
সুদানের গৃহযুদ্ধে শিশুরা নৃশংসতার শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও ডক্টরস উইথআউট বর্ডারস (এমএসএফ)।
ইউনিসেফের তথ্যানুসারে, সুদানের গৃহযুদ্ধের মুখে সে দেশের ১ লাখ ৬০ হাজার শিশু দুর্ভোগের শিকার হয়েছে, অনেকেই প্রতিদিন সহিংসতা, অনাহার, ব্যাধি এবং যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে বলেন, ওই শিশুদের ঠিক দরজার সামনে, বাড়ির আশপাশে, স্কুল ও হাসপাতালে এবং সুদানের বহু শহর, নগর ও গ্রামে যুদ্ধ চলছে।
তিনি আরও বলেন, এ যুদ্ধে বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ১৩ লাখেরও বেশি শিশু দেশের পাঁচটি সর্বাধিক দুর্ভিক্ষ-পীড়িত এলাকায় বাস করছে এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় আরও ৩০ লাখ শিশু কলেরা, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর মতো রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। অন্তত ১ কোটি ৬৫ লাখ তরুণ-তরুণী এখন শিক্ষাগ্রহণ করতে পারছে না।
রাসেল বলেন, গত বছর সুদানের ১৮টি রাজ্যের মধ্যে ৯টিতে ২২১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এদের দুই-তৃতীয়াংশই মেয়ে।
তিনি বলেন, ‘যেসব ঘটনার রেকর্ড রয়েছে তার মধ্যে ১৬ জন শিশুর বয়স ছিল পাঁচ বছরেরও কম। চারজনের বয়স ছিল এক বছরেরও কম।
তিনি জানান, এই শিশুরা যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছে তা কখনই মুছে যাবে না। রাসেল বলেন, ‘এই শিশুরা আতঙ্কের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে এবং যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে তা অস্ত্রবিরতি বা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে মুছে যায় না। তাদের নিরাময়ের জন্য এবং তারা যাতে তাদের জীবন আবার গড়ে তুলতে পারে সে জন্য তাদের প্রয়োজন অব্যাহত পরিচর্যা ও সহযোগিতা।
এমএসএফের প্রধান ক্রিস্টফার লকইয়ার নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, তারা সুদানে যৌন সহিংসতার প্রমাণ পেয়েছে, গত বছর তারা প্রাণে রক্ষা পেয়েছে এমন ৩৮৫ জনের চিকিৎসা করিয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে খারতুমে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু হয় তার শিকার হচ্ছে শিশুরা। আর তখন থেকে এই সংঘাত দারফুর অঞ্চলসহ দেশটির অধিকাংশ স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। আধা-সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘ বলছে, দুই পক্ষই মারাত্মকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে নিজেদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা