ঢাকা ৬ বৈশাখ ১৪৩২, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
English

ট্রাম্পের ‘নব্য সাম্রাজ্যবাদী’ নীতিতে শঙ্কিত বিশ্ব

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৪ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
ট্রাম্পের ‘নব্য সাম্রাজ্যবাদী’ নীতিতে শঙ্কিত বিশ্ব
ছবি: সংগৃহীত

দুটো ভয়ানক বিশ্বযুদ্ধের পর সারাবিশ্বে ভূমি দখল ও উপনিবেশায়নের বিরুদ্ধে একমত হন মোড়লস্থানীয় দেশগুলোর নেতারা। এরপর থেকে বিদেশের জমি দখল করে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার চর্চা অন্তত সরাসরি বন্ধ হয়েছিল। তবে স্নায়ুযুদ্ধে জয়লাভ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ থেমে থাকেনি। বরং অন্তরীপ ফল্গুর মতো তুলনামূলক ছোট ও কম ক্ষমতাশালী দেশ ও সংস্কৃতিগুলোকে ক্রমশ গিলে নিয়েছে মার্কিন মুল্লুকের ভদ্রবেশী পিরানহারা। তবে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতার সব রাখঢাকের বালাই ছেড়ে খোলাখুলি অন্য ভূখণ্ড আক্রমণের হুমকি দিচ্ছেন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে শুরু করে ডেনমার্কের অধীন দ্বীপ গ্রীনল্যান্ড- সবই দখল করে নিতে চান তিনি। চীনা হস্তক্ষেপের অযুহাত দেখিয়ে পানামা খালের প্রশাসনিক দায়িত্বও হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতিতে শঙ্কিত বিশ্ব।

জাতিসংঘের ১৯৪৫ সালের সনদ মোতাবেক, সংস্থাটির ‘সব সদস্য অন্য দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হুমকি বা ক্ষমতা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য।’ তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যে এই নিয়ম মানার কোনো ইঙ্গিত দেখা যায় না। এখনো পর্যন্ত ট্রাম্প মৌখিক হুমকি দিলেও, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যেকোনো দিন মুখের কথা বাস্তবায়নে তিনি বলপ্রয়োগ করতে পারেন।

ট্রাম্পের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে সারাবিশ্বে। মধ্য আফ্রিকায় ‘গ্রেটার রোয়ান্ডা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কঙ্গোর বিরুদ্ধে অভিযানরত জঙ্গিগোষ্ঠী এম-২৩কে সহায়তা করছে রোয়ান্ডা প্রশাসন। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি গণহত্যা নতুন খবর নয়। তবে ট্রাম্পের সহায়তায় তেল আবিব গাজায় অমানবিক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর বৈধতা পেয়ে ধ্বংসোল্লাসে মেতে উঠেছে। এদিকে, তাইওয়ানকে নাস্তানাবুদ করে দক্ষিণ চীন সাগরে একাধিপত্য কায়েমে উঠে পড়ে লেগেছে চীন। নব্য উপনিবেশায়নের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা ঢুকে পড়েছে ‘সভ্য’ মহাদেশ ইউরোপেও। রাশিয়া তার প্রতিবেশী ইউক্রেনে সহিংসতার কায়েমের মাধ্যমে দেশটির সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে চেষ্টার কমতি রাখছে না।

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমা ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর জোট ন্যাটোর সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত আইভো দালদের বলেন, ‘প্রশাসনে যতক্ষণ ট্রাম্প আছেন, ততক্ষণ নিয়ম-কানুনের আশা না করাই ভালো।’

বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের অর্থনৈতিক প্রত্যাশা ও জমি দখলের আকাঙ্ক্ষাকে ঊনবিংশ শতাব্দীর বর্বর সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে তুলনা করছেন। বিশেষত, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলির সঙ্গে ট্রাম্পের মিল খুঁজে পাচ্ছেন তারা। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই নেতা প্রতিবেশী কিউবা, পুয়ের্তো রিকো, হাওয়াই ও ফিলিপাইনে আগ্রাসন চালিয়েছেন।

চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পকে দায়ী করে কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুল্কারোপের মাধ্যমে কানাডার অর্থনীতিকে ‘পঙ্গু’ করার পাঁয়তারা করছেন।

ট্রাম্প প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক মাইকেল অ্যালবার্টেস বলেন, ‘ট্রাম্প যে ধরনের আগ্রাসী ভূরাজনীতি প্রতিষ্ঠা করছেন, শীঘ্রই বিশ্বমোড়লরা দুর্বল রাষ্ট্রগুলো দখলের প্রতিযোগিতা শুরু করবে।’

একই সুরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ মাইকেল বেকার। তার অভিযোগ, ট্রাম্পের অবস্থানের কারণে রাশিয়া ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলো ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। অন্যদিকে, তুলনামূলক ছোট দেশগুলো আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব নিয়ে সংকটে পড়ছে।

ট্রাম্পের এই কূটনৈতিক আগ্রাসনকে ‘অনানুষ্ঠানিক সাম্রাজ্যবাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্লেষক কেরি গোয়েটলিচ।

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় ভূমি দখলের প্রচেষ্টা করছেন অভিযোগ করে  বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিশ্লেষকরা। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নাইমুর/

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভ
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উচ্চশিক্ষা খাতে তহবিল কাটছাঁট, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া এবং গাজার যুদ্ধ নিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।  

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেন। তারা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের প্রায় ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের সরকারি তহবিল বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করার সুযোগ বন্ধের চেষ্টা করছে। তবে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা সরকারের হুমকির বিরুদ্ধে লড়বে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা রক্ষা করবে।
রোচেল সান নামে এক ছাত্রী বলেন, ‘আমি এখানে ভালো গবেষণা করতে এসেছি, কিন্তু বিদেশি শিক্ষার্থীরা না থাকলে সেটা সম্ভব নয়।’ তিনি একটি প্ল্যাকার্ডে লেখেন- ‘আমার এখন থিসিস লেখা উচিত, কিন্তু এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বারবার লড়াই করতে হচ্ছে।’

ন্যান্সি ক্রিগার নামে এক অধ্যাপক জানান, তার স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণার জন্য সরকার যে অনুদান দিত, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের গবেষণায় সাধারণত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টাকা দেয় না, তাই সরকারের অনুদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি জানান।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘যারা গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন বা ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেছেন, তাদের মধ্যে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন বা ভয় পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে গেছেন।’
ফ্লোরিডার এক অধ্যাপক বলেন, ‘এই শিক্ষার্থীরা ভীত। তারা জানে না কখন তাদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।’

ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪৫০ জন বিক্ষোভে অংশ নেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক শ্রমমন্ত্রী রবার্ট রেইচ বলেন, ‘স্বৈরশাসকের সঙ্গে সমঝোতা করলে চলবে না।’ সূত্র: এপি, আল-জাজিরা

সিরিয়া থেকে অর্ধেক সেনা প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০০ পিএম
সিরিয়া থেকে অর্ধেক সেনা প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ায় মোতায়েন করা মার্কিন সেনা। ছবি : সংগৃহীত

সিরিয়ায় মোতায়েন করা মার্কিন সেনার সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমিয়ে হাজারেরও নিচে নামিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এ তথ্য জানায়।

বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন বছরের পর বছর ধরে সিরিয়ায় সেনা মোতায়েন করে আসছে। যারা এক দশকেরও বেশি সময় আগে দেশটির গৃহযুদ্ধের বিশৃঙ্খলা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানে এবং প্রতিবেশি ইরাকের একাংশ দখল করে নেয়। এরপর থেকে জিহাদিরা উভয় দেশেই বড় ধরনের পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। কিন্তু এখনও হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীকে একত্রীকরণের নির্দেশ দিয়েছেন। ‘এই সুপরিকল্পিত এবং শর্ত-ভিত্তিক প্রক্রিয়ার ফলে আগামী মাসগুলোতে সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর সংখ্যা এক হাজারেরও কম হবে।’

শন পার্নেল এ অঞ্চলের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সামরিক কমান্ডের কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, ‘এই একত্রীকরণের সময় মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড সিরিয়ায় (আইএস) অবশিষ্টাংশের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ওয়াশিংটনের সামরিক উপস্থিতি নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। তার প্রথম মেয়াদে তিনি সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী রেখে যান।

গত ডিসেম্বরে ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে। তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘এতে ওয়াশিংটনের জড়িত হওয়া উচিত নয়।’

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘সিরিয়ায় ব্যাপক গোলমাল চলছে; কিন্তু তারা আমাদের বন্ধু নয়। ‘সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু করার নেই। এটা আমাদের লড়াই নয়।’

আসাদের উৎখাতের পর ওয়াশিংটন সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ জোরদার করে। যদিও সম্প্রতি তারা ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলার দিকে মনোনিবেশ করেছে। হুতিরা ২০২৩ সালের শেষের দিক থেকে জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে।

ওয়াশিংটন বছরের পর বছর ধরে বলে আসছে, আইএসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সিরিয়ায় তাদের প্রায় ৯০০ সেনা  রয়েছে। তবে পেন্টাগন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঘোষণা করে, বছরের শুরুতে দেশে মার্কিন সেনার সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে প্রায় দুই হাজার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র যখন সিরিয়ায় তার সেনা কমাচ্ছে, তখন ইরাকও সেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের উপস্থিতির অবসান চেয়েছে। ওয়াশিংটন জানায়, সেখানে তাদের প্রায় আড়াই হাজার সেনা রয়েছে।

অমিয়/

যুক্তরাষ্ট্রে হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, আছেন বাংলাদেশিরাও

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, আছেন বাংলাদেশিরাও
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসন হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। ফলে এসব শিক্ষার্থী দেশটিতে থেকে পড়াশোনা করতে পারছেন না। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এ তালিকায় আছেন বাংলাদেশি, চীনা, নেপালি ও দক্ষিণ কোরীয় শিক্ষার্থীরাও। এসব ভিসা বাতিলের ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। এ কারণে বেশ কিছু বিদেশি শিক্ষার্থী দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। 

খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ওভাল অফিসের দায়িত্ব নেওয়ার পর একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহে এক হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। দেশটিতে থাকার আইনগত বৈধতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এপির খবরে বলা হয়েছে, এর ফলে এসব ছাত্র কারাগারে বা বহিষ্কারের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। 

খবরে বলা হয়েছে, ১৬০টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ২৪ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বেশ কিছু যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন। এসব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। 

আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইএলএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ৩২৭ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের তথ্য তাদের কাছে এসেছে। যার মধ্যে ৫০ শতাংশই ভারতীয়, ১৪ শতাংশ চীনা আর বাকিরা হলেন বাংলাদেশি, নেপালি ও দক্ষিণ কোরীয়। মার্কিনিদের এমন আচরণে ভারতীয় শিক্ষর্থীরা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এসব বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের কাজটি করছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বিভাগ (আইস)। তারা চার মাস ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। পরীক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নিরীহ শিক্ষার্থীরা ভুলের শিকার হচ্ছেন, যাদের অপরাধের কোনো তথ্য নেই। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিক্ষোভ হয়েছে সেখানেও তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই।

গত মার্চে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, তারা ‘ধরা এবং বাতিল’ নীতি অবলম্বন করছেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরীক্ষা করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে তারা ইহুদিবিদ্বেষী কোনো কিছু করছেন কি না অথবা ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন জানাচ্ছেন কি না।

সাম্প্রতিক সময়ে ৩২৭ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের খবর পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের ভিসা ছিল এফ-১। এর মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ১২ মাসের বেশি সময় কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। যেহেতু তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, তাই তারা এখন দেশটিতে আর কোনো কাজ করতে পারবেন না। ভিসা বাতিলের দিকে এগিয়ে আছে টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক, মিশিগান এবং অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্য।

ভারতে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সেই তালিকার উল্লেখ করে জানালেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার যে শিক্ষার্থীদের নিশানা করেছে তাদের ৫০ শতাংশই ভারতীয়।

আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে রমেশ লিখেছেন, ‘ভিসা বাতিলের কারণগুলো অস্পষ্ট ও অস্বচ্ছ। তাই এটি ভারতীয়দের কাছে এটি উদ্বেগ এবং আশঙ্কার কারণ।’ 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার এ নিয়ে চুপ কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। 

শুধু ভিসা বাতিলই নয়, ওই ৩২৭ শিক্ষার্থীকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ তকমা দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। ফলে তারা আর কখনো আমেরিকায় যেতে পারবেন না। যে ছাত্রছাত্রীদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, তাদের অনেকেই প্যালেস্টাইনিদের অধিকারের দাবিতে মুখ খুলেছিলেন। গাজা দখলের অভিযানে ইসরায়েলকে সহায়তার বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন। 

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, ‘বিদেশি শিক্ষার্থীরা কী করছেন, সেদিকে আমরা প্রতিদিন কড়া নজর রাখছি।’ সূত্র: এনডিটিভি

নাইজেরিয়ায় মিলিশিয়া বাহিনীর হামলায় নিহত ১৭

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৭ এএম
নাইজেরিয়ায় মিলিশিয়া বাহিনীর হামলায় নিহত ১৭
ছবি : সংগৃহীত

নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় রাজ্য বেনুয়েতে সন্দেহভাজন মিলিশিয়া বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ১৭ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই অঞ্চলে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতার সর্বশেষ হামলা এটি।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা এএফপি দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়।

পুলিশের মুখপাত্র অ্যানে সেউয়েস ক্যাথেরিন এক বিবৃতিতে বলেন, তারা রাতে একটি প্রতিবেদন পেয়েছেন বেনু রাজ্যের একটি অঞ্চলে ‘বিপুল সংখ্যক সন্দেহভাজন মিলিশিয়া আক্রমণ করেছে’।

তিনি বলেন, ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। ভোরে আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার সময় তারা নিরাপরাধ কৃষকদের ওপর বিক্ষিপ্তভাবে গুলি চালিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করে।

একই সময়ে আক্রমণে এর পার্শ্ববর্তী স্থানীয় সরকার এলাকায় ১২ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদেরকে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই হত্যা করা হয়।

মধ্য নাইজেরিয়ায় জমির ব্যবহার নিয়ে গবাদিপশুপালক এবং কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষ সাধারণ ঘটনা। দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দুটি হামলায় নিকটবর্তী উত্তর-মধ্য মালভূমি রাজ্যে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশটিতে কিছু জায়গায় আক্রমণগুলো জাতিগত এবং ধর্মীয় মাত্রা যুক্ত করেছে। সূত্র: এএফপি

অমিয়/

দাবি বাস্তবসম্মত হলে পরমাণু চুক্তি সম্ভব: ইরান

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮ এএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৯ এএম
দাবি বাস্তবসম্মত হলে পরমাণু চুক্তি সম্ভব: ইরান
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি

যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দিলে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। 

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনার আগ দিয়ে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এ মন্তব্য করেন তিনি।

আরাগচির সঙ্গে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভেরও কথা হয়েছে। এর পর এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেদের উদ্দেশ্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেখায় এবং অবাস্তব দাবি না করে বসে, তাহলে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব।’
আলোচনা প্রথম ধাপে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ইরান। গত সপ্তাহে ওমানে ওই আলোচনা হয়। দ্বিতীয় দফার আলোচনা আজ শনিবার ইতালির রাজধানী রোমে হওয়ার কথা রয়েছে।   

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে চুক্তিতে না গেলে ইরানের ওপর হামলা চালানো হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান বলছে, তাদের অবস্থান শান্তিপূর্ণ। তবে পশ্চিমের দাবি, দেশটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে।

এদিকে লাভরভ জানিয়েছেন, রাশিয়া এ বিষয়ে সহযোগিতা দিতে, মধ্যস্থতা করতে বা যেকোনো ভূমিকা পালনে প্রস্তুত। সূত্র: রয়টার্স