
২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপে মার্কিন আধিপত্য কমানোর ঘোষণা দেওয়ায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলেন বাঘাবাঘা নেতারা। আদতে তার উদ্দেশ ছিল ইউরোপে রুশ কর্তৃত্ব কায়েম। সে সময় কাউকে পাশে না পেলেও এবার খোদ মার্কিন প্রশাসনই এগিয়ে এসেছে পুতিনের ইউরোপজয়ের স্বপ্ন পূরণে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের বেশ কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বক্তব্যে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
জার্মানির মিউনিখের অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে. ডি. ভ্যান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাবিষয়ক মন্ত্রী পিট হেগসেথের বক্তব্য থেকে জানা যায়, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে ইউরোপের প্রাধান্য কমে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক স্থাপনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারস সফরকালে হেগসেথ ট্রাম্প প্রশাসনের ইউরোপবিমুখতা স্পষ্ট করে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রাশিয়া ও চীনের চেয়েও বড় কূটনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় জোট। এ সময় ইউরোপে উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর দৌরাত্ম নিয়ে অভিযোগ করেন তিনি।
গত বছর রোমানিয়ায় অনুষ্ঠেয় নির্বাচন বাতিলের ঘটনা উল্লেখ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেন, ‘ইউরোপ নিজদের মধ্যেই দ্বন্দ্বে লিপ্ত। এখানে যুক্তরাষ্ট্রের কিছুই করার নেই।’
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন মিত্ররাষ্ট্রগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়াই মস্কোর অভিপ্রায়। দুপক্ষের সম্পর্কে ফাঁটল তৈরি করতে পারলে লাভ পুতিনের।
ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের কর্মকর্তা ন্যাথালি টোকির মতে, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ইউরোপ ‘পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও দুর্বল হয়ে পড়বে-এটা নিশ্চিত।’
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা সাময়িক বন্ধ রাখায় ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে।
চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিরসনে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি আলোচনায় ট্রাম্পের প্রভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ইউরোপের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এই আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট মস্কোর চাওয়াকেই বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে আশঙ্কা তাদের।
এ পর্যায়ে ইউরোপজুড়ে পুতিনের প্রভাব ছড়িয়ে পড়লে পুরো মহাদেশের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে পড়তে পারে। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস্।
নাইমুর/