
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যেই আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কানাডা। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি রবিবারই (২৩ মার্চ) আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন।
রবিবার (২৩ মার্চ) এ তথ্য জানায় বার্তাসংস্থা এএফপি।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি রবিবার আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সংযুক্তির হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও শক্তিশালী ম্যান্ডেটের আশা করছেন।
চলতি মাসে কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মার্ক কার্নি। গত ১০ মার্চ তিনি কানাডার লিবারেল পার্টির দলীয় প্রধান নির্বাচিত হন। আর সংবিধান অনুযায়ী দলীয় প্রধান হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণের দায়িত্ব পান। এরপর ১৪ মার্চ দেশটিতে জাস্টিন ট্রুডো অধ্যায়ের অবসান ঘটে।
মার্ক কার্নি এমন সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত হওয়ার পরই কার্নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে কথা বলেন। তখন কানাডিয়ান পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ‘নিজেদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট’ হিসেবে অভিহিত করেন কার্নি।
বলা যায়, কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নি রাজনীতিতে একজন আগন্তুক। তিনি এর আগে কখনও কানাডিয়ান ভোটারদের মুখোমুখি হননি। তাই প্রত্যাশা অনুযায়ী অক্টোবরের বেশ কয়েক মাস আগেই কার্নি যদি সংসদ নির্বাচন আয়োজনের কথা ঘোষণা করেন, তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। কেন না; গত এক দশক ধরে ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকার জনপ্রিয়তা-সংকটের মুখোমুখি হয়। তবে ট্রাম্পের হুমকির কারণে কার্নি কানাডিয়ানদের মধ্যে জেগে উঠা দেশপ্রেম এবং একতা তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কানাডার সরকারি একটি সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানায়, তিনি রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কানাডার ৪ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার উদ্দেশ্যে এক ভাষণে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ট্রাম্প তার উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর সার্বভৌমত্ব এবং সীমান্ত নিয়ে বারবার উপহাস করেন এবং ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে যোগদানের আহ্বান জানান। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে তিনি ‘গভর্নর ট্রুডো’ হিসেবে ডাকেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জবাবে মার্ক কার্নি বলেন, ‘আমেরিকা কানাডা নয়। এবং কানাডা কখনো, কোনোদিন কোনোভাবে আমেরিকার অংশ হবে না।'
এই পরিস্থিতিতে, আগাম নির্বাচনের ঘোষণার গুঞ্জনের মধ্যে কার্নি গত বৃহস্পতিবার ( ২০ মার্চ) পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এডমন্টনে এক বক্তৃতায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সংকটের সময় সরকারের একটি শক্তিশালী এবং স্পষ্ট ম্যান্ডেট প্রয়োজন।
কানাডা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র এবং ঐতিহাসিকভাবে ওয়াশিংটনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। তবে প্রতিবেশীর প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রকাশ্য শত্রুতাপূর্ণ নীতি কানাডিয়ান রাজনৈতিক দৃশ্যপট অনেকটাই উল্টে দিচ্ছে। সূত্র: এএফপি
দিনা/অমিয়/