
কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি আগামী ২৮ এপ্রিল দেশটির ফেডারেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন।
তার আগে কার্নি গভর্নর জেনারেল ম্যারি সাইমনের সঙ্গে দেখা করে দেশটির ৪৪তম সংসদ ভেঙে দিয়ে যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়ার অনুরোধ করেন। যদিও কানাডার ফেডারেল আইন অনুসারে, একটি নির্বাচনের প্রচারণার সর্বনিম্ন সময়কাল ৩৭ দিন।
কানাডাতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন হয় না। দেশটিতে যে দল সংসদে সর্বাধিক আসন পায় তাদের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হন। তবে মূলত এই নির্বাচনে কানাডার প্রধান দুই দল কনজারভেটিভ ও লিবারেল পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার আগে বর্তমান লিবারেলদের হাউস অব কমন্সে ১৫২টি আসন ছিল। কনজারভেটিভদের ছিল ১২০টি, ব্লক কুইবেকোইসের ৩৩টি, এনডিপির ২৪টি এবং গ্রিণ পার্টির দুটি আসন।
এবার ফেডারেল নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী রয়েছেন। আসুন তাদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মার্ক কার্নি
কানাডা ও ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান ৫৯ বছর বয়সী মার্ক কার্নি বর্তমানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী। মাত্র কয়েক দিন আগেই তিনি এই দায়িত্ব পেয়েছেন। জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।
কানাডার পোলিং ফার্মগুলোর অসংখ্য জরিপে দেখা গেছে, কানাডিয়ানরা কার্নিকে অর্থনৈতিক অস্থিরতা, বাণিজ্য আলোচনা এবং হোয়াইট হাউসের সঙ্গে প্রতিকূল এবং অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক পরিচালনার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল নেতা পিয়েরে পোইলিভরের চেয়ে বেশি সক্ষম বলে মনে করেন।
মার্ক কার্নি কানাডার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ফোর্ট স্মিথে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ডে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তবে তিনি রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ। এ ছাড়া তার ফরাসি ভাষায় অদক্ষতা কুইবেকের ভোটারদের মধ্যে কার্নির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
কনজারভেটিভ পার্টির পিয়েরে পোয়েলিয়েভ্রে
লিবারেল পার্টি ও ট্রুডোর নীতির তীব্র সমালোচক ৪৫ বছর বয়সী পিয়েরে পোয়েলিয়েভ্রে কানাডীয় রাজনীতিতে দুই দশক ধরে সক্রিয়। তিনি কম কর ও ছোট সরকারের পক্ষে অবস্থান নেন। পোয়েলিয়েভ্রে কানাডার আবাসনসংকট, মজুরি স্থবিরতা ও উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়।
তবে তার পপুলিস্ট রাজনৈতিক স্টাইল ও ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা তাকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে। যদিও পোয়েলিয়েভ্রে ট্রাম্পের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে ‘কানাডাকে প্রথম’ রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
ইভেস-ফ্রাঁসোয়া ব্লাঞ্চে
ব্লক কুইবেকোইস একটি কুইবেক জাতীয়তাবাদী দল। যেখানে শুধু ফরাসি ভাষাভাষীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ইভেস-ফ্রাঁসোয়া ব্লাঞ্চে ২০১৯ সাল থেকে এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি ট্রাম্পের ৫১তম রাজ্যের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং কুইবেকের বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব বৈচিত্র্যময় করার পক্ষে অবস্থান নেন।
নেতা জগমিত সিং
৪৬ বছর বয়সী জগমিত সিং নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এনডিপির নেতা। এটি একটি বামপন্থী দল এবং শ্রমিক ও শ্রম-সংক্রান্ত ইস্যুতেই বেশি ফোকাস করে থাকেন। তিনি ২০১৭ সালে কানাডার প্রথম জাতিগত সংখ্যালঘু ও শিখ ধর্মাবলম্বী হিসেবে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা হন।
এনডিপি ২০২১ সাল থেকে ট্রুডোর লিবারেল সরকারকে সংসদে সমর্থন দেন, তবে ২০২৪ সালের শেষের দিকে এই সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বর্তমানে এনডিপির জনসমর্থন কমে গেছে এবং তাদের জন্য সংসদে আসন সংখ্যা বাড়ানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান এবং সিবিসি নিউজ অবলম্বনে
দিনা/অমিয়/