ঢাকা ৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
English
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষে নাকাল জার্মানি

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম
বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষে নাকাল জার্মানি
জার্মানিতে বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির ন্যাশনাল ডিসক্রিমিনেশন অ্যান্ড রেসিজম মনিটরের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশটির প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ও মুসলিমরা নিয়মিত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই প্রতিবেদনের ফলাফল প্রকাশের পর জার্মান সমাজে প্রচলিত আদিধারার ভ্রান্তি আরও স্পষ্ট হয়।

এ প্রসঙ্গে বার্লিনে কর্মরত স্কুল শিক্ষিকা ফাতমা বলেন, ‘সকাল থেকেই বৈষম্যের শুরু। স্কুলে যাওয়ার সময় বাসচালকরা আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকেন।’ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ হওয়া সত্ত্বেও হিজাবের কারণে চাকরি পেতে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।

আরও গুরুতর অভিযোগ করেন বার্লিনের আরেক বাসিন্দা হানা। তিনি বলেন, ‘বাস-ট্রেনে নিত্যই লোকজন আমাকে হেনস্তা করেন। আমাকে নিজের দেশে ফিরে যেতে বলেন।’

রেসিজম মনিটর তাদের গবেষণায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০ হাজার বাসিন্দার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। সাধারণত অভিবাসী ও মুসলিমরাই এই ধরনের জাতিবাদী আক্রমণের শিকার হন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে রেসিজম মনিটরের কর্মকর্তা চিহান সিনানোগলু বলেন, ‘জার্মানির বর্ণবাদ আগের চেয়েও সূক্ষ্মভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। সমাজের মানুষরা বর্ণবাদকে বিভিন্নরূপে স্থান দিচ্ছেন।’

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি পাঁচজন জার্মানের মধ্যে একজন বর্ণবাদী মনোভাব পোষণ করেন। তাদের মধ্যে অনেকের ধারণা অভিবাসীদের নিজেদের রাজনৈতিক চাওয়া কিছুটা ‘বাড়াবাড়ির’ শামিল।

এর সামাজিক প্রভাবও লক্ষণীয়। বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষের শিকার হয়ে দেশটিতে এনক্সাইটি ও মানসিক অবসাদে আক্রান্তের হার বাড়ছে। ‘সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ভরসা করতে না পারায় মানসিকভাবে আলাদা হয়ে পড়ছেন ভুক্তভোগীরা।’, বলেন চিহান।

বিশ্লেষকদের দাবি, জার্মানির বর্ণবৈষম্যবিরোধী আইনগুলো প্রয়োজনের তুলনায় দুর্বল। এ প্রসঙ্গে জার্মানির বর্ণবৈষম্যবিরোধী কমিশনার ফার্দা আতামান বলেন, ‘গবেষণা থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ভুক্তভোগীদের আরও নিরাপত্তা দেওয়া দরকার।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে

নাইমুর/

অবশেষে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নতুন ওয়াক্ফ আইন স্থগিত

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
অবশেষে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নতুন ওয়াক্ফ আইন স্থগিত
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে সদ্য পাস হওয়া ওয়াক্ফ সংশোধনী আইনকে স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট আইনটি বাস্তবায়ন স্থগিত করেন। আইনটি চ্যালেঞ্জ করে করা অনেক মামলার একত্রিত শুনানি শুরু হয় গতকাল বুধবার। দুই দিন শুনানির পর বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে আদেশ দেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। 

ওই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া এ বিষয়কে কেন্দ্রকে সাত দিনের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছেন শীর্ষ আদালত।

আইন স্থগিতের পর সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে নিশ্চিত করা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ওয়াক্ফ বোর্ডে নতুন নিয়োগ বা সম্পত্তির অবস্থা পরিবর্তন করা হবে না। পুরোনো ওয়াক্ফ এবং ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ সম্পত্তিও আগের মতো থাকবে। 

‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে দাবি করতে পারেন, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, দিল্লি হাইকোর্ট ওয়াক্ফ জমির ওপর। সব ওয়াক্ফ বাই ইউজার ভুল নয়।’

আদালত নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াক্ফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। পাশাপাশি ওয়াক্ফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ মে।

বৃহস্পতিবার প্রথমে শুনানি করেন কেন্দ্রীয় সরকারের আইন কর্মকর্তা তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ওয়াক্ফ জমি হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের মনে। এর পরই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন শীর্ষ আদালত।
 
নতুন ওয়াক্ফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর পরই বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভালো দিক অবশ্যই রয়েছে। এটা পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনোই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ১৯৯৫ সালের আইনে নথিভুক্ত ওয়াক্ফ সম্পত্তিতে কোনো বদল ঘটানো যাবে না। পাশাপাশি নিয়োগ করা যাবে না ওয়াক্ফ বোর্ড বা পর্ষদেও।
 
আদালত বলেন, ১৩০০, ১৪০০ বা ১৫০০ শতাব্দীর মসজিদের জন্য কাগজপত্র পাওয়া অসম্ভব। তিনি সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কী বলছেন, আদালতের রায়ে প্রতিষ্ঠিত ওয়াক্ফ এখন বাতিল হবে? আইন দিয়ে আদালতের রায় বাতিল করা যায় না।’

আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, ‘হাজার বছর আগে ওয়াক্ফ তৈরি হলে এখন কাগজপত্র চাওয়া সমস্যা।’ আইনজীবী অভিষেক সিংভি জানান, ভারতের আট লাখ ওয়াক্ফ সম্পত্তির মধ্যে চার লাখই ওয়াক্ফ বাই ইউজার।

সদ্য পাস হওয়া আইনে কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখার বিধান রাখা হয়েছে। এতে মুসলিম সদস্যের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। কাউন্সিলে ২২ জনের মধ্যে ৮ জন এবং রাজ্য বোর্ডে ১১ জনের মধ্যে ৪ জন মুসলমান থাকবেন। এই বিধান মুসলিম সম্প্রদায় ও বিরোধী দলগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানান, ৭৩টি পিটিশনের মধ্যে পাঁচটি নিয়ে শুনানি হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১০০ বা ২০০টি পিটিশন নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়। বাকিগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে বলে ধরা হবে।’

চলতি মাসে সংসদে ওয়াক্ফ আইন সংশোধনের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, যা তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তৃণমূল বলেছে, তারা এই আইন রাজ্যে কার্যকর করবে না। বিজেপি অভিযোগ করেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী নির্বাচনের আগে ‘তোষণের রাজনীতি’ করছেন।

এর আগে গত বুধবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নরেন্দ্র মোদির সরকারের উদ্দেশে একাধিক ‘অস্বস্তিকর’ ও ‘কঠিন’ প্রশ্ন ছুড়ে দেন। বিশেষ করে নতুন আইনে সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ কাউন্সিলে অমুসলিমদের সদস্য করার যে বিধান রাখা হয়েছে, সেই পটভূমিতে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছেন হিন্দু এনডাওমেন্ট বোর্ডে (মন্দির বা দেবোত্তর সম্পত্তির পরিচালনা কমিটি) মুসলিম সদস্যদের রাখা হবে কি না?

পাশাপাশি ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে ধরনের সহিংসতা দেখা যাচ্ছে, সেটাও ‘বিচলিত করার মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে মোট ৭৩টি পিটিশনকে একত্র করে শুনানি করেন। এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি

 

বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের পর সিগারেটের ছ্যাকা!

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম
বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের পর সিগারেটের ছ্যাকা!
প্রতীকী ছবি

ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে (১১) ধর্ষণের পর সিগারেটের ছ্যাকাসহ নগ্ন ও জখম করে মাঠে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের রামপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। ১১ বছরের ওই কিশোরী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিল। পরিবারের সদস্যরা আশপাশের সব জায়গায় খুঁজেও তার খোঁজ পায়নি । পরে বুধবার (১৬ এপ্রিল) বাড়ির পাশের একটি ফসলের খেতের মধ্যে অচতেন অবস্থায় তাকে পাওয়া গেলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ছাড়া শরীরে কোনো কাপড় ছিল না।

শারীরিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, মেয়েটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখে ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। এমনকী গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা রয়েছে। সে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।

এর পর নির্যাতিতার পরিবার থানায় অভিযোগ করলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, এফআইআর ও পকসো ধারায় মামলা করার পর অভিযুক্তের খোঁজ শুরু হয়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। অভিযুক্ত ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। তাকে আটক করতে গেলে পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ পাল্টা গুলি করলে তা অভিযুক্তের পায়ে লাগে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার দিন বাড়ির সামনেই নাবালিকার সঙ্গে গল্প করছিল অভিযুক্ত।‌ এর পর তাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।

মেহেদী/

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ?

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪২ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ?
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের প্রশাসনের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানানোর পর প্রতিষ্ঠানটিকে এই হুমকি দেয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের প্রশাসনের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানানোর পর প্রতিষ্ঠানটিকে এই হুমকি দেয়া হয়। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম হার্ভার্ডকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘তারা ইহুদি-বিদ্বেষের কাছে মাথা নত করছে।’

বুধবার (১৭ এপ্রিল) নিউ ইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।
 
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে তাদের নিয়োগ, ভর্তি এবং শিক্ষাদান নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রশাসনের মতে, এসব পদক্ষেপ ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবেলায় সহায়ক হবে।

এদিকে ক্রিস্টি নোম তাদের কাছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত নথিপত্র ও তাদের তথাকথিত ‘অবৈধ ও সহিংস কার্যক্রমের’ তথ্য থাকার দাবি করেন। 

চলতি শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ২৭  শতাংশের বেশি। তবে ক্রিস্টি নোমের সর্বশেষ দাবির বিষয়ে হার্ভার্ড এখনও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি।

সোমবার ( ১৪ এপ্রিল) হার্ভার্ড প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো এক বার্তায় বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাধীনতা ত্যাগ করবে না কিংবা তার সাংবিধানিক অধিকার ছাড়বে না।'

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য বরাদ্দ ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়া ট্রাম্প আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্যাক্স ছাড় বাতিলের হুমকি দেন যার ফলে হার্ভার্ড প্রতি বছর কোটি কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

এদিকে ট্রাম্প বুধবার তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, ‘হার্ভার্ডকে আর সম্মানজনক কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ধরা উচিত নয়। একে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। হার্ভার্ড এখন একটি তামাশা, যেখানে ঘৃণা ও মূর্খতা শেখানো হয়। এটি আর কোনও ফেডারেল ফান্ড পাওয়ার যোগ্য নয়।‘

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনপন্থি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে।তার সরকারের ‘অ্যান্টিসেমিটিজম টাস্ক ফোর্স’ ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অন্তত ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে পর্যালোচনার জন্য চিহ্নিত করেছে। সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট

দিনা/

 

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
আদালতের আদেশ অমান্য করে একাধিক অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের হতে পারে বলে সতর্ক করেন ওয়াশিংটন ডিসি জেলা বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকারি বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বন্দ্ব কেবলই ঘনীভূত হচ্ছে। 

আদালতের আদেশ অমান্য করে একাধিক অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের হতে পারে বলে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সতর্ক করেছেন ওয়াশিংটন ডিসি জেলা বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ। 

এই প্রথমবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন কোনও বিচারক।

বৃহস্পতিবার ( ১৭ এপ্রিল) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই খবর জানায়।

বোয়াসবার্গ এক লিখিত রায়ে জানান, বিদেশি শত্রু আইন, ১৭৯৮ ব্যবহার করে অভিবাসীদের বিতাড়ন স্থগিত রাখতে আদেশ দেয় আদালত। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে তা অগ্রাহ্য করেছ, যা ফৌজদারি অপরাধের তালিকাভুক্ত।

ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করার প্রমাণস্বরূপ এক্স হ্যান্ডেলের একটু টুইট সংযুক্ত করেন তিনি। অভিবাসীদের বিতাড়নের পর এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা পোস্ট দেন, যেটাতে বোয়াসবার্গের স্থগিতাদেশটি সংযুক্ত ছিল। বুকেলে সেখানে কটাক্ষ করে লিখেন, আহ! দেরি হয়ে গেল ।

এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিজের প্রোফাইল থেকে এই স্ট্যাটাস শেয়ার করেন। এই পোস্টের কথা উল্লেখ করে বোয়াসবার্গ লিখেন, আদালতের রায় অগ্রাহ্য করে সেটা আবার উল্লাসের সঙ্গে প্রচার করেন তারা।

১৭৯৮ সালের বিদেশি শত্রু আইন ব্যবহার করে গত মাসে একাধিক ব্যক্তিকে এল সাল্ভাদরের কারাগারে পাঠিয়ে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধচক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। বিতাড়িতরা মার্কিন আইন অনুযায়ী আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগই পায়নি। 

এদিকে, অনেক বিতাড়িত ব্যক্তির স্বজনদের দাবি, তারা কেউই অপরাধচক্রে জড়িত নন।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্মান বাঁচানোর পথও বাতলে দিয়েছেন বোয়াসবার্গ নিজেই। তিনি বলেন, আদেশ মান্য করলে এখনও অবমাননার অভিযোগ এড়াতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। আর এজন্য বিতাড়িত অভিবাসীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আদালতে দাঁড়ানোর সুযোগ দিতে হবে। প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন বোয়াসবার্গ। 

ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক মামলা ঠোকা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট ও অনেক আইন বিশেষজ্ঞের অভিযোগ, আদালতের রায় নিজেদের পক্ষে না গেলেই বিভিন্ন ছুতায় কালক্ষেপণ করছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রতি তারা অবজ্ঞা প্রকাশ করছেন। সূত্র: রয়টার্স 

দিনা/

 

আল-শারার মাধ্যমে ইসরায়েল-সিরিয়া সুসম্পর্কের গোপন প্রতিশ্রুতি!

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
আল-শারার মাধ্যমে ইসরায়েল-সিরিয়া সুসম্পর্কের গোপন প্রতিশ্রুতি!
সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ক্রেইগ মারে দাবি করেছেন ,ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে গোপনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। ছবি : সংগৃহীত

সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ক্রেইগ মারে দাবি করেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে গোপনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। এই কূটনীতিকের দাবি, আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত আল-শারা যুক্তরাজ্যকে এই প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ১৩ এপ্রিল সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ক্রেইগ মারে দাবি করেন, সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ব্যক্তিগতভাবে যুক্তরাজ্যকে আশ্বাস দেন যে, সিরিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে।

ক্রেইগ মারে জানান, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ সিরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে দখলদার রাষ্ট্রটিকে স্বীকৃতি দেবে এবং রাষ্ট্রদূত বিনিময় করবে।

মারে বলেন, ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠীর নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা আনা এবং সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা।’

সাবেক এই ব্রিটিশ কূটনীতিক আরও বলেন, ‘আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সিরিয়া থেকে প্রত্যাহার এই চুক্তির অংশ কি না? আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোনো পক্ষই বিষয়টি উত্থাপন করেনি। যুক্তরাজ্য এটিকে সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বিষয় হিসেবে দেখে। আল-জোলানিও ইসরায়েলি প্রত্যাহারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বলে মনে হয় না।’

ক্রেইগ মারে আরও উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ বিশ্বাস করে, আল-জোলানির অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান গত ১৭ মার্চ ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ইইউ প্লেজিং কনফারেন্সে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

এই প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে আলভি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা এবং নারীদের মন্ত্রী পদে নিয়োগ দেওয়া। তবে মন্ত্রিসভা মূলত আল-জোলানির অনুসারী নিয়ন্ত্রিত। কারণ, তারাই প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ ও স্বরাষ্ট্রের মতো প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করছে।

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভায় ২৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র তিনজন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং মাত্র একজন নারী। এ ছাড়া একজন কুর্দি, একজন আলভি ও একজন দ্রুজ আছেন। 

ব্রাসেলসের এই সম্মেলনে সিরিয়ার জন্য সাড়ে ৫ মিলিয়ন ইউরো ঋণ ও অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, যার অর্ধেক সরাসরি ইইউ থেকে আসবে।

মারে অভিযোগ করেন, আল-জোলানি সিরিয়ায় কর্মরত ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ ও যুক্তরাজ্যের বিশেষ বাহিনীর সমর্থন পাচ্ছেন। 

তিনি মনে করেন, পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো আল-জোলানির ইসরায়েলপন্থি সরকারের অধীনে ক্ষমতা সুসংহত করা এবং পরে হায়াত তাহরির শামের মধ্যে থাকা আরও উগ্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোকে দমন করা। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর

দিনা/অমিয়/