
ধান কাটার মৌসুম শেষে থাইল্যান্ডে শুরু হয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতির বর্ষবরণ সংক্রান উৎসব। মহাসমারোহে থাইল্যান্ড জুড়ে প্রতি বছর ১৩ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দিন পালন করা হয় থাই বর্ষবরণ সংক্রান। এসময় দেশটি জল খেলার আন্দন্দ-উল্লাস বা জলযুদ্ধের ভূখণ্ডে পরিণত হয়।
একেবারেই স্বকীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে এই সংক্রান উৎসব ২০২৪ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
সাংস্কৃতিকভাবে সংক্রান উৎসব মূলত ১৩ এপ্রিল হলেও, সরকারিভাবে এটি তিন দিন পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পাতায়ার মতো কিছু জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে এই উৎসব ১০ দিন পর্যন্ত উৎযাপন করা হয়।
সংস্কৃত শব্দ সংক্রান শব্দের অর্থ সামনে এগিয়ে যাওয়া। অনেক গবেষক মনে করেন, এই উৎসবের উৎপত্তি প্রাচীন উৎসব মকর সংক্রান্তি থেকে, যা পরে খেমার সাম্রাজ্যের মাধ্যমে থাইল্যান্ডে আসে। আর আজকের সংক্রান মানেই হলো নতুন সূচনা। জলখেলার মাধ্যমে পুরোনো বছরের ক্লান্তি ও অশুদ্ধতা ধুয়ে ফেলার আনুষ্ঠানিকতা করা।
থাই নববর্ষ এবং ধান কাটার মৌসুম শেষ হওয়ার সঙ্গে যুক্ত এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য শুদ্ধি অর্জন, বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান জানানো এবং নবজাগরণের অনুভূতি সৃষ্টি করা। তবে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি সবচেয়ে বেশি পরিচিত দেশব্যাপী পানি ছিটানোর উৎসব হিসেবে।
এই উৎসবের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং মজার অংশ হলো পানিযুদ্ধ। এসময় সকল বয়সের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে জলভর্তি খেলনা বন্দুক ও বালতি হাতে নিয়ে।
উৎসব চলাকালে, সুগন্ধিযুক্ত পানি দিয়ে বুদ্ধের মূর্তি ধুইয়ে দেওয়া হয় পবিত্রতার নিদর্শন হিসেবে। বয়োজ্যেষ্ঠদের হাতে পানি ঢেলে তাদের আশীর্বাদ নেয়া হয়। এছাড়া প্রচলিত রীতি মেনে এ দিন পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে জল খেলা এবং মন্দিরে দান করা হয় ।
সংক্রান থাইল্যান্ডের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত হলেও একেক অঞ্চলের উৎসব রীতিতে পার্থক্যও আছে। শহর আর নগরাঞ্চলের উৎসবে স্বাভাবিকভাবেই শহুরে ছাপ রয়েছে। আবার সংখলা ও সুরাত থানির মতো সৈকতপাড়ের লোকালয়ের উৎসব অনেকটাই শান্ত প্রকৃতির। ফ্রায়ে, লামফুন এবং উবুন রাতচাথানির মতো এলাকায় নিজস্ব শোভাযাত্রার মাধ্যমে সংক্রান পালিত হয়। সূত্র: বিবিসি
দিনা/অমিয়/