
দীর্ঘ সাত বছরের কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পর ইরান ও সৌদি আরব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই বছরের আলোচনার পর বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ এই সমঝোতার ঘোষণা আসে। আলোচনায় সৌদি আরব, ইরান, ইরাক ও ওমানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ওমানের মাসকাট থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে ইরান ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। পরস্পরের রাজধানীতে কূটনৈতিক সফর, রাজনৈতিক সংলাপ এবং আঞ্চলিক ইস্যুতে আলোচনা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ভারতীয় থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘নাজার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ এই সমঝোতাকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে দেখছে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, ইরান-সৌদি সম্পর্ক এতটাই জটিল যে এটি কোনো স্বল্পমেয়াদি কৌশল হতে পারে না।
ইরানের সংবাদমাধ্যম ইরনার এক প্রতিবেদনে মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক আব্দুল আজিজ আল-কাশিয়ান উল্লেখ করেছেন, ‘২০২৫ সালের শুরু থেকে মধ্যপ্রাচ্য একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। গাজা যুদ্ধের প্রভাব সমগ্র অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, লেবাননে ইসরায়েলি হামলার ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সিরিয়া এক অনিশ্চিত নতুন পর্বে প্রবেশ করেছে।’
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধে ইরানের সমর্থন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ নীতিও ইরানের ওপর কাঙ্ক্ষিত প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে সৌদি আরব ওয়াশিংটন, তেল আবিব ও তেহরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার অংশ হতে চায় না। রিয়াদ কূটনৈতিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে চাইছে। কারণ এই উত্তেজনা উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সম্পর্কের ওপরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
তেহরান-রিয়াদ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে আঞ্চলিক রাজনীতি এবং বৈশ্বিক শক্তির অবস্থান ভবিষ্যতে এই সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ করবে। সূত্র: এএফপি
বাসস/তাওফিক/