখ্যাত গুয়ান্তানামো কারাগারে প্রায় ৩০ হাজার কারাকক্ষ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ ছাড়া কলোরাডোতে অবস্থিত বাকলি স্পেস ফোর্সের সামরিক ঘাঁটিতেও অবৈধ অভিবাসীদের আটক রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকারকর্মী ও আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সমালোচনার সুর লক্ষ্য করা গেছে।
দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন সম্প্রতি গুয়ান্তানামো কারাগারে আটক অভিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে আদালতে আপিল করেছে।
প্রশাসনের ভাষ্য, যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে, বৈধ অভিবাসীদেরও জোরপূর্বক আটক করা হচ্ছে বলে কিছু অভিযোগ এসেছে।
এ পরিস্থিতে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত বিশ্লেষকরা। সূত্র: রয়টার্স
নাইমুর/অমিয়/