ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

শপথ নিলেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৭ পিএম
শপথ নিলেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ছবি: সংগৃহীত

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন লিবারেল পার্টির নেতা মার্ক কার্নি।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে তিনি এই শপথ গ্রহণ করেন। নতুন এই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হলেন। কার্নি কানাডার ২৪তম প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে চলিত বছরের জানুয়ারিতে জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং লিবারেল পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন না করা পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নতুন এই প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংক অফ কানাডার অষ্টম গভর্নর এবং ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আর্থিক স্থিতিশীলতা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগে কানাডার নবনির্বাচিত এই প্রধানমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে হ্যারি পটারের প্রতিপক্ষ ভলডেমর্টের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী পদে জয়ের পরই তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘কানাডা কখনও আমেরিকার অংশ হবে না।’

কার্নি আরও বলেছেন যে, তার সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক প্রভাব নিশ্চিত করবে এবং আমেরিকানরা ন্যায্য বাণিজ্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কানাডার প্রতিশোধমূলক শুল্ক বলবৎ রাখবেন।

কানাডার ওপর ট্রাম্পের সর্বশেষ শুল্ক আরোপকে কানাডিয়ান কর্মী, পরিবার এবং ব্যবসার উপর আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।

৫৯ বছর বয়সী কার্নি কানাডার প্রত্যন্ত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ফোর্ট স্মিথে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং তিনি একজন তারকা আইস হকি খেলোয়াড়ও ছিলেন। সূত্র: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস, দ্য ইকোনোমিক টাইমস

সুমন/

শুল্কের মধ্যেও চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম
শুল্কের মধ্যেও চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি
শুল্কের মধ্যেও চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। দেশটির পরিসংখ্যান সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। এমন একটি সময় দেশটির পক্ষ থেকে এ খবর এল যখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করছে এবং রপ্তানিকারকরা শুল্কের রেশ সহ্য করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) চীনের পরিসংখ্যান ব্যুরো জানায়, শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ছয় দশমিক ৫ শতাংশ, সেবা খাত ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। খুচরা বিক্রি ও কৃষি খাত বেড়েছে যথাক্রমে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ও ৪ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরো চীনের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে লিখেছে, জাতীয় অর্থনীতির ভালো সূচনা হয়েছে এবং নতুন ও ইতিবাচক মুহূর্তের মাধ্যমে উচ্চ-মানসম্পন্ন উন্নয়নের দিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বর্তমানে একে অন্যের ওপর শুল্ক আরোপ করছে। এতে করে বড় মাপে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এ রকমটি হলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ভিত্তি নড়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।

হংকংয়ের বিনিয়োগ ও ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ন্যাটিক্সিসের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গারসিয়া-হেরেরো বলেন, ‘তারা মূলত অত্যন্ত ইতিবাচক রপ্তানির ওপর ভিত্তি করে। ফলে আরও প্রতিকূল দ্বিতীয় প্রান্তিক দেখা দিতে পারে বলে ধরে নিতে পারেন।’

ট্রাম্প চীনের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। পাশাপাশি সেমিকন্ডাক্টর ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ দেশটির বড় বড় রপ্তানির ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় চীনও পাল্টা ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। দেশটি বলেছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে এই শুল্ক নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে তারা।

আইএনজির চীনবিষয়ক মুখ্য অর্থনীতিবিদ লিন সং বলেন, বেইজিং নিজেদের ২০২৫ সালের প্রায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঠিক রাখতে আগামীতে আরও আর্থিক ও রাজস্ববিষয়ক প্রণোদনা সামনে নিয়ে আসতে পারে। সূত্র: আল-জাজিরা

মালয়েশিয়া সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫০ এএম
মালয়েশিয়া সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিকালে মালয়েশিয়া পৌঁছেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০১৩ সালের পর এবারই প্রথম দেশটিতে সফরে গেলেন তিনি।

আল-জাজিরার খবর বলছে, ভিয়েতনাম থেকে মালয়েশিয়ায় যান শি। এর আগে ভিয়েতনামে বেশ কয়েকটি বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। সেসব চুক্তির মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে রেলপথ উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

মালয়েশিয়া পৌঁছেই শি জানান, উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত সহযোগিতা চীন ও মালয়েশিয়া দুই পক্ষের অভিন্ন স্বার্থের জন্যই ভালো এবং এটি এ অঞ্চলে ও বিশ্বে শান্তি, স্থিরতা ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে। মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম বারনামার বরাতে জানা গেছে তথ্যটি।  

শি মূলত নিজের সফরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়াকে বার্তা দিতে চাইছেন যে তার দেশ এই অঞ্চলের দেশগুলোর সবচেয়ে ‘ভালো বন্ধু’ হওয়ার সক্ষমতা রাখে। এমন একটি সময় তার এ সফর হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীন বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। দেশ দুটি একে অপরের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছে। সূত্র: আল-জাজিরা

গাজা গণকবরে পরিণত হয়েছে : এমএসএফ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৫ এএম
গাজা গণকবরে পরিণত হয়েছে : এমএসএফ
ইসরায়েলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে জিম্মিদের মুক্তিও। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার নিন্দা জানিয়েছে চিকিৎসাবিষয়ক সহায়তা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)। এক বিবৃতিতে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারের জরুরি সমন্বয়ক আমান্ডে বাজেরোলে বলেন, গাজাকে ফিলিস্তিনিদের ও তাদের সহায়তায় যারা এগিয়ে আসছে, তাদের গণকবরে পরিণত করা হচ্ছে। আমরা গাজার পুরো জনগোষ্ঠীর ধ্বংস ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি সরাসরি দেখছি।’

তিনি আরও জানান, ফিলিস্তিনিদের ও তাদের সহায়তা করছে এমন ব্যক্তিদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান না থাকায় এবং মানবিক সহায়তাও সংকটের মুখে থাকায় মানুষের সেবা পাওয়ার তেমন আর কোনো সুযোগ নেই।’ গাজায় ইসরায়েলি হামলা থামছে না। অবরুদ্ধ উপত্যকাটির উত্তরের অংশে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাফা অঞ্চলেও বাড়িঘর ধ্বংস করা অব্যাহত রেখেছে তারা। 

ফিলিস্তিনের চিকিৎসাকর্মীরা জানান, ইসরায়েলি হামলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে গাজার সুপরিচিত লেখক ও আলোকচিত্রী ফাতেমা হাসৌনাও রয়েছেন। নিজ কাজের মধ্য দিয়ে গাজাবাসীর দৈনন্দিন জীবনের সংগ্রাম তুলে ধরতেন তিনি। এ ছাড়াও উত্তরের অংশের আরেকটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে আরও তিনজন মারা যান। ইসরায়েলি বাহিনী এখনো হামলা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি। এ ছাড়া আল-জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকায় আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফায় ইসরায়েলি বাহিনী বাড়িঘর ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। শহরটি এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। ইসরায়েলের নেতারা বলছেন, তারা নিরাপত্তা অঞ্চল রাফা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করছে। তারা আরও জানান, মূলত হামাসের ওপর জিম্মি মুক্তির জন্য চাপ আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই এ কাজ করা হচ্ছে।

মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় আবার যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত তাতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদক গাজা থেকে জানিয়েছে, গাজাবাসী যুদ্ধের ভয়াবহতায় ও ইসরায়েলি হামলায় ক্লান্ত, উদ্বিগ্ন। তারা স্বস্তির অপেক্ষায় আছে। যুদ্ধবিরতির আলোচনা তাদের মধ্যে আশা সঞ্চার করেছে যে হয়তো আবারও কিছুটা স্বস্তিকর পরিবেশে ফিরতে পারবেন তারা।    

হামাস জানিয়েছে, জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় যে ধাপ হওয়ার কথা ছিল, সেটিতে ফিরতে চায় তারা। গোষ্ঠীটি চায়, ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করুক এবং এ যুদ্ধের অবসান হোক। 

জরুরি রসদ   

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্চ থেকে ইসরায়েল গোটা উপত্যকা ঘিরে রাখায় জ্বালানি, ওষুধ ও খাবারের সরবরাহের প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে। অল্প যে কয়েকটি হাসপাতাল খোলা আছে, সেগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, চিকিৎসার রসদও ফুরিয়ে যাচ্ছে।  

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, শত শত রোগী ও আহত ব্যক্তিরা জরুরি ওষুধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সীমান্ত বন্ধ থাকায় তাদের পরিস্থিতি ক্রমশ প্রতিকূল হচ্ছে। এদিকে ইসরায়েলের দাবি, এটি করারও মূল কারণ হলো হামাসকে চাপে রাখা। তবে আরব রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি আসলে সংঘবদ্ধ শাস্তিতে পরিণত হয়েছে।

মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও হামলা শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে এক হাজার ছয় শরও বেশি ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে বাস্তুচ্যুতও হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তাদের তাঁবুতে আশ্রয় নিতে হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্থানে তাঁবু লক্ষ্য করেও হামলা চালাচ্ছে।

এখনো হামাসের হাতে ইসরায়েলের ৫৯ জন জিম্মি আছে। ইসরায়েলের ধারণা, তাদের মধ্যে ২৪ জন বেঁচে আছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৬১ হাজার সাতশরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে উল্লেখ করেছে উপত্যকাটির সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তিদেরও তারা মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স  

এবার চীনা পণ্যে ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম
এবার চীনা পণ্যে ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ
এবার মার্কিন শুল্কের বিপরীতে সম্ভবত নতি স্বীকার করতেই হবে চীনকে। শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প । ছবি: সংগৃহীত

এবার মার্কিন শুল্কের বিপরীতে সম্ভবত নতি স্বীকার করতেই হবে চীনকে। শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা আনাদোলু অ্যাজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি চীনা পণ্যের উপর আরও বাড়তি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে।

হোয়াইট হাউস মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

এই বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, চীনের পাল্টা পদক্ষেপের কারণে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের উপর ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হবে। এই পদক্ষেপকে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট ট্রেড পলিসির’ অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, চীন ইচ্ছাকৃত সামরিক, মহাকাশ ও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উচ্চ-প্রযুক্তি উপকরণ গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম এবং অ্যান্টিমনি সরবরাহ সীমিত করছে।

সম্প্রতি, চীন যুক্তরাষ্ট্রে ছয়টি বিরল ধাতু ও চুম্বকের রপ্তানি স্থগিত করেছে। এটি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ-শৃঙ্খলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর উপর চীনের নিয়ন্ত্রণকে আরও জোরদার করেছে।

এই বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক মাস আগে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম, অ্যান্টিমনি এবং সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ-প্রযুক্তি উপকরণের রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। এই সপ্তাহেই চীন আবার ছয়টি ভারি বিরল মৃত্তিকা ধাতু এবং বিরল মৃত্তিকা চুম্বকের রপ্তানি স্থগিত করে।

এর মাধ্যমে তারা গাড়ি প্রস্তুতকারক, মহাকাশযান নির্মাণকারী, সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি এবং সামরিক ঠিকাদারদের কাছে সরবরাহ বন্ধ করতে চাইছে।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীন শুক্রবার (১১ এপ্রিল) মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বাড়ায়।

এর আগে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে দেন এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প রক্ষা এবং সরবরাহ চেইন সুরক্ষিত করার প্রতি তার প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতা হিসেবে উল্লেখ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথম দিন থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকার অর্থনীতিকে আবার মহান করে তোলার জন্য তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট ট্রেড নীতি’ শুরু করেন। সূত্র:  আনাদোলু অ্যাজেন্সি

দিনা/অমিয়/

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি বাঁচাতে জাতিসংঘে বংশধরের চিঠি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৯ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি বাঁচাতে জাতিসংঘে বংশধরের চিঠি
ইয়াকুব হাবিব উদ্দিন টুসি নিজেকে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের বংশধর দাবি করে সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি রক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে চিঠি লিখেন। ছবি: সংগৃহীত

তার নাম ইয়াকুব হাবিব উদ্দিন টুসি। নিজেকে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের বংশধর দাবি করে তিনি সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি রক্ষার অনুরোধ জানিয়ে জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজীনগর জেলা (পূর্বের আওরঙ্গাবাদ) কুলদাবাদে অবস্থিত আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবিতে নাগপুরে সহিংসতার প্রায় এক মাস পর তিনি এই পদক্ষেপ নিলেন।

যুবরাজ ইয়াকুব, নিজেকে ওয়াক্ফ সম্পত্তির মুতাওয়াল্লী (তত্ত্বাবধায়ক) বলেও দাবি করেন।

তিনি বলেন, সমাধিটি ‘জাতীয় গুরুত্বের স্মৃতিস্তম্ভ’ হিসেবে ঘোষিত এবং প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান (১৯৫৮–এর অধীনে সুরক্ষিত)।

জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে লেখা এই চিঠিতে বলা হয়, ‘এই আইনের বিধান অনুযায়ী, সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভের কাছে বা তার কাছাকাছি কোনো অননুমোদিত নির্মাণ, পরিবর্তন, ধ্বংস বা খনন করা যাবে না এবং এই ধরনের যেকোনো কার্যকলাপ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।’

এছাড়া তিনি সমাধি রক্ষার জন্য নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের দাবি জানান।

তিনি চিঠিতে বলেন, ‘চলচ্চিত্র, মিডিয়া আউটলেট এবং সামাজিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর ভুল উপস্থাপনার কারণে জনমতকে প্রভাবিত করা সম্ভব হয়েছে, যার ফলে অযৌক্তিক প্রতিবাদ, ঘৃণা প্রচার এবং কুশপুতুল পোড়ানোর মতো আগ্রাসন সংঘটিত হচ্ছে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক আইন ‘বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুবিধার জন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংরক্ষণের’ বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে।

চিঠিতে ইউনেস্কো কনভেনশন কনসার্নিং দ্য প্রোটেকশন অব দ্য ওয়ার্ল্ড কালচারাল অ্যান্ড ন্যাচারাল হেরিটেজ, ১৯৭২–এ ভারতের স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে বলা হয় ‘এই ধরণের স্মৃতিস্তম্ভের কোনো ধ্বংস, অবহেলা বা বেআইনি পরিবর্তন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।’

তিনি জাতিসংঘের মহাসচিবের কার্যালয়কে বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও এএসআইকে আওরঙ্গজেবের সমাধিকে ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ আইনি সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং সংরক্ষণ’ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

বলিউডের ছাভা বা ছাওয়া চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর ভারতে নতুন করে মুঘল শাসনের চিহ্ন মুছে ফেলার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে হিন্দুত্ববাদী কিছু সংগঠন। তারা সেখানে হিন্দু মন্দির রয়েছে দাবি করে সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবি জানায়। এমনকি সেখানে গুপ্তধনের সন্ধানে খোঁড়াখুঁড়িও শুরু হয়।

এর জেরে ১৭ মার্চ নাগপুরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। কিছু গোষ্ঠী আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবি জানায়। এরপর মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানো হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় ৯২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  সূত্র: এনডিটিভি

দিনা/অমিয়/