
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে নাটকীয় রদবদল ঘটেছে। ইউরোপের প্রতি দীর্ঘসময় বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রাখলেও বর্তমান মার্কিন প্রশাসন আগ্রাসনের ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার করছে না। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সংঘটিত বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ট্রাম্প নাস্তানাবুদ করার পর ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব তীব্র মাত্রা ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপের অনেক বাসিন্দা।
এ প্রসঙ্গে ড্যানিশ পর্যটক কেনেট ব্রাস্ক বলেন, ‘জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর আমি প্রতিজ্ঞা করেছি ট্রাম্প যতদিন প্রেসিডেন্ট আছেন আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব না।’ পরিবর্তে শখের মাছ ধরতে মেক্সিকোতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম অফিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে পশ্চিম ইউরোপ থেকে আগত পর্যটকের সংখ্যা ১ শতাংশ কমেছে। স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের বাসিন্দারা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।
ট্রাম্প গ্রীনল্যান্ড দখল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর ডেনমার্ক ক্ষেপেছে সবচেয়ে বেশি। দেশটির আরেক পর্যটক কিম কুগেল নিজের শরীরের ট্যাটু থেকে তারাগুলো মুছে ফেলেছেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, কেউ যাতে তাকে মার্কিনপন্থি ভাবতে না পারেন তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশের দিকে নজর দিচ্ছে ইউরোপের ভ্রমণ এজেন্সিগুলো। কোপেনহেগেনের অ্যালবাট্রস ট্রাভেল নামে প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের চাহিদা কমে যাওয়ায় পুরো প্যাকেজই বন্ধ করে দিয়েছে।
জার্মানির অধিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে কানাডা ভ্রমণে বেশি আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে আমেরিকা আনলিমিটেডের সিইও টিমো কোলেনবার্গ বলেন, ‘কানাডার পর্যটন খাত হঠাৎই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।’
এদিকে, পর্যটকের ধারায় নিম্নগতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনবিষয়ক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, চলতি বছরেই এই খাত সেরে উঠবে।
অন্যদিকে, কানাডার গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ মৌসুমে আগের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি বুকিং হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স
নাইমুর/