ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

দুর্নীতির অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা, দুদকে টিউলিপের চিঠি

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০২:৪১ পিএম
দুর্নীতির অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা, দুদকে টিউলিপের চিঠি
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের লেবারদলীয় এমপি টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করে বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাকে টার্গেট করে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির ভিত্তিহীন প্রচারণা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি এই অভিযোগ করেন। 

টিউলিপ বলেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা একেবারেই ‘মিথ্যা ও অযৌক্তিক’। তিনি অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত করা হয়নি। কিন্তু তার আগেই মিডিয়ায় তার দুর্নীতি নিয়ে ব্রিফ করা হয়েছে। 

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে গত জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার) পদ থেকে পদত্যাগ করেন। 

লন্ডনের দ্য হ্যাম্পস্টিড ও হাইগেট এলাকার এমপি টিউলিপ তখন জোর দিয়ে বলেন, তিনি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। তবে সরকার যাতে কোনো বেকায়দায় না পড়ে, সে জন্য তিনি মিনিস্টার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। 

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ব্রিটিশ সরকারের নৈতিকতা রক্ষাবিষয়ক কমিটির উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কমিটির মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। পরে স্যার লরি ম্যাগনাস সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট পেশ করেন। সেখানে তিনি লিখেন ‘দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে টিউলিপের কোনো যোগসূত্র বা অসদুপায় অবলম্বনের তথ্য পাওয়া যায়নি।’ তবে তিনি সেখানে উল্লেখ করেন, ‘এসব বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের আগে থেকে আরও বেশি সতর্ক না হওয়া ছিল দুঃখজনক। তা হলে তাকে সুনামহানির ঝুঁকির মুখে পড়তে হতো না।’

গত জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিউলিপ সিদ্দিকের খালা। 

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ডের অর্থ তছরুপের অভিযোগ এনেছে। দুদক সেই অভিযোগ তদন্ত করছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ববি হাজ্জাজের কয়েক দফা অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক বিষয়টির তদন্ত করছে। 

আদালতের নথিপত্রে বিবিসি দেখতে পেয়েছে, ববি হাজ্জাজ অভিযোগ করেছেন, ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে নতুন পরমাণু বিদ্যুৎ প্লান্টের চুক্তির মধ্যস্থতা করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর এর পরই এই পাওয়ার প্লান্টের নির্মাণ ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে পাঠানো চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী স্টিফেনসন হারউড বলেছেন, তার মক্কেল (টিউলিপ) পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তির সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত নন। যদিও ২০১৩ সালে মস্কোয় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাকে দেখা গেছে। তিনি বলেন, সরকারপ্রধানদের রাষ্ট্রীয় সফরে আত্মীয়স্বজনদের আমন্ত্রণ জানানো বা সফরসঙ্গী করা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। অভিযোগ করা আর্থিক অনিয়মের ব্যাপারে টিউলিপ কোনোভাবেই অবগত ছিলেন না। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, লন্ডনের কিংস ক্রসে দুর্নীতির মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিকের একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা অর্জনের কথা বলা হয়েছে। তিনি ফ্ল্যাটটি উপহার হিসেবে পেয়েছেন ২০০৪ সালে। আর পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এর ১০ বছর পর। পরমাণু প্লান্ট চুক্তির সুফল হিসেবে তিনি ওই ফ্ল্যাট পেয়েছেন এটা বলা একেবারেই অবিশ্বাস্য। এটি কোনোভাবেই সত্যি হতে পারে না। 

স্যার লরি তার তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, ফ্ল্যাটটি পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় টিউলিপ সিদ্দিক মালিকানার উৎস সম্পর্কে অসচেতন ছিলেন। তিনি এমন একটি ধারণার মধ্যে আচ্ছন্ন ছিলেন যে, তার বাবাই তার ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন। তবে টিউলিপ মন্ত্রী হওয়ার পর এ সংক্রান্ত রেকর্ড সংশোধন করেন। এটাকে স্যার লরি ‘দুর্ভাগ্যজনক ভুল বোঝাবুঝি’ বলে উল্লেখ করেছেন রিপোর্টে। 

আইনজীবী স্টিফেনসন হারউড দুদককে লেখা চিঠিতে বলেছেন, টিউলিপকে ওই ফ্ল্যাটটি উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন আব্দুল মোতালিফ, যাকে টিউলিপের পারিবারিক বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি

মোবাইল কেড়ে নেওয়ায় শিক্ষিকাকে জুতাপেটা ছাত্রীর

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৩ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
মোবাইল কেড়ে নেওয়ায় শিক্ষিকাকে জুতাপেটা ছাত্রীর
ছবি: সংগৃহীত

মোবাইল কেড়ে নেওয়ায় এক কলেজ শিক্ষিকাকে জুতাপেটা করছেন তারই ছাত্রী। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।

ভিডিওতে দেখা যায়, কলেজ চত্বরে ফোনে কথা বলছেন এক কলেজপড়ুয়া। এক অধ্যাপিকা সেখানে পৌঁছে ওই পড়ুয়ার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেন। সঙ্গে সঙ্গে অধ্যাপিকাকে ফোন ফেরত দিতে বলেন তরুণী। কিন্তু অধ্যাপিকা তার কথায় পাত্তা না দিয়ে চলে যায়। এতে রেগে গিয়ে প্রথমে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও পরে অধ্যাপিকাকে পায়ের জুতা খুলে তা দিয়ে পেটাতে থাকেন। ওই শিক্ষিকা প্রতিরোধ করলে চড়-থাপ্পড়ও মারতে থাকেন ওই ছাত্রী। এর পর কয়েক জন এসে তাকে থামায়।

ভাইরাল ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে ‘এম.ইন্দ্রসেনরেড্ডি’ নামে এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে। ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে নেটিজেনদের মধ্যে।

>ভিডিও

মেহেদী/

সৌদি আরবের ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ কেমন আছেন?

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১২ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম
সৌদি আরবের ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ কেমন আছেন?
সৌদি রাজপুত্র আল-ওয়ালিদ বিন খালেদ। ২০০৫ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত পেয়ে প্রায় ১৯ ধরে কোমায় । ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে তিনি ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ নামে পরিচিত। প্রায় ১৯ ধরে তিনি কোমায় আছেন। ২০০৫ সালে লন্ডনে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত পেয়ে অচেতন হওয়ার পর সৌদির রাজপুত্র আল-ওয়ালিদ বিন খালেদের  আর তার জ্ঞান ফেরেনি।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তার শরীরে প্রাণ আছে। তার বাবা প্রিন্স খালেদ বিন তালাল ও মা প্রিন্সেস রীমা বিনত তালাল এখনও আশা ধরে রেখেছেন, ছেলে একদিন চোখ মেলে তাকাবে। প্রিন্স খালেদ আগেও একাধিকবার বলেন, তিনি কখনই ছেলের লাইফ সাপোর্ট খুলে নেবেন না। এটি ‘আল্লার ইচ্ছা‘র উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। প্রিন্সেস রীমাও বলেন, তার মনে হয়, ছেলের আত্মা এখনও তাদের সঙ্গে রয়েছে, সব টের পাচ্ছে।

এ মাসেই ৩৬ বছর বয়সে পা দিলেন সৌদি আরবের এই ঘুমন্ত রাজপুত্র আল-ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল। গত ১৮ এপ্রিল ছিল রাজপুত্রের জন্মদিন। বিগত প্রায় ১৯টি বছরের মতো এবারও তার জন্মদিন কাটল কোমাতেই। ২০০৫ সালে লন্ডনে এক ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় তার মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগে। এরপর থেকেই তিনি কোমায় রয়েছেন।

চিকিৎসকেরা প্রথম থেকেই জানিয়েছেন, তার অবস্থা সংকটজনক ও অপরিবর্তিত। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। একটি ভেন্টিলেটর তার শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে এবং একটি ফিডিং টিউবের মাধ্যমে তাকে খাওয়ানো হয়। কিন্ত তার মস্তিষ্ক কাজ করে না।

বর্তমানে রিয়াধের কিং আবদুল আজিজ মেডিক্যাল সিটিতে পূর্ণকালীন চিকিৎসা সহায়তায় রাখা হয়েছে রাজপুত্রকে। প্রতিদিন তাকে ঘিরে থাকেন চিকিৎসক ও নার্সদের একটি টিম।

২০১৯ সালে রাজপুত্রের শারীরিক অবস্থায় সামান্য পরিবর্তনের কিছু ইঙ্গিত দেখা যায়। এসময় তার আঙুল সামান্য নড়ে ওঠে এবং মাথা সামান্য সরে। যদিও তারপর থেকে আর কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যায়নি।

তার জন্মদিনে সৌদি আরব ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ তার সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা ও শুভেচ্ছা জানান। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

দিনা

কাশ্মীরে হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৫ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম
কাশ্মীরে হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সহায়তায় প্রস্তুত করা হামলাকালীদের স্কেচ। ছবি: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস

ভারতের কাশ্মীরের পাহালগামে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এ হামলায় ২৬ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য হিন্দুস্তান টাইমস। 

পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সন্দেহভাজনদের নাম আসিফ ফৌজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা। তাদের কোড নামও ছিল যথাক্রমে- মুসা, ইউনুস এবং আসিফ। তারা পুঞ্চে সন্ত্রাস সম্পর্কিত ঘটনায় জড়িত ছিল।

ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সহায়তায় স্কেচগুলি প্রস্তুত করা হয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছে যে, হামলাকারীরা জম্মুর কিশতওয়ার থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরের কোকেরনাগ হয়ে বৈসরনে পৌঁছে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে।

পিটিআইয়ের প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি)-এর একটি ছায়া সংগঠন ‘রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। দেশের অনেকেই এই হামলার জন্য পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছেন। সূত্র: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস

সুমন/

ভুল করে পোপের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রকাশ করেছিল ইসরায়েল!

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০০ পিএম
ভুল করে পোপের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রকাশ করেছিল ইসরায়েল!
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি শোকবার্তা প্রকাশের পর তা আবার মুছে দেয় ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি শোকবার্তা প্রকাশের পর তা আবার মুছে দেয় ইসরায়েল। দেশটির একটি সংবাদপত্রের দাবি , গাজা যুদ্ধ নিয়ে প্রয়াত পোপের নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে এই পদক্ষেপের সম্পর্ক রয়েছে। 

বুধবার ( ২৩ এপ্রিল) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই খবর জানায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইসরায়েলের অফিসিয়াল পেইজ থেকে সোমবার ( ২১ এপ্রিল) লেখা হয়, ‘আপনার আত্মা শান্তি পাক, পোপ ফ্রান্সিস। আপনার জীবনাদর্শ আমাদের জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে থাকুক।‘

এর কিছুক্ষণ পর শোকবার্তাটি হাওয়া হয়ে যায়। এ বিষয়ে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বয়ানে দ্য জেরুজালেম পোস্ট জানায়, ‘প্রয়াত পোপ একাধিকবার ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, শোকবার্তাটি ভুলে প্রকাশ করা হয়।‘

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই পেইজটি ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। পোপের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রত্যাহার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রয়টার্সের অনুরোধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাড়া দেওয়া হয়নি।

গত নভেম্বরে ফ্রান্সিস বলেন, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সময় কোনও গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে কিনা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তা খতিয়ে দেখা উচিত। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলকে নিয়ে সেবারই প্রথম স্পষ্ট সমালোচনা করেন তিনি।

চলতি বছর জানুয়ারিতেও পোপ বলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি লজ্জাজনক হয়ে উঠেছে। তার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে রোমের প্রধান র‍্যাবাই (ইহুদিদের ধর্মযাজক) বলেন, ফ্রান্সিস পক্ষপাতমূলক সমালোচনা করছেন।

এদিকে, পোপের মহাপ্রয়াণে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রকাশ করেননি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সূত্র: রয়টার্স
দিনা

 

মরণোত্তর  ‘মহাপুরুষ’ খেতাব পাচ্ছেন ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ খ্যাত কিশোর

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম
মরণোত্তর  ‘মহাপুরুষ’ খেতাব পাচ্ছেন ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ খ্যাত কিশোর
ইতালীয় বংশজাত ব্রিটিশ ১৫ বছরের কিশোর কার্লো 'গডস ইনফ্লুয়েন্সার' বলে বিখ্যাত। ২০২৪ সালে তাকে মরণোত্তর সেন্ট মর্যাদা দিতে নির্বাচিত করেন প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের নির্বাচিত ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ খ্যাত কার্লো অ্যাকুতিস মরণোত্তর ‘সেন্ট’ বা সিদ্ধ পুরুষের সম্মাননা দেওয়া হবে আগামী রবিবার (২৭ এপ্রিল)।

কাউকে সেন্ট ঘোষণা করতে গেলে তার মধ্যে অন্তত দুটি অলৌকিক বা ঐশ্বরিক ক্ষমতা থাকার প্রয়োজন। এটা পরীক্ষার পর খোদ পোপ এই স্বীকৃতি দেন। সেই অনু্যায়ী শনিবার (২৬ এপ্রিল) তাকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেন্ট করার কথা ছিল খোদ পোপের। কিন্তু তার আকস্মিক প্রয়াণে অনুষ্ঠানটি একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়।

ইতালীয় বংশজাত ব্রিটিশ ১৫ বছরের কিশোর কার্লো ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ নামেই বিখ্যাত। ২০২৪ সালে তাকে মরণোত্তর সেন্ট মর্যাদা দিতে নির্বাচিত করেন প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস।

২০০৬ সালে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কার্লোর। এরপর প্রতিদিন কয়েক হাজার খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ভক্ত ইতালির আসসিসি শহরে অ্যাকুতিসের সমাধি দেখতে যান। গেল বছর প্রায় ১০ লক্ষ ভক্ত তার সমাধিতে ফুল দিয়ে আসেন।
  
কি এমন অলৌকিক বা ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে কার্লো অ্যাকুতিসের যার জন্য তাকে খোদ পোপ সেন্ট মর্যাদা দিতে নির্বাচিত করেন?

১) কোস্টারিকার এক তরুণী বাইসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান। বলা হয়, ঐশ্বরিক ক্ষমতায় তাকে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে আনেন কার্লো। দুর্ঘটনার পর চিকিৎসকরা ভ্যালেরিয়া ভালভার্দে নামে ২১ বছরের ওই তরুণীর বাড়ির লোককে জানিয়ে দেন তিনি আর বাঁচবেন না বা বাঁচার আশা নেই। এই অবস্থায় তরুণীর মা আসিসিতে গিয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য অ্যাকুতিসের সমাধিতে গিয়ে প্রার্থনা করেন। এর পর থেকেই মেয়ের অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

পরিবারের দাবি, যেদিন অ্যাকুতিসের সমাধিতে প্রার্থনা করেছিলেন মৃত্যুশয্যায় থাকা মেয়ের মা, সেদিনই নিজে থেকে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে শুরু করেন তিনি। পরে সিটিস্ক্যান করে ধরা পড়ে তার মস্তিষ্কে যে রক্তক্ষরণ হয়, তা পুরোপুরি সেরে গেছে!

২) এর আগে কার্লো অ্যাকুতিসের প্রথম অলৌকিক ক্ষমতা ধরা পড়ে ব্রাজিলের এক নাবালক ম্যাথিউজের রোগ নিরাময়ের মধ্য দিয়ে। ছেলেটির জন্ম থেকে প্যাংক্রিয়াসের সমস্যা ছিল। যা দিনদিন বাড়তে থাকলে সে প্রায় মৃত্যুমুখে চলে আসে। সেবারও চিকিৎসকরা জানান, তার স্বাস্থ্যের অবস্থা চিকিৎসার বাইরে চলে গেছে। 

এরপর ছেলেটির মা গির্জার দ্বারস্থ হন। গির্জার এক সাধু কার্লোর কাছে সাত বছরের ওই ছেলের জীবন প্রার্থনা করেন এবং তারপরে অ্যাকুতিসের একটি টি-শার্ট ম্যাথিউজের শরীরে বুলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ক্রমেই সুস্থ হতে শুরু করে ওই নাবালক এবং পরে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যায়।

এরপর থেকেই দিকে দিকে প্রচার হতে থাকে কার্লো অ্যাকুতিসের অলৌকিক বা ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে।

কে এই কার্লো অ্যাকুতিস?

১৯৯১ সালের মে মাসে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করে কার্লো। ধনী ইতালীয় পরিবারে জন্মানো অ্যাকুতিস বড় হন ইতালির মিলানে। জন্ম থেকেই তার মধ্যে এক অদ্ভুত খ্রিষ্টভাব দেখা দেয়। মাত্র সাত বছর বয়সে প্রথম তার ঈশ্বরপ্রাপ্ত হয় বলে দাবি করা হয়। সে প্রায় প্রতিদিনই গির্জার প্রার্থনায় যেতো। এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঈশ্বরের প্রার্থনায় মগ্ন থাকত। এ সত্ত্বেও কার্লো আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই ঘুরতে-বেড়াতে, ভিডিও গেম খেলতে এবং বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টাও করত।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে ২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রাণচঞ্চল এই কিশোরের রক্তে ক্যানসার ধরা পড়ে। এবং মাত্র ১০ দিনের মধ্যে উত্তর ইতালির একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে কার্লো। তার ইচ্ছা অনুযায়ী সেন্ট ফ্রান্সিসের নিজের শহর আসসিসিতে সমাহিত করা হয়।  সুত্র: দ্য গার্ডিয়ান এবং উইকিমিডিয়া

দিনা/অমিয়/