
মায়ানমারে ভূমিকম্পের পর সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল জান্তা সরকার। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামলা চালিয়েছে তারা। বিষয়টির নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।
মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি গত শুক্রবার বলেন, বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর ওপর গত শুক্রবার সামরিক হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে মূল মনোযোগ থাকার কথা ছিল দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলোতে সহায়তা পাঠানোর দিকে।
ভূমিকম্পের পর গত ২৮ মার্চ দেশটিতে যুদ্ধবিরতি হয়। ওই ভূমিকম্পে সেখানে ৩ হাজার ৬০০-এরও বেশি মানুষ মারা গেছে। বহু বাড়ি ধসে পড়েছে, সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে ২০২১ সাল থেকে মায়ানমারে সংঘাত চলছে। সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অঙ হ্লাঙ।
এর আগে আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশটিতে বহু মানুষকে ভুগতে হচ্ছে, কারণ সামরিক সরকার সেখানে বিদ্রোহী-অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সহায়তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। শামদাসানির দেওয়া তথ্যানুসারে, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর থেকে সামরিক বাহিনী অন্তত ১২০টি আক্রমণ চালিয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক হামলাই করা হয়েছে ২ এপ্রিল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক সামরিক বাহিনীকে মানবিক সহায়তা ও সাহায্য পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা না সৃষ্টি করার এবং সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলছে, এসব সামরিক হামলার বেশির ভাগই বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাতেও হামলা চালানো হয়েছে।
শামসাদানি উল্লেখ করেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সাগাইংয়ের আশপাশের এলাকাগুলো বিদ্রোহীদের দখলে। সেখানকার স্থানীয় কমিউনিটিগুলোকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য এবং জরুরি সহায়তার জন্য স্থানীয়দের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।
এ রকম বিপর্যয়ের মধ্যে শামসাদানি অনুরোধ জানিয়েছেন যে সামরিক বাহিনী যাতে অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উ উইন মিন্টসহ ২০২১ সাল থেকে তাদের হাতে বন্দি হওয়া সবার জন্য পরিপূর্ণ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। সূত্র: আল-জাজিরা