ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপীয়রা

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম
ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপীয়রা
ছবি: সংগৃহীত

গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে নাটকীয় রদবদল ঘটেছে। ইউরোপের প্রতি দীর্ঘসময় বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রাখলেও বর্তমান মার্কিন প্রশাসন আগ্রাসনের ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার করছে না। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সংঘটিত বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ট্রাম্প নাস্তানাবুদ করার পর ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্ব তীব্র মাত্রা ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বাতিল করছেন ইউরোপের অনেক বাসিন্দা।

এ প্রসঙ্গে ড্যানিশ পর্যটক কেনেট ব্রাস্ক বলেন, ‘জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর আমি প্রতিজ্ঞা করেছি ট্রাম্প যতদিন প্রেসিডেন্ট আছেন আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব না।’ পরিবর্তে শখের মাছ ধরতে মেক্সিকোতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম অফিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে পশ্চিম ইউরোপ থেকে আগত পর্যটকের সংখ্যা ১ শতাংশ কমেছে। স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের বাসিন্দারা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ট্রাম্প গ্রীনল্যান্ড দখল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর ডেনমার্ক ক্ষেপেছে সবচেয়ে বেশি। দেশটির আরেক পর্যটক কিম কুগেল নিজের শরীরের ট্যাটু থেকে তারাগুলো মুছে ফেলেছেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, কেউ যাতে তাকে মার্কিনপন্থি ভাবতে না পারেন তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশের দিকে নজর দিচ্ছে ইউরোপের ভ্রমণ এজেন্সিগুলো। কোপেনহেগেনের অ্যালবাট্রস ট্রাভেল নামে প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের চাহিদা কমে যাওয়ায় পুরো প্যাকেজই বন্ধ করে দিয়েছে।

জার্মানির অধিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে কানাডা ভ্রমণে বেশি আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে আমেরিকা আনলিমিটেডের সিইও টিমো কোলেনবার্গ বলেন, ‘কানাডার পর্যটন খাত হঠাৎই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।’

এদিকে, পর্যটকের ধারায় নিম্নগতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনবিষয়ক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, চলতি বছরেই এই খাত সেরে উঠবে।

অন্যদিকে, কানাডার গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ মৌসুমে আগের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি বুকিং হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স

নাইমুর/

কাশ্মীরে হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৫ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৮ পিএম
কাশ্মীরে হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সহায়তায় প্রস্তুত করা হামলাকালীদের স্কেচ। ছবি: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস

ভারতের কাশ্মীরের পাহালগামে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এ হামলায় ২৬ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য হিন্দুস্তান টাইমস। 

পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সন্দেহভাজনদের নাম আসিফ ফৌজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা। তাদের কোড নামও ছিল যথাক্রমে- মুসা, ইউনুস এবং আসিফ। তারা পুঞ্চে সন্ত্রাস সম্পর্কিত ঘটনায় জড়িত ছিল।

ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সহায়তায় স্কেচগুলি প্রস্তুত করা হয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছে যে, হামলাকারীরা জম্মুর কিশতওয়ার থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরের কোকেরনাগ হয়ে বৈসরনে পৌঁছে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে।

পিটিআইয়ের প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি)-এর একটি ছায়া সংগঠন ‘রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। দেশের অনেকেই এই হামলার জন্য পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছেন। সূত্র: দ্য হিন্দুস্থান টাইমস

সুমন/

ভুল করে পোপের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রকাশ করেছিল ইসরায়েল!

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০০ পিএম
ভুল করে পোপের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রকাশ করেছিল ইসরায়েল!
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি শোকবার্তা প্রকাশের পর তা আবার মুছে দেয় ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি শোকবার্তা প্রকাশের পর তা আবার মুছে দেয় ইসরায়েল। দেশটির একটি সংবাদপত্রের দাবি , গাজা যুদ্ধ নিয়ে প্রয়াত পোপের নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে এই পদক্ষেপের সম্পর্ক রয়েছে। 

বুধবার ( ২৩ এপ্রিল) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই খবর জানায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইসরায়েলের অফিসিয়াল পেইজ থেকে সোমবার ( ২১ এপ্রিল) লেখা হয়, ‘আপনার আত্মা শান্তি পাক, পোপ ফ্রান্সিস। আপনার জীবনাদর্শ আমাদের জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে থাকুক।‘

এর কিছুক্ষণ পর শোকবার্তাটি হাওয়া হয়ে যায়। এ বিষয়ে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বয়ানে দ্য জেরুজালেম পোস্ট জানায়, ‘প্রয়াত পোপ একাধিকবার ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, শোকবার্তাটি ভুলে প্রকাশ করা হয়।‘

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই পেইজটি ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। পোপের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রত্যাহার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রয়টার্সের অনুরোধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাড়া দেওয়া হয়নি।

গত নভেম্বরে ফ্রান্সিস বলেন, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সময় কোনও গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে কিনা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তা খতিয়ে দেখা উচিত। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলকে নিয়ে সেবারই প্রথম স্পষ্ট সমালোচনা করেন তিনি।

চলতি বছর জানুয়ারিতেও পোপ বলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি লজ্জাজনক হয়ে উঠেছে। তার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে রোমের প্রধান র‍্যাবাই (ইহুদিদের ধর্মযাজক) বলেন, ফ্রান্সিস পক্ষপাতমূলক সমালোচনা করছেন।

এদিকে, পোপের মহাপ্রয়াণে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রকাশ করেননি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সূত্র: রয়টার্স
দিনা

 

মরণোত্তর  ‘মহাপুরুষ’ খেতাব পাচ্ছেন ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ খ্যাত কিশোর

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম
মরণোত্তর  ‘মহাপুরুষ’ খেতাব পাচ্ছেন ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ খ্যাত কিশোর
ইতালীয় বংশজাত ব্রিটিশ ১৫ বছরের কিশোর কার্লো 'গডস ইনফ্লুয়েন্সার' বলে বিখ্যাত। ২০২৪ সালে তাকে মরণোত্তর সেন্ট মর্যাদা দিতে নির্বাচিত করেন প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের নির্বাচিত ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ খ্যাত কার্লো অ্যাকুতিস মরণোত্তর ‘সেন্ট’ বা সিদ্ধ পুরুষের সম্মাননা দেওয়া হবে আগামী রবিবার (২৭ এপ্রিল)।

কাউকে সেন্ট ঘোষণা করতে গেলে তার মধ্যে অন্তত দুটি অলৌকিক বা ঐশ্বরিক ক্ষমতা থাকার প্রয়োজন। এটা পরীক্ষার পর খোদ পোপ এই স্বীকৃতি দেন। সেই অনু্যায়ী শনিবার (২৬ এপ্রিল) তাকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেন্ট করার কথা ছিল খোদ পোপের। কিন্তু তার আকস্মিক প্রয়াণে অনুষ্ঠানটি একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়।

ইতালীয় বংশজাত ব্রিটিশ ১৫ বছরের কিশোর কার্লো ‘গডস ইনফ্লুয়েন্সার’ নামেই বিখ্যাত। ২০২৪ সালে তাকে মরণোত্তর সেন্ট মর্যাদা দিতে নির্বাচিত করেন প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস।

২০০৬ সালে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কার্লোর। এরপর প্রতিদিন কয়েক হাজার খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ভক্ত ইতালির আসসিসি শহরে অ্যাকুতিসের সমাধি দেখতে যান। গেল বছর প্রায় ১০ লক্ষ ভক্ত তার সমাধিতে ফুল দিয়ে আসেন।
  
কি এমন অলৌকিক বা ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে কার্লো অ্যাকুতিসের যার জন্য তাকে খোদ পোপ সেন্ট মর্যাদা দিতে নির্বাচিত করেন?

১) কোস্টারিকার এক তরুণী বাইসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান। বলা হয়, ঐশ্বরিক ক্ষমতায় তাকে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে আনেন কার্লো। দুর্ঘটনার পর চিকিৎসকরা ভ্যালেরিয়া ভালভার্দে নামে ২১ বছরের ওই তরুণীর বাড়ির লোককে জানিয়ে দেন তিনি আর বাঁচবেন না বা বাঁচার আশা নেই। এই অবস্থায় তরুণীর মা আসিসিতে গিয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য অ্যাকুতিসের সমাধিতে গিয়ে প্রার্থনা করেন। এর পর থেকেই মেয়ের অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

পরিবারের দাবি, যেদিন অ্যাকুতিসের সমাধিতে প্রার্থনা করেছিলেন মৃত্যুশয্যায় থাকা মেয়ের মা, সেদিনই নিজে থেকে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে শুরু করেন তিনি। পরে সিটিস্ক্যান করে ধরা পড়ে তার মস্তিষ্কে যে রক্তক্ষরণ হয়, তা পুরোপুরি সেরে গেছে!

২) এর আগে কার্লো অ্যাকুতিসের প্রথম অলৌকিক ক্ষমতা ধরা পড়ে ব্রাজিলের এক নাবালক ম্যাথিউজের রোগ নিরাময়ের মধ্য দিয়ে। ছেলেটির জন্ম থেকে প্যাংক্রিয়াসের সমস্যা ছিল। যা দিনদিন বাড়তে থাকলে সে প্রায় মৃত্যুমুখে চলে আসে। সেবারও চিকিৎসকরা জানান, তার স্বাস্থ্যের অবস্থা চিকিৎসার বাইরে চলে গেছে। 

এরপর ছেলেটির মা গির্জার দ্বারস্থ হন। গির্জার এক সাধু কার্লোর কাছে সাত বছরের ওই ছেলের জীবন প্রার্থনা করেন এবং তারপরে অ্যাকুতিসের একটি টি-শার্ট ম্যাথিউজের শরীরে বুলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ক্রমেই সুস্থ হতে শুরু করে ওই নাবালক এবং পরে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যায়।

এরপর থেকেই দিকে দিকে প্রচার হতে থাকে কার্লো অ্যাকুতিসের অলৌকিক বা ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে।

কে এই কার্লো অ্যাকুতিস?

১৯৯১ সালের মে মাসে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করে কার্লো। ধনী ইতালীয় পরিবারে জন্মানো অ্যাকুতিস বড় হন ইতালির মিলানে। জন্ম থেকেই তার মধ্যে এক অদ্ভুত খ্রিষ্টভাব দেখা দেয়। মাত্র সাত বছর বয়সে প্রথম তার ঈশ্বরপ্রাপ্ত হয় বলে দাবি করা হয়। সে প্রায় প্রতিদিনই গির্জার প্রার্থনায় যেতো। এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঈশ্বরের প্রার্থনায় মগ্ন থাকত। এ সত্ত্বেও কার্লো আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই ঘুরতে-বেড়াতে, ভিডিও গেম খেলতে এবং বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টাও করত।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে ২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রাণচঞ্চল এই কিশোরের রক্তে ক্যানসার ধরা পড়ে। এবং মাত্র ১০ দিনের মধ্যে উত্তর ইতালির একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে কার্লো। তার ইচ্ছা অনুযায়ী সেন্ট ফ্রান্সিসের নিজের শহর আসসিসিতে সমাহিত করা হয়।  সুত্র: দ্য গার্ডিয়ান এবং উইকিমিডিয়া

দিনা/অমিয়/

পোপের হৃৎপিণ্ড রাখা হবে শ্বেতপাথরের কলসে

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৯ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৩ পিএম
পোপের হৃৎপিণ্ড  রাখা হবে শ্বেতপাথরের কলসে
বিশেষ রীতিনীতি মেনে , শনিবার (২৬ এপ্রিল) পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ রীতিনীতি মেনে , শনিবার (২৬ এপ্রিল) পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। রোমান ক্যাথলিক কার্ডিনালদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

প্রাচীন রোমান রীতি অনুযায়ী মোট ৯ দিন শোকদিবস পালিত হয় পোপের মৃত্যুতে। প্রথা অনুযায়ী, এই কদিন পোপের পোশাক পরা দেহ শায়িত থাকে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায়।

পোপের মৃত্যুর পর নানান আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয় তার শেষকৃত্য। প্রাচীনকাল থেকে এই রীতিনীতিগুলি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হয়ে থাকে। 

সেই রীতি অনুযায়ী প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ থেকে হৃদপিণ্ড খুলে নিয়ে শ্বেতপাথরের কলসে সংরক্ষিত করে রাখা থাকবে। তার দেহ থেকে বেশ কিছু প্রত্যঙ্গ অপারেশন করে বের করে নেওয়া হয়। রোমের ত্রেভি ঝরনার কাছে থাকা একটি গির্জায় এর আগের ২২ জন পোপের হৃদপিণ্ড শ্বেতপাথরের কলসাকৃতির পাত্রে সংরক্ষিত আছে। এটাকে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা পবিত্র দেহাবশেষ বলে মনে করে। 

শুধু তাই নয়, পোপের মৃত্যুর খবরটিও প্রকাশ্যে আনার নানান বিধি রয়েছে।

ডাক্তাররা যখন জানিয়ে দেন যে, চিকিৎসা আর কাজে দিচ্ছে না। তিনি কোনও সাড়া দিচ্ছেন না। তার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ, হৃদপিণ্ডের কাজ থমকে গিয়েছে। তখন পরম্পরা অনুযায়ী পোপের মূল পরিচিতি আঙটি নষ্ট করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, বর্তমান পোপের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হল এটা বুঝিয়ে পোপের ঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঐতিহ্য রয়েছে যে, ক্যামেরলেঙ্গো (ভ্যাটিকানের এক সিনিয়র কর্তার পদ) প্রথম পোপের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি তিনবার পোপকে ডাকেন, তাতে সাড়া না দিলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে ওই পদে রয়েছেন আইরিশ কার্ডিনাল কেভিন ফারেল। তিনিই কলেজ অফ কার্ডিনালকে খবরটা দেন। এই কার্ডিনাল হল গির্জার সিনিয়র কর্তাদের একটি কমিটি। এরপর ভ্যাটিকান সরকারিভাবে পোপের মৃত্যুর ঘোষণা করে সংবাদমাধ্যমের সামনে।

প্রাচীন রোমান রীতি অনুযায়ী মোট ৯ দিন শোকদিবস পালিত হয় পোপের মৃত্যুতে। প্রথা অনুযায়ী, এই কদিন পোপের পোশাক পরা দেহ শায়িত থাকে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায়। সারাক্ষণ তার গায়ে সুগন্ধী মাখানো থাকে। 

মৃত্যুর পর সাধারণত চার থেকে ৬, কখনও ৯ দিন পর সমাধিস্থ করা হয় পোপকে। যার নেতৃত্বে থাকেন কলেজ অফ কার্ডিনালের ডিন। সাধারণত পোপকে সমাধিস্থ করা হয় ভ্যাটিকান গ্রোতেয়েস-এ। সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার পাশেই এই সমাধিস্থান রয়েছে। কিন্তু, পোপ ফ্রান্সিস এক সাক্ষাৎকারে তাকে রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাগুয়েরে বাসিলিকায় সমাধি দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। অনেক পূর্বসূরির মতো সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় সমাধি নেওয়ার রীতি ভেঙে এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

চলতি বছরের শুরুতে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে কাটান পোপ ফ্রান্সিস। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছিলেন তিনি। তবে ভ্যাটিকান সোমবার তার শেষ মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, দ্রুত মৃত্যু হয়েছে এবং তিনি কষ্ট পাননি।

ভ্যাটিকানের সরকারি মিডিয়া চ্যানেল জানায়, সোমবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিট নাগাদ (জিএমটি ৩টা ৩০ মিনিট) তিনি অসুস্থ বোধ করলে তার চিকিৎসক দল তাকে দেখেন। এর এক ঘণ্টার বেশি সময় পর তিনি তার সেবাকর্মী ম্যাসিমিলিয়ানো স্ট্রাপেটিকে বিদায়ের ইশারা করে কোমায় চলে যান। সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। 

পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা অংশ নেবেন। শেষকৃত্যে অংশ  নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী রোমে আসবেন। এ ছাড়া ফ্রান্স, ব্রাজিল, জার্মানি, পোল্যান্ড, ইউক্রেন, আর্জেন্টিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টরা এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ও বেলজিয়ামের রাজা-রানি শেষকৃত্যে অংশ নেবেন। সূত্র: উইকিমিডিয়া

দিনা

 

 

 

পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৯ এএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪২ এএম
পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পোপ ফ্রান্সিস

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দিতে ভ্যাটিকান যাবেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আগামী শনিবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে। 

চার্চের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনাল কলেজের ডিন জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে।

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) ভ্যাটিকানের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) পোপের শেষকৃত্য হবে। শেষকৃত্যের কাজ সম্পন্ন হবে ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়।

শেষকৃত্য শেষে জিওভান্নি ‘চূড়ান্ত সমর্পণ প্রার্থনা’ পাঠ করবেন, যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পোপকে ঈশ্বরের হাতে সমর্পণ করা হবে। পরে পোপের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সেন্ট ম্যারি মেজর ব্যাসিলিকায়, যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে। খবর রয়টার্স। 

মঙ্গলবার প্রয়াত পোপের ছবি প্রকাশ্যে এনেছে ভ্যাটিকান। সেই ছবিতে দেখা গেছে, কাসা সান্টা মার্টা চ্যাপেলে কাঠের খোলা কফিনে শায়িত রয়েছে পোপের দেহ। তাকে লাল পোশাকে সাজানো হয়েছে। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রহরীরা। 

বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, সাধারণ মানুষ বুধবার সকাল থেকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা গির্জায় পোপকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।

৮৮ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিস চলতি বছরের প্রথম দিকে দুবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন। প্রায় এক মাস আগে তিনি হাসপাতাল থেকে ভ্যাটিক্যানের বাসায় ফেরেন। ইস্টার সানডে উপলক্ষে গত রবিবার সেন্ট পিটার্স স্কয়ারেও হাজির হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরদিন সকালে ভ্যাটিকান সিটি তার মৃত্যুর খবর জানায়।

ক্যাথলিক রীতি অনুযায়ী, কোনো পোপের মৃত্যু হলে সাধারণত চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়। তবে পোপ ফ্রান্সিস তার জীবদ্দশায় একাধিকবার বলে গেছেন, তিনি চান তার শেষকৃত্যে যেন কোনো আড়ম্বর না থাকে।

সংবাদদাতারা বলছেন, পোপ ফ্রান্সিস হবেন গত এক শতাব্দীর মধ্যে প্রথম পোপ, যিনি ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার নিচে শায়িত না হয়ে সেন্ট ম্যারি মেজর ব্যাসিলিকায় সমাধিস্থ হবেন। তিনি একটি সাধারণ কাঠের কফিনে সমাহিত হতে চেয়েছেন, যেখানে অতীতের পোপরা তিন স্তরের (সাইপ্রাস, সিসা ও ওক কাঠের) কফিনে সমাধিস্থ হতেন।

খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারও মানুষ শোক জানাতে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে জড়ো হতে শুরু করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জানিয়েছেন, তিনি পোপের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকবেন।

অভিবাসন নিয়ে পোপের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়ানো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ও তার স্ত্রী মেলানিয়া ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাবেন। অন্য যে রাষ্ট্রপ্রধানরা এই অনুষ্ঠানে থাকবেন তাদের মধ্যে ফ্রান্সিসের নিজ দেশ আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ার মিলেও আছেন।