ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

সৌদিকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তির প্রস্তাব ট্রাম্পের

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৫ এএম
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ এএম
সৌদিকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তির প্রস্তাব ট্রাম্পের
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের সঙ্গে একশ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যমানের অস্ত্রবিক্রয় চুক্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মাসে দেশটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের সময় এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।

শুক্রবার ( ২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছয় কর্মকর্তার বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই খবর জানায়।

তবে হোয়াইট হাউজ এবং সৌদি আরব সরকারের পক্ষ থেকে এই চুক্তির বিষয়ে সরাসরি জানানো হয়নি।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ও সৌদি আরবের সঙ্গে একই ধরনের একটি চুক্তির করতে চাইলেও সেসময় সেটিতে সফলতা আসেনি। বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাবে উন্নত মার্কিন অস্ত্রের বিনিময়ে সৌদি আরবকে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়—চীন থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করতে হবে এবং চীনা বিনিয়োগে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। 

তবে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত চুক্তিতে এমন কোনও শর্ত রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে আরও মজবুত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা ধরে রাখা দুদেশের অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। ২০১৭ সালেও ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় ১১০ বিলিয়ন ডলারের একটি অস্ত্রবিক্রয় চুক্তির প্রস্তাব দেয়।

তবে ইসরায়েলকে সবসময় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় উন্নততর মার্কিন অস্ত্র দেওয়া হয়, যাকে ‘কোয়ালিটেটিভ মিলিটারি এজ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে, ইসরায়েল ইতোমধ্যে নয় বছর ধরে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করছে এবং একাধিক স্কোয়াড্রন গঠন করেছে।

তবে এই অস্ত্রচুক্তির বাস্তবায়ন নির্ভর করছে মূল্ট মার্কিন আইনসভার উচ্চকক্ষ কংগ্রেসের উপর। কেননা যুক্তরাষ্ট্রে কোনও বড় আকারের অস্ত্রচুক্তি সম্পন্ন হওয়ার আগে সেটি প্রথমে কংগ্রেসের কাছে পর্যালোচনার জন্য পাঠাতে হয়। সেখানকার অনুমোদন সাপেক্ষেই এই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়। সূত্র: রয়টার্স
দিনা
 

ভারতের জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, পাইলট নিহত

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
ভারতের জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, পাইলট নিহত

ভারতের রাজস্থানে একটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে বিমানের পাইলট নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৯ জুলাই) চুরু জেলার ভানুদা গ্রামের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

বিমানটি সুরতগড় বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেছিল।

বিমান ভেঙে পড়তেই এলাকার বাসিন্দারা সেখানে জড়ো হন। ঘটনার একটি ভিডিও সামনে এসেছে। এতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনাস্থলে গেছেন। 

গ্রামবাসীরা জানান, বিকট শব্দের পর বিমানটি ভেঙে পড়ে। তারপরেই বিমানে আগুন লেগে যায়। গ্রামবাসীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন। ধ্বংসস্তূপের কাছ থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই মরদেহটি পাইলটের।

ঠিক কী কারণে বিমানটি ভেঙে পড়ল সে সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।

এর আগে গত এপ্রিলে গুজরাটের জামনগরের কাছে বিমান বাহিনীর একটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল। এতে পাইলট সিদ্ধার্থ যাদব সহকারী পাইলটের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিহত হন।

প্রশিক্ষণ অভিযানের সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাত সকাল সাড়ে ৯টায় একটি খোলা মাঠে যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল।

সিদ্ধার্থের বাবা সুশীল যাদব ছেলের প্রতি তার গর্বের কথা জানিয়ে এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমি খুব গর্বিত... সে অন্য একজনকে বাঁচাতে গিয়ে তার জীবন হারিয়েছে। কিন্তু এটা দুঃখেরও বিষয় কারণ সে আমার একমাত্র ছেলে ছিল।’

অমিয়/

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোকে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ব্রিকস যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতে এবং ডলারের দাম কমানোর জন্য গঠন করা হয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘ব্রিকস গঠন করা হয় আমাদের ক্ষতি করার জন্য, আমাদের ডলারের দাম কমানোর করার জন্য...। ডলার যাতে আর স্ট্যান্ডার্ড না থাকে, তার জন্য। ওরা যদি নিজেদের খেলাটা খেলতে চায়, আমিও ওদের খেলাটা খেলতে পারি। সুতরাং ব্রিকসে যেই আছে তাদেরই ১০ শতাংশ চার্জ (শুল্ক) দিতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যে দেশগুলো ডলারকে চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’

তার কথায়, ‘আমি মনে করি না যে তাদের (ব্রিকস দেশগুলি) মধ্যে কেউ সেই মূল্য দিতে ইচ্ছুক।’

ব্রিকস অনেকাংশে ভেঙে গেছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ব্রিকস আছে। আমি এক বছর আগে বলেছিলাম, এটি মূলত ভেঙে গেছে, তবে তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশ এখনও ঝুলছে। ব্রিকস গুরুতর হুমকি নয়, তবে তারা ডলার ধ্বংসের চেষ্টা করছে।’

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কটাক্ষ করে ট্রাম্প বলেন, ডলারের বৈশ্বিক অবস্থান রক্ষার জন্য আমেরিকার একজন স্মার্ট নেতা দরকার।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যদি ডলারের বিশ্বমান হারাই, সেটা হবে যুদ্ধে হেরে যাওয়ার মতো, বড় ধরনের বিশ্বযুদ্ধে হারের মতো। আমরা আর সেই মহান দেশ থাকব না। কিন্তু ডলারই রাজা। আমরা এভাবেই চলব।’ সূত্র: রয়টার্স

পেজেশকিয়ানকে হত্যা করতে চেয়েছিল ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
পেজেশকিয়ানকে হত্যা করতে চেয়েছিল ইসরায়েল
মাসুদ পেজেশকিয়ান

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন যে ইসরায়েল তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল। তিনি বৈঠক করছিলেন এমন অঞ্চলে বোমাবর্ষণ করেছিল দেশটি।

মার্কিন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব টাকার কার্লসনকে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘হ্যাঁ, তারা চেষ্টা চালিয়েছিল। তারা সে অনুসারে কাজও করেছিল, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।’ কার্লসন পেজেশকিয়ানকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ইসরায়েল কখনো তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল কি না। সেটির উত্তরেই পেজেশকিয়ান এ মন্তব্য করেন।

কার্লসন দোভাষীর সহায়তায় পেজেশকিয়ানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবং সাক্ষাৎকারটি গত সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাতের পর এবারই প্রথম ইরানি প্রেসিডেন্ট পশ্চিমা কোনো গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে সাক্ষাৎকার দিলেন। 

পেজেশকিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমার প্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করেনি। ইসরায়েল করেছে। আমি বৈঠকে ছিলাম… তারা ওই এলাকায় হামলা চালিয়েছে, যেখানে আমরা বৈঠক করছিলাম।’

তবে ইসরায়েল গত মাসের সংঘাতের সময় ওই চেষ্টা চালিয়েছে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে জানিয়েছেন, ইসরায়েল ইরানের ৮৬ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি তা আটকে দিয়েছেন। খামেনি এখনো প্রকাশ্যে আসেননি। তাকে গোপন ও নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইরানের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে শুধু একদিন তেহরানে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন খামেনি। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছে খামেনির সমর্থকদের মধ্যে। 
 
পেজেশকিয়ান গত গ্রীষ্মে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে হত্যায় ইসরায়েল সফল হলে, গোটা বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নিতে পারত। সেক্ষেত্রে ইরানের রাজনৈতিক কাঠামোতেও বড় ধরনের আঘাত আসত।

১২ দিনের ওই সংঘাত চলাকালে ট্রাম্প ইরানের শাসকগোষ্ঠী পরিবর্তনের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে তিনি এতে ততটা সক্রিয়ভাবে জড়াননি। বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সঙ্গে স্থায়ী চুক্তিতে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলেও খবর এসেছে গণমাধ্যমে। তবে ইরানকে ঠিক কী ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে তা এখনো অস্পষ্ট। ইরান এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানবে না।

 সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান  

গাড়িতে রুশ মন্ত্রীর মরদেহ, তদন্ত শুরু

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১৯ পিএম
গাড়িতে রুশ মন্ত্রীর মরদেহ, তদন্ত শুরু
রোমান স্টারভয়েট

রাশিয়ার সাবেক পরিবহনমন্ত্রী রোমান স্টারভয়েটের লাশ সোমবার (৭ জুলাই) এক গাড়িতে পাওয়া গেছে। তার শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির শীর্ষ অপরাধ তদন্ত সংস্থা।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে স্টারভয়েটকে পরিবহনমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর ঘোষণা দেন পুতিন। কর্তৃপক্ষ বলছে, ৫৩ বছর বয়সী স্টারভয়েটকে মস্কোর এক পার্কের কাছে ফেলে রাখা টেসলা গাড়িতে পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে একটি পিস্তল ছিল। ওই অস্ত্রটি স্টারভয়েটের নামেই ইস্যু করা। 

ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা হতে পারে। তবে অন্য কিছু কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। তার মৃত্যু নিয়ে এরই মধ্যে গুঞ্জন উঠতে শুরু করেছে। স্টারভয়েট সবমিলিয়ে এক বছরেরও কম সময় পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সূত্র: আল জাজিরা 

রাফায় ‘মানবিক শহর’ বানাবে ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
রাফায় ‘মানবিক শহর’ বানাবে ইসরায়েল
গাজা সিটিতে ইসরায়েলি আক্রমণে নিহত ফিলিস্তিনিদের শোকাহত স্বজন। গাজার আল-শিফা হাসপাতাল থেকে ছবিটি গতকাল তোলা সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ গাজার ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরানোর পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন। তার পরিকল্পনা অনুসারে, সব ফিলিস্তিনিকে রাফার ধ্বংসস্তূপের মাঝে একটি আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হবে। তবে আইনি বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপকরা এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তারা বলছেন, এটি আসলে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের একটি ‘নীলনকশা’।

ইসরায়েল কাৎজ এরই মধ্যে নিজেদের সামরিক বাহিনীকে আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করতে বলেছেন। তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘মানবিক শহর’। ইসরায়েলের হারেৎজ সংবাদপত্রের খবরে বলা হচ্ছে, পুরো আশ্রয়কেন্দ্রটিই গড়ে তোলা হবে রাফার ধ্বংসস্তূপের ওপর।  

সেখানে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ করানোর আগে ‘সুরক্ষা নজরদারির’ মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আর একবার প্রবেশের পর সেখান থেকে তারা বের হতে পারবেন না বলেই ইসরায়েলি সাংবাদিকদের এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কাৎজ।   

ইসরায়েলি বাহিনী ওই আশ্রয়কেন্দ্রের চারপাশ নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রাথমিকভাবে সেখানে ছয় লাখ ফিলিস্তিনিকে সরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এদের বেশির ভাগই গাজার আল-মাওয়াসি এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে গাজার সব মানুষকেই সেখানে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে এভাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুর দিকে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিদের বড় একটি অংশকে গাজা থেকে সরাতে হবে, যাতে উপত্যকাটি পরিষ্কার করা যায়। সে সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ দেশটির অন্যান্য আইনপ্রণেতা বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক সরানোর বিষয়টি প্রচারও করেছিলেন। 

তবে খোদ ইসরায়েলের প্রধান সারির মানবাধিকার গোষ্ঠীর আইনজীবী মাইকেল সফার্ড বলেছেন, কাৎজের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে। কাৎজ এমন একটি পরিকল্পনা সামনে নিয়ে এসেছেন, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ছাড়া আর কিছু নয়। এটি মূলত গাজা উপত্যকার জনগোষ্ঠীকে দক্ষিণের অংশে নিয়ে যাওয়ার এক পরিকল্পনা, যাতে পরে তাদের গাজার বাইরে বের করে নিয়ে যাওয়া যায়।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এর আগে দাবি করেছিল, ফিলিস্তিনিরা গাজার ভেতরে নিজেদের সুরক্ষার জন্যই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সামরিক বাহিনীর ওই দাবিকেও প্রত্যাখ্যান করেছেন মানবাধিকার গোষ্ঠীটির আইনজীবী।

এ আইনজীবী আরও বলেছেন, ‘সরকার এটিকে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়া হিসেবে দেখালেও গাজাবাসী আগে থেকে এতটা চাপে রয়েছে যে উপত্যকা থেকে তাদের চলে যাওয়াকে বৈধতা দেওয়ার কোনো উপায় নেই।’

সফার্ড আরও বলেন, ‘আপনি যখন কাউকে তার মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করবেন, সেটি যুদ্ধাপরাধের শামিল হবে। যদি এটি তার পরিকল্পনা অনুসারে এত বড়মাপে করা হয়, তা হলে তা হবে মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’  

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে পা রাখার পরপরই নিজের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন কাৎজ। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আসতে বা ২১ মাসের যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামাতে ব্যাপক চাপ দেওয়া হবে। 

কাৎজের পরিকল্পনা অনুসারে, তাদের ওই ‘মানবিক শহরের’ কাজ শুরু হবে যুদ্ধবিরতি চলাকালে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেছেন যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নেতানিয়াহু আলাপ করছেন, যাতে ফিলিস্তিনিদের তারা আশ্রয় দেয়।
এদিকে, হোয়াইট হাউস থেকে গত সোমবার নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও ভালো ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজের আগে নেতানিয়াহু বলেন, ‘যদি মানুষ থাকতে চায়, তারা থাকতে পারবে। তবে তারা যদি বের হতে চায়, তা হলে তাদের বের হতে দেওয়া উচিত।’ নেতানিয়াহুর প্রশাসনের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচসহ অন্যান্য রাজনীতিবিদ একে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা গাজায় ইসরায়েলি অবকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়েও কথা বলেছেন। 

২০০ কোটি ডলারের এ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) নামও রয়েছে। যদিও জিএইচএফ এরই মধ্যে জানিয়েছে, তারা এ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত নয়। 

ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলার মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। সেখানে সোমবার (৮জুলাই) এক বিস্ফোরণে তাদের পাঁচ সেনা ও ১৪ জন আহত হয়েছে। এর পরপরই তারা পুরো উপত্যকায় হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৫৭ হাজার ৫২৩ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৭ জন।

 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা