
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে জাপান নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। দেশটি ২০৩৫ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ২০১৩ সালের তুলনায় ৬০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দেয়। এ খবর জানায় এএফপি।
প্যারিস চুক্তির আওতায় প্রতিটি দেশকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্গমন হ্রাসের পরিকল্পনা জাতিসংঘে জমা দিতে হয়। টোকিও তার সর্বশেষ পরিকল্পনায় ২০৪০ সালের মধ্যে নির্গমন ৭৩ শতাংশ কমানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যও নির্ধারণ করেছে।
জাতিসংঘের ডাটাবেস অনুযায়ী, প্রায় ২০০টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০টি দেশ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তাদের নতুন জলবায়ু পরিকল্পনা জমা দিয়েছে, যার মধ্যে জাপান অন্যতম।
জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের নতুন পরিকল্পনা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।
এর আগে ২০১৬ সালে জাপান ২০৩০ সালের মধ্যে নির্গমন ২৬ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে ২০২০ সালে প্রকাশিত নবায়নকৃত পরিকল্পনায় একই লক্ষ্য রাখায় ব্যাপক সমালোচনা হয়। ২০২১ সালে দেশটি নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪৬ শতাংশ নির্ধারণ করে, যা বর্তমান পরিকল্পনায় আরও বাড়ানো হলো।
গতকাল মঙ্গলবার জাপান তাদের নতুন কৌশলগত জ্বালানি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এতে ২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে প্রধান শক্তির উৎসে পরিণত করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
২০১১ সালের ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর দেশটি পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার সীমিত করেছিল। তবে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে টোকিও আবারও পারমাণবিক শক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে দেখছে।
বর্তমানে জাপানের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৭০ শতাংশ কয়লা, গ্যাস ও তেল পুড়িয়ে করা হয়। তবে নতুন পরিকল্পনার আওতায় আগামী ১৫ বছরে এই নির্ভরতা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিদেশ থেকে জ্বালানি আমদানিতে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হওয়ায় এটি জাপানের কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ২০৪০ সালের মধ্যে সৌর ও বায়ুশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ২৩ শতাংশ ও ২০৩০ সালের পূর্ববর্তী লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জনে জাপানকে ব্যাপক বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন করতে হবে। তবে সফল হলে এটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সূত্র: এএফপি
বাসস/তাওফিক/