ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাকিস্তান বনাম 'শুকরের ঠোঁটে লিপস্টিক'

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২২ পিএম
পাকিস্তান বনাম 'শুকরের ঠোঁটে লিপস্টিক'
ছবি: সংগৃহীত

পাহালগাম ঘটনায় কার্যত স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হামলার নিন্দা করা হয়। এই হামলার পর পাক সেনাপ্রধানের কাশ্মীরকে 'পাক ধমনী' বলে দাবি করেন। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই এবার তাকে সাবেক আল কায়দা নেতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সন্ত্রাসী হামলার হোতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তুলনা করলেন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে সাবেক এই মার্কিন কর্মকর্তা কাশ্মীরের পাহালগামে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দাও করেন।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে সাবেক আল-কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে আসিম মুনিরের তুলনা করে মাইকেল রুবিন বলেন, 'লাদেন এবং আসিম মুনিরের মধ্যে কেবল একটাই পার্থক্য, লাদেন গুহায় থাকতেন কিন্তু মুনির থাকেন প্রাসাদে। তাছাড়া দু'জনের মানসিকতা সমান।' 

তিনি আরো বলেন পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে মনোনীত করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসিম মুনিরকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করা, এগুলিই হবে পহেলগাম হামলার পাল্টা জবাব।

এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি 'শুকরের ঠোঁটে লিপস্টিক'-এর মতো প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করেন। মাইকেল রুবিন বোঝাতে চেয়েছেন, 'শুকরের ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়া যায় কিন্তু পাকিস্তানকে বদলানো যায় না। তিনি আরো যোগ করেন, 'প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্লিল ক্লিনটন যখন ভারত সফরে গিয়েছিলেন সেসময়ও জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। আবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বর্তমানে ভারতে রয়েছেন, এমন সময় ঘটল পহেলগাম হামলা।' 

গত ১৬ এপ্রিল ইসলামাবাদে প্রবাসী পাকিস্তানিদের সম্মেলনে যোগ দেন পাক সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনির বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, 'আমরা আমাদের অবস্থানে অনড়। কাশ্মীর পাকিস্তানের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। আমরা কাশ্মীর ছাড়ব না। আমাদের কাশ্মীরী ভাইদের সংগ্রামের সময় তাদের একা ছেড়ে দেব না।'

এরপর পাহালগামে নৃশংস জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনার পর আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তব্য ভাইরাল হয়।

সূত্র: এএনআই

দিনা



ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ১০ মরদেহ, বিদ্রোহীদের নির্যাতন করে হত্যা করছে ভারতীয় সেনারা?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৩০ এএম
ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ১০ মরদেহ, বিদ্রোহীদের নির্যাতন করে হত্যা করছে ভারতীয় সেনারা?
মায়ানমারের নির্বাসিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। ছবি: সংগৃহীত

ভারত-মায়ানমার সীমান্তবর্তী তামু জেলায় একটি অস্থায়ী কাঠের চিতার সামনে পড়ে আছে ১০টি পচেগলে যাওয়া মৃতদেহ। বেশিরভাগের গায়ে রক্তমাখা যুদ্ধবেশ। কাঠ, পুরনো টায়ার ও দাহ্য পদার্থ দিয়ে দ্রুত প্রস্তুত করা হচ্ছে গণদাহ। মৃতরা মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি ঐক্য সরকারের সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিকেপি সদস্য, যাদের মধ্যে তিনজন আবার কিশোর বয়সী।

ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, মায়ানমারের সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে এখনও চলমান একটি অভিযানে এই ১০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছেন। তারা বলছে,১৪ মে পরিচালিত এক অভিযানে এদের প্রাণহানি ঘটে।

তারা দাবি করছে, যুদ্ধসামগ্রীসহ বিদ্রোহী কার্যকলাপে যুক্ত সন্দেহভাজনদের গুলি করে হত্যা করেছে তারা। বুধবার (২৮ মে) এক-এর এক পোস্টে তারা এই অঞ্চলে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বলছে, ‘দশজন ক্যাডারকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।’

কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে মায়ানমারের নির্বাসিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। তাদের দাবি, এসব বিদ্রোহীকে ভারতীয় সেনারা গ্রেফতার করে, নির্যাতন চালিয়ে পরে গুলি করে হত্যা করেছে।

মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই ভারতীয় সীমান্তে আত্মগোপনে ছিল সশস্ত্র বিদ্রোহীরা এতদিন ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে ‘অলিখিত সহাবস্থানে’ ছিল। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে সেই ভারসাম্য ভেঙে পড়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাজার হাজার মায়ানমার শরণার্থীদের মধ্যে, যারা ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তামু অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজনকারী থিদা (ছদ্মনাম) বলেন, আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। চার বছরে এমনটা কখনও হয়নি। এবার যেহেতু ঘটেছে, সামনে আরও হতে পারে—এই আশঙ্কাই আমাদের গ্রাস করছে।

ভারতের সেনাবাহিনী প্রথমে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালানো হয়, তখন বিদ্রোহীরা গুলি ছোড়ে এবং জবাবে ১০ জন নিহত হয়। পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ‘একটি টহলদল হামলার শিকার হলে প্রতিক্রিয়ায় বিদ্রোহীদের হত্যা করা হয়।‘

কিন্তু দু’দিন পর নতুন আরেকটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিহতরা ভারতীয় সীমান্তে বেস্টনী নির্মাণের কাজে নিযুক্তদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিল।‘

নয়াদিল্লির একজন সাবেক সরকারি উপদেষ্টা এ বিষয়ে বলেন, ‘এটি কি আগাম গোয়েন্দা অভিযানে করা হামলা, নাকি তাৎক্ষণিক আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ?—দুটি ব্যাখ্যা একসঙ্গে সত্য হতে পারে না।‘

তামুর স্থানীয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যখন মরদেহ নিতে গিয়েছিলাম, তখন আসাম রাইফেলস আমাদের কিছু কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। বলা হয়, না করলে মরদেহগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হবে না।‘ 

এছাড়া এই কাগজগুলোতে সীমান্ত বেড়া নির্মাণে সম্মতি এবং সংঘর্ষের তথ্য লেখা ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

মায়ানমারের নির্বাসিত সরকার বারবার ভারতকে অনুরোধ করেছে সীমান্ত বেড়া নির্মাণ বন্ধ করতে এবং আলোচনায় বসতে। কিন্তু দিল্লি গত বছর থেকেই তা জোরদার করেছে। এই বেস্টনী ঐতিহ্যগতভাবে উন্মুক্তভাবে চলাচল করা জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছর বলেছিলেন, ‘সীমান্ত বেস্টনী ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার জন্য জরুরি।’

কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পদক্ষেপে উত্তর-পূর্ব ভারতের ভঙ্গুর জনপদগুলোতে নতুন অস্থিরতা ছড়াতে পারে।

এদিকে মায়ানমারের নির্বাসিত সরকার ও স্থানীয়রা স্পষ্ট করে জানান, তারা ভারতকে কোনোভাবে প্রতিরোধ করতে পারবে না। এ নিয়ে তারা বলেন, আমরা তো নিজেদের দেশেই বিদ্রোহী, ভারতীয় সেনার মতো শক্তিশালী বাহিনীকে কীভাবে ঠেকাবো?

এরপর লাশগুলোর দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে থিদা বলেন, ‘লাশগুলোর কি অবস্থার ছিল জানেন? পোকারা শরীরের ভেতর ঢুকে পড়েছিল। অন্তত আমাদের মৃতদের প্রতি তাদের সম্মান দেখানো উচিত ছিল।’

নভেম্বরে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে নির্বাচিত বেসামরিক সরকার উৎখাতের পর মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে  এই এলাকার ১,৬৫০ কিলোমিটার (১,০২৫ মাইল) সীমান্তে স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছে।

ভারতের দিকে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে জাতিগত সংঘাতের ফলে প্রায় ২৬০ জন নিহত হয়েছে, ৬০,০০০ এরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
৩২ লক্ষ জনসংখ্যার এই রাজ্যটি দুটি জাতিগত ছিটমহলে বিভক্ত, একটি উপত্যকা যা মেইটাইদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং একটি কুকি-অধ্যুষিত পাহাড়।

সূত্র: আল-জাজিরা এবং রয়টার্স

সুলতানা দিনা/

নাইটসব্রিজে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হামিদ কোস্কুন

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০৯ এএম
নাইটসব্রিজে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হামিদ কোস্কুন
ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনের নাইটসব্রিজে তুর্কি কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ধর্মীয়ভাবে উদ্বুদ্ধ জনশৃঙ্খলার মারাত্মক লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

সোমবার (০২ জুন) আদালত রায়ে জানায়, অভিযুক্তের আচরণ আংশিকভাবে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল।

এ বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হামিদ কোস্কুন নামে পরিচিত এক ব্যক্তি কোরআনের একটি অনুলিপি আগুনে পুড়িয়ে তা মাথার ওপর তুলে ধরেন এবং উসকানিমূলক স্লোগান দেন।

তার দাবি, তিনি তু্রস্কের  প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ানের ‘ইসলামপন্থি সরকারের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই কাজ করেছেন। নিজেকে আর্মেনীয়-কুর্দি বংশোদ্ভূত হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি তুরস্ক থেকে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছেন।

তবে আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ফিলিপ ম্যাকগি বলেন, ‘এই মামলাটি কোনও ধর্মের সমালোচনা নিয়ে নয়, বরং জনসমক্ষে একটি বিশৃঙ্খল আচরণ নিয়ে। অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়া হলেও তা কারও ধর্মীয় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে না।’

তবে এই ঘটনার পর ব্রিটিশ রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। শ্যাডো জাস্টিস সেক্রেটারি রবার্ট জেনরিক মন্তব্য করেন, এই রায় যেন সংসদে বাতিল হয়ে যাওয়া ব্লাসফেমি আইনকে নতুনভাবে ফিরিয়ে আনলো।তার মতে, এটি বাকস্বাধীনতা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার ভারসাম্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।

এদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক মাহবুবুল করীম সুয়েদ মন্তব্য করেন, কোরআন পোড়ানোর এ ঘটনার পেছনে অভিযুক্ত ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

তিনি আরও বলেন,  এই ধরনের ঘটনা ব্রিটিশ মুসলিম ও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোর পরিবর্তে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলাই হওয়া উচিত আমাদের লক্ষ্য।

সুলতানা দিনা/ 

সিসিলি দ্বীপে মাউন্ট এটনায় আগ্নেয়গিরির তাণ্ডব, পালাচ্ছেন পর্যটকরা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:২৩ এএম
সিসিলি দ্বীপে মাউন্ট এটনায় আগ্নেয়গিরির তাণ্ডব, পালাচ্ছেন পর্যটকরা
ছবি: সংগৃহীত

ইতালির মাউন্ট এটনা আগ্নেয়গিরিতে সোমবার (২ জুন) হঠাৎ ভয়াবহ ধস ও অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে। মূলত এই আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্ব অংশ ধসে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে এবং এতে গ্যাস, ছাই ও পাথরের গরম লাভার ঢল সৃষ্টি হয়। এ সময় উচ্চ তাপমাত্রার গ্যাস, ছাই এবং পাথর আকাশে কয়েক কিলোমিটার উঁচুতে উড়ে যায়। আর এর ফলে মাউন্ট এটনায় অবস্থান করা পর্যটকরা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণের সময় লোকজনের দীর্ঘ লাইন ধরে দ্রুত নেমে আসছেন।

অন্যদিকে, একটি ট্যুর কোম্পানির মালিক মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএনকে জানান, সিসিলিয়ান আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের সময় সেখানে অন্তত ৪০ জন পর্যটক ছিলেন।

গো এটনার এক গাইড জিউসেপ্পে প্যানফালো দূর থেকে বিশাল ছাইয়ের মেঘের মধ্যে ডুবে যাওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করেন।

সোমবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএন।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইতালির সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি বড় অংশ ধসে পড়েছে, যার ফলে সোমবার সেখানকার আকাশে কয়েক কিলোমিটার উচ্চতায় বিশাল অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।

ইতালির ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরি গবেষণা সংস্থা (আইএনজিভি) জানায়, ধসের কারণে ‘পাইরোক্লাস্টিক ফ্লো’ বা বিপজ্জনক গ্যাস, ছাই ও গরম পাথরের দ্রুতগামী ঢল সৃষ্টি হয়। এই ঢল অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় ছুটে চলে এবং প্রাণঘাতী হতে পারে।

সংস্থাটি আরও জানায়, আগ্নেয়গিরির গর্ত থেকে লাভা ফোয়ারাও বের হয়। এছাড়া আগ্নেয় কম্পনের মাত্রা বেশ বেড়েছে, যা বিস্ফোরণ আরও বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।

অবশ্য এই ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কোনো এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবে আশেপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার পর পর্যটকরা আতঙ্কে দৌঁড়ে পালাচ্ছেন।

মাউন্ট এটনা ইতালির সিসিলি দ্বীপে অবস্থিত এবং এটি ইউরোপের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হিসেবে পরিচিত। প্রায়শই এখান থেকে নাটকীয় ও দৃশ্যমান অগ্ন্যুৎপাত হয়ে থাকে। গত কয়েক মাস ধরেই এটনার কম্পন ও অগ্ন্যক্রিয়ায় বাড়তি গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল।

মূলত সিসিলি দ্বীপে অবস্থিত মাউন্ট এটনা ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু সক্রিয় আগ্নেয়গিরি— যার উচ্চতা প্রায় ৩ হাজার ৩০০ মিটার। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল ও মে মাসেও এটনায় জোরালো অগ্নুৎপাত লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

ইতালীয় দ্বীপের আগ্নেয়গিরিটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র যেখানে প্রতি বছর ১৫ লক্ষ মানুষ ভ্রমণ করে থাকেন, যাদের অনেকেই প্রায় পুরো পথ হেঁটে এর চূঁড়ায় পৌঁছান।

যদিও মাউন্ট এটনা বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির মধ্যে একটি, তবুও মানমন্দিরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের পর থেকে এই মাত্রার কোনো অগ্ন্যুৎপাত ঘটেনি।

এই অগ্ন্যুৎপাতগুলি প্রায়শই শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই থেমে যায়। যদিও এবার বিস্ফোরণের তীব্রতা এখনও বাড়ছে এবং পর্বতটি লাভা এবং আগুন নির্গত করছে।

সুলতানা দিনা/অমিয়/

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৫১

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৫১
গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিরা। ছবিটি গতকাল সোমবার তোলা। সংগৃহীত

ইসরায়েলি আক্রমণে গাজায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৫০৩ জন। অবরুদ্ধ উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

ইসরায়েলি বাহিনী সহায়তা সংগ্রহে যাওয়া ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করেও গুলি চালাচ্ছে। এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে। জাতিসংঘ ও সহায়তা সংস্থাগুলো এরই মধ্যে ওই ঘটনাগুলোর নিন্দা জানিয়েছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের বিতরণ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকাগুলোয় ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয় গাজার যুদ্ধ। শুরু থেকেই নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এরই মধ্যে ৫৪ হাজার ৪৭০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। 

এদিকে, দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে হামাস। তারা মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বিষয়টি তুলে ধরে। কাসসাম ব্রিগেডের একদল যোদ্ধা ইসরায়েলি সেনাদের একটি দলের ওপর দক্ষিণের শহর কারায় হামলা চালায়। হামলাটি গত শনিবার হয়েছে বলেই জানিয়েছে হামাস।

ইসরায়েলের সমর্থনে হওয়া সমাবেশে হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে ইসরায়েলের সমর্থনে আয়োজিত জনসমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এক ব্যক্তি ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ স্লোগান দিয়ে মলোটভ ককটেল ছুড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুসারে, এ ঘটনায় ৫২ থেকে ৮৮ বছর বয়সী আট ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ঘটনাটি ঘটেছে কলোরাডোর বোল্ডারের পার্ল স্ট্রিট মলের বাইরে। ওই স্থানটি থেকে ডেনভারের দূরত্ব মাত্র ৪৮ কিলোমিটার। এফবিআই বলছে, এটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মলোটোভ ককটেলের পাশাপাশি ওই ব্যক্তি ফ্লেমথ্রোয়ার ব্যবহার করেছিল বলেও জানা যায়। 

এরই মধ্যে আক্রমণের ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়েছে। সে ভিডিওতে দেখা গেছে, শার্টবিহীন অবস্থায় এক ব্যক্তি উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে স্লোগান দিয়ে মলোটোভ ককটেল ছুড়ছে। তাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তার দুই হাতেই মলোটোভ ককটেল ছিল।

পুলিশ কলোরাডোর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৬ মিনিট নাগাদ আক্রমণের খবর পায়। পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে আটক করে এবং আহতদের উদ্ধার করে। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা 

রাশিয়া-ইউক্রেনের আলোচনার মধ্যেই পাল্টাপাল্টি হামলা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:২৩ এএম
রাশিয়া-ইউক্রেনের আলোচনার মধ্যেই পাল্টাপাল্টি হামলা
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার চারটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার ঘটনা নিশ্চিত করেছে মস্কো। দেশটি এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইউক্রেনের হামলায় ৪০টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ইউক্রেনেও ব্যাপক হামলা হয়েছে। গত রবিবার রাতভর দেশটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। 

ইউক্রেন এ হামলার জবাবেও পাল্টা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। 

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ১৬২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই ইউক্রেনের আশপাশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভূপাতিত করা হয়েছে। ৫৭টি ভূপাতিত করা হয়েছে কারস্ক অঞ্চলে। আর ৩১টি ভূপাতিত করা হয়েছে বেলগোরোদে।

অন্যদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়া তাদের লক্ষ্য করে ৮০টি ড্রোন ও চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যা সবমিলিয়ে ১২টি স্থানে আঘাত হেনেছে। 

রাশিয়ার যে চারটি বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেন হামলা চালিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দুটির অবস্থান ইউক্রেন থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে। ইউক্রেনের হামলার কবলে পড়া বিমান ঘাঁটিগুলো হলো- সাইবেরিয়ার ইরকুতস্কের বেলায়া, রাশিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে ওলেনিয়া, মধ্য রিয়াজানের ডিয়াজিলেভো ও মধ্য ইভানভো অঞ্চলের ইভানভো। 

এসবিইউর এক সূত্র জানায়, পরমাণু সক্ষমতার টিইউ-৯৫, টিইউ ২২এম৩ ও এ-৫০ যুদ্ধবিমানেও হামলা হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ‘স্পাইডারস ওয়েব’ নামের ওই অভিযানটি পরিচালনা করেছে এসবিইউ সিকিউরিটি সার্ভিস। হামলার সময় ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

এসবিইউয়ের এক সূত্র বিবিসিকে বলেছেন, এ হামলার প্রস্তুতিতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কাঠের ভ্রাম্যমাণ কেবিনে গোপন ড্রোন রাখা হয়। পরে সেগুলো বিমানঘাঁটির কাছাকাছি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, এমন একটি সময় এসব হামলা হচ্ছে, যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে। দ্বিতীয় দফার বৈঠকে যোগ দিতে দুই পক্ষের আলোচক দলই ইস্তাম্বুলে উপস্থিত হয়েছে। 

আলোচনার আগেই ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলে জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। কিয়েভের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এর পর পর্যায়ক্রমে দেশটির বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নেয় তারা। সবমিলিয়ে এখন রাশিয়ার হাতে ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ রয়েছে। এ অঞ্চলের মধ্যে ২০১৪ সালে রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে। 

শান্তি আলোচনার আগেই রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইউক্রেনের এলাকা ফেরত দেবে না। 

ইউক্রেনের নেতৃস্থানীয়রাও মনে করছেন, বেশ কিছু এলাকা তারা ফিরে পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আভাস দেওয়া হয়েছে। 

প্রথম শান্তি বৈঠকের পর সবকিছু ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে এমন প্রত্যাশা করা হলেও তা হয়নি। ওই বৈঠকের পর থেকেই ইউক্রেনে হামলার মাত্রা বেড়ে যায়। বিষয়টি এমন একটি পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি চুপ থাকতে বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও।

এদিকে, ইউক্রেনও পাল্টা জবাব দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরিচালিত সর্বশেষ অভিযানে সাফল্যের জন্য এসবিইউ প্রধান ভাসিল মালিউককে গত রবিবার অভিনন্দন জানান জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে চমৎকার বিষয় হলো, রাশিয়ার অভ্যন্তরে এ অভিযান পরিচালনার অফিসটি ছিল এফএসবির কাছে।’ প্রসঙ্গত, এফএসবি রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা সংস্থা হিসেবে পরিচিত।

তবে হামলা চালানোর পর কাউকে ধরা পড়তে হয়নি। জেলেনস্কি জানান, অভিযানের সঙ্গে জড়িতরা হামলার আগেই নিরাপদে রাশিয়া ছেড়ে বের হয়ে গেছেন।

এসবিইউয়ের অনুমান, এ হামলায় রাশিয়ার প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই বিস্তারিত জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেছে তারা। তবে আদৌ এত বিপুল অঙ্কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, সে দাবির সত্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি। সূত্র: বিবিসি