রাশিয়ায় সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করল উ. কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করেছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মস্কোর যুদ্ধে ভূমিকা রাখার বিষয়টি পিয়ংইয়ং এতদিন চেপে রাখার চেষ্টাই করেছিল। যদিও দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই বিষয়গুলো তুলে ধরে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় সামরিক সংস্থা জানায়, দেশটির নেতা কিম জং উন রাশিয়ায় সেনা পাঠিয়েছেন, যাতে তারা রুশ সেনাদের পাশাপাশি লড়াই করতে পারে। এটি করা হয়েছে মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সমঝোতার ভিত্তিতে। বিবৃতিটি উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ‘কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সিতে (কেসিএনএ) প্রচারিত হয়েছে।
কেসিএনএর খবরে কিম জং উনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সেনাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে ইউক্রেনীয় নিও নাৎসী দখলদারদের পরাজিত ও নির্মূল করতে এবং কারস্ক অঞ্চলকে মুক্ত করতে রুশ সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করার লক্ষ্যে।
কিম আরও বলেছেন, ‘যারা ন্যায়ের জন্য লড়াই করে তারা সবাই বীর এবং মাতৃভূমির সম্মানের প্রতিনিধি।’ কেসিএনএ বলেছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশের সঙ্গে জোট করতে পারা বিষয়টিকে সম্মান বলে মনে করছে।
পিয়ংইয়ংয়ের নিশ্চিতকরণের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিমের প্রতি তার ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তার দেশের কোরিয়ান মিত্ররা সংহতি, ন্যায্যতা ও নিখাদ কমরেডশিপের ভিত্তিতে ভূমিকা রেখেছে।’
পুতিন ও কিম গত বছরের জুনে কৌশলগত অংশীদারত্ব সমঝোতায় স্বাক্ষর করেন। দুই দেশ সে সময় যুদ্ধের সময় একে অপরের সহায়তায় এগিয়ে আসার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থার খবর বলছে, কিম শিগগিরই পিয়ংইয়ংয়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করবেন।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা চলতি বছরের শুরুতে বলেছেন, প্রায় ১৪ হাজার উত্তর কোরীয় সেনাকে তাদের বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। শুরুতে যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তর কোরীয়দের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্যও তিন হাজার নতুন সেনা পাঠিয়েছিল পিয়ংইয়ং। এই ১৪ হাজার সেনার মধ্যে ওই তিন হাজারও অন্তর্ভুক্ত।
সাঁজোয়া যান না থাকা ও ড্রোন যুদ্ধের কলাকৌশল সম্পর্কে অবগত না থাকার কারণে উত্তর কোরীয় সেনাদের যুদ্ধের প্রথমভাগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে তারা দ্রুতই ভুল শুধরে নেয় এবং পরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখল থেকে রাশিয়ার কারস্ক অঞ্চল পুনর্দখলে সহায়তা করে। সূত্র: আল-জাজিরা